সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

Ashoka লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অশোকের ধম্ম | Dhamma of Ashoka

অশোকের ধম্মের প্রকৃতি ধম্মনীতি ও বৌদ্ধ ধর্ম কি এক? সুবৃহৎ মৌর্য সাম্রাজ্যের সংহতি রক্ষার জন্য একটি ভাবাদর্শের একান্ত প্রয়োজন ছিল। সম্রাট অশোকই প্রথম সেই পদক্ষেপ নিলেন ধম্মনীতি গ্রহণ করে। অশোকের অনুশাসন গুলির মুখ্য উপজীব্য হল ধম্ম বা ধর্ম। লিপিগুলি ধম্মলিপি নামেও পরিচিত। এই ধম্ম বা ধর্মের প্রকৃতি কি, ধম্ম ও বৌদ্ধধর্ম এক কি না তা নিয়ে পন্ডিতদের মধ্যে বিতর্ক বিদ্যমান। একদিকে রাধাগোবিন্দ বসাক মনে করেন ধম্ম এবং বৌদ্ধধর্ম এক। অন্যদিকে হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী, নীলকন্ঠ শাস্ত্রী এবং রোমিলা থাপার মনে করেন ধম্ম ও বৌদ্ধ ধর্ম এক নয়;ধম্ম হল সাধারন নীতিবাচক উপদেশাবলী, সকল ধর্মেই উপস্থিত থাকে। ধম্ম এবং বৌদ্ধ ধর্ম এক বলে যারা মনে করেন তাদের বক্তব্য হল কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতা অশোকের হৃদয়ে যে অনুতাপের সৃষ্টি করে তার ফলস্বরূপ তিনি বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন, হিংসাশ্রয়ী যুদ্ধের নীতি চিরতরে পরিহার করেন এবং শান্তিকামী নীতি অবলম্বন করে শাসন চালাতে থাকেন। অর্থাৎ কলিঙ্গ যুদ্ধের পরে অশোক একজন নিষ্ঠাবান বৌদ্ধ হিসাবে বৌদ্ধ রীতিনীতি ও আদর্শ অনুযায়ী দেশ শাসন করতে থাকেন। আরও মনে করা হয় যে তিনি বৌদ্ধ ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্...

মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণ| Fall of Mauryan Empire

মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণ ২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অশোকের মৃত্যুর পর থেকে মৌর্য সাম্রাজ্যের ক্রমিক অবক্ষয়ের সূচনা হয়। গ্রীকরা হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে ভারতবর্ষে অনুপ্রবেশ করে। ১৮৫ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে পুষ্যমিত্র শুঙ্গ মৌর্য রাজবংশের শেষ শাসক বৃহদ্রথ কে হত্যা করে মৌর্য শাসনের অবসান ঘটান। মগধে এরপর শুরু হয় শুঙ্গ বংশের শাসন। মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণ নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে।  পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদী প্রতিক্রিয়ার তত্ত্ব তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে অশোক শূদ্র বংশজাত ছিলেন বলে ব্রাহ্মণরা তার শাসন মেনে নিতে পারেননি। তিনি আরও দেখিয়েছেন, অশোকের একাধিক সংস্কার ব্রাহ্মণদের স্বার্থের প্রতিকুল ছিল। তাঁর পশুবলি বিরোধী বিধান এর ফলে ব্রাহ্মণদের যাগ-যজ্ঞ ও অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠানে পশু বলির সূত্র ধরে যে আয় হতো তা বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, অশোক তার প্রথম ক্ষুদ্র গিরিশাসন যে কথাটি বলেছিলেন শাস্ত্রী তার অনুবাদ করেছেন এভাবে-- এতোকাল যাদের ভূদেব মনে করা হতো অশোক তাদের 'অমিসা দেবা' বা মিথ্যা দেবতা প্রতিপন্ন করেছেন। ...

