সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

Social Stratification | French Revolution | প্রাক বিপ্লব ফ্রান্সের সামাজিক স্তর বিভাজন

Social Stratification |  French Revolution | প্রাক বিপ্লব ফ্রান্সের সামাজিক স্তর বিভাজন  অষ্টাদশ শতকে ফ্রান্স ছিল একটি বিশাল ঘন জনবসতিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী দেশ। এই সময় ফ্রান্সের সমাজ মূলত তিন ভাগে বিভক্ত ছিল  যাজক, অভিজাত ও সাধারণ মানুষ। এদের যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় এস্টেট বলা হত। সম্ভবত খ্রিস্টান ধর্ম তত্ত্বের ধারণার উপরে নির্ভর করেই সমাজে বিভাজন ঘটেছিল। ভলতেয়ার লিখেছেন যে, একটি জাতির অভ্যন্তরে তিনটি জাতির অস্তিত্ব ছিল।  এই তিনটি শ্রেণীর প্রথমটি হলো যাজক। এরা ছিল ফ্রান্সের জনসংখ্যার মাত্র ১%। যাজকরা স্বতন্ত্র সামাজিক গোষ্ঠী, শাসন, বিচার ও রাজস্ব সংক্রান্ত এদের নিজস্ব ব্যবস্থা ছিল। দেশের ২০% চাষ যোগ্য জমির মালিক ছিল এরা। এছাড়াও এরা দেশের অন্য সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের কাছ থেকে ধর্মীয় কর বা টাইথ আদায় করত। চার্চের সমাজের নানা গুরুত্বপূর্ণ সমাজকল্যাণমূলক কাজের সাথে যুক্ত থাকার প্রথা থাকলেও, অষ্টাদশ শতকে যাজকদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটে। উচ্চ শ্রেণীর যাজকেরা বিলাস-ব্যসনে দিন কাটাতে থাকে আর নিম্ন শ্রেণীর যাজকেরা ছিল নিরক্ষর ও দরিদ্র। নিম্ন যাজকদের শিক্ষাদানেরও ...

Enlightened Absolutism | জ্ঞানদীপ্ত স্বৈরাচার

Enlightened Absolutism | জ্ঞানদীপ্ত স্বৈরাচার লাইবনিৎজ অষ্টাদশ শতকের দার্শনিকগণ কর্তৃক প্রচারিত জ্ঞানদীপ্ত ধ্যান-ধারণা রাষ্ট্রতত্ত্ব ও রাজনীতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। এই প্রভাব থেকেই জন্ম নিয়েছিল "জ্ঞানদীপ্ত স্বৈরাচার"। এই সময়কার ইউরোপীয় দার্শনিকরা বিশ্বাস করতেন যে, একটি রাষ্ট্রের সাফল্য নির্ভর করছে সেই রাষ্ট্রের মানুষ কতটা স্বাধীনতা ও সুখ উপভোগ করছেন তার উপরে। তারা আশা করতেন জ্ঞানদীপ্ত শাসকেরা প্রজা কল্যাণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। ঐতিহাসিকরা মনে করেন, প্রধানত দুজন দার্শনিক লাইবনিৎজ ও কান্ট জ্ঞানদীপ্ত দর্শন নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। প্রাশিয়ার রাজা মহান ফেড্রারিক , রাশিয়ার রানী দ্বিতীয় ক্যাথারিন এবং অস্ট্রিয়ার দ্বিতীয় জোসেফ নিজেদের জ্ঞানদীপ্ত শাসক হিসাবে প্রতিপন্ন করেছিলেন। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল চার্চ ও অভিজাততন্ত্রের ক্ষমতা খর্ব করা। মহান ফ্রেডারিক ৪৬ বছর প্রাশিয়া শাসন করেছিলেন। বেশকিছু বিচারবিভাগীয় ও শিক্ষাগত সংস্কার সাধন করেছিলেন এবং রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে শিল্প গড়ে তুলেছিলেন। মহান ফ্রেডারিক অভিজাতদের আমলাতন্ত্রে স্থান ...

Battle of Plassey | পলাশীর যুদ্ধ

Battle of Plassey | পলাশীর যুদ্ধ  Siraj Ud Daulla আষ্টাদশ শতকে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী  রাজনৈতিক ঘটনা হল ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ। বাংলায় নবাবী শাসনের সূচনা হয়েছিল মুর্শিদকুলি খাঁর হাত ধরে। কাগজে কলমে বাংলার নবাবী মুঘলদের অধীনে হলেও কার্যত বাংলা স্বাধীন ভাবেই চলত। নবাব আলিবর্দির মৃত্যুর পর তার নাতি সিরাজ উদ্দৌলা বাংলার নবাব হন। নানা কারনে সিরাজের সাথে ইংরেজ বনিক, দরবারি লোকজন এবং দেশীয় ব্যাঙ্কার ও ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক খারাপ হয়, যা যুদ্ধে পরিণতি লাভ করে।  পলাশীর যুদ্ধের পটভূমি পলাশীর যুদ্ধের পটভূমি আলোচনা করতে গেলে প্রধানত দুটি দিকে গুরুত্ত দিতে হবে। প্রথম হল নবাব সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধ ও দ্বিতীয়টি নবাবের বিরুদ্ধে তাঁর দরবারের মানুষজনের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র। প্রথম কারণটি জন্য তৎকালীন বৃটিশ ঐতিহাসিকেরা সিরাজকে প্রধানত দায়ী করেছেন। ঐতিহাসিকদের মধ্যে অন্যতম  এস সি হিল ও ডড ওয়েল । আধুনিককালের ঐতিহাসিক পিটার মার্শাল ও ক্রিস বেইলি ও এই ধরনের মত প্রকাশ করেছেন। ডডওয়েল  মনে করেন দাক্ষিণাত্যে ইঙ্গ-ফরাসি দ্বন্দ্বের ঘটনায় সিরাজ উদ্বিগ্ন ছিলেন। কলকাত...

Babur's Success | বাবরের সাফল্যের কারন

Please visit our Homepage and Subscribe us. Babur's Success | বাবরের সাফল্যের কারন  ভারতের মুঘল সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জহিরউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর। বাবর মধ্য এশিয়ায় সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতায় ব্যার্থ হয়েছিলেন। পিতৃ রাজ্য ফারঘানা থেকে  বিতাড়িত হয়ে পূর্ব দিকে ভাগ্যণ্বেষনের সন্ধানে রত ছিলেন। মধ্য এশিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা সত্ত্বেও তিনি, ভারতবর্ষে এক বিশাল অঞ্চল অধিকার করে মোগল সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করেন। ভারতবর্ষে তার সাফল্যের পশ্চাতে নানা কারণ ছিল- 1) সুলতানি রাষ্ট্রের শেষের দিকে রাজনৈতিক সংহতি একেবারেই ভেঙে পড়েছিল। বহুলুল লোদীর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। ইব্রাহিম লোদীর শাসনকালে এই অনৈক্য চরম পর্যায়ে পৌঁছে ছিল। ইব্রাহিম লোদীর আচার-আচরণ আফগান সর্দারদের একেবারেই পছন্দের ছিল না। তাই তারা লোদীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল। 2) ভারতের সামরিক ব্যবস্থা বা শক্তি সেইসময় বিশ্বের নিরিখে ছিল একেবারেই পিছিয়ে। তীর-ধনুক, হস্তী বাহিনী, পদাতিক বাহিনী সম্বলিত আফগান ও রাজপুতরা বাবরের তুলনায় ছিল দুর্বল। তাছাড়া বিভিন্ন জাতিকে নিয়ে গড়ে তোলা সেনাবাহিনীতে কোন জাতীয...

Taoism | তাওবাদ

Please visit our Homepage and Subscribe us.  Taoism | তাওবাদ প্রাক-আধুনিক চিনা চীনের ইতিহাসে কনফুসিয়াসবাদ এর পরেই স্থান ছিল তাওবাদ এর স্থান। তাওবাদ সবকিছু থেকে সরে থাকার ও প্রত্যাহার করে নেবার দর্শন। তাওবাদ এ যুদ্ধ, ধ্বংস এবং মৃত্যুকে ঘৃণা করা হয়েছে। তাই ওরা ক্ষমতা, সম্পদ ও মর্যাদা অর্জনের জন্য সংঘাত এড়িয়ে চলার পক্ষপাতী ছিলো। ওরা মনে করত স্থান ও কাল অনন্ত। একজন ব্যক্তি এই মহাজাগতিক বিশ্বের এক একটি ক্ষুদ্র বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তাওবাদ ছিল শাসকের স্বৈরাচার এবং কনফুসিয়াসের অহেতুক নৈতিকতার বিরোধী দর্শন। ওরা প্রকৃতির মধ্যে পথ বা তাও এর অনুসন্ধান করেছেন। তাওবাদ জানার উপাদান খুবই কম। খুব সম্ভবত তৃতীয় খ্রীষ্টপূর্বাব্দে রচিত তাও -তে- চিং গ্রন্থটি একমাত্র নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ|। Thanks for reading. https://amzn.to/2RyEvHP

Junk Trade | জাঙ্ক বাণিজ্য

Please visit our Homepage and Subscribe us. Junk Trade | জাঙ্ক বাণিজ্য প্রাক আধুনিক চীনে ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল অবহেলিত। চীনের মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ। চীনারা নিজেদের স্বর্গের নিচে বসবাসকারী সভ্য জাতি বলে মনে করত এবং চিন সাম্রাজ্যের বাইরে বসবাসকারী লোকদের সাথে কখনই সমপর্যায়ে সম্পর্ক গড়ত না। চীনাদের এই ধারণা এবং সামন্ততান্ত্রিক কাঠামো তাদের বাণিজ্যে অবহেলা করতে শিখিয়েছিল। কেবল মাত্র ক্যান্টন বন্দরে বিদেশীরা বাণিজ্য করতে পারত এবং স্থলপথের নজরানার প্রথার অনুষঙ্গ হিসাবে পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য চলত। নজরানা ও কাউটাউ প্রথা বহির্ভূত আরো এক প্রকার বেসরকারি বাণিজ্য প্রচলিত ছিল, যা জাঙ্ক বাণিজ্য নামে পরিচিত। জাঙ্ক হল একপ্রকার চিনা বাণিজ্য জাহাজ। অস্ট্রো-এশীয়ান  বাণিজ্যতরী মডেলে এই জাহাজ তৈরি হতো। সাঙ যুগ থেকে জাঙ্ক এর ব্যবহার চলে আসছিল এবং ইউরোপীয়দের চীনে আগমন পর্যন্ত এই জাহাজের ব্যবহার ছিল সবচেয়ে বেশী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারতের সাথে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই জাঙ্ক বাণিজ্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শ্যাম, আন্নাম, মালাক্কা মাল উপদ্বীপ এবং জাভা প্রভৃতি অঞ্চলে ...

