সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

Bengal লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রাচীন বালার বিভিন্ন বিভাগসমূহ

প্রাচীন বালার বিভিন্ন বিভাগসমূহ প্রাচীন যুগে বাংলা কোনো একক ও অখণ্ড রাষ্ট্র বা রাজ্য ছিল না। বাংলার বিভিন্ন অংশ অনেকগুলো ছোট ছোট অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। এই ছোট ছোট অঞ্চলগুলোতে শাসক থাকতেন, যারা তাদের মতো করে অঞ্চলগুলো শাসন করতেন। সেই সময়ের বাংলার এই অঞ্চলগুলোকেই সমষ্টিগতভাবে জনপদ বলা হয়। প্রাচীন বাংলার জনপদ: প্রাচীন বাংলা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব থাকায় প্রাচীন বাংলার জনপদ কোথায় বা কতখানি জায়গা জুড়ে ছিল এমন অনেক কিছুই সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবুও চার শতক থেকে গুপ্ত, গুপ্ত পরবর্তী যুগ, পাল, সেন এসব আমলের শিলালিপি ও সাহিত্য গ্রন্থগুলোতে প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায়। এছাড়া প্রাচীনকালের যে ঐতিহাসিক উপাদানগুলো পাওয়া যায় সেগুলো থেকে প্রাচীন বাংলার জনপদ এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে কিছুটা জানা যায়। প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর কয়েকটি সম্পর্কে দেখে নেয়া যাক। গৌড় পাণিনির গ্রন্থে সর্বপ্রথম গৌড় জনপদটির উল্লেখ পাওয়া যায়। গৌড় জনপদটি সুপরিচিত একটি জনপদ হলেও এর নামকরণের কারণ কিংবা কোন কোন অঞ্চল নিয়ে এটি গঠিত ছিল তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে হর্ষবর্ধন এর কিছু শিলালিপি থেকে এটুকু জানা যায় যে, গৌড়দেশ সমু...

শশাঙ্ক | Shashanka

 শশাঙ্ক  সপ্তম শতকের প্রথমার্ধ বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য পর্ব। এই সময় বাংলায় শশাঙ্ক নামে এক রাজনৈতিক নেতার আবির্ভাব হয়, যার নেতৃত্বে গৌড়কে কেন্দ্র করে বাংলা উত্তর ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়। শশাঙ্ক ও তাঁর রাজত্বকাল সম্পর্কে তথ্য প্রদানকারী প্রধান দুটি উপাদান হল হিউয়েন সাং এর বিবরনী এবং বাণভট্টের হর্ষচরিত । এঁরা দুজনেই কনৌজ ও থানেশ্বরের রাজা হর্ষবর্ধনের অনুগ্রহভাজন ছিলেন। তাই এই দুটি উপাদান শশাঙ্ক সম্পর্কে অনেক ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্য করেছে। এছড়া রয়েছে বৌদ্ধ গ্রন্থ আরযমঞ্জুশ্রীমূলকল্প এবং শশাঙ্কের গঞ্জাম লেখ, মেদিনীপুর লেখ এবং কিছু মুদ্রা।  পরবর্তী গুপ্ত শাসনে পূর্ববঙ্গ স্বাধীন হয়ে গেছিল। কেবল উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গ তাঁদের অধীনে ছিল। কিন্তু নিয়ন্ত্রন শিথিল হয়ে পড়েছিল। এই সময়েই শশাঙ্কের আবির্ভাব হয়। বেশিরভাগ ঐতিহাসিকের ধারণা শশাঙ্ক পরবর্তী গুপ্ত শাসকদের অধীনস্ত বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন। পরবর্তী গুপ্ত শাসকদের দুর্বলতার ফলে সাম্রাজ্যে ভাঙ্গন দেখা দিলে শশাঙ্ক গৌড় দেশে নিজেকে স্বাধীন নরপতি রূপে প্রতিষ্ঠা করেন। পন্ডিত রাখালদাস বন্দ...

Great Calcutta Killing | Jinnah's Direct Action Day | প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস |

Great Calcutta Killing | Jinnah's Direct Action Day | গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং | জিন্নাহ্'র প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস  (English Virsion) The Direct Action Day, also known as the Great Calcutta Killing, was an extremely violent incident in the history of Bengal, specifically in Calcutta (now Kolkata), during the pre-independence era of India. It was a consequence of the divide-and-rule policy introduced throughout India after the suppression of the 1857 Rebellion by the British rulers. The development of communal politics in India, fueled by the Muslim League, Arya Samaj, Hindu Mahasabha, and the R.S.S. led to the intensification of the struggle for India's independence along communal lines. Under the leadership of the Muslim League, the demand for the creation of a separate state, Pakistan, gained momentum. Mohammad Ali Jinnah, the leader of the Muslim League, advocated for the formation of Pakistan, which included Bengal also. However, only 48.3% of the population in Bengal was ...