অশোকের সাম্রাজ্য সীমা | Territory of Ashokan Empire

অশোকের সাম্রাজ্য সীমা অশোকের সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি পরিমাপ করতে হলে অশোকের অনুশাসন গুলির অবস্থান অনুধাবন করতে হবে। অশোকের শিলালিপি গুলিতে মৌর্য সাম্রাজ্যের সমার্থক শব্দ হিসেবে 'জম্বুদ্বীপ' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। জম্বুদ্বীপ কথার অর্থ জাম ফলের দ্বীপ। নিটটুরের  এর গৌণ গিরিশাসনে বলা হয়েছে যে তার সম্রাজ্য সর্বত্র তার অনুশাসন প্রেরিত হয়েছে। সুতরাং তার লিপি গুলির ভৌগোলিক অবস্থান তার সাম্রাজ্যের আয়তন নির্দেশ করে। লিপি গুলির প্রাপ্তিস্থান অনুধাবন করে বলা যায় উত্তরে আফগানিস্তান থেকে দক্ষিনে কর্ণাটক পর্যন্ত এবং পশ্চিমে কাথিয়াবাড় থেকে পূর্বে কলিঙ্গ পর্যন্ত তার সম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। মহাস্থান লেখাটি যদি মৌর্য কালিং দলিল হয় তাহলে অশোকের সাম্রাজ্যের পূর্ব সীমানা উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত প্রসারিত ছিল- এমন বলা যায়। কলিঙ্গ ছাড়া বাকি সমস্ত এলাকাই তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয়েছিলেন। অশোকের অনুশাসন এই তার সাম্রাজ্যে এর বাইরের এলাকা গুলিকে সীমান্তবর্তী এলাকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন -- ১. চোড় অর্থাৎ চোল ২. পাড় অর্থাৎ মাদুরাই এর পান্ড  ৩. কেরলপুত অর্থাৎ কেরল ৪. সত্যপুত অর্থাৎ ক...

কলিঙ্গ যুদ্ধের তাৎপর্য | Ashoka: Importance of Kalinga War

কলিঙ্গ যুদ্ধের তাৎপর্য অশোক তার চল্লিশ বছরের শাসনকালের মাত্র একটি যুদ্ধ করেছিল। সেটি হল কলিঙ্গ যুদ্ধ। এই যুদ্ধের বিবরণ পাওয়া যায় তার ত্রয়োদশ গিরি অনুশাসনে। অশোকের পূর্বেও মৌর্য সম্রাট রা কলিঙ্গ আক্রমণ করেছিলেন ৩২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত কলিঙ্গ ছিল নন্দ রাজাদের অধীনে। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য কলিঙ্গ জয় চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সফল হননি। অশোক তার রাজ্জাকের অষ্টম তম বর্ষ অতিক্রান্ত হলে অর্থাৎ তার ত্রয়োদশ রাজ্যবর্ষে কলিঙ্গ জয় করেন।  কলিঙ্গ আক্রমণের পশ্চাতে অশোকের সাম্রাজ্যবাদী আকাঙ্ক্ষা ছিল তা অস্বীকার করার উপায় নেই কিন্তু এই অভিযানের পশ্চাতে যথেষ্ট পরিমাণে অর্থনৈতিক স্বার্থও ছিল। বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত স্বাধীন, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ রাজ্য কলিঙ্গ। কলিঙ্গের সমৃদ্ধির পথে এখানকার দক্ষ কারিগর এবং উন্নত সমুদ্র বাণিজ্য। সমুদ্র বাণিজ্যের জন্যই কলিঙ্গের বন্দর গুলি যথেষ্ট গুরুত্ব অর্জন করেছিল এবং এখানকার নৌবাহিনী ছিল উল্লেখযোগ্য। এই সমৃদ্ধিকে হস্তগত করার জন্য অশোক কলিঙ্গ জয়ে উৎসাহী হয়েছিলেন। কলিঙ্গ যুদ্ধ লক্ষাধিক প্রাণহানি ঘটেছিল এবং অসংখ্য মানুষকে যুদ্ধবন্দী করা হয়েছিল। যুদ্ধে পরাজয়ের পর ...