Guild | Early Medieval India | আদি মধ্যযুগে গিল্ড

আদি মধ্যযুগে গিল্ড  শিল্পী ও কারিগরদের সংগঠন কে গিল্ড  বলা হয়। ভারতে এগুলিকে শ্রেণি বা সংঘ বলা হত। সুপ্রাচীন কাল থেকে ভারতে শ্রেণী বা সংঘ গুলির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। গুপ্ত যুগ থেকে ভারতে আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছিল তার প্রভাব গিল্ড গুলির উপরেও পড়েছিল। তাই আদি মধ্যযুগের গিল্ড গুলির চরিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছিল। আদি মধ্যযুগের গিল্ডের গুরুত্ব কিছুটা কমে ছিল বলে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন। লালন গোপাল মনে করেন যে, গিল্ড এই সময়ে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যকে মেনে নিয়েছিল। তাই যৌথ স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়েছিল। রমেশচন্দ্র মজুমদার দেখিয়েছিলেন যে, কর ফাঁকি, জুয়া খেলা ও বারাঙ্গনার উপস্থিতি ঘটলে রাজা গিল্ডে হস্তক্ষেপ করতে পারতেন-- এরকম আগে দেখা যায়নি। 12-13 শতকের সাহিত্যে শ্রেণীকরণের উল্লেখ আছে। শ্রেণিকরণ হলো প্রশাসনিক দপ্তর যা গিল্ডের তত্ত্বাবধান করত। বৃহৎ ধর্ম ও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ-এ শ্রেণীকে সংকর জাতি বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এগুলিকে শাস্ত্রকাররা ভালো চোখে দেখেননি। কুম্ভকার, তাঁতি, স্বর্ণকার, রজক প্রভৃতি হলো শুদ্ধ জাতি। চর্মকার, তেলি, ইক্ষু প্রেরণকারী, রঙ্গকার, কাসারি প্র...

Abd'al Quadir Badayuni | আব্দুল কাদের বদাউনি

Please visit our Homepage and Subscribe us. Abd'al Qadir Badayuni |  আব্দুল কাদের বদাউনি আকবরের রাজত্বকালে একজন বিখ্যাত লেখক হলেন আব্দুর কাদের বদাউনী। ফৌজবাদের বদায়ুন শহর থেকে এসেছিলেন তিনি। তাঁর লেখা বিখ্যাত গ্রন্থটি হল মুন্তাখাব উৎ তাওয়ারিখ। এই গ্রন্থে তিনটি খন্ড আছে, প্রথম খন্ডে বাবর ও হুমায়নের এর বিবরণ। দ্বিতীয় খন্ডে আকবর এর শাসনকালে বিবরণ। এবং তৃতীয় খন্ডে ইসলামের শাসক ও পণ্ডিতদের বিবরণ দিয়েছেন। আকবরের রাজত্বকাল সম্পর্কে চর্চা করার জন্য আবুল ফজলের পাশাপাশি বদাউনের এই গ্রন্থটি বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। বদাউনি ছিলেন মুঘল যুগের একজন শ্রেষ্ঠ পন্ডিত ব্যক্তি। তিনি সন্ত বাচ্চু, কবি ফৈজি এবং শেখ মুবারক এর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। সঙ্গীত, ইতিহাস ও জ্যোতিষ শাস্ত্রে তার গভীর জ্ঞান ছিল তবে ইতিহাস ছিল তার পছন্দের বিষয়। বদায়ুনির পান্ডিত্যে  মুগ্ধ হয়ে আকবর তাকে দরবারের ইমাম পদে নিযুক্ত করেন । আকবর এর পৃষ্ঠপোষকতায় বাদায়ুনি বহু আরবি ও সংস্কৃত গ্রন্থ  ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করেন, মহাভারতও তিনি পারসিক ভাষায় অনুবাদ করেন। আকবরের রাজত্বকাল এর বিবরণ দিতে গিয়ে বদাউনি অনেক ক্ষেত্র...

Abul Fazl | আবুল ফজল

Please visit our Homepage and Subscribe us.  Abul Fazl | আবুল ফজল মুঘল যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ লেখক এবং ঐতিহাসিক হলেন আবুল ফজল ।আবুল ফজল বিখ্যাত পারসিক পন্ডিত শেখ মুবারকের পুত্র। সম্রাট আকবরের অন্তরঙ্গ বন্ধু এবং মুঘল প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে তিনি ছিলেন উদার মানসিকতার অধিকারী এবং শান্তির নীতিতে বিশ্বাসী ।আকবরের নির্দেশেই তিনি ইতিহাস রচনার কাজ শুরু করেন। আবুল ফজলের রচিত দুটি বিখ্যাত গ্রন্থটি হল আকবরনামা ও আইন ই আকবরী। আকবরনামা তিনটি খন্ডে রচিত। প্রথম খন্ডে বর্ণিত হয়েছে তৈমুরের সময়কাল থেকে হুমায়ুনের সময়কাল পর্যন্ত রাজপরিবারের সাধারণ ইতিহাস। দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ডে রচিত হয়েছে আকবরের রাজত্বকাল এর ঘটনাবলী। আবুল ফজলের দ্বিতীয় গ্রন্থ আইন-ই-আকবরী ফার্সি ভাষায় লেখা। ব্ল্যাক ম্যান ও গারেট এটি কে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন। গ্রন্থটি কার্যত একটি পরিসংখ্যানগত বিবরণ ।এখানে সাম্রাজ্যের আয়তন, জনসংখ্যা, শিল্প, কৃষি প্রভৃতি বিষয়ে বিশদভাবে বিবরণ লিপিবদ্ধ হয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ছবি এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। তিনি ইতিহাস লিখবার ক্ষেত্রে তথ্য  সম্পর্কে যথেষ্ট...

Treaty of Tientsin 1858 | তিয়েন্তসিনের সন্ধি

Please visit our Homepage and Subscribe us. দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধে কার্যত চীনের পরাজয় ঘটে। ইঙ্গ ফরাসি বাহিনী ক্যান্টন দখল করে নেয় এবং উত্তর দিকে অগ্রসর হলে পিকিং আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে চীন তিয়েনসিনের সন্ধি (১৮৫৮) স্বাক্ষর করে। আমেরিকা ও রাশিয়া যুদ্ধে যোগদান না করলেও ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মতই সুযোগ সুবিধাগুলি পৃথক পৃথক চুক্তি সম্পাদন করে অর্জন করে নেয়। Treaty of Tientsin তিয়েনসিনের সন্ধি শর্ত গুলি হল ১) কূটনৈতিক সমতার ভিত্তিতে পশ্চিমা শক্তিগুলো পিকিং এ একজন করে মন্ত্রী স্থায়ীভাবে রাখার অধিকার পেল। ২) দশটি নতুন চিনা বন্দর পাশ্চাত্যের কাছে উন্মুক্ত হল। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চেফু, চিনকিয়াং, হ্যানকাও, কিউকিয়াং, কিউংচাও, নিউচিয়াং, সওতো,ওয়েনচাও, ন্যাংকিং প্রভৃতি। ৩) চীনের অভ্যন্তরে বিদেশিদের ভ্রমণ করার অধিকার দেওয়া হয় এই শর্তে যে, সেজন্য তাদের নিজ নিজ কনসালদের দেওয়া এবং চিনা কর্তৃপক্ষের সই করা অনুমতি পত্র বা পাসপোর্ট নিতে হবে। ৪) আমদানি করা বিদেশী পণ্যের উপরে অভ্যন্তরীণ শুল্কের হার শতকরা ২.৫ ভাগের বেশি ধার্য হবে না। ৫) যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ চীন ব্রিটেনকে ৪০ লক্...

তৃতীয় নগরায়ন | Third Urbanization in India

তৃতীয় নগরায়ন  ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম নগরায়ন হয়েছিল তাম্র ব্রোঞ্জ যুগে। ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিকে গড়ে ওঠা হরপ্পা সভ্যতা ছিল নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা। প্রত্নতাত্ত্বিকরা এখানে আজ পর্যন্ত ১৪০০ টি নগর কেন্দ্রের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। হরপ্পা সভ্যতার পতনের পর আর্যরা যে জনবসতি গড়ে তুলেছে তা ছিল গ্রামীণ পশুচারণ নির্ভর সংস্কৃতি। পশুচারণ অর্থনীতি কৃষি অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হলে এবং কৃষি উদ্বৃত্তকে সম্বল করে দ্বিতীয়বার নগরায়ন হতে প্রায় এক হাজার বছর সময় লেগে যায়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ষোড়শ শতকে জনপদে দ্বিতীয় নগরায়ন হয়। আদি মধ্যযুগের যে নগরায়ন হয় তাকে তৃতীয় নগরায়ন বলা হয়। অধ্যাপক রামশরণ শর্মা তার আরবান ডিকে গ্রন্থে আদি মধ্যযুগে নগরের অবক্ষয়ের চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে ৩০০ খ্রিস্টাব্দের পরবর্তী সময়ে অধিকাংশ নগর বিলুপ্তির পথে এগোতে থাকে। অল্পসংখ্যক শহর ৬০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত টিকেছিল। কিন্তু এর পর সেগুলিও ধবংসের পথে অগ্রসর হয়। এই পরিস্থিতি ১০০০ খ্রিস্টাব্দ পযন্ত চলে। তাঁর মতে গুপ্ত যুগের শেষ দিক থেকে অগ্রহার ব্যবস্থার প্রচলনের ফলে সামন্তব্যবস্থার বিকাশ ঘটে। কৃষির উপর অধ...

Second Opium War | দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধ

Please visit our Homepage and Subscribe us. Second Opium War | দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধ নানকিং ও তার পরবর্তী চুক্তিগুলি পশ্চিমী শক্তিগুলোর সাথে চীনের সম্পর্কে শান্তি আনতে পারেনি। বরং চীনের উপর বিদেশিদের দাবি উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে, যা চীনের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। বিশেষ করে ব্রিটিশদের মনে এই ধারণা জন্মায় যে, চীনের কাছ থেকে আরো কিছু সুযোগ সুবিধা আদায় করে নিতে না পারলে তার স্বার্থ পুরোপুরি সুরক্ষিত হবে না। অন্যদিকে চীনাদের পক্ষে পশ্চিমাদের সদর্প উপস্থিতি মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এই পরিস্থিতিতে আরো একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয় (1856), যা দ্বিতীয় ইঙ্গ চীন যুদ্ধ বা দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধ নামে পরিচিত। যুদ্ধের কারন নানকিং এর সন্ধির মাধ্যমে পাঁচটি বন্দর বিদেশীদের কাছে উন্মুক্ত হয়েছিল। সাংহাই ও নিংপোতে 1843 এবং আময় ও ফুচাওয়ে 1844 সালে বিদেশিদের বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া গেছিল। কিন্তু ক্যান্টনে স্থানীয় অধিবাসীদের তরফ থেকে জোর প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল। তাদের দাবি ছিল বিদেশীরা ক্যান্টনের পুরনো শহরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ চুক্তিতে এরকম কোন কথা নেই। তারা চাইলে যেখানে তাদের গুদাম গুলি গড়ে ...

Treaty of Nanking | নানকিং এর সন্ধি

Please visit our Homepage and Subscribe us. Treaty of Nanking | নানকিং এর সন্ধি প্রথম ইঙ্গ চীন যুদ্ধ চীনের জয়লাভ অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় শোচনীয় পরাজয় এবং সম্পূর্ন অপদস্ত হওয়া থেকে বাঁচতে পিকিং এর রাজদরবার বৃটেনের সঙ্গে 1842 সালের 29 আগস্ট নানকিং এর চুক্তি সম্পাদন করে। চীনের ইতিহাসে এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ চীনে এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ঔপনিবেশিকতার সূচনা হয় এবং চিনে এক যুগের সমাপ্তি হয়। নানকিং এর সন্ধির শর্তগুলি নিম্নরূপ: 1. ব্রিটিশ বণিকদের কাছে বণিকদের ঋণ পরিশোধ এবং যুদ্ধ  ও লিনের হাতে অফিন ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ বাবদ ব্রিটেনকে দু'কোটি 10 লক্ষ ডলার দিতে সম্মত হয়। 2. ক্যান্টন হং বণিকদের একচেটিয়া অধিকার লুপ্ত হয়। 3. ক্যান্টন, আমায়, ফু চাও এবং সাংহাই এই পাঁচটি বন্দরে এখন থেকে ব্রিটিশ জনপ্রতিনিধি এবং বণিকদের বসবাস ও ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হয়। 1843 এ বোগের/হুমেনের সন্ধিতে ব্রিটেন চিনে অতিরাষ্ট্রিক অধিকার ও সর্বাপেক্ষা অনুগৃহীত দেশের মর্যাদা পায়। 4. হংকং বৃটেনের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। 5. বিদেশি পণ্যের ওপর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শুল্ক ধার্য হবে এবং সেই পরিমাণ অনতিবিলম্বে নি...

