সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

China লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

চিনে মুক্ত দ্বার নীতি | Hay Doctrine

 চিনে মুক্ত দ্বার নীতি  পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি মাঞ্চু রাজতন্ত্র শাসিত চীনে যে সমস্ত শোষণ মূলক পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করেছিল তার  চূড়ান্ত  পরিণতি হল চীনের মুক্তদ্বার নীতি (১৮৯৯) । আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের তদানীন্তন বিদেশ সচিব জন  হে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে এই নীতি ঘোষণা করেছিলেন। এই নীতি তাই "হে ডকট্রিন" নামেও পরিচিত। এই নীতির মূল বক্তব্য ছিল:  ১. পশ্চিমী শক্তিগুলির প্রভাবাধীন অঞ্চলের স্থানীয় শাসন ব্যবস্থায় তারা হস্তক্ষেপ করবে না। ২. মুক্ত বন্দর গুলিতে চীনের শুল্ক বিভাগ চুক্তি অনুযায়ী কর আদায় করবে এবং এই বিষয়ে বিদেশীরা হস্তক্ষেপ করবে না। ৩) প্রভাবাধীন অঞ্চলে কোনো বিদেশি শক্তি অন্য দেশের বাণিজ্যিক পণ্যের উপর বৈষম্য মূলক শুল্ক চাপাবে না। ৪) হে একটি দ্বিতীয় সড়কপত্র প্রকাশ করে বলেন যে, পশ্চিমী শক্তিগুলির চীনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতা রক্ষা করে চলবে। মুক্তদ্বার নীতির পশ্চাতে একটি সুনির্দিষ্ট পটভূমি ছিল। মাঞ্চু রাজতন্ত্র তাইপিং বিদ্রোহ দমনের পর যখন চীনের অভ্যন্তরে নিজেকে শক্তিশালী ও সুপ্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছিল তখন ঔপনিবেশিক শক...

তুং চি পুনস্থাপন | Tung Chi Restoration

 তুং চি পুনস্থাপন উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে মাঞ্চু রাজতন্ত্রের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক পর্যায়ে পৌঁছেছিল। পশ্চিমী ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি চীনের অধিকাংশ অঞ্চল গ্রাস করেছিল ফেলেছিল। ব্রিটিশ ও ফরাসি সৈন্যরা মাঞ্চু রাজাদের গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ অগ্নিদগ্ধ করেছিল। তার ওপর বিভিন্ন রাজতন্ত্র বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহ (যেমন- তাইপিং, মিয়াও, নিয়েন, তুংগান ও মুসলিম বিদ্রোহ) মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। এই প্রেক্ষাপটে চীনা সম্রাট তুং চি-এর রাজত্বকালে (১৮৬২-১৮৭৪) বিলুপ্তপ্রায় রাজশক্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার একটা আন্তরিক প্রয়াস চালানো হয়েছিল।  এই প্রয়াস তুং চি পুনঃ প্রতিষ্ঠা নামে পরিচিত। সম্রাট তুং চি'র নামে এই প্রক্রিয়ার নামকরণ হলেও এই ব্যাপারে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না; কারণ তখন তার বয়স ছিল অত্যন্ত কম। রাজ মাতা জু-শি তার অভিভাবক হিসাবে রাজকার্য পরিচালনা করতেন।রাজশক্তির পুনরুদ্ধারে উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল পূর্ববর্তী সম্রাট সিয়াং  ফেং- এর  ছোট ভাই রাজকুমার কুং এবং তার অনুগামী একদল রাজপুরুষের। তুং চি পুনঃ প্রতিষ্ঠার নেত্রীবর্গ অধিকাংশই ছিলেন কনফুসীয় মতাদর্শে বিশ্বাসী। তারা একটি স্থিতিশীল কৃষিভিত...

