সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রাচীন এথেন্সের দর্শন চর্চা

প্রাচীন এথেন্সের দর্শন চর্চা                প্রাচীন গ্রিক সংস্কৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপাদান ছিল দর্শন। ধ্রুপদী গ্রিসের দর্শনের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে পাশ্চাত্য দর্শনের বিকাশ ঘটেছিল। সেই যুগের তিনজন শ্রেষ্ঠ দার্শনিক হলেন সক্রেটিস, প্লেটো ও অ্যারিস্টটল।                  প্রাচীন গ্রিক দর্শনে সোফিষ্ট মতবাদের ব্যাপক প্রভাব ছিল। সোফিষ্ট কথাটির দ্বারা দক্ষ ও জ্ঞানী মানুষকে বোঝায়। সোফিস্টদের উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন বিষয়ে মানুষকে শিক্ষিত করে তোলে। ইতিহাস, ভূগোল, নৃতত্ত্ব, গণিত, আয়োনীয় বিজ্ঞান, ভাষাতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয় তারা শিক্ষা দিতেন। এরা ধনী পরিবারের তরুণ প্রজন্মকে সফল করে গড়ে তোলার চেষ্টা করতেন। এদিক থেকে তাদের প্রয়াস সার্বিক ছিল না। সোফিষ্ট দর্শন ও শিক্ষার মূল ভিত্তি ছিল Nomos Physis বৈপরীত্য। Nomos হলো রাষ্ট্রীয় আইন, যা মানুষেরই তৈরি এবং যা আপেক্ষিক ও পরিবর্তনশীল। Physis হল চিরন্তন বা স্বাশত। সোফিষ্ট দার্শনিকগণ এই দুইয়ের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন রেখা টেনে দিয়েছিলেন। তারা বোঝাতে চেয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় আইন কৃত্রিমভাবে আরোপিত, তাই সেখানে বিরোধিতা করা যেতে পারে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়মকে অস্বীকার

মুঘলদের পতন সংক্রান্ত ব্যখ্যা | Historical Debate on the Fall of Mughal Empire

মুঘলদের পতন  ১৫২৬ খ্রিঃ পানিপথের যুদ্ধে বাবরের জয়লাভের মাধ্যমে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের যাত্রা শুরু হয় এবং মহান আকবরের শাসনকালে মুঘল সাম্রাজ্য তার ভিত মজবুত করতে সক্ষম হয়। সপ্তদশ শতকে মুঘল সাম্রাজ্যের কেন্দ্রীয় শহর দিল্লি সমগ্র পূর্ব গোলার্ধের ক্ষমতার অন্যতম কেন্দ্র হিসাবে বিবেচিত হত। কিন্তু ১৭০৭ খ্রিঃ মহান ঔরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর এই সাম্রাজ্যের ক্রমিক অবক্ষয়ের সূচনা হয় এবং আগামী ৫০ বছরের মধ্যে এর পড়ন্ত অবস্থার লক্ষনগুলি সুস্পষ্ট হয়ে যায়। উপযুক্ত সংস্কারের অভাবে সাম্রাজ্যের সামরিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। মারাঠারা সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে লুঠপাঠ চালাতে থাকে। পরপর দুটি বিদেশি অক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থতা, পারস্যের নাদির শাহের আক্রমণ (১৭৩৮-৩৯) এবং আহম্মদ শাহ আবদালির নেতৃত্ব আফগান আক্রমণ (১৭৫৬-৫৭) মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতাপ ও মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে।   মুঘলদের পতনের কারন অনুসন্ধান করতে গিয়ে একসময় ব্যক্তিবিশেষের ভূমিকাকে বড় করে দেখা হত। মনে করা হত দুর্বল উত্তরাধিকারী, যোগ্য নেতৃত্বের অভাব, ঔরঙ্গজেবের ভ্রান্ত নীতি ইত্যাদি কারনে সাম্রাজ্যের অবনতি ঘটে। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের ইতিহাস চর্চায় সমসাময়িক আর্থ-স

