সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা | Meiji Restoration

মেইজি (১৮৬৮) পুনপ্রতিষ্ঠার পেছনে রাজনৈতিক বিন্যাস

টোকুগওয়া শোগুনের যুগে ইয়েডো ছিল জাপানের শাসনকেন্দ্র। শোগুন রাজধানী ইয়েডোতে বসে দেশ শাসন করতেন। আর সম্রাট থাকতেন কিয়োটো শহরে। কিয়াটোতে একটি শোগুন বিরোধী গোষ্ঠী তৈরি হয়। এরা শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে সম্রাটকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার জন্য যে আন্দোলন করে তার পরিণতিতে জাপানের মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা। 

মার্কিন ও অন্যান্য পশ্চিমী দেশগুলির যখন জাপানের আবরণ উন্মোচনের জন্য চাপ দিচ্ছিল তখন শোগুনরা পশ্চিমীদের পক্ষে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু শোগুন বিরোধী গোষ্ঠী স্লোগান তোলে 'সম্রাটকে সমর্থন করো ও বিদেশিদের বিতাড়িত কর'। এই পরিস্থিতিতে নাওসুকে নামে এক শোগুনকে শোগুন সরকারের প্রধান পরামর্শদাতা নিযুক্ত করা হয়। তিনি সম্রাট এবং শক্তিশালী ভাইসরয়দের বাধা উপেক্ষা করে আমেরিকার সাথে 'হ্যারিস চুক্তি' স্বাক্ষর করেন এবং শোগুন বিরোধী চক্র ভেঙে ফেলার জন্য কতগুলি পদক্ষেপ নিতে থাকেন।

নওসুকে -এর কঠোর পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে আন্দোলন জোরদার হয়। চারটি গোষ্ঠী - সাৎসুমা, চোসু, হিজেন ও তোসা এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নেয়। শোগুন এবং বিদেশি উভয়ের বিরোধিতা বৃদ্ধি পায়। বিদেশিদের সাথে ওরা কতগুলি খন্ড যুদ্ধে লিপ্ত হয়। দূতাবাসে অগ্নিসংযোগ করে একজন ব্রিটিশ নাগরিককে হত্যা করে। এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ব্রিটিশরা ক্ষতিপূরণ এবং হত্যাকারী প্রাণদণ্ড দাবি করেন। এদিকে সম্রাট ক্রমেই শোগুনদের উপর বিদেশিদের বিতরনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। শোগুন সম্রাটের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে। এরপর চোসু গোষ্ঠী শিমনোসেকি প্রণালীতে মার্কিন, ফরাসি ও ওলন্দাজ জাহাজের উপর বোমাবর্ষণ করে। ফলে এক খন্ডযুদ্ধ হয়। ব্রিটিশরা সাৎসুমার প্রধান কার্যালয় কাগোশিমার উপর বোমাবর্ষণ করে। যদি এই ঘটনায় সাৎসুমা-ব্রিটিশদের সম্পর্কের সূচনা হয়। কিন্তু চোসু গোষ্টি কোনমতেই বিদেশিদের শিমনোসেকি প্রণালীতে ঢুকতে দেবেনা বলে বদ্ধপরিকর ছিল।

ইতিমধ্যে ৫ জন চোসু যুবক যাদের মধ্যে ইটো হিরবুমি ছিল উল্লেখযোগ্য - ইউরোপ যাত্রা করেন; এবং বুঝতে পারেন বেশিদিন জাপানি বন্দরগুলি বিদেশীদের কাছে রুদ্ধ করে রাখা যাবে না। তিনি দ্রুত দেশে ফিরে শিমনোসেকি বিদেশের কাছে উন্মুক্ত করার প্রস্তাব দেন। উগ্র জাতীয়বাদদের চাপে তিনি সফল হননি; কিন্তু বিদেশীরা চোসুদের উপর আক্রমণ চালিয়ে শিমনোকেসি প্রণালী উন্মুক্ত রাখার স্বীকৃতি আদায় করে নেয়।