১৮৯৮ এর সংস্কার | Hundred days' Reform

১৮৯৮ এর সংস্কার | Hundred days' Reform ১৮৯৮ সালে চীনে মাঞ্চু শাসক গুয়াংশুর রাজত্বকালে যে শাসনতান্ত্রিক সংস্কার সাধিত হয় তা শত দিবসের সংস্কার নামে পরিচিত। উনিশ শতকের নব্বইয়ের দশকে চীনে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তা এক সংস্কারকামী জনমত গঠন করেছিল। যদিও এই জনমত ছিল বুর্জোয়া জনমত। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কাং ইউ ওয়েই। জনমতের চাপে পড়ে সম্রাট গুয়াংশি সংস্কার সাধন করলেও পরবর্তীকালে রক্ষণশীলদের চাপে তা ব্যর্থ হয় এবং সম্রাটের পদচ্যুতি হয়। মাত্র ১০০ দিন স্থায়ী এই সংস্কার শত দিবসের সংস্কার নামে পরিচিত। উনিশ শতকের শেষ দশকে চীনে বেশ কিছু দেশীয় শিল্প গড়ে উঠেছিল। ফলে চীনে একটি শিল্পপতি বুর্জোয়া শ্রেণীর উত্থান ঘটছিল। অন্যদিকে আবার শিল্পাশ্রয়ী সর্বহারার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ইতিমধ্যে ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে জাপানের হাতে চীনের শোচনীয় পরাজয় এবং মর্যাদাহানি চীনের শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে নতুন ভাবনা চিন্তার উদয় ঘটিয়েছিল। এই সব দেশপ্রেমিকদের অধিকাংশই ছিলেন ছাত্র, বিশেষ করে যারা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিলেন সান ইয়াৎ সেন, যিনি মাঞ্চুদের ক্ষমতাচ্যুত করার একট...

DSE-B-1 Honours (China) CU Question Paper 2021

Question Papers 2021  HISTORY  —  HONOURS  Paper  :  DSE-B-1 (China)  Full  Marks  :  65   Candidates  are  required  to  give  their  answers  in  their  own  words as  far  as  practicable.  1. Write  short  notes  on  any  three (250  words)  :  5×3 (a) Treaty  system  in  China (b) Moslem  rebellion  in  China  (c) Tung-Chi  restoration  (d) Nature  of  the  Boxer  rebellion  (e) Three  major  principles  of  Sun  Yat  Sen  (f) May  Fourth  Movement  and  new  culture.  2. Answer  any  one  question : 10×1  (a) What  were  the  steps  taken  by  the  Commissioner  Lin  Tse-hsu  for  putting  an  end...

চিনে আত্মশক্তি আন্দোলন | Self-Strenthening Movement in China

চিনে আত্মশক্তি আন্দোলন | Self-Strenthening Movement in China তুং চি পুনঃপ্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে রাজপুরুষেরা চীন কে শক্তিশালী করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। চীনের শক্তি অর্জনের জন্য তারা আধুনিক শিল্পের ওপর গুরুত্ব না দিলেও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ় করার জন্য পাশ্চাত্য প্রযুক্তি প্রয়োগ করেছিল। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার তাগিদে আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যা প্রয়োগের প্রক্রিয়ায় চীনের ইতিহাসে আত্মশক্তি আন্দোলন নামে পরিচিত। ঐতিহাসিক ইমানুয়েল সু চীনের আত্মশক্তি আন্দোলনকে তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত করেছেন-- 1. প্রথম পর্যায় (1861-1872), 2. দ্বিতীয় পর্যায় (1872-1885) এবং 3. তৃতীয় পর্যায় (1885-1895) প্রথম পর্যায়ে (1861-1872) দেখা যায় যে পাশ্চাত্য প্রযুক্তির প্রয়োগে আগ্নেয়াস্ত্র এবং যন্ত্রপাতি নির্মাণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। পাশ্চাত্য কারিগরি বিদ্যায় শিক্ষাগ্রহণের উদ্দেশ্যে, বিশেষত জাহাজ নির্মাণ ও অস্ত্র নির্মাণ কৌশল আয়ত্ত্ব করার জন্য চিনা ছাত্র-ছাত্রীদের বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই জন্য পাশ্চাত্যের দেশগুলোর সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রয়াস চালানো হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগে ...