ঐতিহ্যের সংজ্ঞা ও শ্রেণীবিভাগ | Heritage: Definition and Classification

ঐতিহ্যের সংজ্ঞা ও শ্রেণীবিভাগ  Heritage শব্দের উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ Hered বা Heres থেকে। এর অর্থ Heir বা উত্তরাধিকারী। Hered/Heres থেকে এসেছে ফরাসি শব্দ Heriter এবং এখান থেকে এসেছে ইংরেজি শব্দ Heritage। হেরিটেজ বা ঐতিহ্যের সংজ্ঞায় বলা যায়, ঐতিহ্য হল এমন কিছু যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মূল্যবান বলে বিবেচিত হয় এবং তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ইউনেস্কোর মতে, ঐতিহ্য হল আমাদের অতীতের উত্তরাধিকার, যেগুলি নিয়ে আমরা বর্তমানে বাঁচি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হস্তান্তর করি। আমাদের সাংস্কৃতিক এবং প্রাকৃতিক ঐতিহ্য উভয়ই জীবন এবং অনুপ্রেরণার অপরিবর্তনীয় উৎস। ঐতিহ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে আমাদের উত্তরাধিকার হিসেবে প্রাপ্ত সমস্ত রীতিনীতি, স্মৃতিস্তম্ভ, বস্তু এবং সংস্কৃতি। ম্যাসাচুসেটস অ্যামহার্স্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (UMASS AMHERST Centre for Society and Heritage) মতে, ঐতিহ্য একটি সমসাময়িক কার্যক্রম যা সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে এবং এটি দীর্ঘমেয়াদী শহুরে এবং আঞ্চলিক পরিকল্পনার অঙ্গ, রাজনৈতিক স্বীকৃতির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম, আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপের মাধ্যম, নৈতিক প্রতিফলনের উপায় এবং স্থানীয় অর্থনৈ

শ্রমিক আন্দোলনে ইতিহাস চর্চার ধারা

শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস চর্চার বিভিন্ন ধারা  ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে মূলত বিদেশী পু৺জির অনুপ্রবেশ এবং প্রধানত উপনিবেশিক উদ্যোগে বাগিচা, খনি, চটকল, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, বস্ত্র শিল্প এবং ইস্পাত ও রেল এর মত নতুন ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা প্রচলিত হওয়ার পরে, ভারতের সর্বপ্রথম স্পষ্টত এক নতুন সামাজিক শ্রেণী হিসেবে শিল্প শ্রমিকদের আবির্ভাব ঘটে। যদিও কৃষি প্রধান ভারতবর্ষে মোট জনসংখ্যার তুলনায় সংখ্যাগতভাবে শিল্প শ্রমিকের সংখ্যা খুব বেশি ছিল না। ঘটনাচক্রে ভারতবর্ষে এই শিল্প শ্রমিক শ্রেণীর উদ্ভব সেই সময়ে শুরু হয়, যে সময়ে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সূত্রপাত হয়।  গোড়ার দিকে শ্রমিক ও তাদের আন্দোলনের মূল ধারা ঐতিহাসিকদের দৃষ্টিতে তেমনভাবে আকর্ষণ করেনি। কারণ তারা শ্রেণী-সম্প্রদায় নির্বিশেষে ভারতীয়দের একটি জনগোষ্ঠী হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত ছিলেন। তাঁদের মতে রাজনীতিবিদরা অনেক সময়ই শ্রমিকদের দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এবং তাদের নিজেদের কোনো বিশেষ রাজনৈতিক সচেতনতা ছিল না। ফলে ঐতিহাসিকগণ, জাতীয় রাজনীতিতে তাদের ভূমিকা সম্বন্ধে তেমন শ্রদ্ধা পোষণ করতেন না।  উপনিবেশিক ভারতে শ্রম

উডের ডেসপ্যাচ

উডের ডেসপ্যাচ সম্পর্কে আলোচনা কর ১৮ শতকের ভারতবর্ষে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাব্যবস্থা চালু ছিল। ১৮ শতকের  শেষ দিকে বিভিন্ন কারণে এই দেশে ইংরেজি শিক্ষা চালুর দাবি উঠেছিল। এদেশের কোন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হবে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়, যখন ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে চার্টার অ্যাক্ট-এ জনশিক্ষা বিস্তারের জন্য বছরে এক লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়। প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী বিতর্কের মধ্যে শেষ পর্যন্ত পাশ্চাত্যবাদীদের জয় হয়। বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ১৯ শে জুলাই  ভারতের শিক্ষা সম্পর্কে যে প্রতিবেদন পেশ করে তাকে উডের নির্দেশনামা বা Wood's Despatch বলা হয়। উডের ডেসপ্যাচ সংক্রান্ত নির্দেশে ইংরেজি ও মাতৃভাষার মাধ্যমে সর্বস্তরে শিক্ষার উন্নতি ও মাধ্যমিক স্তরে মাতৃভাষা ইংরেজি এবং উচ্চ স্তরে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার ব্যবস্থা করতে বলেন। তিনি প্রত্যেক প্রদেশে শিক্ষাবিভাগ গঠন এবং শিক্ষা আধিকারিক নিয়োগ করতে বলেন। উড বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত স্কুলগুলিকে সরকারি অনুদান দিতে বলেন এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের উপর সরকারি তাদারকি ও নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করতে বলা হয

