উডের ডেসপ্যাচ সম্পর্কে আলোচনা কর
১৮ শতকের ভারতবর্ষে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাব্যবস্থা চালু ছিল। ১৮ শতকের শেষ দিকে বিভিন্ন কারণে এই দেশে ইংরেজি শিক্ষা চালুর দাবি উঠেছিল। এদেশের কোন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হবে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়, যখন ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে চার্টার অ্যাক্ট-এ জনশিক্ষা বিস্তারের জন্য বছরে এক লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়। প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী বিতর্কের মধ্যে শেষ পর্যন্ত পাশ্চাত্যবাদীদের জয় হয়। বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ১৯ শে জুলাই ভারতের শিক্ষা সম্পর্কে যে প্রতিবেদন পেশ করে তাকে উডের নির্দেশনামা বা Wood's Despatch বলা হয়।
উডের ডেসপ্যাচ সংক্রান্ত নির্দেশে ইংরেজি ও মাতৃভাষার মাধ্যমে সর্বস্তরে শিক্ষার উন্নতি ও মাধ্যমিক স্তরে মাতৃভাষা ইংরেজি এবং উচ্চ স্তরে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার ব্যবস্থা করতে বলেন। তিনি প্রত্যেক প্রদেশে শিক্ষাবিভাগ গঠন এবং শিক্ষা আধিকারিক নিয়োগ করতে বলেন। উড বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত স্কুলগুলিকে সরকারি অনুদান দিতে বলেন এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের উপর সরকারি তাদারকি ও নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করতে বলা হয়। প্রত্যেক প্রদেশে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে বলেন। এই সুপারিশ অনুসারে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে দেশের তিন প্রেসিডেন্সি অঞ্চল যথাক্রমে কলকাতা (২৪/০১/১৮৫৭) ,মাদ্রাজ ও বোম্বেতে তিনটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। তিনি শিক্ষণ- শিখন, বৃত্তি শিক্ষা ও স্ত্রীশিক্ষার জন্য উদ্যোগ নিতে বলেন । বিভিন্ন জায়গায় মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলা হয়। বেথুন উদ্যোগী হয়ে নারী শিক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ইংল্যান্ডের মডেলে এই দেশে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন