সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Treaty of Tientsin 1858 | তিয়েন্তসিনের সন্ধি

Please visit our Homepage and Subscribe us.

দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধে কার্যত চীনের পরাজয় ঘটে। ইঙ্গ ফরাসি বাহিনী ক্যান্টন দখল করে নেয় এবং উত্তর দিকে অগ্রসর হলে পিকিং আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে চীন তিয়েনসিনের সন্ধি (১৮৫৮) স্বাক্ষর করে। আমেরিকা ও রাশিয়া যুদ্ধে যোগদান না করলেও ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মতই সুযোগ সুবিধাগুলি পৃথক পৃথক চুক্তি সম্পাদন করে অর্জন করে নেয়।

Treaty of Tientsin 1858, তিয়েন্তসিনের সন্ধি
Treaty of Tientsin




তিয়েনসিনের সন্ধি শর্ত গুলি হল

১) কূটনৈতিক সমতার ভিত্তিতে পশ্চিমা শক্তিগুলো পিকিং এ একজন করে মন্ত্রী স্থায়ীভাবে রাখার অধিকার পেল।

২) দশটি নতুন চিনা বন্দর পাশ্চাত্যের কাছে উন্মুক্ত হল। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চেফু, চিনকিয়াং, হ্যানকাও, কিউকিয়াং, কিউংচাও, নিউচিয়াং, সওতো,ওয়েনচাও, ন্যাংকিং প্রভৃতি।

৩) চীনের অভ্যন্তরে বিদেশিদের ভ্রমণ করার অধিকার দেওয়া হয় এই শর্তে যে, সেজন্য তাদের নিজ নিজ কনসালদের দেওয়া এবং চিনা কর্তৃপক্ষের সই করা অনুমতি পত্র বা পাসপোর্ট নিতে হবে।

৪) আমদানি করা বিদেশী পণ্যের উপরে অভ্যন্তরীণ শুল্কের হার শতকরা ২.৫ ভাগের বেশি ধার্য হবে না।

৫) যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ চীন ব্রিটেনকে ৪০ লক্ষ টায়েল এবং ফ্রান্সকে ২০ লক্ষ টায়েল পরিমান দিতে স্বীকৃত হলো।

৬) চীনের যেকোনো অংশে ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট মিশনারীদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার স্বীকৃত হল।

চূড়ান্ত অনুমোদন সাপেক্ষে ঠিক এক বছর পর তিয়েনসিনের চুক্তি কে বলা বাদ করা হবে এই সিদ্ধান্তে আক্রমণকারীরা উত্তর চিন ত্যাগ করেছিল। কিন্তু পিকিং এর দরবারে একজন করে প্রতিনিধি থাকার ব্যাপারটি চীনারা মেনে নিতে পারেনি এবং এই নিয়ে ১৮৫৯-৬০ সালে আরো একটি খণ্ডযুদ্ধ হয়, যার ফলে পিকিং কনভেনশন নামে একটি সন্ধি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে চীনের উপনিবেশীকরন এর প্রক্রিয়া সম্পুর্ন হয়।



Thanks for reading.

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগ...

আরবদের সিন্ধু অভিযানঃ প্রত্যক্ষ কারণ ও তাৎপর্য | Arab Conquest of Sindh: Immediate Causes and Significance

আরবদের সিন্ধু অভিযানঃ প্রত্যক্ষ কারণ ও তাৎপর্য সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আগেও বহুবার ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পাঠানো হয়েছিল। তবে এই(712 খৃ:) অভিযানের একটি প্রত্যক্ষ কারণ ছিল। জানা যায় যে সিংহলের রাজা ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কে কয়েকটি জাহাজে করে উপঢৌকন পাঠাচ্ছিলেন কিন্তু পথে সিন্ধু দেশের জলদস্যুরা দেবল বন্দরে এ...

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হ...