পাবনা বিদ্রোহ | Pabna Rebellion

 পাবনা বিদ্রোহ | Pabna Rebellion ১৮৭২-৭৩ খ্রিস্টাব্দে পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ মহাকুমাতে এক জমিদারি শোষণের বিরুদ্ধে কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয় এই বিদ্রোহ পাবনা বিদ্রোহ নামে পরিচিত। একসময় সিরাজগঞ্জ ছিল নাটোরের রাজ পরিবারের জমিদারির অধীনে। কিন্তু রাজস্ব সংক্রান্ত বিরোধের কারণে ১৮৬০ এর দশকে এই জমিদারি নিলামে ওঠে এবং মুৎসুদ্দি শ্রেণীর হাতে চলে যায়। সিরাজগঞ্জ মহাকুমার শাসক পি. নোলান তার প্রতিবেদনে লিখেছেন, সিরাজগঞ্জের জমিদাররা ছিলেন অত্যধিক সক্রিয় ও উদ্যমশীল। চাষবাসের উন্নতির কাজে এরা কোনরূপ সক্রিয়তা দেখাত না; কিন্তু অসঙ্গত ও অবৈধ উপায়ে কৃষকদের শোষণ ও জমিচ্যুত করার কাজে তারা ছিল সুকৌশলী। বিভিন্ন অবৈধ কর বা আবওয়াব, যেমন পার্বণী, তীর্থ কর, সেলামি, ডাক খরচা, বিবাহ খরচা, নজরানা ইত্যাদি আদায় করত। এমনকি জমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রেও এরা কৃষকদের ঠকিয়েছিল। যে নল ব্যবহার করে তারা নাটোরের জমিদারের কাছ থেকে সিরাজগঞ্জের জমিদারি কিনেছিল তার মাপ ছিল ২৩ থেকে পৌনে ২৪ ইঞ্চি। কিন্তু কৃষকদের বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে যে নল ব্যবহার করা হয়েছিল তার মাপ ছিল মাত্র ১৮ ইঞ্চি। অর্থাৎ কৃষকের জমি কমে গেল কিন্তু খাজনার চাপ...

হেস্টিংসের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা | Five Years &One Year Settlement

হেস্টিংসের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা ১৭৬৫ সালে ইংরেজি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভের পর সেখান থেকে কিভাবে রাজস্ব আদায় করা হবে সেই ছিল একটা বড় প্রশ্ন। প্রথমে নায়েব নাজিম মোহাম্মদ রেজা খাঁকে নায়েব দেবান পদে নিযুক্ত করে তার ওপর ভূমি রাজস্ব আদায়ের সমস্ত দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। রেজা খাঁ ভূমি রাজস্ব আদায়ের জন্য আমিলদের নিযুক্ত করেন এবং যারা সবথেকে বেশি রাজস্ব দেবার প্রতিশ্রুতি দিত তারাই আমিল হিসেবে বহাল থাকার ব্যাপারে অগ্রাধিকার পেত। কোম্পানির নতুন গভর্নর ভারেলেস্ট ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে ভূমি রাজস্ব আদায়ের জন্য সুপারভাইজার বা কালেক্টর নিয়োগ করেন। এরা রাজস্ব আদায়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিবর্তে জেলার বাণিজ্যের উপরে একচেটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠাতেই বিশেষ মনোযোগী ছিল, যার ফলে কালেক্টর ব্যবস্থাও অকেজো প্রমাণিত হয়। এই সময় ১৭৭২ এর দুর্ভিক্ষ ইংরেজ কর্তৃপক্ষকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। এই পরিস্থিতিতে গভর্নর জেনারেল হিসাবে ওয়ারেন্ট হেস্টিংস বাংলা শাসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং রাজস্ব সংক্রান্ত নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। হেস্টিংস মুর্শিদাবাদের নায়ক দেওয়ান রেজার খাকে...

