সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

Gupta Age লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

গুপ্ত যুগের মন্দির স্থাপত্য | Temple Architecture of the Gupta Period

গুপ্ত যুগের মন্দির স্থাপত্য  স্থাপত্যের ইতিহাসে গুপ্তযুগ বিশেষ স্থানের অধিকারী। এই সময় মন্দির স্থাপত্য রীতির সূচনা হয়। চৈত্য ও স্তুপ-এর পাশাপাশি পাথর বা ইটের দেবায়তন গড়ার প্রবণতা দেখা দেয়। এই প্রকার স্থাপত্যের কেন্দ্রীয় লক্ষণ হল বর্গাকৃতি প্রকোষ্ঠ নির্মাণ। একে গর্ভগৃহ বলে। সাঁচি বা টিগাওয়ার প্রাচীন মন্দির গুলিতে এরকম গর্ভগৃহ দেখা যায়। স্তম্ভযুক্ত আয়তাকার অলিন্দ সদৃশ একটি অংশ থাকে। এখানে মনে হয় দর্শনার্থীরা এসে দাঁড়াত। মন্দিরের উপরিকাঠামো শিখর বিহীন এবং বাইরের চার দেওয়ালে কোন অলংকরণ নেই।  উত্তর ভারতীয় মন্দির স্থাপত্য শৈলীর প্রধান বৈশিষ্ট্য সুউচ্চ শিখর, যা মন্দিরের উপরিকাঠামো হিসাবে নির্মিত। আলোচ্য পর্বে এই প্রবণতারও সূচনা হয়। দেওগড়ের বিষ্ণু মন্দিরের গর্ভগৃহটি বর্গাকার এবং এর চারিদিকেই আয়তাকার সংলগ্ন এলাকা এবং প্রতিটিতেই চারটি করে স্তম্ভ আছে। এর ভিত্তি-নকশা অনেকটা পাশা খেলার ছকের মত দেখায়। সমগ্র মন্দিরটা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। পাঁচিলের চারিদিকে সিঁড়ি মন্দির চত্বরে ওঠার জন্য।  সমগ্র পরিকল্পনাটি ক্রুশ আকারের দেখায়।  দেওগড়ের দশাবতার মন্দিরটি বাইরে প্রজেকশনের ম...

গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন | Decline of Gupta Empire

গুপ্ত সাম্রাজ্য পতনের জন্য কি শুধু হুন আক্রমণ দায়ী ছিল?  আড়াইশো বছরব্যাপী গুপ্ত শক্তির প্রাধান্য কার্যত স্কন্দগুপ্তের রাজত্ব সমাপ্তির পর শেষ হতে থাকে। বুধগুপ্ত শেষ গুপ্ত সম্রাট যিনি বৃহৎ আয়তনের ভূখণ্ডের উপর কর্তৃত্ব বজায় রেখেছিলেন। যদিও পশ্চিম ভারত তার অধিকারে ছিল না। গুপ্তসাম্রাজ্যের ক্ষয়িষ্ণু অবস্থার জন্য বহু ঐতিহাসিক হুন আক্রমণকে প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন। যদিও বিষয়টি গভীরতর অভিনিবেশ দাবি করে। স্কন্দগুপ্ত হুন আক্রমণের স্বার্থক মোকাবিলা করলেও পঞ্চম শতকের শেষ ও ষষ্ঠ শতকের সূচনায় তোরমান ও মিহির কুলের নেতৃত্বে হুনরা ক্ষমতাবান হয়ে ওঠে।  ৪৮৪ খ্রিস্টাব্দ এরান অঞ্চলে বুধ গুপ্তের অধীনস্ত স্থানীয় শাসক ছিলেন মাতৃবিষ্ণু। বুধগুপ্তের পর ৫০০ খ্রিস্টাব্দে হুন শাসক তোরমানের প্রথম রাজ্যবর্ষে এরান এলাকার স্থানীয় শাসক ধন্যবিষ্ণু, যিনি মাতৃবিষ্ণুর ভ্রাতা তোরমানের প্রাধান্য স্বীকার করে নিল। কুরা  লেখ থেকে জানা যায় কাশ্মীরেও তোরমানের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, গঞ্জলি থেকে প্রাপ্ত তোরমানের তিনটি তাম্রশাসন থেকে জানা যায় গুজরাট অঞ্চলে হুন অধিকার তোরমানের রাজত্বের পর অন্তত ১৯ বছর পর্...

