সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

Ancient Egypt লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

Book of Dead | মৃতের বই

মৃতের বই মিশরীয়রা মৃত্যু পরবর্তী জীবনে বিশ্বাস করত। তারা পিরামিডের দেওয়াল , প্রস্তর ফলক বা প্যাপিরাসের পত্রে মৃত্যু-পরবর্তী জীবন সম্পর্কে লিখে রাখত। এই লিখনগুলিকে সংকলিত করে কয়েকটি গ্রন্থ প্রস্তুত করা হয়েছে। এরকমই একটি গ্রন্থ হল Book of Dead বা মৃতের বই। মৃতের জীবনকে ঠিকঠাক ভাবে পরিচালিত করার জন্য বিভিন্ন মন্ত্র ফর্মুলার কথাও এখানে বলা হয়েছে। মৃতের গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে , মৃত্যুর রাজ্যে মৃতের চরিত্র বিচার হয়। মৃতের যাত্রাপথ পশ্চিম দিকে , সূর্য দেব যেখানে অস্ত যান। মৃত্যুপুরীতে অসিরিস দেবগন পরিবৃত্ত হয়ে সিংহাসনে বসে থাকেন। তিনিই মৃত্যুপুরীর দেবতা। শেয়ালমুখো দেবতা আনুবিস পথ দেখিয়ে মৃত ব্যক্তিকে অসিরিসের দরবারে নিয়ে যান। সেখানে সেখানে তাকে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে হয় নতুবা ৪২ টি পাপের নাম করে নিজেকে নির্দোষ ঘোষনা করতে হয়। মৃতের সত্যপাঠ যাচাই করেন জ্ঞানের দেবতা ধৎ এবং ওসিরিস পুত্র হোরাস।  এবারে ন্যায়বিচারের দাড়িপাল্লায় মৃতের হৃদপিণ্ড ওজন করা হয়। পাল্লার অন্যদিকে বাটখারা হিসাবে থাকে ন্যায় বিচারের প্রতীক।মাপের ফলাফল ঘোষনা করেন জ্ঞানের দেবতা ধত। মৃতের গ্রন্থে মৃ...

প্রাচীন রাজতন্ত্র: মিশরীয়দের ধর্মবিশ্বাস | Old Kingdom: Egyptian Religious Thinking

প্রাচীন রাজতন্ত্র: মিশরীয়দের ধর্মবিশ্বাস প্রাচীন মিশরের ধর্ম বিশ্বাস বুঝতে হলে মিশরের প্রকৃতি , বিশেষ করে নীলনদের গুরুত্ব বুঝতে হবে। নীলনদ মিশরের তটভূমিকে জলসিক্ত করে জীবনের সঞ্চার করে থাকে , সেখানে শস্য জন্মায়। প্রতি বছর নীল-নদের জন্ম-মৃত্যুর আবর্তন দেখা দেয়। প্রতি বছরের বর্ষায় দুকূল ভাসিয়ে দেয় , তারপর জল যখন নেমে যায় কৃষিক্ষেত্রে পলি পড়ে উর্বর হয় এবং সেখানে সবুজ শস্য জন্মায়। এই পর্ব জীবনের পর্ব। গ্রীষ্ম এলে উপত্যকা ভূমি প্রাণহীন হয়ে যায়। মিশরীয় চিন্তা অনুযায়ী সূর্যদেবের উদয় এবং অস্ত তাঁর জীবন মরণের বিচিত্র লীলা। মিশরীয়রা যেমন নৌকায় ভ্রমণ করে , সূর্যদেব ‘ রে ’ তেমন আকাশ নামক জল ভাগে নৌকায় করে উদয় হন। এই পর্ব জীবনের পর্ব তথা আলোর পর্ব। ১২ ঘন্টা আলোর পর্ব পেরিয়ে সূর্যদেব অন্ধকার পর্বে প্রবেশ করে , যা মৃত্যুর রাজ্য। মিশরীয় ধর্মের মেরুদন্ড অসিরিস মিথ। পঞ্চম রাজবংশের রাজত্বকালের আগেই সূর্যদেব রে-এর পুত্র ফ্যারাওয়ের সঙ্গে কৃষি দেবতা অসিরিস ঐক্যের বাঁধনে বাঁধা পড়েন। ক্রমে অসিরিস পূজাই জনগণের ধর্মে পরিণত হয়। অসিরিসের পিতা পৃথিবী দেবতা গেব এবং মাতা আকাশদেবী ধৎ। অসিরিসের এক...

প্রাচীন রাজতন্ত্র: মিশরীয় সমাজের বিভিন্ন স্তর | Old Kingdom: Egyptian Economy

  প্রাচীন রাজতন্ত্র: মিশরীয় সমাজের বিভিন্ন স্তর যেকোনো কৃষিজীবী সমাজের মতোই প্রাচীন মিশরীয় সমাজ বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত ছিল ।সমাজের সবচেয়ে উপরে ছিল রাজা বা ফ্যারাও। তিনি সাক্ষাৎ ভগবান। তার সাথে তার পরিবারের সদস্যরাও সমাজের উপরতলায় স্থান করে নিত। পরিবারের সদস্যরা অনেকে রাষ্ট্রশাসন বা মন্দির শাসনের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন। রাজার পরেই স্থান হত রাজপুরুষদের। আপাতভাবে বলা হয় যে প্রাচীন রাজতন্ত্রের যুগে শাসক আর শাসিত এই দুটি ভাগ ছিল। রাজপুরুষরা সুবিধাভোগী শাসক শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হতেন। এরা ছিলেন সমাজের শিক্ষিত অংশ। কর আদায়, সেচ ব্যবস্থার তদারকি প্রভৃতি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন কাজে এরা যুক্ত থাকতেন। রীতি ছিল যে, ফ্যারাও-এর সমাধির চারপাশে রাজপুরুষদের কবর দেওয়া; কারণ এরা রাজার মৃত্যুর পরও রাজার সহযোগী হিসেবে থেকে যাবেন। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে বোঝা যায় মিশরীয় সমাজে মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব ছিল। নিচুপদস্থ কর্মচারীরা এবং হস্তশিল্পীরা এর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কৃষক সম্প্রদায়ের থেকে সমাজে এরা অনেক বেশি মর্যাদা পেতেন। সমাজের একেবারে নিম্নস্তরে ছিল কৃষক। কৃষকদের বড় অংশ ছিল ভূমিদাস। জমির মাল...

প্রাচীন রাজতন্ত্র: মিশরের অর্থনীতি | Ancient Egypt: Economy

প্রাচীন রাজতন্ত্র: মিশরের অর্থনীতি তাম্র প্রস্তর যুগে যেসমস্ত নদীকেন্দ্রিক সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল মিশরীয় সভ্যতা তার মধ্যে অন্যতম । নীল নদের তীরে এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। নীলনদ আবিসিনিয়ার পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয় উত্তর দিকে ৪ হাজার মাইল পথ প্রবাহিত হয়ে ভূমধ্যসাগরে পড়েছে। হেরোডোটাস মিশরকে নীলনদের দান বলেছেন। পিরামিডের যুগে মিশরে যে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছিল , তার মূলে ছিল উদ্বৃত্ত কৃষি উৎপাদন। এবং তার উপর নির্ভর করেই শিল্প-বাণিজ্য , রাষ্ট্রশাসন প্রভৃতি গড়ে উঠেছিল মিশরের কৃষি ছিল নীলনদের ওপর নির্ভরশীল। বছরের নির্দিষ্ট সময় নীলনদের বন্যায় উপকূল প্লাবিত হয়ে মিশরের মরুভূমিকে চাষযোগ্য জমিতে পরিণত করেছে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নীলনদে জলের উচ্চতা বেড়ে বন্যা হয়। অক্টোবর থেকে জলতল নামতে থাকে এবং সেই সময় চাষ হয়। জানুয়ারি মাসের পরে বন্যা আসার আগে পর্যন্ত সেখানে জল সেচের মাধ্যমে চাষ করতে হয়। এইভাবে কৃষিচক্রের ভিত্তিতে মিশরে তিনটি ঋতুর উদ্ভব হয়েছেঃ আখেত বা বন্যাঋতু , পেরেত বা বীজ বপনের ঋতু , সেমু/চেমু বা ফসল সংগ্রহ করার ঋতু। কোনো কারণে বন্যার জলের হেরফের হলে (সর্বনিম্ন – ৬ ফুট) চাষ বাধাপ্রা...

ওল্ড কিংডমঃ রাজতন্ত্রের প্রকৃতি | Nature of Old Kingdom in Ancient Egypt

  ওল্ড কিংডমঃ রাজতন্ত্রের প্রকৃতি মিশরে তৃতীয় রাজবংশ থেকে ষষ্ঠ রাজবংশ পর্যন্ত ( খ্রিস্টপূর্ব ২৯৮০  থেকে ২৪৭৫  খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত) শাসন কালকে old kingdom বলা হয়। এই সময়কালকে পিরামিডের যুগও বলে। বিভিন্ন ভাবধারা বিষয়ে সহিষ্ণু হলেও মিশরীয়দের জাত্যাভিমান ছিল প্রবল। তাই বিদেশীদের তারা কখনো ভাল চোখে দেখত না। এশিয়াবাসীদের সম্পর্কে তাদের অবজ্ঞার কথা জানা যায়। মিশরীয়রা তাদের ভাষায় যে শব্দটি পৃথিবী অর্থে ব্যবহার করত তার অর্থ মিশর ভূমি। আর মিশরের যিনি অধিপতি হতেন তিনি মানুষ নন , তিনি দেবতা। মিশরের রাজাদেরকে ফ্যারাও বলা হত। ফ্যারাও কথাটির অর্থ বড় বাড়ি । সূর্য দেবতা 'রে' তার কন্যা মিশরকে পুত্র ফ্যারাও এর হাতে সঁপে দিয়েছিলেন। অর্থাৎ মিশর ভূমির সঙ্গে ফ্যারাও বিবাহবন্ধনে জড়িত। ফ্যারাও যতদিন জীবিত ততদিন তিনি সাক্ষাৎ হোরাস। তিনি মারা গেলে অসিরিস। স্বামীর কর্তব্য তাঁর স্ত্রীকে যত্ন করা; আবার স্ত্রীর প্রতি স্বামীর প্রভুত্ব বৈধ। এভাবেই ফ্যারাও যেমন মিশর ভূমির উপরে সম্পূর্ণ প্রভুত্ব করবে তেমনি তার যত্নও নেবেন। তিনি প্রজাপালক;   প্রজাকে বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করবেন। অর্থাৎ ...

রােজটা পাথর | Rosetta Stone

 রোজেটা পাথর ১৭৯৯ খ্রীষ্টাব্দে নেপোলিয়নের মিশর আক্রমনের সময় একটি পাথর পাওয়া যায়। নীলনদের রোজেটা নামক সঙ্গম মুখে এটি পাওয়া গেছিলো বলে পাথরটির নাম হয় রোজেটা পাথর। এটি একটি কালো ব্যাসল্ট পাথর যেটি ৪ ফুট ৫ ইঞ্চি চওড়া ও ৩ ফুট ৯ ইঞ্চি লম্বা। এর ওপর তিন রকমের লিখন খোদাই করা ছিল। অধ্যাপক সাঁপোলিয়ান ( champollaion) এই লিপির পাঠদ্ধার করেছেন। খ্রিষ্টপূর্ব ১৯৫ অব্দে গ্রীক রাজা টলেমির রাজত্বকলে রোজেটা পাথরের লিপি উৎকীর্ণ করা হয়েছিলো। লিপিটি ছিল টলেমি বংশীয় কোনো রাজার উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করে মিশরীয় পুরোহিতদের প্রশস্তিপত্র। সাঁপোলিয়ান এই রোজেটা পাথরের ওপর গবেষণা করে মিশরীয় ভাষায় একটি ক্ষুদ্র ব্যাকরণ এবং হায়ারোগ্লিফিক লিপির একটি অভিধান রচনা করেছিলেন। এইভাবে লুপ্ত একটি ভাষাকে পুনরাবিষ্কার করে এই ফরাসি পন্ডিত যে নতুন বিদ্যার ভিত্তি স্থাপন করেছিল তা ইজিপ্টলজি ( Egyeptlogy) বা মিশর তত্ত্ব নামে পরিচিত।  Rosetta Stone The Rosetta Stone is an ancient artifact that played a crucial role in deciphering Egyptian hieroglyphics. In 1799, during Napoleon's invasion of Egypt, a stone was found ...

মিশরীয় লিপিঃ হায়রোগ্লাইফিক | Hieroglyphs of Egypt

মিশরীয় লিপিঃ হায়রোগ্লাইফিক মিশরে রাজবংশের উত্থানের অনেক আগে থেকেই লেখা শুরু হয়েছিল। তবে সেই লেখা প্রথম রাজবংশের সময়ে পরিণত রূপ লাভ করেছিল। সেই পরিণত রূপ হল হায়ারোগ্লিফিক। চিত্রের মাধ্যমে বিষয়বস্তু প্রকাশ করার বিশেষ নাম হল হায়ারোগ্লিফিক। হায়ারোগ্লিফিক এর তিনটি ধাপ: পিকটোগ্রাফ , আইডিওগ্রাম ও ফনোগ্রাম। পিকটোগ্রাফ হল কোন ছবিকে কোন পূর্বনির্দিষ্ট ভাব বিশেষের সঙ্গে যুক্ত করা ; যেমন সিংহের চিত্র দিয়ে প্রভুত্বকে বোঝানো। আইডিওগ্রাম হল পূর্ব পরিকল্পনা মত একটি ছবির সঙ্গে অন্য একটি ছবি জুড়ে দিয়ে যুক্ত ছবিটির কোনো বিশেষ অর্থ তৈরি করা। যেমন: মুখের চিহ্নের সঙ্গে বাষ্প ও জিহ্বা যুক্ত করলে বক্তৃতা বোঝানো যায়। আর ফনোগ্রাম হল একই শব্দ নানা অর্থে ব্যবহার করার জন্য বিশেষ নির্দেশক চিহ্নের ব্যবহার। যেমন একই শব্দের অর্থ যদি হয় নৌকা , স্থান ও বয়ন তাহলে নৌকার ছবি সঙ্গে পৃথিবীর ছবি জুড়ে দিলে তার অর্থ হয় স্থান ; নৌকার সঙ্গে রেশমের চিত্র জুড়ে দিলে তার অর্থ হয় বয়ন। পিকটোগ্রাফ ছেড়ে লেখা যখন শব্দার্থব্যঞ্জক বা ফোনেটিক হতে শুরু করল তখন প্রতিটি চিত্র হয়ে উঠল এক একটি শব্দ সমষ্টির সংকেত। এইরূপ চিত্রের ...