সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মে, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র সংকট

কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র সংকট আমেরিকার ফ্লোরিডা উপকূল থেকে মাত্র 160 কিলোমিটার দূরত্বে ক্যারিবিয়ান উপসাগরের অন্যতম দ্বীপরাষ্ট্র হল কিউবা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যে মার্কিন-সোভিয়েত স্নায়ু সংঘর্ষের ধারা চলে আসছিল 1962 সালে তা পারমাণবিক যুদ্ধ পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছিল মার্কিন মুলুকের একেবারে উঠানে কিউবাতে। কিউবা সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতায় মার্কিন মুলুকের দিকে তাক করে ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও আন্তর্জাতিক আলাপ-আলোচনার পর মার্কিন সোভিয়েত সমঝোতা হয়ে যায় এবং ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের অবসান ঘটে। তবে ঠান্ডা যুদ্ধের ইতিহাস কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র সংকট এক উল্লেখযোগ্য তাৎপর্যবাহী ঘটনা। পটভূমি কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের প্রেক্ষাপট বুঝতে হলে ল্যাটিন আমেরিকায় মার্কিন নীতি, মার্কিন সোভিয়েত সম্পর্কের গতিবিধি এবং কিউবার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি  বুঝতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বহু আগে থেকেই ল্যাটিন আমেরিকা এবং মধ্য আমেরিকায় নিরবচ্ছিন্নভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কায়েম ছিল পানামা খাল ক্যারিবিয়ান উপসাগর কার্যত আমেরিকার নিজস্ব হ্রদে পরিণত হয়েছিল। 1918 খ্রিস্টাব্দে স্পেনকে যুদ

ইন্দো-গ্রীক | Indo-greeks

 ইন্দো-গ্রীক মৌর্য শাসনের একেবারে শেষ দিকে পুষ্যমিত্রর রাজত্বকালে যবন বা গ্রিক রাজাদের দ্বারা সাকেত ও মধ্যমিকা জয়ের কথা আমরা জানতে পারি। এই গ্রিক শাসকগণ ছিলেন গ্রিসের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। আলেকজান্ডারের আক্রমণের সময়  আগত বহু গ্রীক উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে আলেকজান্ডারের সেনাপতি সেলুকাসের নেতৃত্বে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। এই সাম্রাজ্য সেলুকিড সাম্রাজ্য নামে পরিচিত ছিল। সেলুকিড সাম্রাজ্যের মূল কেন্দ্র ছিল সিরিয়া। ব্যাকট্রিয়া এবং পার্থীয়া ছিল এই সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত দুটি স্যাট্র্যাপি বা প্রদেশ। ২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাগ অ্যান্টিওকাস-এর রাজত্বকালে উক্ত দু'টি প্রদেশ বিদ্রোহ করে। ব্যাকট্রিয়াতে এই বিদ্রোহের নেতৃত্বে ছিলেন ডায়োডোটাস। অবশেষে ওই শতকের শেষ দিকে সেলুকিড শাসক তৃতীয় অ্যান্টিওকাস ব্যাকট্রিয়া ও পার্থীয়ার স্বাধীনতা স্বীকার করে নেন। এইভাবে ব্যাকট্রিয় গ্রিক শাসনের সূচনা হয়। ব্যাকট্রিয় শাখার গ্রিক শাসকগন ব্যাকট্রিয়া হাতছাড়া ( শকদের হাতে ) হওয়ার পর ভারতের উত্তর পশ্চিম দিকের বেশ কিছু এলাকার ওপরে শাসন কায়েম করেছিলেন বলে এদের ইন্দো-গ্রিক শাসকও বলা হয়। প্রথম ডায়োড

কলিঙ্গরাজ খারবেল

 কলিঙ্গরাজ খারবেল মৌর্য সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে কলিঙ্গ রাজ্য ছিল অশোকের নজরে একটি অবিজিত এলাকা। মৌর্যদের পতনের পর কাল ক্রমে কলিঙ্গে ক্ষমতাশালী রাজবংশের প্রতিষ্ঠিত হয়। এই রাজবংশ ছিল মহামেঘবান তথা চেদি বংশ। চেদি ছিল খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের অন্যতম মহাজনপদ। বর্তমান বুন্দেলখন্ড এলাকায় চেদি মহাজনপদের অস্তিত্ব ছিল। পরে কোন এক সময় এরা উড়িষ্যার কলিঙ্গে চলে আসে। কলিঙ্গে চেদি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা মহামেঘবান এবং এই বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক হলেন খারবেল। খারবেল সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আমরা পেয়ে থাকি প্রাকৃত ভাষায় রচিত ভুবনেশ্বরের নিকটস্থ হাতিগুম্ফা প্রশস্তি থেকে। খারবেল এর পিতা ছিলেন মহারাজবক্রদেব। খারবেল ছিলেন এই বংশের তৃতীয় শাসক। তবে মহামেঘবানের সাথে তার সম্পর্ক কি ছিল তা সঠিক জানা যায় না। খারবেলের রাজত্বকাল নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। খারবেল তার পঞ্চম রাজ্যবর্ষে তি বস শত পূর্বে নন্দ রাজা কর্তৃক নির্মিত একটি সেচ খাল সংস্কার করেছিলেন। এই তি বস শত কথাটিকে কাশি প্রসাদ জাসওয়াল 103 বছর অর্থে গ্রহণ করে খারবেল এর শাসনকাল চিহ্নিত করেছেন 223 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে। কিন্তু অধিকাংশ