তাইপিং বিদ্রোহের প্রকৃতি

তাইপিং বিদ্রোহের প্রকৃতি উনিশ শতকের মধ্যভাগে চীনের মাঞ্চু সরকার একাধিক অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের সন্মুখীন হয়েছিল যে গুলির মূলে ছিল সামন্ততান্ত্রিক ও ঔপনিবেশিক শেষনের ফলে জনগণের চরম আর্থিক দুর্দশা এবং দুর্ভিক্ষ। বিদ্রোহ গুলির মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হয়েছিল 1850 এর তাইপিং বিদ্রোহ। তাইপিং বিদ্রোহের প্রকৃত চরিত্র নির্ণয়ে সমাজ বিশ্লেষক ও ঐতিহাসিকগণ একমত হতে পারেননি। মানবেন্দ্রনাথ রায় তাঁর বিখ্যাত 'Revolution and Counter Revolution in China' গ্রন্থে তাইপিং বিদ্রোহকে 'বুর্জোয়া সামন্ততান্ত্রিক বিপ্লব' হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি তাইপিং বিদ্রোহে ফরাসি বিপ্লবের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে যে উনিশ শতকে চীনে বুর্জোয়া শ্রেণি গড়েই ওঠেনি। জেন্ট্রিদের যদি বুর্জোয়া বলা যায়, তাহলেও বলতে হবে যে এই বিদ্রোহ জেন্ট্রিদের কোনো ভূমিকাই ছিল না। বরং তারা বিদ্রোহীদের আক্রমণের শিকার হয়েছিল। জার্মান পন্ডিত Wolf Gung Frank তাইপিং বিদ্রোহের নিম্নবর্গীয় চরিত্রের দিকটি তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন নেতা থেকে সমর্থক প্রায় সকলেই ছিলেন কৃষক, মজুর বা কর্মহীনদের থেকে। জ্যা...

মে ফোর্থ আন্দোলন | May 4th Movement

মে ফোর্থ আন্দোলন | May 4th Movement প্রেক্ষাপট 1911 সালে চীনে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেলেও শান্তি-শৃঙ্খলা অগ্রগতির কোন চিহ্ন ছিল না। উপরন্তু জঙ্গী শাসনে দেশে এক অদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, যাকে চীনের ইতিহাসে অন্ধকারতম যুগ বলা যেতে পারে। কিন্তু এই অরাজকতার সুযোগে চীনে এক নতুন শক্তি গড়ে উঠেছিল, যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ৪ঠা মে আন্দোলন রূপে প্রকাশিত হয়েছিল। এই আন্দোলনের প্রধান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ছিল পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত যুব সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ এবং চিরাচরিত কনফুসীয় ঐতিহ্যের উপর আক্রমণ। বিদেশী শক্তির হাতে দীর্ঘদিন ধরে চীনের লাঞ্ছনার প্রতিক্রিয়ায় যে জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের নগ্ন সাম্রাজ্যবাদী ব্যবহার আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছিল। জাপান শানটুং প্রদেশ দখল করে চীনের কাছে ২১ দফা দাবি পেশ করেছিল, যা ইউয়ান শি কাই সরকার অধিকাংশই স্বীকার করে নিয়েছিল। জাতির এই অপমানের প্রতিবাদে বহু চিনা ছাত্র যারা জাপানে পাঠরত ছিলেন দেশে ফেরত আসে এবং বহু চীনা ব্যবসায়ী জাপানি পণ্য বয়কটের আন্দোলন গড়ে তোলেন। জাপানি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সমগ্র চীনে যখন প্রবল জাতী...

বক্সার প্রটোকল | Boxer Protocol

বক্সার প্রটোকল বক্সার বিদ্রোহ ছিল শুধু বিদেশি বিরোধী। যদিও প্রথমদিকে বিদ্রোহীরা একইসঙ্গে বিদেশিদের এবং মাঞ্চু শাসক বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু কিছুকালের মধ্যে রাজপরিবারের একটা বড় অংশ বিদ্রোহে যোগদান করায় এবং বিধবা রাজমাতা জুসি সমর্থন করায় এই বিদ্রোহ কেবলমাত্র বিদেশিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়। ইউরোপীয় উপনিবেশিক শক্তির হাতে বিদ্রোহ হয়। বিদ্রোহ ব্যর্থতা ছিল প্রকৃতপক্ষে মাঞ্চু রাজশক্তির পশ্চিমী শক্তিগুলির হাতে আরও একবার পরাজয়। বিদ্রোহ দমনের পর এগারোটি ইউরোপীয় শক্তি 1901 খ্রিস্টাব্দে চীনের সঙ্গে আরো একটি অসম চুক্তি স্বাক্ষর করে যা বক্সার প্রটোকল নামে পরিচিত। বক্সার প্রটোকল এর শর্ত গুলি নিম্নরূপ: ১. 12 জন রাজপুরুষ যারা বক্সার বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিল তাদের হয় মৃত্যুদণ্ড নেওয়ার অথবা আত্মহত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর প্রায় একশত রাজপুরুষ কে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। ২. চীন ক্ষতিপূরণ হিসেবে 500 মিলিয়ন আমেরিকান ডলার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। 1901 থেকে 1940 সালের মধ্যে বিভিন্ন কিস্তিতে এই অর্থ পরিশোধের কথা বলা হয়। ৩. যেসব শহরে বিদেশি বিরোধী আন্দোলন তীব্র রূপ নিয়েছিল সেই সব অঞ্চলে সরকারি পরীক্...

চিনে প্রজাতন্ত্রিক বিপ্লব ও সান-ইয়াৎ-সেন | 1911 Revolution & San-Yat-Sen

আধুনিক চীনের ইতিহাসে 1911 খ্রিস্টাব্দে গণতান্ত্রিক বিপ্লব উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে চীনে মাঞ্চু রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং একটি প্রজাতান্ত্রিক সরকার সান-ইয়াৎ-সেনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে। যদিও এই প্রজাতন্ত্র ক্ষণস্থায়ী হয়েছিল এবং সানের পদত্যাগ এবং ইউয়ান সি কাই একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বিপ্লবের সমাপ্তি হয়। 1911 এর বিপ্লবের পটভূমি আলোচনা প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ইমানুয়েল স্যু বলেছেন উনিশ শতক থেকে চীনের ইতিহাসে জাতীয় অবমাননার ইতিহাস। 1842 খ্রিস্টাব্দে নানকিং এর সন্ধি থেকে শুরু করে 1901 এর বক্সার প্রটোকল পর্যন্ত বিদেশী শক্তির সাথে চিন নানান অসম চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিল। চীনের কোন রাজ্য গুলি হাতছাড়া হয়েছিল এতদিন যারা মধ্য রাজ্যের বাসিন্দা হিসাবে গর্ব বোধ করত তাদের দেশ আধা-ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছিল যে চীনের এই দুরাবস্থার জন্য, মর্যাদাহানির জন্য মাঞ্চু রাজবংশই দায়ী। তাই মাঞ্চু রাজারা যখন সংস্কারের মাধ্যমে রাজতন্ত্র কে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছিল চিনা জনসাধারণ তখন মাঞ্চু রাজাদের ক্ষমতাচ্যুত করার চিন্তাভাবনা করছিল। চিনা জনসাধারণ মনে করত ...

তাইপিং বিদ্রোহের কারন ও পটভূমি | Background of Taiping Rebellion

তাইপিং বিদ্রোহের কারন ও পটভূমি উনিশ শতকের মধ্যভাগে মাঞ্চু সরকার যে কেবল বিদেশী সুযোগসন্ধানী ও আমন্ত্রণকারী হাতে বিপন্ন হয়েছিল তা নয়, দেশের অভ্যন্তরে নানা বিদ্রোহের ফলে গুরুতর সংকটের মুখে পড়েছিল ।এসব অভ্যন্তরীন বিদ্রোহের প্রকৃত কারণ ছিল দুর্ভিক্ষ এবং সামন্ততান্ত্রিক ও ঔপনিবেশিক শাসনের ফলে জনগণের চরম দুর্দশা। চল্লিশের দশক থেকে চিনে একাধিক ছোট খাটো বিদ্রোহ হলেও  ১৮৫০ থেকে বড় মাপের বিদ্রোহ দেখা দিতে থাকে। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বিদ্রোহ ছিল তাইপিং বিদ্রোহ (1850-64)। মাঞ্চু শাসনে চীনের জনসংখ্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল, কিন্তু সেই অনুপাতে চাষযোগ্য জমির পরিমান বাড়েনি। ফলত  সাধারণভাবেই মাথাপিছু জমির পরিমাণ কমে যায়।  একে ছোট জমি, তার ওপর ছিল সুদখোর মহাজন, জমিদার ও অসৎ ব্যবসায়ীদের কার্যকলাপ। এই প্রেক্ষিতে জমির মালিকানা ক্রমশ অল্প সংখ্যক ধনী মানুষের হাতে সীমিত হচ্ছিল এবং বাড়ছিল ভূমিহীন কৃষকের সংখ্যা। এদিকে শিল্প না হওয়ার কারণে গ্রাম ছেড়ে রোজগারের আশায় শহরে আগত ভূমিহীন কৃষকদের কর্মসংস্থান হয়নি। দু'চারটে কুলি মজুর ছাড়া বেশির ভাগ মানুষই বেকার অথবা সমাজ বিরোধী তে...