কলকাতা ও তার আশেপাশের গণিকা পল্লী

কলকাতা ও তার আশেপাশের গণিকা পল্লী সম্পর্কে আলোচনা কর? ব্রিটিশ কর্তৃক বাংলার শাসনভার গ্রহণের পর নতুন বাণিজ্যিক এবং প্রশাসনিক সম্পর্কের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রাক উপনিবেশিক আর্থসামাজিক বিন্যাসের সাথে সাযুজ্য রেখে বাংলায় গণিকাবৃত্তিরও প্রবর্তন ঘটে। উনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে গনিকা বৃত্তির সংগঠনের প্রসারণ এবং খরিদ্দারদের বিভিন্ন বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। কলকাতার বাইরে বাংলার মফঃস্বল শহরগুলি তেও পর্যাপ্ত গণিকালয়ের অভ্যুদ্বয় দেখা যায়। ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় চার লক্ষ জনসাধারণ ১২,৪১৯ জন গণিকাকে পালন করেছিল। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে এই সংখ্যা ৩০ হাজারে এসে দাঁড়ায়। ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে বিখ্যাত ব্যঙ্গ রচয়িতা কালীপ্রসন্ন সিংহ তার রচনায় অলস ধনী পুরুষদের জীবনযাত্রা ও তাদের ব্যবহার সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছেন যে এই সমস্ত ধনী ব্যক্তিদের জন্য কলকাতা একটি গণিকালয়ে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেক লোকালয়ে কমপক্ষে দশটি করে গনিকালয় থাকত। প্রতিবছর গণিকাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেত। কলকাতা ও অন্যান্য অঞ্চলে গণিকাদের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংগঠনের পরিবর্তন ঘটেছে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে এবং উনবিংশ শতাব

গনিকা ও বাবুর সম্পর্ক

গনিকা ও বাবুর সম্পর্ক আলোচনা কর। ব্রিটিশ কর্তৃক বাংলার শাসনভার গ্রহণের পর নতুন বাণিজ্যিক এবং প্রশাসনিক সম্পর্কের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রাক উপনিবেশিক আর্থসামাজিক বিন্যাসের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলায় গণিকাবৃত্তিরও প্রবর্তন ঘটে। উপনিবেশিক প্রশাসন ইউরোপীয় ও ভারতীয় সৈনিকদের জন্য ভারতীয় গণিকা নিযুক্ত করার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। সৈনিকদের স্থায়ী বাসস্থান সংশ্লিষ্ট বাজার ও নির্দিষ্ট স্থানে গণিকাদের প্রতিষ্ঠা করা হয়। তারা "চাকলা" নামে পরিচিত ছিল। এই বেশ্যারা সাধারণত তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল ১. গোরা চাকলা ২. লাল কুর্তা চাকলা এবং ৩. কালা চাকলা। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে কলকাতায় একশ্রেণীর ভু৺ইফোড়  ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটে, যারা ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ও প্রশাসনিক কর্তাদের দালালি করে প্রচুর অর্থ সঞ্চয় করেছিল। এদের উচ্চ স্তরে ছিলেন বেনিয়ান, দেওয়ান এবং সর্বনিম্নে মোশাহেব শ্রেণী। এরাই উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে কলকাতার গনিকাবৃত্তির প্রথম প্রজন্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সমসাময়িক হাস্যরসাত্মক নাটক, প্রেমপত্র ইত্যাদিতে এদের এবং এদের সঙ্গী গণিকাদের উল্লেখ আছে। এ যুগের প্রথম প্রজন্মের বাবুরা