পুষ্যমিত্র শুঙ্গের রাজত্বকাল

পুষ্যমিত্র শুঙ্গের রাজত্বকাল মৌর্য পরবর্তী মগধ শাসকরা ছিলেন শুঙ্গ বংশীয়। শুঙ্গ রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পুষ্যমিত্র শুঙ্গ। মগধে মৌর্যদের শাসন 137 বছর স্থায়ী হয়েছিল। 232 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে অশোকের মৃত্যুর পর মৌর্য সাম্রাজ্য অবক্ষয় দেখা দিয়েছিল। মৌর্য সাম্রাজ্যের অসংহাতির সুযোগে মৌর্যদেরই সেনাধ্যক্ষ পুষ্যমিত্র শুঙ্গ শেষ মৌর্য শাসক বৃহদ্রথকে আনুমানিক 187 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে সিংহাসনচ্যুত ও হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। পুষ্যমিত্র সঙ্গের শাসনকাল 36 বছর স্থায়ী হয়েছিল। তবে তার রাজ্যসীমা মৌর্য শাসক দের মত অত বিস্তৃত ছিল না। জানা যায় যে দক্ষিনে নর্মদা নদী পর্যন্ত তার রাজ্য বিস্তৃত ছিল। এদিকে অযোধ্যা বিদিশা এবং পাটলিপুত্র এলাকায় তার কর্তৃত্ব ছিল। বৌদ্ধ গ্রন্থ দিব্যবদান এবং লামা তারানাথ এর রচনা থেকে জানা যায়, পশ্চিম ভারতে জলন্ধর এবং শাকল বা শিয়ালকোট তার রাজ্যভুক্ত ছিল। তবে এই তথ্য ঐতিহাসিক মহলে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। পুষ্যমিত্র এর রাজত্বকালে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো দাক্ষিণাত্যে  বিদর্ভ বা বেরার রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত। বিদর্ভ রাজ্যের সাথে মৌর্য শাসক দের আত্মীয়তা ছিল। তাই স্বাভাবিক কারণেই

মনসবদারি ব্যবস্থা

 মনসবদারি ব্যবস্থা মনসব কথার আক্ষরিক অর্থ কোনো একটা জায়গা যেখানে কিছু লাগানো বা সাটানো আছে। মুঘল শাসন ব্যবস্থায় মনসব বলতে পদমর্যাদা বোঝাত। মনসবদারি ব্যবস্থা মুঘল সামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, যেখানে একজন মনসবদার কে বেতন বা জাগিরের বিনিময় সম্রাটের জন্য সেনাবাহিনী পোষণ করতে হত। যেহেতু মুঘলদের নিরবচ্ছিন্নভাবে সামরিক অভিযানে লিপ্ত থাকতে হতো, তাই মনসবদারি ব্যবস্থা হয়ে উঠেছিল মুঘল সাম্রাজ্যের স্থায়িত্বের প্রধান ভিত্তি। ভারতে মনসবদারি ব্যবস্থার প্রবর্তক হলেন মুঘল সম্রাট আকবর। যদিও এই ব্যবস্থার শিকড় ছিল পারস্যে। বাবর তার সামরিক অফিসারদের মধ্যে জমি বন্টন করে দিতেন। কিন্তু তা মনসবদারি ব্যবস্থা ছিল না, তা ছিল অনেকটাই ওয়াঝ ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনীয়। শিরিন মুসাভীর গবেষণায় দেখা গেছে আকবরের রাজত্বকালে চারটি পর্বে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে মনসবদারি ব্যবস্থা তার পরিপূর্ণতা পেয়েছিল। প্রথমত, আকবরের রাজত্বকালের প্রথম দশ বছর পর্যন্ত সামরিক অফিসারদের মাইনে ইচ্ছামত ঠিক করা হতো এবং তাদের হাতে কত সংখ্যক ঘোরসওয়ার থাকবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম ছিল না। দ্বিতীয়তঃ 1566-67 খ্রিস্টাব্দ নাগাদ প্রতিটি মনসবদারে