Failure of Taipings | তাইপিং বিদ্রোহের ব্যর্থতা

তাইপিং বিদ্রোহের ব্যর্থতা তাইপিং বিদ্রোহের প্রথম পর্যায়ে যে ধরনের সাফল্য লাভ করেছিল তা যদি দীর্ঘস্থায়ী হতো তাহলে মাঞ্চু বংশের পতন রোধ করা অসম্ভব হত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাঞ্চু বংশ টিকে যায় এবং তাইপিংরা ব্যর্থ হয়।তাইপিং বিদ্রোহের ব্যর্থতার পশ্চাতে কী কারণ ছিল তা আলোচনা করা  দরকার।  ব্যর্থতার অন্যতম কারণ ছিল তাদের ভ্রান্ত রণনীতি। তারা বিদ্যুৎগতিতে বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ করে কাগজপত্র ও কোষাগার লুণ্ঠন করে এগিয়ে যাওয়ার নীতি গ্রহণ করে। এর ফলে যুদ্ধে জয়ী হয়েও সুষ্ঠু ও অসামরিক শাসন বা সামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হয়নি এবং সেই সব অঞ্চলে মাঞ্চু বাহিনী দখল করে নেয়। বিদ্রোহীদের মতাদর্শের কতগুলি বৈশিষ্ট্য অনেকেই ভালোভাবে নেয়নি। বিদ্রোহীরা খ্রিস্ট ধর্মের প্রভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। নেতা হাং-শিউ-চুয়ান নিজেকে যিশুখ্রিস্টের ভাই বলে দাবি করেছিল। বিদ্রোহীদের খ্রিস্ট ধর্মের প্রতি এতটা টান জনগণের একটা অংশকে তাদের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। তাছাড়া বিদ্রোহীদের মন্দির ধ্বংস করা এবং প্রাচীন রীতি নীতি গুলিকে আক্রমণ করা অনেকের কাছে অপ্রিয় ছিল। বিদ্রোহীদের নিজস্ব মতবাদের গোঁড়ামি ছিল বলে মাঞ্চু ব...

Taoism | তাওবাদ

Please visit our Homepage and Subscribe us.  Taoism | তাওবাদ প্রাক-আধুনিক চিনা চীনের ইতিহাসে কনফুসিয়াসবাদ এর পরেই স্থান ছিল তাওবাদ এর স্থান। তাওবাদ সবকিছু থেকে সরে থাকার ও প্রত্যাহার করে নেবার দর্শন। তাওবাদ এ যুদ্ধ, ধ্বংস এবং মৃত্যুকে ঘৃণা করা হয়েছে। তাই ওরা ক্ষমতা, সম্পদ ও মর্যাদা অর্জনের জন্য সংঘাত এড়িয়ে চলার পক্ষপাতী ছিলো। ওরা মনে করত স্থান ও কাল অনন্ত। একজন ব্যক্তি এই মহাজাগতিক বিশ্বের এক একটি ক্ষুদ্র বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তাওবাদ ছিল শাসকের স্বৈরাচার এবং কনফুসিয়াসের অহেতুক নৈতিকতার বিরোধী দর্শন। ওরা প্রকৃতির মধ্যে পথ বা তাও এর অনুসন্ধান করেছেন। তাওবাদ জানার উপাদান খুবই কম। খুব সম্ভবত তৃতীয় খ্রীষ্টপূর্বাব্দে রচিত তাও -তে- চিং গ্রন্থটি একমাত্র নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ|। Thanks for reading. https://amzn.to/2RyEvHP

Junk Trade | জাঙ্ক বাণিজ্য

Please visit our Homepage and Subscribe us. Junk Trade | জাঙ্ক বাণিজ্য প্রাক আধুনিক চীনে ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল অবহেলিত। চীনের মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ। চীনারা নিজেদের স্বর্গের নিচে বসবাসকারী সভ্য জাতি বলে মনে করত এবং চিন সাম্রাজ্যের বাইরে বসবাসকারী লোকদের সাথে কখনই সমপর্যায়ে সম্পর্ক গড়ত না। চীনাদের এই ধারণা এবং সামন্ততান্ত্রিক কাঠামো তাদের বাণিজ্যে অবহেলা করতে শিখিয়েছিল। কেবল মাত্র ক্যান্টন বন্দরে বিদেশীরা বাণিজ্য করতে পারত এবং স্থলপথের নজরানার প্রথার অনুষঙ্গ হিসাবে পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য চলত। নজরানা ও কাউটাউ প্রথা বহির্ভূত আরো এক প্রকার বেসরকারি বাণিজ্য প্রচলিত ছিল, যা জাঙ্ক বাণিজ্য নামে পরিচিত। জাঙ্ক হল একপ্রকার চিনা বাণিজ্য জাহাজ। অস্ট্রো-এশীয়ান  বাণিজ্যতরী মডেলে এই জাহাজ তৈরি হতো। সাঙ যুগ থেকে জাঙ্ক এর ব্যবহার চলে আসছিল এবং ইউরোপীয়দের চীনে আগমন পর্যন্ত এই জাহাজের ব্যবহার ছিল সবচেয়ে বেশী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারতের সাথে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই জাঙ্ক বাণিজ্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শ্যাম, আন্নাম, মালাক্কা মাল উপদ্বীপ এবং জাভা প্রভৃতি অঞ্চলে ...

