সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

SAARC

 SAARC 

১৯৮০ দশকেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিকে নিয়ে একটি আঞ্চলিক সংগঠন গড়ে তোলার সর্বপ্রথম পরিকল্পনা করেছিলেন তদানীন্তন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এই পরিকল্পনার ফলশ্রুতি হিসেবে পরবর্তীকালে গড়ে ওঠে সার্ক অর্থাৎ South Asian Association for Regional Cooperation (SAARC)। ১৮৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে সার্কের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। বর্তমানে যে সাতটি দেশ সার্কের অন্তর্ভুক্ত সেগুলি হল বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকা। 

সার্কের সনদে এই সংগঠনের যে উদ্দেশ্যগুলির কথা বলা হয়েছিল সেগুলি হল

১) দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের কল্যাণ ও জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।

২) এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং প্রতিটি ব্যক্তির মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

৩) দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ঐক্য ও আত্মবিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করা।

৪) পারস্পরিক বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে একে অন্যের সমস্যা উপলব্ধি করা।

৫) অর্থনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা স্থাপন করা। 

৬) অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে সহযোগিতা সুদৃঢ় করা।

৭) আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মঞ্চে দক্ষিণ এশিয়ার স্বার্থ সুরক্ষার জন্য নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন ও আঞ্চলিক সংগঠন সমূহের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

প্রতিবছর সার্কের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজমান, বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে মতানৈক্য চলে আসছে তার ফলে প্রতিবছর সার্কের সম্মেলন অনুষ্ঠিত করা সম্ভব হয় না।

প্রাথমিকভাবে সার্ক সামাজিক সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত বিষয়ের উপরই গুরুত্ব আরোপ করেছিল কিন্তু 1990 এর দশক থেকে অর্থনৈতিক ঐক্যের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করা হয় ফলে ১৯৯৩ সালে এপ্রিল মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সার্কের সপ্তম শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলি একটি প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেডিং এগ্রিমেন্ট (PTA) স্বাক্ষর করে। ফলে সার্ক সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে অবাধ বাণিজ্য প্রসারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হল SAPTA. এর উদ্দেশ্য ছিল সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা।  এই SAPTA পরবর্তীকালে SAFTA- য় পরিণত হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ...

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগ...

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হ...