ঠান্ডা যুদ্ধে সোভিয়েত পদক্ষেপ: কমিনফর্ম, মলোটভ প্ল্যান, কমেকন

ঠান্ডা যুদ্ধে সোভিয়েত পদক্ষেপ: কমিনফর্ম, মলোটভ প্ল্যান, কমেকন  কমিনফর্ম:  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন ট্রুম্যান নীতি ও তার পরিপূরক মার্শাল পরিকল্পনা ঘোষণার মধ্য দিয়ে ঠান্ডা যুদ্ধে নিজের অবস্থান মজবুত করছিল সেই সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন একেবারে বসে ছিল না। সোভিয়েত ইউনিয়ন এর প্রথম জবাব ছিল Communist Information Bureau বা কমিনফর্ম গঠন।  1947 সালের সেপ্টেম্বর মাসে পোল্যান্ডের সাইলেশিয়াতে সোভিয়েত নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউরোপের নয়টি রাষ্ট্রের কমিউনিস্ট দলগুলির একটি যৌথ সংগঠন গড়ে ওঠে। উইলফ্রিড ন্যাপ A History of War and Peace বলেছেন কমিনফর্ম এর মূল উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব ইউরোপের কমিউনিস্ট শাসিত রাষ্ট্র গুলির মধ্যে সংহতি আনয়ন ও সেগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনার প্রয়োজনে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করা। এর প্রধান রূপকার ছিলেন স্ট্যালিন ঘনিষ্ঠ রুশ নেতা ঝদানভ। পরবর্তীকালে কমিনফর্ম এর মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশের কমিউনিস্ট দলগুলির কর্মসূচিতে সংহতি অসামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করা হলো এবং পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রচার এর মাত্রা বাড়ানো হলো। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, 1948 সালে চেকোস্লোভাকিয়া কমিউনিস্টরা রাষ্ট্র

ইয়ল্টা সম্মেলন ও পটসডাম সম্মেলন

ইয়ল্টা সম্মেলন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তির পতন আসন্ন হয়ে উঠলে 1945 সালের 4-11 ফেব্রুয়ারি সোভিয়েত রাশিয়ার ইয়াল্টায় একটি ত্রিশক্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সম্মেলনের সংগঠক ও স্বাক্ষরকারী 3 বিশ্ব নেতা ছিলেন-  ব্রিটিশ প্রধান মন্ত্রী চার্চিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট এবং সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধান স্তালিন। এই বৈঠকের প্রধান দুই বিচার্য বিষয় হলো যুদ্ধোত্তর ইউরোপের পুনর্বিন্যাস ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত। এই সম্মেলনে পূর্ব প্রাচ্যে জাপানের সামরিক তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে বিশেষ চিন্তাভাবনা চলে এবং রুজভেল্টের অনুমতিক্রমে সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধান স্তালিন জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এর বিনিময়ে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র পোর্ট আর্থার শাখালিন ও কিউরাইল দ্বীপপুঞ্জ রাশিয়াকে ফিরিয়ে দিতে সম্মত হয়।  ইয়াল্টা সম্মেলনে জার্মানিকে বিভাজিত করার মধ্য দিয়ে ওই দেশ থেকে নাৎসি প্রভাব পুরোপুরি নির্মূল করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই সূত্র ধরে বলা হয় জার্মানির নিয়ন্ত্রণমুক্ত ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলিকে সাধ্যমত সাহায্য দান করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট দেশসমূহে উদার গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর

তৃতীয় বিশ্বের সংজ্ঞা, প্রকৃতি, তৃতীয় বিশ্বের উপর ঠাণ্ডাযুদ্ধের প্রভাব

তৃতীয় বিশ্বের সংজ্ঞা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রকোপ বেড়ে চলেছিল, সেই প্রেক্ষিতেই তৃতীয় বিশ্বের (Third World) অভ্যুদয় ঘটে ছিল। Third World শব্দবন্ধ প্রথম ব্যবহার করেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রাক্তন মহাসচিব ড্যাগ হ্যামার্সজোল্ড (Dag Hammerskjold)। তিনি এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার দরিদ্র ও অনুন্নত রাষ্ট্রগুলিকে বোঝাতেই তৃতীয় বিশ্ব শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। পিটার ক্যালভোকোরেসি অবশ্য তৃতীয় বিশ্ব বলতে মার্কিন এবং সোভিয়েত নিয়ন্ত্রিত দ্বিখন্ডিত বিশ্বের ধারণাকে যে সমস্ত দেশ নস্যাৎ করে দিয়েছিল তাদেরকেই বুঝিয়েছেন। সুতরাং তৃতীয় বিশ্বের সংজ্ঞা নির্ধারণ অত্যন্ত জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃতীয় বিশ্ব বলতে যে সমস্ত দেশগুলিকে বোঝায় সেগুলির বেশিরভাগই সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত। ডি-কলোনাইজেশন এর ফলস্বরূপ যে সমস্ত দেশ সাম্রাজ্যবাদী পরাধীনতা থেকে মুক্ত হয়েছিল তাদের একাধিক আর্থ-রাজনৈতিক-সমাজিক সমস্যা ছিল, যেমন দারিদ্র, অপুষ্টি, অশিক্ষা, বেকারত্ব, অর্থনৈতিক পশ্চাদগামিতা, জনসংখ্যা বিস্ফোরণ, নয়া-উপনিবেশবাদের প্রভাব, রাজনৈতিক