Treaty of Tientsin 1858 | তিয়েন্তসিনের সন্ধি

Please visit our Homepage and Subscribe us. দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধে কার্যত চীনের পরাজয় ঘটে। ইঙ্গ ফরাসি বাহিনী ক্যান্টন দখল করে নেয় এবং উত্তর দিকে অগ্রসর হলে পিকিং আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে চীন তিয়েনসিনের সন্ধি (১৮৫৮) স্বাক্ষর করে। আমেরিকা ও রাশিয়া যুদ্ধে যোগদান না করলেও ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মতই সুযোগ সুবিধাগুলি পৃথক পৃথক চুক্তি সম্পাদন করে অর্জন করে নেয়। Treaty of Tientsin তিয়েনসিনের সন্ধি শর্ত গুলি হল ১) কূটনৈতিক সমতার ভিত্তিতে পশ্চিমা শক্তিগুলো পিকিং এ একজন করে মন্ত্রী স্থায়ীভাবে রাখার অধিকার পেল। ২) দশটি নতুন চিনা বন্দর পাশ্চাত্যের কাছে উন্মুক্ত হল। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চেফু, চিনকিয়াং, হ্যানকাও, কিউকিয়াং, কিউংচাও, নিউচিয়াং, সওতো,ওয়েনচাও, ন্যাংকিং প্রভৃতি। ৩) চীনের অভ্যন্তরে বিদেশিদের ভ্রমণ করার অধিকার দেওয়া হয় এই শর্তে যে, সেজন্য তাদের নিজ নিজ কনসালদের দেওয়া এবং চিনা কর্তৃপক্ষের সই করা অনুমতি পত্র বা পাসপোর্ট নিতে হবে। ৪) আমদানি করা বিদেশী পণ্যের উপরে অভ্যন্তরীণ শুল্কের হার শতকরা ২.৫ ভাগের বেশি ধার্য হবে না। ৫) যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ চীন ব্রিটেনকে ৪০ লক্...

Second Opium War | দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধ

Please visit our Homepage and Subscribe us. Second Opium War | দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধ নানকিং ও তার পরবর্তী চুক্তিগুলি পশ্চিমী শক্তিগুলোর সাথে চীনের সম্পর্কে শান্তি আনতে পারেনি। বরং চীনের উপর বিদেশিদের দাবি উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে, যা চীনের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। বিশেষ করে ব্রিটিশদের মনে এই ধারণা জন্মায় যে, চীনের কাছ থেকে আরো কিছু সুযোগ সুবিধা আদায় করে নিতে না পারলে তার স্বার্থ পুরোপুরি সুরক্ষিত হবে না। অন্যদিকে চীনাদের পক্ষে পশ্চিমাদের সদর্প উপস্থিতি মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এই পরিস্থিতিতে আরো একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয় (1856), যা দ্বিতীয় ইঙ্গ চীন যুদ্ধ বা দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধ নামে পরিচিত। যুদ্ধের কারন নানকিং এর সন্ধির মাধ্যমে পাঁচটি বন্দর বিদেশীদের কাছে উন্মুক্ত হয়েছিল। সাংহাই ও নিংপোতে 1843 এবং আময় ও ফুচাওয়ে 1844 সালে বিদেশিদের বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া গেছিল। কিন্তু ক্যান্টনে স্থানীয় অধিবাসীদের তরফ থেকে জোর প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল। তাদের দাবি ছিল বিদেশীরা ক্যান্টনের পুরনো শহরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ চুক্তিতে এরকম কোন কথা নেই। তারা চাইলে যেখানে তাদের গুদাম গুলি গড়ে ...