বাংলা থিয়েটারে অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফি

বাংলা থিয়েটারে অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফির অবদান আলোচনা কর। প্রাচীনকাল থেকেই নাটকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপযোগিতার দিক সমাজে স্বীকৃত হয়ে এসেছে। প্রথমত নাটক হল উন্নত সংস্কৃতির প্রচারক তথা চিত্ত বিনোদনের মাধ্যম। দ্বিতীয়ত, জনশিক্ষা বা লোক শিক্ষার অন্যতম বাহন হল নাটক। ধরে নেওয়া হয় ভরত মুনির নাট্যশাস্ত্রই হল প্রাচীন ভারতের বা বৈদিক যুগে নাট্যচর্চার প্রধান অবলম্বন ও সূচনা। প্রাচীন ভারতে নাট্যশাস্ত্র পঞ্চম বেদ নামে সংস্কৃত সাহিত্যে পরিচিত হয়ে ওঠে। নাট্যবেত্তাগণ বলেন, প্রাচীন সংস্কৃত নাটকের ভিত্তি হল ঋকবেদের বাণী, সামবেদের গীতি, যজুর্বেদের অভিনয় এবং অথর্ববেদের অনুভূতি ও রস। এভাবেই গড়ে উঠেছিল সংলাপ সঙ্গীত ও অভিনয়ে সমৃদ্ধ এবং রসপূর্ণ। কালিদাস পূর্ব যুগের দুজন শ্রেষ্ঠ নাট্যকার রূপে মহাকবি ভাস এবং অশ্বঘোষের নাম পাওয়া যায় সেই হিসেবে ভারতবর্ষের নাট্যচর্চের কাল দুই সহস্র বছরের অধিক। বাংলার নাট্যচর্চার জন্ম বলা চলে, দ্বাদশ শতকে জয়দেবের গীতগোবিন্দ, চতুর্দশ শতকে বডু চন্ডীদাস রচিত শ্রীকৃষ্ণকীর্তন থেকেই। তবে ১৬ শতকের শ্রীচৈতন্যের নিত্যগীত সংলাপ প্রকৃতি থেকে যে কৃষ্ণ যাত্রা সূচনা তাকেই অনেকে বাংলার আদ

স্ত্রী শিক্ষার অগ্রগতিতে খ্রিস্টান মিশনারিদের ভূমিকা

স্ত্রী শিক্ষার অগ্রগতিতে  খ্রিস্টান মিশনারিদের ভূমিকা আলোচনা কর? ঐতিহ্যিক দিক থেকে শিক্ষার অর্থ ছিল পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ। হিন্দুদের মধ্যে পুরোহিত শ্রেণির অন্তর্গত ব্রাহ্মণরা ধর্মশাস্ত্রের সকল শাখা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করত। অপরদিকে দুই জাত, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যগন ততটা কঠোরভাবে পাঠ গ্রহণ না করলেও ব্যবহারিক দক্ষতার জন্য শিক্ষা গ্রহণ করতেন। শূদ্র এবং নারী ধর্মশাস্ত্র পাঠ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। উচ্চ শ্রেণীর কিছু পরিবারে কিছু নারী পৌরাণিক সাহিত্য পাঠ করতে শেখেন। মুসলিম নারীরা কোরান শিক্ষা করবেন আশা করা হত। কিন্তু উচ্চ শ্রেণীর মুসলিম পরিবার তাদের কোনো কন্যা সন্তানদের বিদ্যালয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ করে রেখেছিল। ফলে ধর্ম সম্বন্ধে তারা যে শিক্ষা পেত তার গৃহ বা পরিবারের কাছ থেকে  অথবা গৃহশিক্ষকের কাছ থেকে।  উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে শিক্ষিত নারীর সংখ্যা ছিল একেবারেই নগন্য।‌  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কেরানী ও অনুবাদকের প্রয়োজনে ভারতে ইংরেজি শিক্ষার সূত্রপাত ঘটায়। ১৮১৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় হিন্দু কলেজের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তরুণ ভারতীয়দের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সহকারী পদের জন্য উপযুক্ত করে তোলার উদ্দেশ্যে। পুরুষ

ঔপনিবেশিক ভারতের শ্রমিক সরবরাহের উৎস কি?

ঔপনিবেশিক ভারতের শ্রমিক সরবরাহের উৎস উনবিংশ শতাব্দীর শেষআর্ধ থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত এই অন্তবর্তীকালীন সময়ে ভারতবর্ষে এক নতুন সামাজিক শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছিল। এই শ্রেণী শিল্পের নিযুক্ত শ্রমিক শ্রেণী নামে ভারতের ইতিহাসে পরিচিত। ভারতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসে শ্রমিক শ্রেণী এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।  ভারতে ব্রিটিশ শাসনে উপনিবেশিক স্বার্থ পূরণ করার জন্য প্রাচীন সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছিল এবং এর পরিবর্তে গড়ে উঠেছিল আধুনিক শিল্প এবং পাশ্চাত্য অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থা। এবং তা হয়েছিল অত্যন্ত ধীরগতিতে ও বাধাগ্রস্থ পথে। সামন্ততন্ত্রের অবসানের পর ইউরোপে যেভাবে আধুনিক ধনতন্ত্র ও শিল্প ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল তার থেকে ভারতে ধণতন্ত্র ও আধুনিক শিল্প প্রতিষ্ঠার পথ ছিল ভিন্নতর। অবশ্যই মনে রাখার প্রয়োজন এ দেশে শিল্প ও পুঁজিবাদী অর্থনীতির বিকাশ ঘটেছিল উপনিবেশিক শাসন ও শোষণের মধ্য দিয়ে।  ভারতে আধুনিক শিল্পের উদ্ভব ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ঘটনা হলো রেলপথের প্রতিষ্ঠা। এর সূত্র ধরে ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে কলকাতা, বোম্বাই, মাদ্রাজ ভারতের প্রধান প্রধান শহরগ

