সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

Meiji Restoration লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা | Meiji Restoration

মেইজি (১৮৬৮) পুনপ্রতিষ্ঠার পেছনে রাজনৈতিক বিন্যাস টোকুগওয়া শোগুনের যুগে ইয়েডো ছিল জাপানের শাসনকেন্দ্র। শোগুন রাজধানী ইয়েডোতে বসে দেশ শাসন করতেন। আর সম্রাট থাকতেন কিয়োটো শহরে। কিয়াটোতে একটি শোগুন বিরোধী গোষ্ঠী তৈরি হয়। এরা শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে সম্রাটকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার জন্য যে আন্দোলন করে তার পরিণতিতে জাপানের মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা।  মার্কিন ও অন্যান্য পশ্চিমী দেশগুলির যখন জাপানের আবরণ উন্মোচনের জন্য চাপ দিচ্ছিল তখন শোগুনরা পশ্চিমীদের পক্ষে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু শোগুন বিরোধী গোষ্ঠী স্লোগান তোলে 'সম্রাটকে সমর্থন করো ও বিদেশিদের বিতাড়িত কর'। এই পরিস্থিতিতে নাওসুকে নামে এক শোগুনকে শোগুন সরকারের প্রধান পরামর্শদাতা নিযুক্ত করা হয়। তিনি সম্রাট এবং শক্তিশালী ভাইসরয়দের বাধা উপেক্ষা করে আমেরিকার সাথে 'হ্যারিস চুক্তি' স্বাক্ষর করেন এবং শোগুন বিরোধী চক্র ভেঙে ফেলার জন্য কতগুলি পদক্ষেপ নিতে থাকেন। নওসুকে -এর কঠোর পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে আন্দোলন জোরদার হয়। চারটি গোষ্ঠী - সাৎসুমা, চোসু, হিজেন ও তোসা এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নেয়। শোগুন এবং বিদেশি উভয়ের বিরোধিতা ব...

জাপানে সংবিধানের জন্য গণআন্দোলন | Mass Movement before Meiji Constitution

 ১৮৬৮-১৮৮৯ খ্রীঃ পর্যন্ত জাপানি সংবিধানের জন্য গণআন্দোলন মেইজি কর্তৃপক্ষের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অবদান ১৮৮৯ খ্রীঃ জাপানের জন্য একটি নতুন সংবিধান রচনা, যা সাধারণত মেইজি সংবিধান নামে পরিচিত। শোগুন্তন্ত্রের অবসানের পর মেইজি নেতারা সংসদীয় ধাঁচের একটি সংবিধান রচনার আবশ্যকতা অনুভব করেন এবং সেজন্য আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনের দুটি পর্ব  ছিল। প্রথমটি ১৮৭৩-৮১ খ্রি. এবং দ্বিতীয়টি ১৮৮২-৮৯ খ্রি.। ঐতিহাসিক ভিনাক বলেছেন, এই সংবিধানের বীজ নিহত ছিল ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দের Charter Oath ( সনদভুক্ত শপথপত্র ) এর মধ্যে, যেখানে ঘোষণা করা হয়েছিল দেশের সমস্যাবলী প্রকাশ্যে বিচার-বিবেচনা করার জন্য একটি পরিষদ গঠিত হবে। কিন্তু এই ঘোষণাকে সম্রাট কর্তৃক জনপ্রতিনিধিমূলক সংসদীয় সংবিধান দানের প্রতিশ্রুতি হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং প্রতিশ্রুতি যাতে কার্যে রূপায়িত হয় তার জন্য আন্দোলন শুরু হয়। অন্যদিকে রক্ষণশীল নেতৃবৃন্দ জনগণের হাতে শাসনক্ষমতা দানের বিরোধী ছিলেন। প্রকৃত আন্দোলনের সূত্রপাত করেন চোষু সামুরাই 'কিডো', যিনি উদার মনোভাব সম্পন্ন ছিলেন এবং যুরোপ ভ্রমনের অভিজ্ঞতাও তার ছিল। তার বক্তব্য ছিল জনমতকে অগ্রাহ্য করে...

মেইজি সংবিধান | Meiji Constitution

 মেইজি সংবিধান জাপানে মেইজি শাসনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অবদান দেশের জন্য একটি নতুন সংবিধান তৈরী। মেইজি পুনস্থাপনের পর থেকে জাপানে যে নতুন রাজনৈতিক বাতাবরনের সৃষ্টি হয়েছিল তাতে 'স্বাধীনতা ও জনগনের অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলন' প্রবল আকার ধারন করেছিল। ব্যপক গণ আন্দোলনের চাপে মেইজি সরকার  একটি নতুন সংবিধান প্রবর্তনে রাজি হয়। ইটো হিরোবুমি -র উপর সংবিধান রচনার দায়িত্ব ন্যস্ত হয়। ইটো ইউরোপে চলে যান অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য। ইউরোপ থেকে ফিরে নতুন সংবিধান প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে কয়েকটি প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহন  করেছিলেন। ১৮৮৪ খ্রি ৫টি স্তরবিশিষ্ট একটি নতুন অভিজাত শ্রেণী তৈরি করা হয় এবং সিদ্ধান্ত হয় এই শ্রেণীর প্রতিনিধিদের নিয়ে ভবিষ্যতে ব্যবস্থাপক সভা গঠিত হবে। ১৮৮৪ খ্রি নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয় যার প্রধান হন ইটো। ১৮৮৮ তে প্রিভি কাউন্সিল তৈরি করা হয় এবং এরও সভাপতি হন ইটো। ১৮৮৯ খ্রি ফেব্রুয়ারি মাসে মেইজি সম্রাট আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন সংবিধান প্রবর্তন করেন। বস্তুত এই সংবিধানের একমাত্র উদ্দেশ্য যাবতীয় কর্তৃত্ব শাসকশ্রেণীর হাতে বজায় রাখা। নতুন সংবিধানে সম্রাটকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠি...

মেইজি জাপানের পুঁজি সংগ্রহ | Meiji Reforms: Capital Collection

মেইজি জাপান কিভাবে পুঁজি সংগ্রহ করেছিল ? মেইজী পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর মেইজি নেতৃবৃন্দ জাপানের পুঁজিবাদী অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালান। পুঁজিবাদী অর্থনীতির প্রধান ঝোঁকটি থাকে শিল্পায়নের দিকে। অর্থমন্ত্রী মৎসুকাটা উপলব্ধি করেছিলেন যে, জাপানে আধুনিক শিল্প গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস হলো পুঁজি সংগ্রহ। রাষ্ট্রের পুঁজি বৃদ্ধি করার কর্মসূচিতে দুটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল - কর ব্যবস্থার  পরিবর্তন ও ঋণ সৃষ্টি করা।  জাপানের রাষ্ট্রের আয়ের প্রধান উৎস ছিল ভূমিকর। ভূমিকর প্রদানের ক্ষেত্রে মুদ্রার মাধ্যমে কর প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়। ১৮৮০ -র দশকে মৎসুকাটার মুদ্রা হ্রাস নীতির ফলে জিনিসপত্রের দাম কমে যায় এবং এর ফলে একদিকে কৃষকরা মুদ্রার মাধ্যমে কর দিতে সমস্যায় পড়ে অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতায় হেরে যায়। কিন্তু এরই ফলে বড় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের মুনাফার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। দ্বিতীয় উপায়টি ছিল ঋণের মাধ্যমে। বৈদেশিক ঋণের ভূমিকা ছিল এক্ষেত্রে গৌণ। মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে জাপান মাত্র দুইবার ঋণ নিয়েছি...

মেইজি শিক্ষা ব্যবস্থা | Meiji Reforms: Education

মেইজি শিক্ষা ব্যবস্থা জাপানে পশ্চিমী সভ্যতাভিত্তিক সমাজ গঠন সার্থক করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থারও সংস্কার দরকার-- মেইজি নেতারা তা সহজেই উপলব্ধি করেছিলেন। তাই তারা পশ্চিমি ধাঁচে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কাজে উদ্যোগী হন। মেইজি শিক্ষা সংস্কারের মূলত তিনটি দিক ছিল। প্রথমত, পশ্চিমী দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসা, দ্বিতীয়ত, জাপানি ছাত্রদের পাশ্চাত্য দেশে শিক্ষার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা। তৃতীয়ত, শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে ঢেলে সাজানো, যাতে সম্রাট ও রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত এবং দায়িত্বশীল নাগরিক গড়ে তোলা যায়। পাশ্চাত্য দেশের শিক্ষার্থী পাঠাবার বিষয়টি অবশ্য শোগুন যুগ থেকেই আরম্ভ হয়েছিল। মেইজি আমলে এই বিষয়টির ওপর অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বিশিষ্ট মেইজি নেতা যেমন ইটো হিরোবুমি, মারি আরোনারি, ইনোয়ুয়ে প্রমুখ পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার জন্য ইউরোপে পাড়ি দিয়েছিলেন। ঐ একই উদ্দেশ্যে বিদেশী বিশেষজ্ঞদের জাপানে আমন্ত্রণ করা হয়। ১৮৮৫ খ্রিঃ ইউরোপ থেকে মোট ৩৪ জন খনি বিশেষজ্ঞ আনা হয়েছিল। R.H. Brangton  নামে একজন ইংরেজ বিজ্ঞানীকে নৌ শিল্পের উন্নতির উদ্দেশ্যে জাপ...

মেইজি কৃষি সংস্কার | Meiji Reforms: Agriculture

মেইজি জাপানের সামন্ত প্রথার বিলোপ সাধনে কোন কোন প্রধান সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল? এই পরিবর্তনের প্রভাব গুলি কি কি ছিল / ডাইমিও, সামুরাই এবং কৃষকদের উপর এর কি প্রভাব পড়েছিল? অথবা মেইজি জাপানের নতুন ভূমি ব্যবস্থা প্রচলিত সামন্ততান্ত্রিক সমাজ কাঠামোকে কতটা পরিবর্তিত করেছিল? মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার নায়কগন উপলব্ধি করেছিলেন যে পশ্চিমি আগ্রাসন থেকে দেশককে বাঁচাতে হলে কেবলমাত্র শোগুনতন্ত্র ধ্বংস করলেই চলবে না, জাপানকে উপরন্তু আধুনিক হতে হবে। দেশকে আধুনিক করতে হলে প্রথমে প্রয়োজন ছিল মধ্যযুগীয় সামন্ত প্রথার বিলুপ্তি। এই কঠিন কাজটি প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত বিনা রক্তপাতে সম্পন্ন হয় নি। তবে সামন্ত কৃষি অর্থনীতির পরিবর্তে আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে মেইজি নেতৃবর্গ সফল হয়েছিলেন। তবে এই পরিবর্তনের প্রভাব বিভিন্ন শ্রেনীকে নানা ভাবে প্রভাবিত করেছিল।   সামন্ত প্রথার বিলোপ সাধন করে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য জাপানের নবগঠিত সাত-চো-হি- তো সরকার সামন্ত প্রথা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সামন্ত প্রথা বিলুপ্তির জন্য ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে প্রত্যেক জমিদারিতে একজন করে স...