সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

Modern Japan লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

জাপানে সমরবাদের উত্থান: কুরাই তানিমা | Kurai Tanima: The Dark Age in Japan

জাপানে সমরবাদের উত্থান: কুরাই তানিমা ১৯৩১ থেকে ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে জাপানের ইতিহাসে কুরাই তানিমা হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। এর অর্থ হলো অন্ধকারাচ্ছন্ন উপত্যকা। আলোচ্য করবে দেখা যাবে যে, ১৯২০-র দশকে জাপানে যে গণতন্ত্র ও উদারনীতিবাদের বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল সেগুলিকে সমূলে উৎপাদিত করে জঙ্গি জাতীয়তাবাদ এবং সমরবাদের প্রসার ঘটেছিল। এবং এর ফলে জাপান ক্রমশ ফ্যাসিবাদের পথে এগিয়েছিল। অমানবিক হিংসা এবং রাজনৈতিক হত্যালীলা জাপানের রাজনীতিতে একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়। দেশের অভ্যন্তরে একের পর এক রাজনৈতিক হত্যা সংঘটিত করার ষড়যন্ত্র এবং বিদেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপ্রতিহত আগ্রাসন ছিল এই পর্বের প্রধান বৈশিষ্ট্য, যা জাপানকে ক্রমশ এক অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।  জাপানে উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্থানের পিছনে একাধিক কারণ ছিল। প্রথমত, বিশ্বজোড়া অর্থনৈতিক মন্দা জাপানের অর্থনীতিকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। জাপানি পণ্যের রপ্তানি হ্রাস পাওয়ার ফলে কৃষক শ্রেণীর অবস্থা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছিল। এই সময় জঙ্গি জাতীয়তাবাদী ও সামরিক কর্তৃত্বের সমর্থকরা...

মেইজি জাপানে শিল্পায়ন | Industrialization in Meiji Japan

মেইজি জাপানে শিল্পায়ন  মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর জাপান অর্থনৈতিক সংস্কারের উপর বিশেষ জোর দিয়েছিল। মেইজি জাপানের লক্ষ্য ছিল আধুনিক পুঁজিবাদী অর্থনীতির পথ প্রশস্ত করা। শোগুনতন্ত্রের পতনের পশ্চাতে জাপানের অর্থনৈতিক অচলাবস্থা অন্যতম কারণ ছিল। তাই জাপান চেয়েছিল একটি শক্তিশালী পুঁজিবাদী রাষ্ট্র  গড়ে তুলতে, যার মাধ্যমে তারা বৈদেশিক শক্তিগুলির আক্রমণের আশঙ্কা দূর করতে পারবে এবং ভবিষ্যতে পশ্চিমের সাথে পাল্লা দিয়ে এগোতে পারবে। ১৮৫৮ - ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জাপান পাশ্চাত্য দেশগুলির সঙ্গে বেশ কিছু বাণিজ্যিক চুক্তি স্থাপন করে নিজেকে অবাধ বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত করেছিল। ফলে জাপানকে এক অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়তে হয়েছিল এবং এর ফলে জাপানের হস্তশিল্প ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল, তীব্র অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল। মেইজি  সরকার প্রচুর পরিমাণে কাগজের নোট ছাপিয়ে এই সংকট দূর করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি এবং মূল্যবৃদ্ধি এক বিরাট সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। তৎকালীন জাপানের অর্থমন্ত্রী মাৎসুকাটা উপলব্ধি করেছিলেন যে, জাপানের অর্থনৈতিক সংকটের পেছনে দুটি কারণ-- ১) ধাতব মুদ্রার ...

টোকুগাওয়া শোগুনতান্ত্রিক জাপানের সামাজিক স্তরবিন্যাস | Social Hierarchy in Japan DuringTokugawa Shogunate

টোকুগাওয়া শোগুনতান্ত্রিক জাপানের সামাজিক স্তরবিন্যাস সূর্যোদয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত জাপান দীর্ঘদিন ধরে বহিঃজগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের শাসনের শেষ দিকে জাপান মুক্ত বিশ্বের দরবারে উন্মুক্ত হয়েছিল। এর আগে জাপান ছিল রুদ্ধদ্বার দেশ। তাই প্রাক আধুনিক জাপানের সামাজিক স্তরবিন্যাস অনুসন্ধান করা কঠিন। তবে রুশ জাহাজের ক্যাপ্টেন ভ্যাসিলি গ্যালোওনিন ৩ বছর ধরে জাপানের জেলে বন্দি ছিলেন। বন্দিদশায় তিনি যে স্মৃতি গ্রন্থ  লিখে গেছিলেন তার ভিত্তিতে উনিশ শতকীয় জাপানের সামাজিক স্তর বিন্যাস করা যায়। তাঁর বিবরণ অনুযায়ী জাপানি সমাজ আট ভাগে বিভক্ত ছিল। কিন্তু অন্যান্য ঐতিহাসিক দলিলের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে জাপানি সমাজকে ঐতিহাসিক ও সমাজতাত্ত্বিকগন মোটামুটি পাঁচটি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন-- ডাইম্যো, সামুরাই, কৃষক, কারিগর এবং বণিক। সেই সময় ক্রীতদাস প্রথার প্রচলন ছিল কিনা তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। ডাইম্যো :  click here to read about Daimyo সামুরাই click here to read about Samurai কৃষক সমগ্র জনসংখ্যার তিন- চতুর্থাংশ ছিল কৃষক। মূলত দুই ধরনের কৃষকের অস্তিত্ব ছিল। একদল ছিলেন অতি ক্ষুদ...

The Satsuma Rebellion, 1877 | ১৮৭৭ এর সাৎসুমা বিদ্রোহ

১৮৭৭ এর সাৎসুমা বিদ্রোহ মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর মেইজি কর্তৃপক্ষ জাপানে সামন্ত ব্যবস্থার অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল, যেগুলি সরাসরিভাবে জাপানের ঐতিহ্যগত সামরিক শ্রেণী সামুরাইদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছিল। এর প্রতিক্রিয়াই ছিল একেরপর এক সামুরাই বিদ্রোহ, যার মধ্যে অন্যতম ছিল সাৎসুমা বিদ্রোহ (১৮৭৭ খ্রি:)। জাপানের মোট জনসংখ্যা ৩৪ মিলিয়নের মধ্যে ১.৭৫ মিলিয়ন ছিল সামুরাই। টোকুগাওয়া যুগে দীর্ঘদিন ধরে কোন যুদ্ধ না থাকায় সামুরাই শ্রেণীর একটা বড় অংশ তাদের দীর্ঘ অবসর সময়ে নিজেরা নিজেদেরকে শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং প্রশাসন ব্যবস্থায় নিযুক্ত করেছিল। তাই বহু সামুরাই প্রশাসন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে নিজেদের ভবিষ্যৎ খুঁজে নিয়েছিল। কিন্তু তখনও একটা বড় অংশই থেকে গেছিল যারা পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় সামরিক কাজের উপর নির্ভরশীল ছিল। মেইজী সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সামুরাইদের মাইনে বন্ধ করে দিয়ে পেনশনের ব্যবস্থা করে এবং কিছুদিন পরে সেই পেনশন বন্ধ করে দিয়ে এককালীন একটা টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এর ফলে সামুরাইদের জীবনযাত্রার মানের অবনতি হয়। দ্বিতীয়তঃ মেইজি সরকার আইন জারি করে...

টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের পতন

টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের পতন  উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে জাপান বহির্বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত হয় এবং দীর্ঘদিনের বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটে। এই ঘটনার কিছু দিনের মধ্যেই জাপানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এক সুদুরপ্রসারী পরিবর্তন ঘটে যায়। ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে জাপানে টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। প্রতীকিভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতার শীর্ষে সম্রাটের উপস্থিতি থাকলেও শোগুনের হাতেই সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত ছিল। উনিশ শতকের গোড়া থেকেই শোগুন শাসন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং এই শতকের শেষার্ধেই জাপানে শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং সম্রাটকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়, যা মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা নামেও পরিচিত। শোগুনতন্ত্রের পতনের ব্যাখ্যা বিভিন্ন পন্ডিত বিভিন্নভাবে করেছেন। অনেকেই শকুনতন্ত্রের পতনের পশ্চাদে শিন্টো ধর্মের পুনরুত্থান এবং বিদেশি বিরোধী জাপানি জাতীয়তাবাদকে দায়ী করেছেন। জাপানের বেশিরভাগ মানুষ শিন্টো ধর্ম পালন করত। কিন্তু শোগুন শাসকেরা বৌদ্ধ ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্মে পরিণত করেছিল। বৌদ্ধধর্ম চীন দেশ থেকে জাপানে এসেছিল এবং শকুন শাসকদের উপরে চীনা প্রভাবও ছিল। ১৮ শতকের প্রখ্যাত জাপানি তাত্ত্বিক নোবুনাগা মোটুরি শিন্টো ধর্ম...

মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা | Meiji Restoration

মেইজি (১৮৬৮) পুনপ্রতিষ্ঠার পেছনে রাজনৈতিক বিন্যাস টোকুগওয়া শোগুনের যুগে ইয়েডো ছিল জাপানের শাসনকেন্দ্র। শোগুন রাজধানী ইয়েডোতে বসে দেশ শাসন করতেন। আর সম্রাট থাকতেন কিয়োটো শহরে। কিয়াটোতে একটি শোগুন বিরোধী গোষ্ঠী তৈরি হয়। এরা শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে সম্রাটকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার জন্য যে আন্দোলন করে তার পরিণতিতে জাপানের মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা।  মার্কিন ও অন্যান্য পশ্চিমী দেশগুলির যখন জাপানের আবরণ উন্মোচনের জন্য চাপ দিচ্ছিল তখন শোগুনরা পশ্চিমীদের পক্ষে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু শোগুন বিরোধী গোষ্ঠী স্লোগান তোলে 'সম্রাটকে সমর্থন করো ও বিদেশিদের বিতাড়িত কর'। এই পরিস্থিতিতে নাওসুকে নামে এক শোগুনকে শোগুন সরকারের প্রধান পরামর্শদাতা নিযুক্ত করা হয়। তিনি সম্রাট এবং শক্তিশালী ভাইসরয়দের বাধা উপেক্ষা করে আমেরিকার সাথে 'হ্যারিস চুক্তি' স্বাক্ষর করেন এবং শোগুন বিরোধী চক্র ভেঙে ফেলার জন্য কতগুলি পদক্ষেপ নিতে থাকেন। নওসুকে -এর কঠোর পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে আন্দোলন জোরদার হয়। চারটি গোষ্ঠী - সাৎসুমা, চোসু, হিজেন ও তোসা এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নেয়। শোগুন এবং বিদেশি উভয়ের বিরোধিতা ব...

জাপানে সংবিধানের জন্য গণআন্দোলন | Mass Movement before Meiji Constitution

 ১৮৬৮-১৮৮৯ খ্রীঃ পর্যন্ত জাপানি সংবিধানের জন্য গণআন্দোলন মেইজি কর্তৃপক্ষের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অবদান ১৮৮৯ খ্রীঃ জাপানের জন্য একটি নতুন সংবিধান রচনা, যা সাধারণত মেইজি সংবিধান নামে পরিচিত। শোগুন্তন্ত্রের অবসানের পর মেইজি নেতারা সংসদীয় ধাঁচের একটি সংবিধান রচনার আবশ্যকতা অনুভব করেন এবং সেজন্য আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনের দুটি পর্ব  ছিল। প্রথমটি ১৮৭৩-৮১ খ্রি. এবং দ্বিতীয়টি ১৮৮২-৮৯ খ্রি.। ঐতিহাসিক ভিনাক বলেছেন, এই সংবিধানের বীজ নিহত ছিল ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দের Charter Oath ( সনদভুক্ত শপথপত্র ) এর মধ্যে, যেখানে ঘোষণা করা হয়েছিল দেশের সমস্যাবলী প্রকাশ্যে বিচার-বিবেচনা করার জন্য একটি পরিষদ গঠিত হবে। কিন্তু এই ঘোষণাকে সম্রাট কর্তৃক জনপ্রতিনিধিমূলক সংসদীয় সংবিধান দানের প্রতিশ্রুতি হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং প্রতিশ্রুতি যাতে কার্যে রূপায়িত হয় তার জন্য আন্দোলন শুরু হয়। অন্যদিকে রক্ষণশীল নেতৃবৃন্দ জনগণের হাতে শাসনক্ষমতা দানের বিরোধী ছিলেন। প্রকৃত আন্দোলনের সূত্রপাত করেন চোষু সামুরাই 'কিডো', যিনি উদার মনোভাব সম্পন্ন ছিলেন এবং যুরোপ ভ্রমনের অভিজ্ঞতাও তার ছিল। তার বক্তব্য ছিল জনমতকে অগ্রাহ্য করে...

মেইজি সংবিধান | Meiji Constitution

 মেইজি সংবিধান জাপানে মেইজি শাসনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অবদান দেশের জন্য একটি নতুন সংবিধান তৈরী। মেইজি পুনস্থাপনের পর থেকে জাপানে যে নতুন রাজনৈতিক বাতাবরনের সৃষ্টি হয়েছিল তাতে 'স্বাধীনতা ও জনগনের অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলন' প্রবল আকার ধারন করেছিল। ব্যপক গণ আন্দোলনের চাপে মেইজি সরকার  একটি নতুন সংবিধান প্রবর্তনে রাজি হয়। ইটো হিরোবুমি -র উপর সংবিধান রচনার দায়িত্ব ন্যস্ত হয়। ইটো ইউরোপে চলে যান অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য। ইউরোপ থেকে ফিরে নতুন সংবিধান প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে কয়েকটি প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহন  করেছিলেন। ১৮৮৪ খ্রি ৫টি স্তরবিশিষ্ট একটি নতুন অভিজাত শ্রেণী তৈরি করা হয় এবং সিদ্ধান্ত হয় এই শ্রেণীর প্রতিনিধিদের নিয়ে ভবিষ্যতে ব্যবস্থাপক সভা গঠিত হবে। ১৮৮৪ খ্রি নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয় যার প্রধান হন ইটো। ১৮৮৮ তে প্রিভি কাউন্সিল তৈরি করা হয় এবং এরও সভাপতি হন ইটো। ১৮৮৯ খ্রি ফেব্রুয়ারি মাসে মেইজি সম্রাট আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন সংবিধান প্রবর্তন করেন। বস্তুত এই সংবিধানের একমাত্র উদ্দেশ্য যাবতীয় কর্তৃত্ব শাসকশ্রেণীর হাতে বজায় রাখা। নতুন সংবিধানে সম্রাটকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠি...

চীন-জাপান যুদ্ধের (১৮৯৪) পটভূমি | Background of Cino-Japan War, 1894

চীন-জাপান যুদ্ধের (১৮৯৪) পটভূমি: মেইজি শাসকরা জাপানকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। এই প্রয়াসের পশ্চাতে অন্যতম প্রধান কারণ ছিল জাপানে পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনকে রুদ্ধ করা এবং এই কাজে তারা নিঃসন্দেহে সফল হয়েছিলেন। মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার ২০ বছরের মধ্যেই জাপান অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হয়। এই সমৃদ্ধির অনিবার্য ফসল ছিল সাম্রাজ্যবাদের উত্থান। অন্যভাবে বলা যায় জাপানে পুঁজিবাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাপানি সাম্রাজ্যবাদের উন্মেষ ঘটেছিল। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাপান সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করেও তা বাতিল করেছিল। কোরিয়ার উপর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চীন-জাপান যুদ্ধ (১৮৯৪) সংঘটিত হয়েছিল। কোরিয়া অভিযানের পরিকল্পনা বাতিল হওয়ার পর জাপান কোরিয়ার সাথে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার মাধ্যমে কোরিয়া একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পায়। দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ইঞ্চয়, পুসান ও ওনসান- কোরিয়ার এই তিনটি বন্দর জাপানের বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত হয়। ফলে চীনের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়, কারণ এতদিন করিয়া ছিল চীনের ...

মেইজি জাপানের পুঁজি সংগ্রহ | Meiji Reforms: Capital Collection

মেইজি জাপান কিভাবে পুঁজি সংগ্রহ করেছিল ? মেইজী পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর মেইজি নেতৃবৃন্দ জাপানের পুঁজিবাদী অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালান। পুঁজিবাদী অর্থনীতির প্রধান ঝোঁকটি থাকে শিল্পায়নের দিকে। অর্থমন্ত্রী মৎসুকাটা উপলব্ধি করেছিলেন যে, জাপানে আধুনিক শিল্প গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস হলো পুঁজি সংগ্রহ। রাষ্ট্রের পুঁজি বৃদ্ধি করার কর্মসূচিতে দুটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল - কর ব্যবস্থার  পরিবর্তন ও ঋণ সৃষ্টি করা।  জাপানের রাষ্ট্রের আয়ের প্রধান উৎস ছিল ভূমিকর। ভূমিকর প্রদানের ক্ষেত্রে মুদ্রার মাধ্যমে কর প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়। ১৮৮০ -র দশকে মৎসুকাটার মুদ্রা হ্রাস নীতির ফলে জিনিসপত্রের দাম কমে যায় এবং এর ফলে একদিকে কৃষকরা মুদ্রার মাধ্যমে কর দিতে সমস্যায় পড়ে অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতায় হেরে যায়। কিন্তু এরই ফলে বড় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের মুনাফার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। দ্বিতীয় উপায়টি ছিল ঋণের মাধ্যমে। বৈদেশিক ঋণের ভূমিকা ছিল এক্ষেত্রে গৌণ। মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে জাপান মাত্র দুইবার ঋণ নিয়েছি...

মেইজি শিক্ষা ব্যবস্থা | Meiji Reforms: Education

মেইজি শিক্ষা ব্যবস্থা জাপানে পশ্চিমী সভ্যতাভিত্তিক সমাজ গঠন সার্থক করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থারও সংস্কার দরকার-- মেইজি নেতারা তা সহজেই উপলব্ধি করেছিলেন। তাই তারা পশ্চিমি ধাঁচে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কাজে উদ্যোগী হন। মেইজি শিক্ষা সংস্কারের মূলত তিনটি দিক ছিল। প্রথমত, পশ্চিমী দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসা, দ্বিতীয়ত, জাপানি ছাত্রদের পাশ্চাত্য দেশে শিক্ষার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা। তৃতীয়ত, শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে ঢেলে সাজানো, যাতে সম্রাট ও রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত এবং দায়িত্বশীল নাগরিক গড়ে তোলা যায়। পাশ্চাত্য দেশের শিক্ষার্থী পাঠাবার বিষয়টি অবশ্য শোগুন যুগ থেকেই আরম্ভ হয়েছিল। মেইজি আমলে এই বিষয়টির ওপর অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বিশিষ্ট মেইজি নেতা যেমন ইটো হিরোবুমি, মারি আরোনারি, ইনোয়ুয়ে প্রমুখ পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার জন্য ইউরোপে পাড়ি দিয়েছিলেন। ঐ একই উদ্দেশ্যে বিদেশী বিশেষজ্ঞদের জাপানে আমন্ত্রণ করা হয়। ১৮৮৫ খ্রিঃ ইউরোপ থেকে মোট ৩৪ জন খনি বিশেষজ্ঞ আনা হয়েছিল। R.H. Brangton  নামে একজন ইংরেজ বিজ্ঞানীকে নৌ শিল্পের উন্নতির উদ্দেশ্যে জাপ...

মেইজি কৃষি সংস্কার | Meiji Reforms: Agriculture

মেইজি জাপানের সামন্ত প্রথার বিলোপ সাধনে কোন কোন প্রধান সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল? এই পরিবর্তনের প্রভাব গুলি কি কি ছিল / ডাইমিও, সামুরাই এবং কৃষকদের উপর এর কি প্রভাব পড়েছিল? অথবা মেইজি জাপানের নতুন ভূমি ব্যবস্থা প্রচলিত সামন্ততান্ত্রিক সমাজ কাঠামোকে কতটা পরিবর্তিত করেছিল? মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার নায়কগন উপলব্ধি করেছিলেন যে পশ্চিমি আগ্রাসন থেকে দেশককে বাঁচাতে হলে কেবলমাত্র শোগুনতন্ত্র ধ্বংস করলেই চলবে না, জাপানকে উপরন্তু আধুনিক হতে হবে। দেশকে আধুনিক করতে হলে প্রথমে প্রয়োজন ছিল মধ্যযুগীয় সামন্ত প্রথার বিলুপ্তি। এই কঠিন কাজটি প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত বিনা রক্তপাতে সম্পন্ন হয় নি। তবে সামন্ত কৃষি অর্থনীতির পরিবর্তে আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে মেইজি নেতৃবর্গ সফল হয়েছিলেন। তবে এই পরিবর্তনের প্রভাব বিভিন্ন শ্রেনীকে নানা ভাবে প্রভাবিত করেছিল।   সামন্ত প্রথার বিলোপ সাধন করে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য জাপানের নবগঠিত সাত-চো-হি- তো সরকার সামন্ত প্রথা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সামন্ত প্রথা বিলুপ্তির জন্য ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে প্রত্যেক জমিদারিতে একজন করে স...

ওয়াশিংটন সম্মেলন:১৯২১-২২। Washington Conference: 1921-22

ওয়াশিংটন সম্মেলনের পটভূমি আলোচনা কর। এই সম্মেলন পূর্ব এশিয়ায় জাপানের আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে কতটা সক্ষম হয়েছিল?          এশিয়ার উদীয়মান শক্তির জাপানের ক্ষমতা সীমায়িত করণ এবং পশ্চিমী উপনিবেশবাদী শক্তিগুলির সঙ্গে জাপানের সমঝোতা স্থাপনের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন সম্মেলন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে নভেম্বর থেকে ১৯২২ এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন শহরে সমকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আহ্বানে আমেরিকা, ব্রিটেন ও জাপান সহ মোট নয়টি দেশ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিল। যেখানে বিভিন্ন দেশের মধ্যে মোট সাতটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সম্মেলনের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জাপানের সম্প্রসারণ রোধ করা। কিন্তু তা কতটা সম্ভব হয়েছিল তাতে সন্দেহ আছে। পটভূমি ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জাপান প্রায় সমগ্র পূর্ব এশিয়াতে একছত্র আধিপত্য স্থাপন করে ফেলেছিল। উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত যাবতীয় সমুদ্র মুখগুলি জাপানের নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। শাখালিন এর অর্ধেক এবং কুরাইল দ্বীপপুঞ্জ নিজের অধিকারে এনে জাপান ওখোট‌‌স্ক সাগরে অনুপ্রবেশের রাস্তা নিয়ন্ত্রণে আনতে ...

Syllabus CU DSE-B-3 Hons. Japan

 DSE-B  -3 History  of  Modern  East  Asia  II  Japan  (c.1868  –  1945)  I)  Transition  from  feudalism  to  capitalism: (সামন্ততন্ত্র থেকে পুঁজিবাদে উত্তরণ) a)  Crisis  of  Tokugawa  Bakuhan  system (টকুগাওয়া শোগুন তন্ত্রের পতন ) b)  Meiji  Restoration  :  Its  nature  and  Significance (মেইজি পুনঃপ্রতিষ্টা: প্রকৃতি এবং গুরুত্ত্ব) c)  Political  Reorganization   (রাজনৈতিক পুনর্গঠন) d)  Military  Reforms (সামরিক সংস্কারসমূহ) e)  Social,  cultural  and  educational  reforms  (Bunmeikaika) ( সামাজিক সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষা সংস্কার ) f)  Financial  reforms  and  educational  development  in  the  ‘Meiji’  era (মেইজি যুগের অর্থনৈতিক অগ্রগতি) g)  Meiji  Constitution ( মেইজি সংবিধান ) II)  Japanese  Imperialism ( জাপানি সাম্রাজ...

কমোডোর পেরীর অভিযানঃ রুদ্ধদ্বার জাপানের উন্মোচন

কমোডোর পেরীর অভিযান কিভাবে জাপানের দ্বার উন্মোচিত করেছিল? ১৬০০ খ্রীঃ থেকে ২৫০ বছর ধরে টোকুগাওয়া সোগুনের শাসনে জাপান ছিল একটি বদ্ধ দেশ। কেবল চীন এবং ইউরোপীয় শক্তি নেদারল্যান্ডস ছাড়া বহির্বিশ্বের সাথে জাপানের কোনো যোগাযোগ ছিল না। উনিশ শতকের সূচনালগ্ন থেকে পশ্চিমী শক্তি গুলি জাপানের দ্বার উন্মোচনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। প্রথমদিকে রাশিয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত ১৮৫৪ খ্রীঃ কমোডোর পেরীর নেতৃত্ত্বে আমেরিকান প্রচেষ্টা সফল হয় এবং জাপানের দ্বার উন্মুক্ত হয়।  অনেকেই মনে করেন যে পশ্চিমের সাথে যোগাযোগের পূর্বে জাপানের সমাজ ও রাষ্ট্র ছিল পরিবর্তনহীন। কিন্তু এই ধারনা সঠিক নয়। জাপানের অভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে যে একাধিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলছিল তাতে মনে হয় পশিমের অভিযান কেবল অনুঘটকের কাজ করেছিল। প্রথমত , মুদ্রা অর্থনীতির সূচনা । টোকুগাওয়া শাসনে জাপানে যে long peace বিরাজ করছিল তাতে ব্যবসা বানিজ্যের অগ্রগতি ঘটেছিল। এর ফলে চিরাচরিত চাল-নির্ভর বিনিময় ব্যবস্থা অকেজ হয়ে আসছিল এবং সুবিধাজনক মাধ্যম হিসাবে মুদ্রার ব্যবহার বাড়ছিল। দ্বিতীয়ত, উদীয়মান বণিকশ্রেনী । টোকুগাওয়া জাপানে শিল্পায়ন হয়নি। কিন্তু ব্...

সিমোনোসেকির সন্ধি

 সিমোনোসেকির সন্ধি  মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর জাপান যে দ্রুতগতিতে উন্নতি করেছিল, বিশেষ করে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে তার অন্যতম ফলশ্রুতি ছিল সাম্রাজ্যবাদের বহিঃপ্রকাশ। প্রথম থেকেই কোরিয়ার ওপর জাপানের নজর ছিল। কোরিয়া ছিল চীনের ট্রিবুটারি দেশ। কোরিয়ার ওপর আধিপত্য স্থাপন কে কেন্দ্র করে চীন ও জাপানের মধ্যে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল 1894 খ্রিস্টাব্দে তা যুদ্ধে পরিণতি লাভ করেছিল। উন্নত জাপানি সামরিক বাহিনী চিনা সেনাদের অনায়াসে পরাস্ত করে এমনকি মাঞ্চুরিয়া আক্রমন করে পিকিং এর অভিমুখে অগ্রসর হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে চীন জাপানের সঙ্গে একটি সমঝোতায় আসতে বাধ্য হয়। উভয়ের মধ্যে 1895 খ্রিস্টাব্দে 17 ই এপ্রিল শিমনোসেকির সন্ধি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। শিমনোসেকির সন্ধি শর্তগুলি হল: 1) চীনের করদ রাজ্যের পরিবর্তে কোরিয়া একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পায়। 2) চীন জাপানকে 200 মিলিয়ন টেইল যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে সম্মত হয়। 3) চীন-জাপান কে তাইওয়ান, প্রেসকাডোর্স এবং লিয়া ওটাং উপদ্বীপ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। 4) চাং কিং, সু চাও, হ্যাং চাও এবং শা শি-- চীনের এই বন্দর গুলির জাপানি বণিকদের জন্য উন্মু...

ডাইমিও ও সামুরাই করা?

 ডাইমিও প্রাক-আধুনিক সামন্ততান্ত্রিক জাপানের সবচেয়ে শক্তিশালী সামাজিক গোষ্ঠী ছিল ডাইমিও সম্প্রদায়। খ্রিস্টীয় দশক শতক থেকে উনিশ শতকে মেইজি শাসনের প্রারম্ভিক পর্ব পর্যন্ত এরাই ভুস্বামী হিসেবে শাসন চালাত। টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রে জাপানে প্রায় 280 ডাইমিওর অস্তিত্ব ছিল। ডাইমিওরা তিন ভাগে বিভক্ত ছিল সিম্পান, ফুডাই ও তোজামা। সিম্পান ডাইমিওরা সরাসরি শোগুন পরিবারের সাথে যুক্ত ছিল। ফুডাই ডাইমিওরা বংশানুক্রমিকভাবে শোগুনের অনুগত ছিল। বাকিরা ছিল তোজামা, যদের অধিকাংশই ছিল শোগুনের শোগুন বিরোধী। সেকিগাহারার যুদ্ধের পর তারা শোগুনের আনুগত্য স্বীকার করলেও তাদের আনুগত্য নিয়ে বরাবরই সন্দেহ ছিল।  'ডাই' কথার অর্থ বৃহৎ এবং 'মিও' কথার অর্থ ব্যক্তিগত সম্পত্তি। অর্থাৎ ডাইমিও কথার আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায় বৃহৎ জমির মালিক। কিন্তু বাস্তবে সকল ডাইমিও বৃহৎ জমির মালিক ছিলেন না। অর্থাৎ ডাইমিওদের মধ্যেও শ্রেণীবিভাজন ছিল। অনেকেই ছোট জমির মালিক ছিলেন। বৃহৎ ডাইমিওদের হাতে ছিল বড় বড় জোত এবং তারা দুর্গ রক্ষনাবেক্ষন ও সামরিক দায়দায়িত্ত্ব পালন করত। তাদের অধীনে ছিল সামুরাই নামক যোদ্ধা শ্রেনি। নিজের এলাকায় ডাইমিওরা...

রুশ-জাপান যুদ্ধের পটভূমি ও গুরুত্ত্ব

Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya  রুশ-জাপান যুদ্ধের পটভূমি ও গুরুত্ত্ব  উ নিশ শতকের শেষ দিকে জাপান দ্রুতগতিতে উন্নতি করতে থাকে । মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাত্র কুড়ি বছরের মধ্যেই জাপান অর্থনৈতিক দিক থেকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হয়েছিল । বিভিন্ন সংস্কার সাধন এবং শিল্পায়নের মাধ্যমে জাপান উনিশ শতাব্দীর শেষ লগ্নে যে শক্তি সঞ্চয় করে ছিল তা কেবলমাত্র আত্মরক্ষার্থে নিয়োজিত হয়নি । জাপানে পুঁজিবাদের উত্থান এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই সাম্রাজ্যবাদের ও উন্মেষ ঘটেছিল । আঠারোশো সত্তরের দশকে দুটি ঘটনা জাপানি সম্প্রসারণ বাদের ইঙ্গিত বহন করে -- 1 87 3 খ্রিস্টাব্দে কোরিয়ার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা এবং 1 879 খ্রিস্টাব্দে রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জদখল । যদিও প্রথম পরিকল্পনাটি পরিত্যক্ত হয়েছিল । কোরিয়ার উপর জাপানের আধিপত্য বিস্তারের বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই 1 894 খ্রিস্টাব্দে চীন জাপান যুদ্ধ ঘটেছিল । এই কোরিয়া কে কেন্দ্র করেই রুশ-জাপান সম্পর্ক তিক্ত হয়েছিল এবং 1904 -1905 সালে রুশ জাপান যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল ।   ...