Treaty of Nanking | নানকিং এর সন্ধি

Please visit our Homepage and Subscribe us. Treaty of Nanking | নানকিং এর সন্ধি প্রথম ইঙ্গ চীন যুদ্ধ চীনের জয়লাভ অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় শোচনীয় পরাজয় এবং সম্পূর্ন অপদস্ত হওয়া থেকে বাঁচতে পিকিং এর রাজদরবার বৃটেনের সঙ্গে 1842 সালের 29 আগস্ট নানকিং এর চুক্তি সম্পাদন করে। চীনের ইতিহাসে এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ চীনে এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ঔপনিবেশিকতার সূচনা হয় এবং চিনে এক যুগের সমাপ্তি হয়। নানকিং এর সন্ধির শর্তগুলি নিম্নরূপ: 1. ব্রিটিশ বণিকদের কাছে বণিকদের ঋণ পরিশোধ এবং যুদ্ধ  ও লিনের হাতে অফিন ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ বাবদ ব্রিটেনকে দু'কোটি 10 লক্ষ ডলার দিতে সম্মত হয়। 2. ক্যান্টন হং বণিকদের একচেটিয়া অধিকার লুপ্ত হয়। 3. ক্যান্টন, আমায়, ফু চাও এবং সাংহাই এই পাঁচটি বন্দরে এখন থেকে ব্রিটিশ জনপ্রতিনিধি এবং বণিকদের বসবাস ও ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হয়। 1843 এ বোগের/হুমেনের সন্ধিতে ব্রিটেন চিনে অতিরাষ্ট্রিক অধিকার ও সর্বাপেক্ষা অনুগৃহীত দেশের মর্যাদা পায়। 4. হংকং বৃটেনের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। 5. বিদেশি পণ্যের ওপর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শুল্ক ধার্য হবে এবং সেই পরিমাণ অনতিবিলম্বে নি...

প্রথম আফিমের যুদ্ধ | First Opium War

Please visit our Homepage and Subscribe us. প্রথম আফিমের যুদ্ধ | First Opium War চীনের উপনিবেশীকরণের ইতিহাসে ইঙ্গ চীন যুদ্ধ  বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পরপর দুটি ইঙ্গ চীন যুদ্ধ (১৮৩৯-৪২ এবং ১৮৫৬-৫৮) সংঘটিত হয় এবং দুটিতেই চীনের পরাজয় ঘটে।  আফিমের চোরাচালানকে কেন্দ্র করে এই যুদ্ধদ্বয় সংঘটিত হয়েছিল বলে আফিমের যুদ্ধ নামেও পরিচিত। Opium War 1 প্রথম আফিম যুদ্ধের কারণ ব্রিটেন আমেরিকাসহ পশ্চিমা বণিকরা চীনের সঙ্গে সমপর্যায়ে দাঁড়িয়ে দ্বিমুখী বাণিজ্য করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিয়ে আসছিল। কনফুসীয় আদর্শে প্রভাবিত চীন তাং যুগ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। তারা বিশ্বাস করতো যে,  চিন হল স্বর্গের নিচে অবস্থিত মধ্যরাজ্য। চীনের বাইরে বসবাসকারী সমস্ত মানুষই বর্বর। তাই বর্বর পশ্চিমীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। যদি কেউ চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখতে চায় তাহলে তাদেরকে করদ রাজ্য হিসেবেই বিবেচনা করা হবে এবং মাঞ্চু সরকারের মর্জি মতই বাণিজ্য করতে হবে। পশ্চিমী বণিকদের তাই চিনা দরবারে নিয়মিত  নজরানা পাঠাতে হত এবং সম্রাটের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ' কাউটাউ' প...

ক্যান্টন বাণিজ্য | Canton Trade

Please visit our Homepage and Subscribe us. ক্যান্টন বাণিজ্য | Canton Trade চীনের সাথে পশ্চিমী শক্তিগুলির যোগাযোগের ইতিহাসে  ক্যান্টন  বানিজ্যের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।  তাং যুগ থেকেই দক্ষিণ চীনের এই বন্দর-শহর ক্যান্টন ছিল বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি প্রধান ঘাঁটি।  ভাস্কো-ডা-গামা  কর্তৃক আফ্রিকা ঘুরে ভারতে আসার জলপথ আবিষ্কার হওয়ার পর থেকেই পর্তুগিজরা এবং পরে অন্যান্য ইউরোপীয় বাণিজ্যিক শক্তিগুলি ক্যান্টনে এসে হাজির হয়। ইংরেজরা ক্যান্টন ছাড়াও অ্যাময় ও নিংপোতে  ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে  মাঞ্চু  সরকার একমাত্র ক্যান্টন বন্দর বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত করেন এবং অন্যত্র বিদেশিদের অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ হয়। canton trade ক্যান্টন বাণিজ্যে ইউরোপীয়দের বেশ কিছু কঠিন শর্ত মেনে চলতে হত। বিদেশিদের প্রতি হীন দৃষ্টিভঙ্গিগত কারণে চীনারা তাদের ওপরে এই রকম শর্ত আরোপ করত। আধুনিক পশ্চিমী শক্তিগুলিকে চীনারা তাদের প্রতিবেশী করদ রাজ্যের থেকে বেশি কিছু ভাবতো না। বরং মনে করত যে, মাঞ্চু সরকার কৃপা করে তাদের ক্যান্টন বাণিজ্য করার অধিকার দিয়েছে, বিদেশিদের কাছ থেকে ...