প্রথম আফিমের যুদ্ধ | First Opium War

Please visit our Homepage and Subscribe us. প্রথম আফিমের যুদ্ধ | First Opium War চীনের উপনিবেশীকরণের ইতিহাসে ইঙ্গ চীন যুদ্ধ  বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পরপর দুটি ইঙ্গ চীন যুদ্ধ (১৮৩৯-৪২ এবং ১৮৫৬-৫৮) সংঘটিত হয় এবং দুটিতেই চীনের পরাজয় ঘটে।  আফিমের চোরাচালানকে কেন্দ্র করে এই যুদ্ধদ্বয় সংঘটিত হয়েছিল বলে আফিমের যুদ্ধ নামেও পরিচিত। Opium War 1 প্রথম আফিম যুদ্ধের কারণ ব্রিটেন আমেরিকাসহ পশ্চিমা বণিকরা চীনের সঙ্গে সমপর্যায়ে দাঁড়িয়ে দ্বিমুখী বাণিজ্য করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিয়ে আসছিল। কনফুসীয় আদর্শে প্রভাবিত চীন তাং যুগ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। তারা বিশ্বাস করতো যে,  চিন হল স্বর্গের নিচে অবস্থিত মধ্যরাজ্য। চীনের বাইরে বসবাসকারী সমস্ত মানুষই বর্বর। তাই বর্বর পশ্চিমীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। যদি কেউ চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখতে চায় তাহলে তাদেরকে করদ রাজ্য হিসেবেই বিবেচনা করা হবে এবং মাঞ্চু সরকারের মর্জি মতই বাণিজ্য করতে হবে। পশ্চিমী বণিকদের তাই চিনা দরবারে নিয়মিত  নজরানা পাঠাতে হত এবং সম্রাটের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ' কাউটাউ' প...

Iltutmish | ইলতুতমিশ

ইলতুতমিশঃ দিল্লি সুলতানির প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা  1206 খ্রিস্টাব্দে মোহাম্মদ ঘরির মৃত্যুর পর তাঁর বিজিত রাজ্য তার 3 বিশ্বস্ত ক্রীতদাস তথা সেনাপতির মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। গজনী এলাকার দায়িত্ব পান তাহাজ উদ্দিন ইলদুজ, মুলতান ও উচ এর অধিকার পান  নাসিরুদ্দিন কুবাচা এবং দিল্লি সাম্রাজ্যের দায়িত্ব পান কুতুবউদ্দিন আইবক। আইবক তার সংক্ষিপ্ত চার বছরের শাসনে দিল্লি সুলতানির সুদৃঢ় ভিত্তি স্থাপিত করতে পারেননি। কেবল মধ্য এশিয়ার পঙ্কিল রাজনীতি থেকে দিল্লি সাম্রাজ্যকে দূরে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাই পরবর্তী শাসক ইলতুৎমিস কে নানান সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়, যেগুলি তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সমাধান করে দিল্লি সুলতানির দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তাই অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিব বলেছেন যে, আইবক দিল্লি সুলতানির  রূপরেখা নির্মাণ করেছিলেন কিন্তু ইলতুৎমিশ ছিলেন দিল্লি সুলতানির প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। ইলতুতমিশের সমস্যা Iltutmis সিংহাসন আরোহন কালে ইলতুৎমিশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল আরাম শাহ। তরাইনের একটি যুদ্ধে ইলতুৎমিস তাকে পরাজিত করে লাহোরের আমিরদের সমর্থন নিয়ে দিল্লীর সিংহাসন আরোহন করেন। সিংহাসন আরো...