কামসূত্রে বর্ণিত গুপ্তযুগে নাগরকদের জীবনচর্যা | The Life of Nagarakas in the Gupta Era as Depicted in the Kamasutra

কামসূত্রে বর্ণিত গুপ্তযুগে নাগরকদের জীবনচর্যা গু প্ত যুগে সম্ভ্রান্ত নগরবাসীদের বলা হত নাগরক। বাৎসায়ন রচিত কামসুত্রে এই নাগরকদের জীবনচর্যার একটি মনোজ্ঞ বিবরণ আছে। নাগরকরা প্রচুর সম্পত্তির অধিকারী ছিলেন। কৃষিজ উৎপাদনের উদ্বৃত্ত এবং সফল বাণিজ্য পরিচালনার মাধ্যমে এরা প্রভূত সম্পদ উপার্জন করেছিলেন। সম্পত্তির অপ্রতুলতার ছাপ পড়েছিল তাদের নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে। একটি বিশেষ ধরনের জীবনে তারা অভ্যস্ত ছিল, যেখানে প্রতিনিয়ত ভোগ বিলাস এবং সাংস্কৃতিক রুচির সংমিশ্রণ লক্ষণীয়। নাগরকদের আবাস ছিল বিলাসবহুল। অন্দরমহল পরিবারের নারীদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। প্রতিটি কক্ষ এক একটি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো। শয়ন কক্ষে থাকতো দুটি সুখপ্রদ শয্যা ও বালিশ, দেয়ালে কুলুঙ্গি ও তাক এবং সেই তাকে বীণাযন্ত্র, অঙ্কন সামগ্রী, পুস্তক ও মাল্য থাকতো। মেঝেতে পিকদানি এবং এক পাশে পাশা ও দাবা খেলার ছক থাকতো। স্তম্ভযুক্ত বারান্দা ছিল এবং দেয়ালে নানা রংয়ের কারুকার্য ছিল। ঘরের মেঝে মূল্যবান পাথর বা টালি দিয়ে নির্মিত হতো। বাইরে সম্মুখে থাকতো ফুল ও ফলের বাগান। সেই বাগানে গ্রীষ্মকালে বিশ্রামের জন্য একটি জলবেষ্টিত সমুদ্রগৃহ থাকত। বা...

গুপ্ত যুগে নারীদের অবস্থান | The Position of Women in the Gupta Era

গুপ্ত যুগে নারীদের অবস্থান ভা রতে গুপ্ত যুগকে সুবর্ণ যুগ বলা হয়। কোন সভ্যতার উৎকর্ষতা অনেকটাই নির্ভর করে সেই সমাজে নারীর অবস্থানের উপর। তাই কল্পিত স্বর্ণযুগ গুপ্ত যুগে নারীর অবস্থান কতটা উচ্চ ছিল তা আলোচনার অবকাশ রাখে। সমকালীন স্মৃতিশাস্ত্র সমূহ, হিউয়েন সাঙের বিবরণ এবং বিশেষ করে বৎসায়নের কামসূত্র এক্ষেত্রে বিশেষ সহযোগী।  গুপ্ত যুগে সাধারণ ভাবে নারীর বেদ চর্চা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়েদের শিক্ষা-দীক্ষায় বাধা ছিল না। বাৎসায়ন সাধারণ মেয়েদের জন্য শিক্ষামূলক বিষয়ের একটি তালিকা প্রদান করেছেন যার মধ্যে কবিতা আবৃত্তি, শ্লোকের  পদপূরণ, সমার্থক শব্দের অভিধান এবং অলংকার ও ছন্দ সম্পর্কে জ্ঞান লাভের কথা বলা হয়েছে। এগুলিকে 'অঙ্গবিদ্যা' বলা হয়েছে। 'নাগরক'দের স্ত্রীদের গণিত শাস্ত্রের জ্ঞান থাকা জরুরি ছিল। এছাড়া সংগীত, নৃত্য, অঙ্কন প্রভৃতি বিষয়ে তাদের দক্ষতা থাকতে হত। কিছু শিক্ষিতার কথা আমরা জানতে পারি; যেমন: রাজ্যশ্রী, অনুসূয়া, মালবিকা, সাগরিকা, আরণ্যকা, মালতি প্রমূখ। রাজ্যশ্রী নৃত্যগীত ও চিত্রাঙ্কনে সুদক্ষা ছিলেন । অমরকোষ এ মহিলা শিক্ষিকাদের উপাধ্যায়া ...