কর্নওয়ালিস কোড | Cornwallis Code

Cornwallis Code / কর্নওয়ালিস কোড/কর্নওয়ালিসের বিচারবিভাগীয় সংস্কার ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের বিভিন্ন এলাকা দখলের পর কোন ধরনের প্রশাসন যন্ত্র গড়ে তুলবে তাই নিয়ে বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। প্রথমদিকে ক্লাইভ সরাসরি ব্রিটিশ কর্মচারীদের শাসনব্যবস্থার সঙ্গে জুড়তে চাননি। তিনি দেশীয় কর্মচারীদের মাধ্যমে শাসন পরিচালনাকে সঠিক বলে মনে করতেন। অন্যদিকে ওয়ারেন্ট হেস্টিংস দেশীয় এবং ইউরোপীয় শাসকদের মিলিত শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিলেন। কিন্তু কর্নওয়ালিস উপরোক্ত দুই পরিকল্পনাকে বাতিল করে সম্পূর্ণ ইউরোপীয় রীতিতে এবং কেবল ইউরোপীয় কর্মচারীদের দ্বারাই শাসন পরিচালনার পক্ষপাতী ছিলেন। এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করার জন্য তিনি একটি শাসন সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রস্তুত করেন, যা 'কর্নওয়ালিস কোড' নামে পরিচিত। কর্নওয়ালিস কোড-এর প্রধান লক্ষ্য ছিল স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলা। তিনি যুক্তি ও পরিসংখ্যান দিয়ে দেখান যে, বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন ও নিরপেক্ষ না হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার বিঘ্নিত হয়। তিনি আরো দেখান বিচার ব্যবস্থার রাজনীতিকরণের জন্যই উৎপা...

বাংলার ইতিহাসে রক্তপাতহীন বিপ্লব | Nawab Mir Zafar

বাংলার ইতিহাসে রক্তপাতহীন বিপ্লব মুর্শিদাবাদের দরবারে সিরাজ বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রধানতম মুখ ছিলেন মীরজাফর। মীরজাফর ছিলেন সিরাজেরই মির বকশি। সিরাজ এই ষড়যন্ত্রতে মীরজাফরের যুক্ত থাকার কথা জানতে পেরেও তাকে ক্ষমা করে দেন এবং তাকেই পলাশীর যুদ্ধের মূল দায়িত্ব অর্পণ করেন। শেষমেষ মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় সিরাজের পরাজয় ঘটে এবং পূর্বপরিকল্পনামাফিক ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও ষড়যন্ত্রকারীরা মীরজাফরকে বাংলার মসনদে বসান(১৭৫৭)। মীরজাফর সিংহাসন লাভের জন্য ব্যক্তিগতভাবে ক্লাইভকে এবং প্রতিষ্ঠানগতভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করেছিলেন। ক্লাইভ একাই নিয়েছিলেন প্রায় ২০ লক্ষ এর উপরে টাকা। যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ কোম্পানি ও অন্যান্য ইংরেজ ব্যবসায়ীরা নিয়েছিল প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। এছাড়া কোম্পানি লাভ করে কলকাতা সংলগ্ন চব্বিশটি পরগনার জমিদারি, যার আয় ছিল প্রায় ৮৮০ বর্গমাইল বছরের। শুধু অর্থ প্রদান নয় বিভিন্নভাবে মীরজাফর ইংরেজ কোম্পানির উপরে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। একদিকে রাজকোষের সংকট অন্যদিকে পরাধীনতা, উভয় সমস্যা মীরজাফরকে অতিষ্ঠ করে তোলে। এই প্রেক্ষা...

সাওতাল বিদ্রোহ | Santal Rebellion

  সাওতাল বিদ্রোহ  উপনিবেশিক ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী গণ সংগ্রামে উপজাতিদের একটি গৌরবময় ভূমিকা ছিল। উপজাতি বিদ্রোহ গুলির মধ্যে ১৮৫৫-৫৬ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ অন্য যেকোনো গোষ্ঠীর বিদ্রোহের থেকে অনেক বেশি জঙ্গি ও হিংস্র রূপ ধারণ করেছিল। প্রকৃতপক্ষে সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল সাঁওতালদের উপজাতীয় সামাজিক সংহতি রক্ষা এবং বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ ও অর্থনৈতিক শোষণের প্রতিবাদে আঞ্চলিক চেতনার সংগ্রামী বহিঃপ্রকাশ। সাঁওতালরা স্বভাবের দিক থেকে ছিল পরিশ্রমী ও শান্ত প্রকৃতির। তাদেরই প্রচেষ্টায় সাঁওতাল পরগনা এলাকা বাসযোগ্য ও উর্বর হয়ে উঠেছিল। এই অঞ্চলকে তারা নাম দিয়েছিল 'দামিন-ই- কোহ'। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বহিরাগতরা এই অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করতে শুরু করে এবং তাদের অর্থনৈতিক শোষণের শিকার হন সাঁওতালরা। সাঁওতালরা বহিরাগতদের 'দিকু' বলত। এই 'দিকু' বলতে ইংরেজ এবং বহিরাগত বণিক ও মহাজনদেরকে বোঝানো হত। প্রথমে আসা যাক মহাজনি শোষণের কথায়। মহাজনেরা সাঁওতালদের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে তাদের টাকা ঋণ দিতেন এবং অসদুপায় অবলম্বন করে তাদের জমি-জামা দখল করে নিতেন। ঐতিহাসিক কালিকিংকর দত্ত দেখিয়েছেন, সামান্য পর...

বাংলায় মুসলীম লীগ গঠনের পটভূমি। Muslim Leage in Bengal

বাংলায় মুসলীম লীগ গঠন ব্রিটিশের বিভেদ ও শাসন নীতি, ১৯ শতকীয় হিন্দু জাতীয়তাবাদ এবং সৈয়দ আহমেদ খানের দ্বিজাতি তত্ত্বের অন্যতম ফলশ্রুতি ছিল মুসলিম সাম্প্রদায়িক রাজনীতি তথা মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা (১৯০৬)। সমগ্র মুঘল শাসন জুড়ে এমনকি ব্রিটিশ শাসনের প্রারম্ভিক পর্বে তথা কৃষক বিদ্রোহ চলাকালীন বাংলায় সাম্প্রদায়িক হিংসার কোন খবর ছিল না। ওয়াহাবি বা ফরাজী বিদ্রোহ কতটা সাম্প্রদায়িক বিদ্রোহ ছিল তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। কারন হিন্দু ও মুসলমান উভয় কৃষকই অত্যাচারী জমিদারের কাছারি আক্রমণ করেছিল। কিন্তু উনিশ শতকের দ্বিতীয় লগ্ন থেকে পরিস্থিতি ক্রমশ পালটাতে শুরু করে।  ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হলেও তা কার্যত সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ভদ্রলোকেদের সংগঠনে পরিণত হয়েছিল। মুসলমানদের অন্তর্ভুক্তিকরণ ছিল যৎসামান্যই। তাছাড়া চরমপন্থী নেতারা তাঁদের প্রচার ও কার্যকলাপে  মুসলমান বিদ্বেষের পরিচয় দিয়েছিলেন। পাঞ্জাব বা মহারাষ্ট্রের মত বাংলায় অতটা ব্যপক রূপ না পেলেও একথা সত্য যে, চরমপন্থীরা ব্রিটিশের পাশাপাশি গৌরবময় মুঘল বা সুলতানি শাসনকেও ভারতমাতার পরাধীনতা বলে অভিহিত করেছিলেন, যা মুস...

বঙ্গভঙ্গের উদ্দেশ্য |

  বঙ্গভঙ্গের উদ্দেশ্য  জনবিরোধী শাসক হিসেবে লর্ড কার্জনের এমনিতেই কুখ্যাতি ছিল। কিন্তু তাঁর যে পদক্ষেপটি জনসাধারণের সবচেয়ে বেশি অপ্রিয় হয়েছিল সেটি হল বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের আয়োজন করা হয়েছিল। বাংলা প্রেসিডেন্সির আয়তন বিভিন্ন সময়ে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই উনিশ শতকের প্রথম দশক থেকেই বাংলা প্রেসিডেন্সির আয়তন কমানো সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাব তোলা হচ্ছিল। একবার আসাম ও সিলেটকে বাংলা থেকে আলাদা করার কথা উঠে। ১৮৯৬-৯৭ সালে আসামের মুখ্য কমিশনার উইলিয়াম ওয়ার্ড প্রস্তাব দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগ, ঢাকা ও ময়মনসিংহকে অন্তর্ভুক্ত করে আসামকে সমর্থবান করা হোক। ১৯০৩ সালের মার্চ মাসে বাংলার ছোটলাট এন্ড্রু ফ্রেজার বাংলার আঞ্চলিক পুনর্বিন্যাস' সংক্রান্ত একটি মিনিটে ওয়ার্ডের প্রস্তাবকে উত্থাপন করেন এবং বড়লাট কার্জন প্রস্তাবের সামান্য কাটছাঁট করে বঙ্গভঙ্গ-এ সম্মত হন। স্বরাষ্ট্র সচিব রিজলির একটি চিঠিতে সর্বপ্রথম ১৯০৩ সালে ৩রা ডিসেম্বর বঙ্গভঙ্গের কথা ঘোষণা করা হয়। অ্যান্ড্রু ফেজার, রিজলি এবং কার্জনের যৌথ উদ্যোগে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা বাস্...

মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব ব্যবস্থা । Revenue Settlement of Murshid Quali Khan

 মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব ব্যবস্থা মুর্শিদকুলি খান  বাংলার দিওয়ান রূপে নিযুক্ত হওয়ার পর, দেখেন বাংলার তখন রাজস্ব বলতে বোঝাত বাণিজ্যিক শুল্ক। কারণ বাংলার সমস্ত অঞ্চল আমলা ও অভিজাতদের মধ্যে বন্টিত ছিল, তাই বাংলার রাজস্ব ব্যবস্থাকে মজবুত করার জন্য মুর্শিদকুলি প্রথম বাংলার যাবতীয় অঞ্চলকে খালিসাতে রূপান্তরিত করেছিলেন।‌ সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে কিছু ব্যক্তিকে ইজারা দানের ব্যবস্থা করেছিলেন। এই নতুন ইজারাদারদের বলা হত মাল-জামিন। তাই এই ব্যবস্থা মাল- জামিনি ব্যবস্থা নামে পরিচিত। ঐতিহ্যগত জমিনদার পরিবারগুলির অধিকাংশকেই মালজামিনি এর অধীনে থাকতে হয়। মুর্শিদকুলির রাজস্ব ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলায় এক নতুন অভিজাত শ্রেণীর বিকাশ ঘটে। মুর্শিদকুলির রাজস্ব বন্দোবস্তের কাজে সর্বাধিক সহায়তা করেছিলেন রাজশাহীর ব্রাহ্মণ রঘুনন্দন। মুর্শিদকুলি কঠোরভাবে রাজস্ব প্রশাসন চালনা করা এক নজির সৃষ্টি করেছিলেন। মুর্শিদকুলি রাজস্ব আদায়ের জন্য সরকারি ব্যয় হ্রাস করে, সেই খরচ রাজস্ব প্রদানকারী দের উপর চাপিয়ে দিয়েছিলেন। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে মুর্শিদকুলি সমগ্র সুবাকে তেরোটি চাকলায় বিভক্ত করেছ...

সুভাষচন্দ্র বসু ও আজাদ হিন্দ বাহিনী | Subhas Chandra Basu and Indian National Army (INA)

সুভাষচন্দ্র বসু ও আজাদ হিন্দ বাহিনী বাংলা তথা ভারতবর্ষের রাজনীতিতে সুভাষচন্দ্র বসু ও আজাদ হিন্দ বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ দশকের বঙ্গীয় রাজনীতি অসম্ভব ঘটনাবহুল। একদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অক্ষশক্তিপক্ষীয় জাপানের দ্রুত পূর্ব দিক থেকে অগ্রসর হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। জাপানি আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য ভারতের ব্রিটিশ সরকার পোড়ামাটির নীতি অনুসরণ করে বাংলার শস্য ও সম্পদ নষ্ট করে দেয়। এই অবস্থায় কংগ্রেস ব্রিটিশের পক্ষে না বিপক্ষে অবস্থান করবে তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, এই প্রেক্ষাপটে সুভাষচন্দ্র বসু উপলব্ধি করেন ব্রিটিশ বিতারণের সুবর্ণ সুযোগ এসে গেছে। কংগ্রেসের মধ্যে বাম মনোভাবাপন্ন হিসাবে পরিচিত সুভাষের বিরোধী শক্তির অভাব ছিল না। আবার তিনি ও নেহেরুই ছিলেন তরুণ কংগ্রেসীদের আইকন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ যখন আন্তর্জাতিক পরিসরে কোণঠাসা তখন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির উপর আঘাত এনে ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার প্রচেষ্টা কতটা সঠিক তা নিয়ে গান্ধীর সঙ্গে সুভাষের মতবিরোধ হয়। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দক্ষিণপন্থীদের চাপে সুভাষকে কংগ্রেস ত্যাগ করতে বাধ্য করা ...