Murshid Quli Khan | মুর্শিদকুলি খাঁ

Please visit our Homepage and Follow us. Murshid Quli Khan | মুর্শিদকুলি খাঁ অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে ভারতের রাজনৈতিক সংকটকালে যে সমস্ত ব্যক্তি নানান দুর্যোগ অতিক্রম করে ক্ষমতার শিখরে পৌঁছে ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন বাংলার নবাব  মুর্শিদকুলি খাঁ । প্রথমে হায়দ্রাবাদ ও ১৭০০খ্রিস্টাব্দে বাংলার দেওয়ান পদে নিযুক্ত হন, ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে উড়িষ্যার সুবাদার ও তার পরের বছর বিহারের দেওয়ান পদ লাভ করেন। সম্রাট  ঔরংজেব তাকে  মুর্শিদকুলি খাঁ  উপাধি দিয়েছিলেন। ১৭১৩ সালে তিনি বাংলার ডেপুটি সুবাদার ও 1717 সালে তিনি বাংলার সুবাদার পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন তার উপাধি হয়েছিল আলাউদ্দিন জাফর খান বাহাদুর। মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব ব্যবস্থা মুর্শিদকুলি খানের জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি হলো বাংলার ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার।মুর্শিদকুলি খানের ভূমি রাজস্ব সংস্কার সম্পর্কে আমরা জানতে পারি সালিমউল্লাহ রচিত  তারিখ-ই-বঙ্গালাহ ও জেমস গ্রান্টের Analysis of the finances of Bengal থেকে।  স্যার যদুনাথ সরকার মুর্শিদকুলি খাঁর ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার বিস্তৃত আলোচনা করেছেন, রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য ম...

চোলদের নৌসাম্রাজ্য | The Naval Empire of the Cholas

চোলদের নৌসাম্রাজ্য খ্রিস্টীয় নবম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে ভারতবর্ষে যে কয়টি রাজ্য গুরুত্ব অর্জন করেছিল তার মধ্যে অন্যতম হল উদীয়মান চোল রাজ্য। দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে চোল রাজবংশ তার আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিল। তারা দক্ষিণে সিংহল ও মালদ্বীপ জয় করেছিল। ওড়িশা ও তুঙ্গভদ্রা দোয়াব অঞ্চলে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তৃত হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য বিষয়ে এটাই যে চোল রাজাদের একটি শক্তিশালী নৌবহর ছিল, যার সাহায্যে তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির ওপরে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল।   চোলরা দাক্ষিণাত্যের একটি প্রাচীন রাজবংশ। অশোকের শিলালিপি এবং প্রাচীন সঙ্গম সাহিত্যে চোলদের উল্লেখ রয়েছে। চোলরা দক্ষিণ ভারতের পল্লব, চালুক্য ও রাষ্ট্রকূটদের অধীনে সামন্ত রাজা হিসাবে কাজ করত। পরবর্তীকালে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র তারা গড়ে তুলতে তারা সক্ষম হয় যা উত্তরে কৃষ্ণা-তুঙ্গভদ্রা দোয়াব থেকে দক্ষিনে সমুদ্রতীর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।  চোল শাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল সমুদ্রের উপর আধিপত্য স্থাপন করা। ভারত মহাসাগরের মালদ্বীপ, লাক্ষাদ্বী্‌ সিংহল প্রভৃতি অঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মাল...