বাংলা থিয়েটারে শিশির কুমার ভাদুডি

বাংলা থিয়েটারে শিশির কুমার ভাদুডির অবদান গিরিশ ঘোষের মৃত্যুর পর পরবর্তী দশক বাংলা থিয়েটারের পক্ষে অন্ধকার একটা সময়। নিরাপদ রাস্তায় চলতে গিয়ে নতুন পরীক্ষা নিরীক্ষার সাহস হারিয়েছিল থিয়েটার। ফলে যে উত্তেজনা এবং আবেগ এর চালিকাশক্তি ছিল তারই পুনঃব্যবহারে ভাঁরাল খালি হয়ে গেল। গিরিশ ঘোষ এর মৃত্যুর পরে সমস্যাগুলি প্রকট হতে লাগলো। থিয়েটার পাল্টাইনি, কিন্তু থিয়েটারের দর্শক ততদিনে পাল্টে গেছে। নাট্য ব্যক্তিত্বরা যখন একে একে মঞ্চ থেকে বিদায় নিতে থাকলেন অথবা নতুন ভাবনাচিন্তার ক্ষমতা হারালেন। তখন এমনকি নিতান্তই সাধারণ দর্শকের কাছেও এই থিয়েটারের একঘেয়েমি প্রকট হতে লাগলো। অমরেন্দ্রনাথ, অমৃত মিত্র, অমৃতলাল বসু, পূর্ব যুগের নটগোষ্ঠী তখন রঙ্গমঞ্চ থেকে অবসর নিয়েছে। রঙ্গমঞ্চের হস্তান্তর হচ্ছিল ঘন ঘন এবং অনেক বেশি টাকায়। পুরানো বেঙ্গল থিয়েটার পরপর মালিকানা ও নাম বদলায় ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে মালিকের নামে নামাঙ্কিত হয়ে এটি মনোমোহন থিয়েটার নামে উদ্বোধন হয়। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের পর এটি হাতে নেন শিশির ভাদুড়ি। তিনি বিংশ শতাব্দীর থিয়েটারে বিবর্তনের ধারা এনেছিলেন। শিশির ভাদুড়ি ছিলেন আধুনিক বাংলা নাট্

প্রাচীন গ্রিসে দাসপ্রথা | Slavery in Classical Greece

প্রাচীন গ্রিসে দাসপ্রথা সমাজ বিকাশের ধারা প্রসঙ্গে কাল মার্কস এর বক্তব্য ছিল এই যে আদিম সাম্যবাদী সমাজ ব্যবস্থার অবসান ঘটে কৃষি ব্যবস্থার সূচনা এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির আবির্ভাবের ফলে এবং এর ফলেই দাস ব্যবস্থার সূচনা হয়। ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতাগুলিতে আমরা দাস ব্যবস্থার অস্তিত্ব লক্ষ্য করি। ধ্রুপদী গ্রিসের সমাজ ও অর্থনীতির অন্যতম অঙ্গ ছিল দাস ব্যবস্থা। মার্কসীয় সমাজতাত্ত্বিকগণ গ্রিক সভ্যতাকে দাস শ্রমের উপর নির্ভরশীল সভ্যতা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন কিন্তু এই মতের বিপক্ষে বহু ঐতিহাসিক প্রশ্ন তুলেছেন। কেমব্রিজ ঐতিহাসিক এন্ড্রু জোন্স মন্তব্য করেছেন যে যেহেতু এথেন্স এবং অন্যান্য গ্রীক পলিসে দাসদের সংখ্যা ও নাগরিকদের সংখ্যার সঠিক অনুপাত পাওয়া যায় না তাই গ্রিক সমাজকে দাস সমাজ হিসেবে চিহ্নিত করা যুক্তিসঙ্গত নয়। যাইহোক, ধ্রুপদী গ্রীসে দাস ব্যবস্থার উপস্থিতি ছিল এই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। জন ফাইন সাহিত্যিক উপাদান থেকে দাসদের সংখ্যার একটি আনুমানিক হিসাব করে বলেছেন যে, ধ্রুপদী মোটামুটি এক লক্ষ দাসের অবস্থান ছিল। কোন প্রেক্ষাপটে কেন প্রাচীন গ্রিসে দাস ব্যবস্থার সূচনা হয়েছিল তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে