সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

Ancient Greece লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রাচীন গ্রিসের স্থাপত্য ভাস্কর্য ও চিত্রকলা | Architecture Sculpture and Painting in Ancient Greece

প্রাচীন গ্রিসের স্থাপত্য ভাস্কর্য ও চিত্রকলা ধ্রুপদী  গ্রীস স্থাপত্য ভাস্কর্য ও চিত্রকলার আঙিনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। যেহেতু প্রতিটি পলিশ তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক স্বতন্ত্র বজায় রাখতো তাই শিল্পচর্চার ক্ষেত্রেও এই নিজস্বতা ও স্বতন্ত্রতার প্রকাশ লক্ষ্য করা গেছে।  প্রথমে আমরা স্থাপত্য শিল্পের ব্যাপারে আলোচনা করতে পারি। প্রথমদিকে স্থপতিরা মূলত বৃহৎ মন্দির ও ছোট ছোট সৌধ নির্মাণ করত। ছোট ছোট সৌদ গুলিকে বলা হত ট্রেজারি । মন্দির ও সৌধ নির্মাণে  গ্রীকরা মিশরীয়দের কাছ থেকে পাথর ও মার্বেলের ব্যবহার শিখেছিল। সাধারণত পলিশ গুলির প্রধান সভা স্থল বা অ্যাগোরার সন্নিকটে এই সৌধ ও প্রাসাদ গুলি নির্মিত হত। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের প্রথমার্ধ থেকে গ্রিসের বিভিন্ন প্রকার স্থাপত্য রীতির মধ্যে একটি ঐক্য সূত্র গড়ে তোলার প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়। এই প্রচেষ্টার অন্যতম উদাহরণ হল এথেন্সের পার্থেনন মন্দির। দেবী অ্যাথেনার উদ্দেশ্যে নির্মিত এই মন্দির ছিল এথেনীয় গণতন্ত্রকে গৌরবান্বিত করার একটি সচেতন প্রয়াস। এর প্রধান স্থপতি ছিলেন ইকটিনস ও ক্যালিক্র্যটিস। প্রায় একই সময়ে নির্মিত হয়েছিল প্রপিলিয়া...

প্রাচীন এথেন্সের দর্শন চর্চা

প্রাচীন এথেন্সের দর্শন চর্চা                প্রাচীন গ্রিক সংস্কৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপাদান ছিল দর্শন। ধ্রুপদী গ্রিসের দর্শনের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে পাশ্চাত্য দর্শনের বিকাশ ঘটেছিল। সেই যুগের তিনজন শ্রেষ্ঠ দার্শনিক হলেন সক্রেটিস, প্লেটো ও অ্যারিস্টটল।                  প্রাচীন গ্রিক দর্শনে সোফিষ্ট মতবাদের ব্যাপক প্রভাব ছিল। সোফিষ্ট কথাটির দ্বারা দক্ষ ও জ্ঞানী মানুষকে বোঝায়। সোফিস্টদের উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন বিষয়ে মানুষকে শিক্ষিত করে তোলে। ইতিহাস, ভূগোল, নৃতত্ত্ব, গণিত, আয়োনীয় বিজ্ঞান, ভাষাতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয় তারা শিক্ষা দিতেন। এরা ধনী পরিবারের তরুণ প্রজন্মকে সফল করে গড়ে তোলার চেষ্টা করতেন। এদিক থেকে তাদের প্রয়াস সার্বিক ছিল না। সোফিষ্ট দর্শন ও শিক্ষার মূল ভিত্তি ছিল Nomos Physis বৈপরীত্য। Nomos হলো রাষ্ট্রীয় আইন, যা মানুষেরই তৈরি এবং যা আপেক্ষিক ও পরিবর্তনশীল। Physis হল চিরন্তন বা স্বাশত। সোফিষ্ট দার্শনিকগণ এই দুইয়ের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন রেখা টেনে দিয়েছিলেন। তারা বোঝাতে চেয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় আইন কৃত...

প্রাচীন গ্রিসে দাসপ্রথা | Slavery in Classical Greece

প্রাচীন গ্রিসে দাসপ্রথা সমাজ বিকাশের ধারা প্রসঙ্গে কাল মার্কস এর বক্তব্য ছিল এই যে আদিম সাম্যবাদী সমাজ ব্যবস্থার অবসান ঘটে কৃষি ব্যবস্থার সূচনা এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির আবির্ভাবের ফলে এবং এর ফলেই দাস ব্যবস্থার সূচনা হয়। ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতাগুলিতে আমরা দাস ব্যবস্থার অস্তিত্ব লক্ষ্য করি। ধ্রুপদী গ্রিসের সমাজ ও অর্থনীতির অন্যতম অঙ্গ ছিল দাস ব্যবস্থা। মার্কসীয় সমাজতাত্ত্বিকগণ গ্রিক সভ্যতাকে দাস শ্রমের উপর নির্ভরশীল সভ্যতা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন কিন্তু এই মতের বিপক্ষে বহু ঐতিহাসিক প্রশ্ন তুলেছেন। কেমব্রিজ ঐতিহাসিক এন্ড্রু জোন্স মন্তব্য করেছেন যে যেহেতু এথেন্স এবং অন্যান্য গ্রীক পলিসে দাসদের সংখ্যা ও নাগরিকদের সংখ্যার সঠিক অনুপাত পাওয়া যায় না তাই গ্রিক সমাজকে দাস সমাজ হিসেবে চিহ্নিত করা যুক্তিসঙ্গত নয়। যাইহোক, ধ্রুপদী গ্রীসে দাস ব্যবস্থার উপস্থিতি ছিল এই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। জন ফাইন সাহিত্যিক উপাদান থেকে দাসদের সংখ্যার একটি আনুমানিক হিসাব করে বলেছেন যে, ধ্রুপদী মোটামুটি এক লক্ষ দাসের অবস্থান ছিল। কোন প্রেক্ষাপটে কেন প্রাচীন গ্রিসে দাস ব্যবস্থার সূচনা হয়েছিল তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে ...

হেরোডোটাস ও থুকিডিডিস | Herodotus & Thukidydes

  ধ্রুপদী গ্রীসের ইতিহাসচর্চাঃ হেরোডোটাস ও থুকিডিডিস  মানব বিদ্যায় সাহিত্যের পরেই ইতিহাসের স্থান। ইতিহাসচর্চার সূচনা হয়েছিল ক্লাসিক্যাল গ্রীসে। হেরোডোটাস ও থুকিডিডিস ছিলেন এর সূচনাকারী। ইতিপূর্বে গ্রীসে গীতিকাব্য, মহাকাব্য, রাজবংশাবলী এবং ধর্মীয় গাঁথা রচনার চল ছিল, যেগুলিকে ঐতিহাসিক ট্রেভেলিয়ান "Quasi-historical রচনা" বলে উল্লেখ করেছেন। হেরোডোটাস ও থুকিডিডিসের রচনার সুত্র ধরেই রোম্যান্টিক ও ধর্মীয় গাঁথা থেকে ইতিহাসের মুক্তি ঘটল এবং জ্ঞানের একটি নতুন ধারা হিসাবে ইতিহাসের জয়যাত্রা সূচিত হল। হেরোডোটাস কেবল প্রাচীন গ্রিসেই নয় সার্বিকভাবে ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে এবং ঐতিহাসিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে পুরোধা ব্যাক্তি ছিলেন হেরোডোটাস। পেরিক্লিসের শাসনকালে সাহিত্য ও দর্শন চর্চার মত ইতিহাসচর্চাও এথেন্সের বৌদ্ধিক জীবনকে গভীর ভাবে প্রভাবিত করেছিল। এথেন্সের ইতিহাসচর্চার প্রথম এবং প্রধান ঐতিহাসিক ছিলেন হেরোডোটাস। হেরোডোটাস রচিত গ্রন্থের নাম 'Histories'. এই গ্রন্থের আলোচ্য বিষয় হল গ্রিক ও পার্সিয়ানদের মধ্যে যুদ্ধের ইতিহাস। তার ইতিহাসের সময়কাল মোটামুটি ৭০ বছর। হেরোডোটাসের ইতিহাস ৩ টি ভ...

ম্যারাথনের যুদ্ধ | The Marathon War

  ম্যারাথনের যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসেবে পারস্য ক্রমশ আত্মপ্রকাশ করে এবং এশিয়া মাইনরের উপকূলে অবস্থিত গ্রিক উপনিবেশগুলি তারা দখল করে গ্রীসের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে থাকে। গ্রীস উপনিবেশ আইয়োনিয়া ও লিডিয়া সম্রাট দরায়ুস দখল করে নেন এবং সেখানে একজন সম্রাটের অধীনে শাসন পরিচালনার দায়িত্ব দেন। এরপর পারস্য মূল গ্রিসের হ্রেস ও ম্যাসিডন অধিকার করে নেয়। ইতিমধ্যে এথেন্সে স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রধানত স্বৈরাচারী শাসক হিপিয়াস আইয়োনিয়া ও লিবিয়ার রাজধানী সার্দিসে আশ্রয় নেয়। ফলে এথেন্স ও পারস্যের মধ্যে যুদ্ধের বাতাবরণ গড়ে ওঠে। আইয়োনিয়া অঞ্চলে পারস্যের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়। এই বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করেন এথেন্স ও ইরিথ্রিয়া। পারসিকরা এই বিদ্রোহ দমন করে। কিন্তু দরায়ুস এথেন্স ও ইরিথ্রিয়াকে সমুচিত শিক্ষা দেবেন বলে ঠিক করে। ইরিথ্রিয়া পারস্যের বিরুদ্ধে তেমন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। পারস্যের সৈন্যরা এই নগররাষ্ট্রোটিকে ধ্বংস করে, কিন্তু এথেন্স রুখে দাড়ায়। ৪৯০ খ্রিষ্টাব্দে সেপ্টেম্বর মাসে ম্যারাথনে গ্রীক-পারসিক চুড়ান্ত যুদ্ধ শু...

পেরিক্লিসের সংস্কারঃ এথেনীয় গণতন্ত্রের স্বর্ণযুগ | Reforms under Pericles in Athance

  পেরিক্লিসের সংস্কারঃ এথেনীয় গণতন্ত্রের স্বর্ণযুগ পেরিক্লিস ৪৬১-৪২৯ BCE পর্যন্ত এথেন্সে শাসন করেছিলেন। পেরিক্লিস ছিলেন গণতন্ত্রপন্থী এবং তার নেতৃত্বে এথেন্সে তথা গ্রিসের সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার যে উন্নতি ঘটেছিল তাকেই এথেন্সের ইতিহাসে পেরিক্লিসিয় স্বর্ণযুগ বলা হয়। পেরিক্লিস দক্ষ ও উদার প্রশাসনিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করেছিল। গণপরিষদ এটি ছিল নাগরিকদের সংগঠন। এই পরিষদ আইন প্রণয়ন এবং অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার লাভ করেছিল। গণপরিষদের অধিবেশন ১০ দিন অন্তর অনুষ্ঠিত হত। গণপরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ ও বিচার বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ করেছিল। পাচ'শ সদস্যের পরিষদ পাচ'শ সদস্যের পরিষদ ছিল গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত একটি পরিষদ, যারা আইন প্রয়োগের কাজের তদারকি করত। বিচারক মন্ডলী গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হতেন এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের মত অনুযায়ী বিচারের রায় দান করতেন। জেনারেল পরিষদ দশজন জেনারেল সমন্বয়ে গঠিত ছিল এই জেনারেলদের পরিষদ। পরিষদ এই পরিষদের সদস্যদের নির্বাচন ও কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করত। পেরিক্লিস দীর্ঘ ৩০ বছরেই জে...

স্পার্টার শাসন ব্যবস্থা | Spartan Administration

স্পার্টার শাসন ব্যবস্থা প্রাচীন গ্রিসে গুরুত্বের বিচারে এথেন্সের সমকক্ষতা দাবি করতে পারত স্পার্টা। গ্রিসের উত্তর দিক থেকে যে সব ডোরিয়ানরা এসে ইউরোটাস নদীর উপত্যকায় বসতি স্থাপন করেছিল এবং কয়েকটি গ্রাম সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠিত করেছিল তাদের বলা হত ল্যাকিডিমোনিয়। কালে কালে এই অঞ্চলে একটি নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠে এবং অবশিষ্ট অঞ্চলের উপর প্রাধান্য স্থাপন করে। এই নগর রাষ্ট্রটি ছিল স্পার্টা। পাঁচটি গ্রামের সমন্বয়ে স্পার্টা গড়ে উঠেছিল। স্পার্টানরা ছিল ডোরিয়ানদের বংশধর। অপরাপর ল্যাকিডিমোনিয়রা পেরিঅয়কয় নামে পরিচিত হতেন। এদের রাজনৈতিক অধিকার ছিল না। আর যারা ডোরিয়ান আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছিল তারা হিলট বা ক্রিতদাসে পরিণত হয়েছিল।  স্পার্টার একদিকে ছিল পারনন এবং আরেকদিকে ছিল টাইগিটাস পর্বতশ্রেণী। নগর রাষ্ট্র হিসাবে স্পার্টার এই অবস্থান তার নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করত। তবে বন্দর ছিল নগর থেকে ২৫ মাইল দূরে, ফলে স্পার্টার সামুদ্রিক বাণিজ্য ও নৈশক্তি প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছিল।   ঐতিহ্য অনুসারে স্পার্টার শাসনতন্ত্রের প্রবর্তক ছিলেন লাইকারগাস। কিন্তু তাঁর ঐতিহাসিক অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ আছে। প্রকৃতপক্...

পলিসের সামাজিক শ্রেনীবিভাজন | Social stratification of Polis

 পলিসের সামাজিক শ্রেনীবিভাজন পলিসের জনতা প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত। নাগরিক এবং অনাগরিক এই দুই শ্রেণীর লোক বাস করত। অনাগরিক বলতে বোঝাত মেটিক, পেরিঅয়কয় এবং হেলট বা ক্রীতদাসদের। নারীদেরও নাগরিক অধিকার ছিল না। নাগরিকের পরিবারে জন্ম গ্রহণ না করলে কারোর পক্ষে নাগরিক অধিকার পাওয়া খুব কঠিন ছিল। অনাগরিকদের নাগরিক অধিকার দানের কোন নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন ছিল না। তবে নাগরিক অধিকার না পেলেও এথেন্সের একলেজিয়া বিদেশিদের সামাজিক স্বীকৃতি দিত। পেরিক্লিসের শাসনের আগে দেখা যেত পিতা নাগরিক হলে এবং মাতা বিদেশিনী হলেও নাগরিক অধিকার পাওয়া যেত। কিন্তু নাগরিক অধিকারকে পেরিক্লিস আরো সংকুচিত করেন। তখন থেকে একমাত্র  পিতা এবং মাতা উভয়েই নাগরিক এবং বৈধভাবে বিবাহের ফলে যদি সেই সন্তানের জন্ম হয় তবেই সে নাগরিকত্ব পেত। পেরিক্লিসের যুগে এথেন্সের জনসংখ্যা ছিল প্রায় তিন লক্ষ। কিন্তু নাগরিক ছিল প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার। অভিজাততান্ত্রিক পলিসে নাগরিক অধিকার অর্জন করা আরও কঠিন ছিল। যেমন স্পারটায় নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পত্তির মালিক না হতে পারলে, সাধারণ ভোজনালয়ের জন্য অর্থ দিতে না পারলে এবং যৌবনে সামরিক শিক্ষা গ্রহণ না ...

পলিস উদ্ভবের কারণ | Emergence of Polis

  পলিস বলতে কি বোঝায়  নগররাষ্ট্র কে গ্রীকবাসী পলিস নামে অভিহিত করতো। ইংরেজি শব্দ 'Polis' এর অর্থ স্ব-শাসিত রাষ্ট্র। তবে নগর রাষ্ট্রের কোন সঠিক সংজ্ঞা ঐতিহাসিকরা দিতে পারেননি। তবে নগররাষ্ট্র বলতে শুধু নির্দিষ্ট ভূখন্ড জনসাধারণের সমষ্টি ছিল না, নাগরিক জীবনে নানান সুযোগ-সুবিধা ছিল পলিস জীবনের একান্ত শর্ত, যেখানে থাকত বড় বাড়ি, মিউজিয়াম, থিয়েটার হল, বাজার ও জলস্তম্ভ। পলিস গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় চারটি বিষয় যুক্ত ছিল; সেগুলি হলঃ স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষা,  রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ, সৌন্দর্য। তবে গ্রিসে এমন অনেক নগররাষ্ট্র ছিল যারা এই চারটি শর্ত পূরণ করতে না পারলেও তাদের পলিস বলা হত। গ্রিস ও এশিয়া মাইনরের মূল ভূখন্ডে এবং ইজিয়ান সাগরের দ্বীপগুলিতে অপেক্ষাকৃত উন্নত অঞ্চলগুলিতে পলিসের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। পলিস উদ্ভব খ্রিঃ পূঃ ১২০০ অব্দ থেকে খ্রিঃ পূঃ ৮০০ অব্দ পর্যন্ত সময়কালকে গ্রিসের ইতিহাসে অন্ধকার যুগ বলা হয়। এই সময়ে মাইসিনীয়, হিট্টাইট ইত্যাদি বৃহৎ সাম্রাজ্যগুলির পতন ঘটেছিল। এই সময়ের ইতিহাস চর্চা যথেষ্ট তথ্যের অভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অন্ধকার যুগের প্রথম পর্ব...

পলিসের পতনের কারণ | Decline of Polis

পলিসের পতনের কারণ  খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে সূচনালগ্নে গ্রিসে পলিস বা নগর রাষ্ট্র গুলির পতন ঘটে। 431-404 খ্রিস্টপূর্বের মধ্যে ঘটে যাওয়া পেলোপনিসীয় যুদ্ধের সমাপ্তির সাথে সাথে পলিসের পতনের লক্ষনগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পেলোপনিসীয় যুদ্ধের পর পলিসের যে অস্তিত্ব ছিল তা কেবল পূর্বের ছায়া মাত্র। দীর্ঘকাল যাবৎ গ্রিসের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল যে পলিস ব্যবস্থা তার পতনের কারণ অনুসন্ধানে ঐতিহাসিকগণ আগ্রহী হয়েছেন। এথেনিয় সাম্রাজ্য ও স্পার্টার নেতৃত্বাধীন দুটি রাষ্ট্র জোটের মধ্যে দীর্ঘ 27 বছর ধরে পেলোপনেসীয় যুদ্ধ চলছিল। এই গৃহযুদ্ধে এথেন্স পরাজিত হয়; কিন্তু স্পার্টার সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। থিবস -এর কাছে স্পার্টা পরাজিত হয়। থিবস-এর রাজনৈতিক কৃতিত্ব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। শেষ পর্যন্ত ম্যাসিডোনিয়ার রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ গ্রীসকে পদানত করেছিলেন। পলিস তৈরি হয়েছিল একান্তভাবে অপেশাদার শখের কর্মীদের জন্য। পলিসের লক্ষ্য ছিল জীবনের সমগ্রতা এবং ঐক্যের দিকে। তাই পলিশের আদর্শ ছিল এই যে, এর প্রতিটি নাগরিক পলিসের বিভিন্ন কার্যাবলীতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। এজন্য কোন একটি বিষয়ে দক্ষ...

পলিশের স্বরূপ । পলিশের বৈশিষ্ঠ্য | Basic Charecteristics of Polis in Anceint Grece

পলিশের স্বরূপ পলিশ একটি গ্রিক শব্দ। ইংরেজিতে এর অনুবাদ হয় City State এবং বাংলায় নগররাষ্ট্র । পলিশ শব্দের অর্থ স্বশাসিত রাষ্ট্র। পলিশ লোকসংখ্যা এবং আয়তনে ক্ষুদ্র হওয়ায় একে নগর রাষ্ট্র বলা হয়। তবে এই অনুবাদ যথার্থ নয়। কারণ এথেন্স ছিল যথার্থ নগর রাষ্ট্র, কিন্তু অনেক পলিশ ছিল যেগুলি আদৌ নগর নয়, যেমন- স্পার্টা। আবার নগর যে গ্রামকে শাসন করতো এরকম ঠিক নয়। তবে ভালো বিকল্পের অভাবের জন্য City State বা নগর রাষ্ট্র   কথাটি প্রচলিত হয়ে গেছে। মাইসিনীয় সভ্যতার পতন ঘটেছিল আনুমানিক ১২০০ খ্রিস্টপূর্ব অব্দে। এরপর গ্রিসে শুরু হয়েছিল দীর্ঘস্থায়ী অন্ধকার যুগ (১২০০-৮০০ খ্রিস্টপূর্ব)। এর পরবর্তী যুগটি আর্কাইক বা সুপ্রাচীন যুগ নামে পরিচিত (৮০০-৫০০ খ্রিস্টপূর্ব)। এই যুগেই গ্রিক সভ্যতার নাগরিক ধাঁচটি বিকশিত হতে শুরু করে। সুপ্রাচীনকালেই যে বাহুসংখ্যক পলিশ প্রতিষ্টিত হয়েছিল, ধ্রুপদী যুগে তা পূর্ণ পরিনিতি লাভ করেছিল। পলিশ একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কেন্দ্র। এই গোষ্ঠীর রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপ একটি পলিশকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হত। নগরকে কেন্দ্র করে পলিশ গড়ে উঠত। আবার প্রতিটি পলিশেই এ...