Please visit our Homepage and Subscribe us.
ক্যান্টন বাণিজ্যে ইউরোপীয়দের বেশ কিছু কঠিন শর্ত মেনে চলতে হত। বিদেশিদের প্রতি হীন দৃষ্টিভঙ্গিগত কারণে চীনারা তাদের ওপরে এই রকম শর্ত আরোপ করত। আধুনিক পশ্চিমী শক্তিগুলিকে চীনারা তাদের প্রতিবেশী করদ রাজ্যের থেকে বেশি কিছু ভাবতো না। বরং মনে করত যে, মাঞ্চু সরকার কৃপা করে তাদের ক্যান্টন বাণিজ্য করার অধিকার দিয়েছে, বিদেশিদের কাছ থেকে কিছু নেওয়ার কোনো প্রয়োজন চীনের নেই। তাই ক্যান্টন বাণিজ্য ছিল একমুখী।
শিল্প বিপ্লব পরবর্তী ইউরোপীয় শক্তিগুলি কি পরিমান উন্নতি করেছিল রুদ্ধদ্বার চীনের কাছে তার কোনও খবরই ছিল না। তাই চীন সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলিকে হালকাভাবেই নিয়েছিল। এদিকে ব্রিটেন ও আমেরিকা চীনের সাথে আলাপ আলোচনার পথে ব্যর্থ হয়ে চীনে আফিমের চোরাচালান শুরু করে। আফিম চালানকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে এবং যুদ্ধের সূচনা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় ইঙ্গ চীন যুদ্ধে, আফিম যুদ্ধ নামে পরিচিত, চীন পরাজিত হয় এবং পশ্চিমী শক্তিগুলির সাথে অসম চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়। এইভাবে চীনের রুদ্ধদ্বার উন্মোচিত হয় এবং 'ক্যান্টন বাণিজ্যের' প্রাসঙ্গিকতার অবসান ঘটে।
ক্যান্টন বাণিজ্য | Canton Trade
চীনের সাথে পশ্চিমী শক্তিগুলির যোগাযোগের ইতিহাসে ক্যান্টন বানিজ্যের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাং যুগ থেকেই দক্ষিণ চীনের এই বন্দর-শহর ক্যান্টন ছিল বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি প্রধান ঘাঁটি। ভাস্কো-ডা-গামা কর্তৃক আফ্রিকা ঘুরে ভারতে আসার জলপথ আবিষ্কার হওয়ার পর থেকেই পর্তুগিজরা এবং পরে অন্যান্য ইউরোপীয় বাণিজ্যিক শক্তিগুলি ক্যান্টনে এসে হাজির হয়। ইংরেজরা ক্যান্টন ছাড়াও অ্যাময় ও নিংপোতে ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে মাঞ্চু সরকার একমাত্র ক্যান্টন বন্দর বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত করেন এবং অন্যত্র বিদেশিদের অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ হয়।
canton trade |
ক্যান্টন বাণিজ্যে ইউরোপীয়দের বেশ কিছু কঠিন শর্ত মেনে চলতে হত। বিদেশিদের প্রতি হীন দৃষ্টিভঙ্গিগত কারণে চীনারা তাদের ওপরে এই রকম শর্ত আরোপ করত। আধুনিক পশ্চিমী শক্তিগুলিকে চীনারা তাদের প্রতিবেশী করদ রাজ্যের থেকে বেশি কিছু ভাবতো না। বরং মনে করত যে, মাঞ্চু সরকার কৃপা করে তাদের ক্যান্টন বাণিজ্য করার অধিকার দিয়েছে, বিদেশিদের কাছ থেকে কিছু নেওয়ার কোনো প্রয়োজন চীনের নেই। তাই ক্যান্টন বাণিজ্য ছিল একমুখী।
ক্যান্টন এর চিনা বাণিজ্যিক সংস্থার নাম ছিল কো হং। বিদেশিদের এই সংস্থার অন্তর্ভুক্ত হং বণিকদের মাধ্যমে বাণিজ্য করতে হত। পণ্যদ্রব্যের দাম এরাই নির্ধারণ করত। সংস্থাটি লিয়াং গুয়াং এর আবগারি অধিকর্তা হপ্পোর কাছে দায়বদ্ধ থাকত। এই হপ্পো-রা সর্বদাই দুর্নীতিপরায়ন হত। হং বণিকদের কাছ থেকে এরা উৎকোচ আদায় করত। হং বণিকদের পক্ষে তাই দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়া উপায় থাকত না। কো হং সংস্থা ছাড়াও বিদেশীরা ক্যান্টন নগর প্রাচীরের বাইরে পার্ল নদীর তীরে তেরোটি ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছিল। চীনাদের সংকীর্ণ ভাবনায় এগুলিকে তারা আই-কুয়ান বা বর্বরদের সংস্থা বলে অভিহিত করত। ক্যান্টন বন্দরে বিদেশি বণিকরা যদি কোনও ফৌজদারী মামলায় জড়িয়ে পড়তো তাহলে তার দরুন চীনা আইন অনুযায়ী কঠিন শাস্তি হত।
এখন প্রশ্ন হলো এত প্রতিকূলতা ও অপমান সত্বেও পশ্চিমারা কেন ক্যান্টনে তাদের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছিল? আসলে ক্যান্টন বাণিজ্য ছিল অত্যন্ত লাভজনক। চীনের রেশম, চা ও নানকিনের ইউরোপের বাজারে ব্যাপক চাহিদা ছিল। সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল চা এর। তবে পশ্চিমা শক্তিগুলো এই প্রতিকূলতা দূর করে সমপর্যায়ে দাঁড়িয়ে দ্বিমুখী বাণিজ্য করার জন্য উদগ্রীব ছিল। এই উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার পিকিং-এ বেশ কয়েকবার দূত প্রেরণও করেছিল। যদিও প্রতিটি প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছিল।
শিল্প বিপ্লব পরবর্তী ইউরোপীয় শক্তিগুলি কি পরিমান উন্নতি করেছিল রুদ্ধদ্বার চীনের কাছে তার কোনও খবরই ছিল না। তাই চীন সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলিকে হালকাভাবেই নিয়েছিল। এদিকে ব্রিটেন ও আমেরিকা চীনের সাথে আলাপ আলোচনার পথে ব্যর্থ হয়ে চীনে আফিমের চোরাচালান শুরু করে। আফিম চালানকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে এবং যুদ্ধের সূচনা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় ইঙ্গ চীন যুদ্ধে, আফিম যুদ্ধ নামে পরিচিত, চীন পরাজিত হয় এবং পশ্চিমী শক্তিগুলির সাথে অসম চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়। এইভাবে চীনের রুদ্ধদ্বার উন্মোচিত হয় এবং 'ক্যান্টন বাণিজ্যের' প্রাসঙ্গিকতার অবসান ঘটে।
Thanks for reading.
Thank you❤❤ sir.
উত্তরমুছুন