সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

CC14 লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ | Vietnam War

ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ | Vietnam War দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধ একাধারে উপনিবেশবাদ ও নয়াউপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে গনসংগ্রামের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং এশিয়ার মাটিতে ঠান্ডা লড়াইয়ের উৎকট বহিপ্রকাশ। ভিয়েতনামের মুক্তি সংগ্রামের দুটি পর্ব - প্রথমটি ফরাসি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম (১৯৪৫-৫৪) এবং দ্বিতীয়টি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম (১৯৫৪-৭৫)। হো-চি-মিনের নেতৃত্বে শেষপর্যন্ত ভিয়েতনামের জনগনের জয় হয়েছিল এবং স্বাধীন সমাজতন্ত্রী ঐক্যবদ্ধ ভিয়েতনাম আত্মপ্রকাশ করেছিল।  ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রথম পর্ব  ভিয়েতনাম সহ অন্নাম, টংকিং ও কোচিন চীন তথা সমগ্র ইন্দোচীনের উপর ফরাসি উপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাময়িক ভাবে ইন্দোচীন জাপানের অধীনে চলে যায়। বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর ফ্রান্স পুনরায় মার্কিন চাপের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইন্দোচীনের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে উদ্যত হয়। এদিকে বামপন্থী নেতা হো-চি-মিন-এর নেতৃত্বে প্রবল সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাম গড়ে ওঠে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চ...

কিউবা-মার্কিন সম্পর্ক| | Cuba-USA Relationship

কিউবা-মার্কিন সম্পর্ক| | Cuba-USA Relationship ফালজেন্সিও বাতিস্তা দ্বিতীয়বার কিউবায় ক্ষমতা আরোহন করে (১৯৫২) স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিমধ্যে ফিদেল কাস্ত্রো ও তার ভাই রাউল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে প্রতিবাদী আন্দোলন কিউবায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। কাস্ত্রো ভাতৃদ্বয় কিউবায় বেশ জনসমর্থন লাভ করেন। মার্কিন প্রশাসনও বাতিস্তার স্বৈরশাসনে বিরক্ত হয়ে ওঠে। এমন সময় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে ফিদেল কাস্ত্রো বিপ্লবের মাধ্যমে কিউবায় ক্ষমতা দখল করেন। প্রথমদিকে কিউবার সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক মোটামুটি ভালই ছিল। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে ফিদেল কাস্ত্রো কিউবায় আধুনিকীকরণের জন্য যে একের পর এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল সেগুলি মার্কিন স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছিল। একই সাথে সোভিয়েত তথা কমিউনিস্ট দুনিয়ার সঙ্গে কাস্ত্রোর সংসর্গ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। এর ফলে মার্কিন এর সাথে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল এবং একটা সময় তা সংঘর্ষের রূপ পরিগ্রহ করেছিল। ফিদেল ক্ষমতায় এসে প্রথম দিকে মার্কিন বিরোধিতার পরিচয় দেননি। বাতিস্তার অপশাসন মার্কিনকে ফিডেলের প্রতি সুহৃদ করেছিল। ফিদেলকে মার্কিন সরকার একজন সংস্কারপন্থী শাসক হিসেবেই দেখেছিল। ১৯৫৯ খ...

SAARC

 SAARC  ১৯৮০ দশকেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিকে নিয়ে একটি আঞ্চলিক সংগঠন গড়ে তোলার সর্বপ্রথম পরিকল্পনা করেছিলেন তদানীন্তন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এই পরিকল্পনার ফলশ্রুতি হিসেবে পরবর্তীকালে গড়ে ওঠে সার্ক অর্থাৎ South Asian Association for Regional Cooperation (SAARC)। ১৮৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে সার্কের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। বর্তমানে যে সাতটি দেশ সার্কের অন্তর্ভুক্ত সেগুলি হল বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকা।  সার্কের সনদে এই সংগঠনের যে উদ্দেশ্যগুলির কথা বলা হয়েছিল সেগুলি হল ১) দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের কল্যাণ ও জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। ২) এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং প্রতিটি ব্যক্তির মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। ৩) দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ঐক্য ও আত্মবিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করা। ৪) পারস্পরিক বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে একে অন্যের সমস্যা উপলব্ধি করা। ৫) অর্থনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা স্থাপন করা।  ৬) অন্যা...

ASEAN

 ASEAN দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ওঠে বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন। এশিয়া মহাদেশে গড়ে ওঠা এরকম একটি আঞ্চলিক সংগঠন হলো আসিয়ান। ১৯৬৭ সালের আগস্ট মাসে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার পাঁচটি রাষ্ট্র থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন এবং সিঙ্গাপুর মিলিত হয় এবং নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার উদ্দেশ্যে আসিয়ান (ASEAN) গড়ে তোলে। পরবর্তীকালে আসিয়ানে যথাক্রমে যোগদান করে ব্রুনেই, ভিয়েতনাম, লাওস, মায়ানমার এবং কম্বোডিয়া। বর্তমানে আসিয়ানের মোট সদস্য সংখ্যা দশ এবং ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা শহরে এর স্থায়ী সচিবালায় অবস্থিত। ১১৯৬৭ সালের ব্যাংকক ঘোষনায় আসিয়ানের মুখ্য উদ্দেশ্যগুলি ঘোষণা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রগতি এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা উদ্দেশ্যে আসিয়ান কাজ করবে। এছাড়া এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা এবং প্রসারের উদ্দেশ্যে ও নিজেকে নিয়োজিত করবে। ১৯৭৬ সালে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত প্রথম আসিয়ান সম্মেলনে এই সংগঠনের মৌলিক নীতিগুলি ঘোষিত হয়। মৌলিক নীতিগুলি হ...

আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (IMF)

আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (IMF) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে যে অর্থনৈতিক অবক্ষয়, অনিশ্চয়তা ও সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তাকে আরো জটিল ও ভয়াবহ করে তুলল। পরবর্তী ইউরোপের অর্থনৈতিক চেহারা কেমন হবে, কিভাবে আর্থিক লেনদেনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠবে নতুন বিশ্ব, আন্তর্জাতিক অর্থনীতি কোন পথে চলবে, এর চালিকাশক্তিই বা কে হবে-- এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করলেন তৎকালীন মার্কিন বাণিজ্য সচিব হেনরি মর্গানথো। সম্মেলন বসল ১৯৪৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিটন উডসের মাউন্ট ওয়াশিংটন হোটেলে। সারা বিশ্বের ৪৪টি দেশের ৭০০ জন প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করলেন এবং সম্মেলনের প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৪৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার প্রতিষ্ঠিত হলো। ১৯৪৭ সালের ১লা মার্চ থেকে এই সংস্থা তার কাজ শুরু করলো। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের একাধিক ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল:  ১) আর্থিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহায়তার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ২) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো যাতে সদস্য রাষ্ট্রগুলির সর্বাধিক কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঘটে। ৩) সদস্য রাষ্...

The Apartheid Movement and the Indomitable Spirit of Nelson Mandela

The Apartheid Movement and the Indomitable Spirit of Nelson Mandela The apartheid movement, an era of racial segregation and oppression, held South Africa in its grip for several decades. This dark chapter in history witnessed the rise of an extraordinary leader, Nelson Mandela, whose unwavering commitment to justice and equality forever changed the course of the nation. Mandela's significant contributions and unyielding spirit played a pivotal role in dismantling apartheid and laying the foundation for a united, democratic South Africa The Apartheid Era: Apartheid, a system of institutionalized racial segregation, was enforced by the National Party in South Africa from 1948 to 1994. Under apartheid, people were classified into different racial groups and denied basic human rights based on their skin color. Laws and policies were implemented to segregate communities, restrict movement, and discriminate against non-white individuals in all spheres of life, including education, emplo...

Globalisation: Defination & the Impact on Third World | বিশ্বায়নঃ সংজ্ঞা এবং তৃতীয় বিশ্বের উপর প্রভাব

বিশ্বায়নঃ সংজ্ঞা এবং তৃতীয় বিশ্বের উপর প্রভাব সংজ্ঞা  বিশ্বায়ন (Globalisation) বা ভুবনায়ন আজ অত্যন্ত পরিচিত একটি শব্দ। বিগত চার দশক ধরে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া ও কর্মসূচী বিভিন্ন দেশের সমাজের সর্বস্তরকে প্রভাবিত করেছে। বিশ্বায়ন শব্দটি এত বিভিন্ন অর্থে এবং বিভিন্ন প্রসঙ্গে ব্যবহার করা হয় যে এর কোনো সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা দেওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। সাধারন ভাবে বিশ্বায়ন বলতে অর্থনৈতিক নীতি, পদ্ধতি ও কর্মকাণ্ডের ভুবনায়িত অবস্থাকে বোঝায়, যার মুল লক্ষ্য হবে বিশ্বব্যাপী উৎপাদন ও মুলধনের বিরাষ্ট্রীয়করণ তথা আন্তঃরাষ্ট্রীয়করণ। অর্থাৎ প্রযুক্তি, বাণিজ্য ও বাজারের মধ্যে কোনো রাষ্ট্রীয় সীমানার বেড়া না থাকা এবং সমস্ত বিশ্বটাকেই একটি বাজারে পরিণত করা। এই তত্ত্ব অনুযায়ী কোনো দেশেরই প্রয়োজন পড়ে না স্বনির্ভর হওয়ার, কারণ সমস্ত পৃথিবীটাই এখানে পরস্পর পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। বিশ্বায়নের সাথে তাই মুক্ততা এবং উদারীকরণের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। এখানের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও খবরদারি নেই। আছে একাধিক বৃহৎ বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থার (MNC) সক্রিয়তা, যাদের আর্থিক ক্ষমতা তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশে আর্থিক সঙ্গতির থেকে বেশি। ...

Afganistan Crisis (1973-2022) | আফগানিস্তান সংকট

 Afganistan Crisis (1973-2022) | আফগানিস্তান সংকট  মধ্য এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত আফগানিস্তান প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে পূর্ণ একটি দেশ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী রাজনীতিতে বৃহৎ শক্তিগুলির নজর ছিল আফগানিস্তানের উপর। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক পর্ব থেকেই আফগানিস্তান ছিল দুর্বল, পশ্চাদগামী এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ। মহম্মদ জাহির শাহ'র হাতে দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে আফগানিস্তান শাসিত হয় এবং ১৯৭৩ সালে তাঁর ইউরোপ ভ্রমণকালে এক প্রাসাদ অভভুত্থানে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। তাঁরই এক আত্মীয় মুহম্মদ দাউদ খান কমিউনিস্ট পার্টি  PDP (People's Democratic party) এর সহযোগিতায় ক্ষমতা দখল করেন। দাউদ আফগানিস্তানে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। এভাবে আফগানিস্তানে রাজতান্ত্রিক শাসনের অবসান হয়।  সোভিয়েত আগ্রাসন  PDP এর দুটি গোষ্ঠী ছিল-- খাল্ক ও পারচাম। প্রথম গোষ্ঠীর নেতা ছিলে নূর মহম্মদ তারাকি ও হাফিজুল্লা আমিন এবং দ্বিতীয় গোষ্ঠীর নেতা ছিলে বারবাক কারমাল। দ্বিতীয় গোষ্ঠীই দাউদ খানকে ক্ষমতা দখলে সহযোগিতা করেছিল। নূর মহম্মদ তারাকি ছিলেন দাউদ খানের প্রধানমন্ত্রী। সোভিয়েতের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল...

The Nature of Cold War | ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রকৃতি

ঠান্ডা লড়াই কি আদর্শগত সংঘাত না রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের লড়াই? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিণতি হিসেবে ইউরোপের তথাকথিত শক্তিশালী দেশগুলি, যেমন- ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। এদের দুর্বলতার সুযোগে আপন প্রভাব ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে ইউরোপে দুটি পরস্পর বিরোধী শক্তি জোট গড়ে ওঠে। ফলে বিশ্বের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় এরা অবতীর্ণ হয়। তথাকথিত পরাশক্তিগুলি এখন এই দুই রাষ্ট্রের সাহায্যপ্রাপ্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে মতাদর্শগত পার্থক্য থাকলেও হিটলারের আক্রমণ থেকে বিশ্বকে রক্ষা করার জন্য এরা একত্রে কাজ করেছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পর্বে এদের মধ্যে মতাদর্শগত বিরোধ  মাথা ছাড়া দিয়ে ওঠে। তবে এই বিরোধ ছিল প্রভাব ও প্রতিপত্তি বিস্তারের প্রতিযোগিতা, সরাসরি সংঘর্ষ নয়। বিশ্ব ইতিহাসে আমেরিকা ও সোভিয়েতের মধ্যেকার এই সংঘর্ষ ঠান্ডা লড়াই নামে পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিমের রাষ্ট্র গুলিকে একত্রিত করে একটি পশ্চিমী জোট গঠন করে। অন্যদিকে...

একমেরু কেন্দ্রীক বিশ্বব্যবস্থা | Unipolarism

একমেরু ব্যবস্থা দ্বিমেরুতার অবসানের অনিবার্য ফলশ্রুতি ছিল একমেরু বিশ্ব ব্যবস্থার উদ্ভব। ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ঠান্ডা লড়াইয়ের অবসান ঘটে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে পুঁজিবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রিক পশ্চিমী জোট এবং সাম্যবাদী সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে যে প্রভাব বিস্তারের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনীতি চলে আসছিল তার ফলে যে দ্বিমেরুকৃত বিশ্ব ব্যবস্থার আবির্ভাব ঘটেছিল সোভিয়েত ব্যবস্থার পতনের ফলে এই প্রতিদ্বন্দ্বীতার অবসান ঘটে। মার্কিনের প্রতিদ্বন্দী আর কোনো পরাশক্তির অস্তিত্ব থাকল না আর। এই নতুন বিশ্বব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশেষজ্ঞগন একমেরুতা বলে উল্লেখ করেছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আমেরিকা বিশ্ব রাজনীতিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিল। সমগ্র বিশ্ব ব্যবস্থা তার করতলগত হয়ে উঠেছিল। যতই বিতর্কিত হোক না কেনো মার্কিনের বিদেশ নীতিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মত কেউ ছিল না, যেখানে ইতিপূর্বে ঠান্ডা লড়াইয়ের জন্য একটা ভারসাম্য বজায় ছিল।  ১৯৯০-৯১ খ্রীঃ উপসাগরীয় যুদ্ধে ইরাকের বিরুদ্ধে বিশাল জয়লাভের ফলে মার্কিনের আত্মবিশ্বাস ও বেপরোয়া মনোভাব তুঙ্গে উঠেছিল। মার্কিন অস্ত্রসম্...

মধ্যপ্রাচ্যে আরব-ইজরায়েল সংঘাত | Arab-Israel Conflict

মধ্যপ্রাচ্যে আরব-ইজরায়েল সংঘাত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক রাজনীতি যতগুলি আঞ্চলিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে তার মধ্যে আরব-ইজরায়েল সংঘর্ষ সর্বাপেক্ষা দীর্ঘ স্থায়ী। এই সংঘাতের শান্তিপূর্ণ মীমাংসা এ পর্যন্ত প্রায় অসম্ভব প্রমাণিত হয়েছে। ঠান্ডা লড়াইয়ের দিনগুলিতে এই সংঘর্ষের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ বহিঃশত্রুর হস্তক্ষেপ। এ পর্যন্ত চারটি বড় মাপের আরব-ইজরায়েল যুদ্ধ হয়েছে, যা পশ্চিম এশিয়ার শান্তির বাতাবরণকে নষ্ট করেছে এবং সমগ্র আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে উত্তেজনাপূর্ণ করে রেখেছে। একদিকে আরব জাতীয়তাবাদ যেমন সোভিয়েত সমর্থন পেয়েছিল তেমনি ইহুদি রাষ্ট্র ইজরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপীয় শক্তিগুলির মদত পেয়েছিল। এই সংঘর্ষগুলিতে একদিকে আরব জাতীয়তাবাদের সাথে ইহুদি জাতীয়তাবাদের সংঘাত অন্যদিকে ইজরায়েল ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির ভূখণ্ড দখল নিয়ে বিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। ইজরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা আরব ইজরায়েল সংঘর্ষের মূলে ছিল ইজরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে পূর্ব ও মধ্য ইউরোপে দীর্ঘকাল প্রবাসী ইহুদী সম্প্রদায়ের লোকেরা আরব রাষ্ট্র প্যালেস্টাইনে এসে স্থায...

সুয়েজ সংকট | The Suez Crisis

সুয়েজ সংকট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি যেসব বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছিল তার মধ্যে সুয়েজ খাল সংকট অন্যতম, যা একদিকে দ্বিতীয় আরব ইজরায়েল সংঘর্ষে র জন্য দায়ী এবং যাকে কেন্দ্র করে ঠান্ডা লড়াইয়ের রাজনীতি মধ্যপ্রাচ্যেও প্রবেশ করে। ১৯৫৬ খ্রি: মিশরে গামাল আব্দেল নাসের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি হয়ে নাসের একদিকে সমগ্র আরব জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে বদ্ধপরিকর হন, তেমনি অন্যদিকে মিশরকে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বেশকিছু সংস্কার ও কর্মসূচি গ্রহণ করেন। মিশরের অভ্যন্তরীণ অবস্থার উন্নয়নের জন্য নাসের কৃষি অর্থনীতি ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের স্বার্থে ১৪০০মিলিয়ন ডলারের আসোয়ান বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করেন। মার্কিন, ব্রিটেন ও ফ্রান্স শুরুতে ওই বাঁধ নির্মাণে মিশরকে ঋণদান করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তী সময়ে নাসেরের কমিউনিস্ট সংসর্গ এবং ইজরায়েল বিরোধীতার কারণে তা দিতে অস্বীকার করে। এই পরিস্থিতিতে নাসের এক বিকল্প পথ অনুসন্ধানে রত হন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে ২৬ শে জুলাই নাসের এক ঐতিহাসিক ও সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সুয়েজ খালের জাতীয়করণ এর ক...

জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন | Non-Aligned Movement (NAM)

জোট নিরপেক্ষ নীতি  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন-- এই দুই পরাশক্তির আবির্ভাব ঘটে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুঁজিবাদের ছত্রতলে এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন সাম্যবাদের ছত্রতলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে পরস্পর বিরোধী জোট গঠনে অগ্রসর হয়। দ্বিমেরুতার এই রাজনীতি ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার গণ্ডি পেরিয়ে এশিয়া, আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকেও গ্রাস করতে উদ্যত হয়। এই প্রেক্ষিতে জোট রাজনীতিকে অস্বীকার করে নির্জোট আন্দোলনের (NAM) সূচনা হয়। নির্জোট আন্দোলনের রূপকার ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু। তাঁর প্রধান সহযোগী ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি সুকর্ণ, মিশরের রাষ্ট্রপতি নাসের, ঘানার রাষ্ট্রপ্রধান নত্রুমা এবং পরবর্তীকালে যুগোস্লাভিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান মার্শাল টিটো, যিনি স্ট্যালিন কর্তৃক কমিনফর্ম থেকে বহিস্কৃত হয়েছিলেন।  জোট নিরপেক্ষতার প্রধান যুক্তি ছিল, সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলির সামনে যে একাধিক সমস্যা রয়েছে তার সমাধান সম্ভব একমাত্র স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ দৃষ্টিভ...

জেনেভা চুক্তি (১৯৫৪) | Geneva Protocol (1954)

জেনেভা চুক্তি (1954) শর্তাবলী উল্লেখ করে এই চুক্তির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ। ভিয়েতনামের মুক্তি সংগ্রামের দুটি পর্ব - প্রথমটি ফরাসি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম এবং দ্বিতীয়টি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম। ভিয়েতনামসহ অন্নাম, টংকিং ও কোচিন চীন তথা সমগ্র ইন্দোচীনের উপর ফরাসি উপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাময়িক ভাবে ইন্দোচীন জাপানের অধীনে চলে যায়। বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর ফ্রান্স পুনরায় মার্কিন চাপের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইন্দোচীনের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে উদ্যত হয়। এদিকে বামপন্থী নেতা হো-চি-মিন এর নেতৃত্বে প্রবল সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাম গড়ে ওঠে। হো-চি-মিন এর ভিয়েতমিন বাহিনীর কাছে ফরাসি বাহিনী পরাজিত হয়। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে দিয়েন - বিয়েন - ফু এর যুদ্ধে ফরাসি বাহিনী প্রধান জেনারেল গিয়াপ এর চূড়ান্ত পরাজয় এবং আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্বের অবসান ঘটে। দিয়েন - বিয়েন - ফু এর যুদ্ধে পরাজয়ের পর নবনির্বাচি...

দ্বিমেরুতা কি? । What is Bi-polarity?

 দ্বিমেরুতা দ্বিমেরুতা শব্দটি প্রথম প্রয়োগ করেন আর্নল্ড টয়েনবি। এরিক হবসবম মনে করেন দ্বিমেরুতা হল ঠান্ডা লড়াইয়ের রাজিনৈতিক পরিণতি, যা বিশ্বে দুটি পরস্পর বিরোধী শক্তিকেন্দ্রের জন্ম দিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পরিবর্তে আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন দুটি বৃহৎ শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়। পুজিবাদের রক্ষক আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম ইউরোপের পুঁজিবাদী দেশগুলিকে নিয়ে একটি ঐক্যজোট গড়ে তোলে এবং বিশ্বে পুঁজিবাদ সম্প্রসারণ ও রক্ষার দায়িত্ব স্বেচ্ছায় গ্রহন করেন। এই উদ্দেশ্যেই একাধিক অর্থনৈতিক সহয়তা প্রকল্প ও সামরিক জোট গঠন করে। অন্যদিকে সমজতন্ত্রী ব্যবস্থার অভিভাবক সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপের কমিউনিষ্ট দেশগুলিকে নিয়ে জোট গঠন করে। এইভাবে আন্তর্জাতিক পরিসরে শক্তি ও মতাদর্শের নতুন মেরুকরণ ঘটেছিল। এই নতুন পরিস্থিতি দ্বিমেরুতা নামে পরিচিত।  দ্বিমেরুকৃত ব্যবস্থার প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে রাধারমণ চক্রবর্তী বলেছেন, এই মূল কাঠামোটি এমন যে দুটি অতিবৃহৎ শক্তিকে ঘিরে অন্যান্য রাষ্ট্র সমষ্টিবদ্ধ হতে থাকে। এইরকম অবস্থায় দুটি প্রধান শক্তি সর্বদা একে অপরের সঙ্গে এমন প্রতিদ্বন...

দাঁতাত এর কারণ | Reasons Behind the Detente Politics

দাঁতাত এর কারণ বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকের সময় থেকেই দুই পরস্পরবিরোধী মহাশক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন পারস্পরিক সংঘাতের উত্তেজনা হ্রাস করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি গ্রহণ করে। আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এই নীতি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দাঁতাত নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভাষ্যকাররা মনে করেন সমসাময়িক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি উভয়পক্ষকে দাঁতাত রাজনীতি গ্রহণে বাধ্য করেছিল। দাঁতাত এর কারণগুলো নিম্নে আলোচিত হল- 1. আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন দুটি রাষ্ট্রই ছিল পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র। উভয়পক্ষই এই চরম সত্যটা বুঝেছিলো যে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার রাশ টানা না হলে তা একদিকে যেমন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না, অন্যদিকে তেমনি তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাঁধা স্বরূপ হয়ে উঠবে। এর পাশাপাশি আরেকটি সমস্যা তীব্রতর হয়ে উঠেছিল-- একের পর এক দেশের পারমাণবিক শক্তিধর হয়ে ওঠা। এক সময় ব্রিটেন, ফ্রান্স ও চীন পারমানবিক বোমা নির্মাণে সক্ষম হয়ে ওঠে। পাশাপাশি ইজরায়েল, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান, ইরাক প্রভৃতি রাষ্ট্রসঙ...

দাঁতাত রাজনীতির স্বরূপ | D'etente

 দাঁতাত কি?  'দাঁতাত' একটি ফরাসি শব্দ যার অর্থ হলো উত্তেজনার অবসান। দাঁতাত বলতে বোঝায়, আলাপ আলোচনার পরিবেশ তৈরীর মধ্যে দিয়ে দীর্ঘকালব্যাপী ঠান্ডা লড়াই এর অন্তিম কালে আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন এই দুই পরস্পর বিরোধী শক্তির মধ্যে বিরোধের অবসান ঘটানোর কূটনৈতিক প্রয়াস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কুড়ি বছর ধরে ঠান্ডা লড়াইয়ের উত্তেজনা যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে সেই উত্তেজনার পারদ নামতে শুরু করে। এই দুই পরাশক্তি নিজেদের মধ্যে নমনীয় সহবস্থান এবং আপস-মীমাংসার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বিরোধ ও তজ্জনিত আন্তর্জাতিক বিরোধের অবসান ঘটানোর উদ্যোগ নেয়। এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রথম পর্বে প্রায় 10 বছর টিকে ছিল। এবং দ্বিতীয় পর্বে ছয় বছর এই পরিবর্তিত শান্তিপূর্ণ পরিবেশটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির ইতিহাসে দাঁতাত নামে পরিচিত। ফরাসি রাষ্ট্রপতি De Gaulle আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে প্রথম দাঁতাত শব্দটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীকালে সত্তরের দশকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এর নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার দাঁতাত কে জনপ্রিয় করে তোলেন। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞদের অভিমত কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র...

NATO

 NATO দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে এবং হিটলারকে পরাজিত করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বাহিনীর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়েছিল। অন্যদিকে, জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকির ওপরে পারমাণবিক বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বোঝাতে চেয়েছিল যে, তারা সোভিয়েতের Red Army -র থেকেও শক্তিশালী। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত মার্কিন স্নায়ুযুদ্ধের বাতাবরণে 1949 সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সফল পারমাণবিক বিস্ফোরণ আমেরিকার একচেটিয়া পারমাণবিক আধিপত্যের অবসান ঘটায়। এই প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে 'সাম্যবাদী সম্প্রসারণ' প্রতিহত করতে এবং পুঁজিবাদের চরিত্র বজায় রাখতে 1949 সালে এপ্রিল মাসে আমেরিকা 12টি পশ্চিম ইউরোপীয় রাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে একটি সামরিক জোট গঠন করে। এই শক্তি জোট 'North Atlantic treaty organisation' (NATO) নামে পরিচিত।  NATO গঠনের উদ্যোগ দেখা গিয়েছিল 1948 সালে। ওই বছর মার্চ মাসে ব্রিটেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, লাক্সেম্বোর্গ এই পাঁচটি ইউরোপীয় রাষ্ট্র মিলে ব্রাসেলস -এ একটি যৌথ সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এর ...

মার্শাল পরিকল্পনা | Marshal Plan

মার্শাল পরিকল্পনা | Marshal Plan ট্রুম্যান নীতির পরিপূরক ও সম্প্রসারিত অর্থনৈতিক কর্মসূচি ছিল মার্শাল পরিকল্পনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পশ্চিম ইউরোপের অর্থনৈতিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটেছিল। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশে এমনকি ফ্রান্স ও ইতালিতেও কমিউনিস্টদের প্রভাব দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীর চিন্তা-ভাবনা শুরু করে। প্রথমে ডিন একিসন এবং পরে জর্জ মার্শাল ইউরোপের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন এর মার্কিন সাহায্য প্রদানের পক্ষে জোর সওয়াল করেন। 1947 সালের 5 ই জুন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ মার্শাল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা এক বক্তৃতায় ইউরোপীয় অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন এর পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এটিই সাধারণভাবে মার্শাল পরিকল্পনা নামে পরিচিত। মার্শাল পরিকল্পনা স্পষ্ট বলা হলো যে ক্ষুধা-দারিদ্র্য অর্থাভাব থেকে যুদ্ধোত্তর ইউরোপীয় দেশ গুলিকে রক্ষা করতে আমেরিকা উদারহস্তে অর্থনৈতিক সাহায্য দান করে যাবে। আরও বলা হল এই নীতি বা কর্মসূচি কোন দেশের বিরুদ্ধে নয়। অবশ্য প্রকাশ্যে না বলা হলেও এই পরিকল্পনার অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্যই ছ...

ট্রুম্যান নীতি | Truman Doctrine

ট্রুম্যান নীতি | Truman Doctrine 1947 এর 15 ই মার্চ ট্রুম্যান নীতি ঘোষিত হয়েছিল। এই নীতিতে বলা হয়েছিল বিশ্বের যে কোনো দেশ বা জাতি নিজেদের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার প্রয়োজনে অথবা বিদেশি চাপ ও প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে নিজ নিজ রাষ্ট্রীয় ঐক্য ও সংহতি অক্ষুন্ন রাখতে চাইলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পুরোমাত্রায় সাহায্য ও সহযোগিতা পাবে। এই বহিরাগত চাপ বলতে কমিউনিস্ট ভাবাদর্শ ও তার সঞ্চালক সোভিয়েত রাশিয়ার রাজনৈতিক ও সামরিক তৎপরতার দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন আর্থিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল। গ্রিস ও তুরস্ককে আর্থিক ও সামারিক ভাবে সহযোগিতা করা তার পক্ষে আর সম্ভব ছিল না। ব্রিটেন হাতগুটিয়ে নিলে পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন তার পূর্ব ইউরোপীয় বলয় গড়ে তোলার পর তুরস্কের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সচেষ্ট হয়। সাথে সাথে মস্কোর মদদপুষ্ট বামপন্থী গেরিলারা গ্রিসের দক্ষিণপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই পরিস্থিতিতে উক্ত দু'টি দেশে সোভিয়েত প্রভাব প্রতিরোধ করার জন্য গ্রিস ও তুরস্ককে আর্থিক সহায়তা প্রদান আমেরিকার পক্ষে অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। 1947 ...