কনফুসিয়াসবাদ

Please visit our Homepage and Subscribe us. কনফুসিয়াসবাদ প্রাক আধুনিক চীনা সমাজে চিন্তা ভাবনার জগতে যে আদর্শের প্রভাব সবচেয়ে বেশি ছিল তা হল কনফুসিয়াসবাদ।কনফুসিয়াস ছিলেন একজন শিক্ষক ও দার্শনিক। তিনি আজও পূর্ব এশিয়ার শ্রেষ্ঠ দার্শনিক এর মর্যাদা পেয়ে থাকেন। চিনা রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অর্থনীতি, সমাজ, এবং সাংস্কৃতিক জীবন কনফুসিয়াসের দর্শনের দ্বারা পরিচালিত হত। ফেয়ার ব্যাংক মনে করেন, চিনা কমিউনিস্টরা পর্যন্তও কনফুসিয়াস কে অগ্রাহ্য করতে পারেননি। কনফুসীয় নামটি চিনা ' কুৎ-ফু-ৎজু' এর ল্যাটিন সংস্করণ। ৎজু শব্দটির ইংরাজী প্রতিশব্দ হলো মাস্টার। কনফুসিয়াসের দর্শন সম্পর্কে আমরা জানতে পারি ' লুন-উ' বা বচন সংগ্রহ থেকে, যেখানে তার শিষ্যরা প্রশ্ন করেছেন এবং তিনি উত্তর দিচ্ছেন। তাঁর রচিত একটি গ্রন্থ আছে যার নামের বাংলা তর্জমা হল লু  রাজ্যের ইতিবৃত্ত । তিনি একজন রাজনীতিবিদের জীবন বেছে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে তিনি শিক্ষকতার জীবনকে বেছে নেন। তার চিন্তা ভাবনার কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল মর্ত্যের সমস্যাগুলি। তাই অতি ভৌতিক বা অতি মানবিক বিষয়ে তার তেমন উৎসাহ ছিল না। ...

নজরানা প্রথা | Tribute System

Please visit our Homepage and Subscribe us. নজরানা প্রথা | Tribute System প্রাক আধুনিক চীনের সমাজে ঐতিহ্যগত ধারণা ছিল যে, পৃথিবী বর্গাকার এবং স্বর্গ গোল। বর্গাকার পৃথিবীর যে অংশের উপর স্বর্গের গোল ছায়া পড়ে সেটি হল চীন। তাই চীনারা হলো স্বর্গের সন্তান এবং পৃথিবীর মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট জাতি। চীনের বাইরে বসবাসকারী সমস্ত মানুষই বর্বর। তাই বর্বরদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চীন আগ্রহী নয়। তবে কেউ যদি চায় তাহলে সম্পর্ক রাখতে পারে, তবে তা অবশ্যই সমপর্যায়ে দাঁড়িয়ে নয়। চীনাদের এই ঐতিহ্যগত ধারণা চীনের বৈদেশিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করত।  প্রাক আধুনিক চীনের বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম শর্ত ছিল 'নজরানা' ও 'কাওটাও' প্রথা। নজরানা হল চিনা সম্রাট কে তাঁর প্রতি আনুগত্যের নিদর্শনস্বরূপ উপহার প্রদান করা এবং কাওটাও হল নতজানু হয়ে সম্রাট কে আনুগত্য প্রদর্শন করা। প্রাচীনকালে সামন্তপ্রভু ও ভূস্বামীদের সম্রাটের প্রতি আনুগত্যের নিদর্শনস্বরূপ 'নজরানা' এবং 'কাওটাও' প্রথা মেনে চলতে হত। কাল কালক্রমে প্রতিবেশী দেশগুলি এবং এমনকি পশ্চিমা দেশগুলি কেও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই প্রথ...