এর ফলে বিদেশি বিরোধিতা বন্ধ হয় কিন্তু শোগুন বিরোধি আন্দোলন তীব্র হয়। চারটি গোষ্ঠী,  সম্রাট, কোমেই এবং কিয়োটো অভিজাতরা বাকুফু বিরোধী জোটে হাত মেলায়। ওসাকার কিছু ধনী বনিক এদের অর্থ সাহায্য করে (বিশেষত মিৎসুই বণিকরা)। তোসা গোষ্ঠী প্রস্তাব দেয়  যে শোগুণ যদি স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ত্যাগ করে তাহলে নতুন ব্যবস্থায় তারা সম্মানজনক স্থান পাবে। কিন্তু তোসু ও সাৎসুমা -রা কেবল শোগুনতন্ত্রের ধ্বংস নয় ওদের সম্পত্তি গ্রাস করতে উদ্যোগী হয়েছিল। এই সময় ব্রিটিশরা উগ্র সাৎসুমা ও চোসুদের সমর্থনে ছিল। আর ফরাসিরা শোগুনতন্ত্রের পক্ষে ছিল।

সাৎসুমা ও চোসুদের তীব্র শোগুন বিরোধিতার পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত শোগুন যোসিনোবু ওরফে কেইকি ১৮৬৭ খ্রিঃ নভেম্বর মাসে সম্রাটের হাতে যাবতীয় রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্পণ করেন।  তাসত্ত্বেও সাৎসুমা ও চোসুর কিয়োটোর প্রাসাদ আক্রমণ করে এবং সম্রাটের রাজনৈতিক ক্ষমতার পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন। এ নতুন সম্রাট হন মুৎসুহিতো (কারন ইতিমধ্যে কোমেই এর মৃত্যু হয় )। যদিও কিয়োটোর প্রাসাদ আক্রমণের ফলে শোগুন সর্মথকরা প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা সম্রাট বিরোধী ছিল না। যাহোক শোগুনদের পরাজয়ে টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের চূড়ান্ত পতন ঘটল।

প্রকৃতি / বৈশিষ্ট্য / চরিত্র 

'মেইজি' কথার অর্থ জ্ঞানদীপ্ত শাসন। মুৎসুহিতোর ৪৫ বছরের শাসনকাল (১৭৮৬-১৯১২) বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রগতির স্বাক্ষর রেখে ছিল বলে একে মেইজি যুগ বলা হয়। আপাত দৃষ্টিতে ১৮৬৭-৬৮ র ঘটনাটি বলপূর্বক রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের ঘটনা মাত্র। কিন্তু বৃহত্তর পেরক্ষাপটে ব্যাখ্যা করলে দেখা যাবে যে, ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ের আগে থেকেই জাপানে কতগুলি পরিবর্তন আসতে শুরু করেছিল। এই পরিবর্তনের পরিণতি হিসেবে উনিশ শতাব্দীর অন্তিম লগ্নে জাপান একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।

জাপানের ইতিহাসে রক্ষণশীল গোড়া থেকে ঐতিহ্যবাদী সকলেই মনে করেন, টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের যুগে সম্রাটকে ক্ষমতাহীন করে তোলা হলেও জনগণের সম্রাটের প্রতি আনুগত্যে এতোটুকুও চিড় ধরেনি। তার ওপর কমোডর পেরির অভিযান বৈদেশিক আগ্রাসন সম্পর্কে মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছিল। এই পরিস্থিতিতে একদল নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সম্রাটের কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধারে প্রয়াসী হয়েছিলেন। বস্তুত মেইজি শিক্ষাব্যবস্থায় এই উদ্দেশ্যই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল।

একদল ঐতিহাসিক ব্যক্তিবিশেষের কৃতিত্বের ওপর গুরুত্ব আরোপ না করে ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া ও আর্থসামাজিক ধারা দিয়ে এই পরিবর্তনকে ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের মতে শোগুন যুগেই জাপানের কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে শুরু করেছিল। এই পরিবর্তনের ধারাই শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে সম্রাটকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিল। 

মার্কসবাদী ঐতিহাসিকরা মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠাকে একটি বুর্জোয়া নিয়ন্ত্রিত গণআন্দোলন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অনেকেই আবার এও বলেছেন যে, বুর্জোয়া নিয়ন্ত্রিত হলেও পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরেও জাপানের গ্রামাঞ্চলে বহু এলাকায় সামন্ততান্ত্রিক সম্পর্ক ও বন্ধনগুলি থেকেই গেছিলো।

পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর সম্রাটই দেশের প্রকৃত শাসকে পরিনত হয়েছিল কিনা এই প্রশ্নে E.H Norman বলেছেন, জাপানের সম্রাট নামসর্বস্ব থেকে প্রকৃত শাসকে পরিণত হল। অর্থাৎ ঘটনাটি যথাযথ 'পুনঃপ্রতিষ্ঠা'। George Sanson অবশ্য Norman -এর মত মেনে নিলেও এই ঘটনাকে 'বিপ্লব' বলেননি, কারণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ঐতিহাসিক ভিনাক আবার রাজতান্ত্রিক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়টি মেনে নিতে নারাজ। তারমতে পশ্চিম জাপানের গোষ্ঠীসমূহ - চোসু, তোষা, সৎসুমা ও হিজেন নেতৃবৃন্দ দেশের প্রকৃত শাসকে পরিণত হয়েছিল।

মরিয়াস জনসন (Marius Jansen) মেইজি পুনপ্রতিষ্ঠার প্রকৃতি আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন - মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল সামন্ত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জিহাদ এবং অন্যদিকে পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদী আক্রমণের আশঙ্কার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া, এই দ্বিমুখী কার্যকলাপের অনিবার্য পরিণতি। তাঁর মতে ১৭৭৭ এর সৎসুমা বিদ্রোহ ছিল পরিবর্তিত পরিস্থিতির বিরুদ্ধে শেষ সামন্ততান্ত্রিক সামুরাই প্রতিক্রিয়া। তার মতে মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল একটি 'জাতীয়বাদী বিপ্লব' এবং মেইজি শাসকেরা বহিরাগত বিপদের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসেবে প্রতিরক্ষামূলক আধুনিকরণের নীতি গ্রহণ করেছিল।

Jon Hallday প্রমূখ মার্কসবাদী ঐতিহাসিকেরা বলেছেন, Tempo সংস্কার থেকে ১৮৮৯ এর সংবিধান পর্যন্ত সময়সীমা জাপানের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে যে সুদূর প্রসারী পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল তারই অবশ্যসম্ভাবী ফলশ্রুতি মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা। টোকুগাওয়া শাসনের শেষের দিকে এবং মেইজি শাসনের গোড়ার দিকে জাপানের শিল্পের অগ্রগতিকে উদ্দীপিত করার জন্য আর্থিক জীবনে কঠোর আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ দরকার ছিল। নতুন সংবিধান তা-ই করেছিল। টোকুগাওয়া সামন্ততন্ত্র থেকে বিশ শতকে পুঁজিবাদের উত্তরনের সেতু উপরোক্ত সময়কালেকে গড়াবার জন্যই মেইজি নেতারা স্বৈরতান্ত্রিক পদক্ষেপ নিয়েছিল। অর্থাৎ মেইজি ব্যবস্থা ছিল স্বৈরতান্ত্রিক।

মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে কোন শ্রেণীর মানুষ কি ভূমিকা নিয়েছিল সেটাও একটা প্রশ্ন। অনেকেই বলেছেন কৃষক ও বণিক শ্রেণী যোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সামুরাই শ্রেণি। অনেকে বলেছেন উচ্চ নয় নিম্নশ্রেণির সামুরাইগণ ছিলেন মূল নেতা। ঐতিহাসিক Albert Craig অবশ্য তার 'journal of Asian studies' -এর একটি প্রবন্ধে বলেছেন, নিম্ন-উচ্চ সবশ্রেণীর সামুরাই শোগুন বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। আর কৃষক বিদ্রোহ, বণিকদের অর্থসাহায্য, ডাইমোদের সমর্থন কেবল ত্বরান্বিত করার কাজ করেছিল। Jon Hallyday অবশ্য বলেছেন, একদল পরিবর্তনকামী সামন্তপ্রভুর সঙ্গে জাপানের বুর্জোয়া শ্রেণীর সমঝোতা মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার ঘটনাটিকে নতুন বিশেষত্ব দিয়েছিল। এই জোট সমস্ত শ্রেনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের তৎকালীন কৃষকবিদ্রোহ গুলিকে ব্যবহার করেছিলেন মাত্র, কৃষক বিদ্রোহগুলির প্রতি নেতারা সহানুভূতিশীল ছিলেন না।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল তা জনজীবনে তীব্রভ

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগার:-   কোনো ব্যাক্তিগত বা অলাভজনক