নয়া উপনিবেশবাদ ও তার বিভিন্ন কৌশল | Neocolonialism

 নয়া উপনিবেশবাদের সংজ্ঞা অব উপনিবেশীকরনের পর সাম্রাজ্যবাদী শোষণের পরিবর্তিত রূপ ছিল নয়া উপনিবেশবাদ। বিউপনিবেশীকরন প্রক্রিয়ায় এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার উপনিবেশগুলি স্বাধীনতা পেয়েছিল বটে, কিন্তু সদ্য স্বাধীন এই দেশগুলি বিভিন্ন কারণে কোনো-না-কোনো বৃহৎ শক্তির পরোক্ষ আধিপত্যের জালে জড়িয়ে পড়েছিল। এই নতুন গোত্রের সাম্রাজ্যবাদ হল উপনিবেশ বিহীন সাম্রাজ্যবাদ। এই ব্যবস্থায় উপনিবেশের অস্তিত্ব না থাকলেও বৃহৎ শক্তির হাতে অর্থনৈতিক অধীনতা রয়ে গেল। মাইকেল ব্যারাটের ভাষায় ''Imperialist control, now depends more on economic domination than on political rule''.  নয়া ঔপনিবেশিক আধিপত্যের কোন একক কৌশল ছিল না। কৌশলগুলি ছিল যেমন সূক্ষ্ম তেমনি বিচিত্র। ঘানার রাষ্ট্রপ্রধান নক্রুমা তার Neo Colonialism: The Last Stage of Capitalism গ্রন্থে তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলিকে নয়া উপনিবেশবাদ সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন এই নয়া-ঔপনিবেশিক কৌশলগুলি মূলত অর্থনীতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করলেও রাজনৈতিক, মতাদর্শগত এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হয়। নয়া উপনিবেশবাদের ক

ডি কলনাইজেশন

অব-উপনিবেশিকরণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পৃথিবীর অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো ডি কলোনাইজেশন বা অব উপনিবেশীকরন। উপনিবেশবাদের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল পঞ্চদশ শতাব্দীতে, যখন ব্রিটেন ফ্রান্স হল্যান্ড পর্তুগাল এবং স্পেনের মত ইউরোপীয় শক্তি গুলি বিশ্ববণিজ্যকে হাতিয়ার করে বিশ্বশক্তি হয়ে ওঠার প্রবল আকাঙ্ক্ষায় এশিয়া আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার পিছিয়ে পড়া দুর্বল দেশগুলিকে করায়ত্ত করতে শুরু করেছিল। উপনিবেশীকরনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত রূপ পেয়েছিল 19 শতকের সমাপ্তি এবং 20 শতকের সূচনালগ্নে। বিশ্বের মোট ভূখণ্ডের প্রায় 99.2 শতাংশ বৃহৎ শক্তির উপনিবেশে পরিণত হয়েছিল। উপনিবেশবাদের প্রসারের সাথে সাথে সেই সমস্ত দেশে উপনিবেশবাদবিরোধী প্রবল গণ-আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চরম আকার ধারণ করেছিল। একইসাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতিজনিত কারণে ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং বিশ্বে সুপার পাওয়ার' হিসেবে আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়নের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। এই প্রেক্ষিতেই বিশ্বে অব উপনিবেশীকরন প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছিল। অব উপনিবেশীকরন প্রক্রিয়ার পিছনে একাধিক কারণে সমন্বয় লক্ষ্য করা

সোভিয়েত সামরিক মোর্চা গঠন- ওয়ারশ চুক্তি

 সোভিয়েত সামরিক মোর্চা গঠন- ওয়ারশ চুক্তি  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন একের পর এক সামরিক মোর্চা গঠন করছে তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন একেবারে বসে রইল না। ঠান্ডা লড়াইয়ের আর্থিক যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল। সেই ব্যর্থতাকে এবার সে সামরিক দিক দিয়ে পুষিয়ে দিতে চাইল। এদিকে ১৯৪৭ সালে পোল্যান্ডে, ১৯৪৮ সালে রোমানিয়ায়, হাঙ্গেরিতে এবং চেকোস্লোভাকিয়া সোভিয়েত মদদপুষ্ট সাম্যবাদী দল ক্ষমতায় চলে আসে। ১৯৫০ সালে রাশিয়া গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে ত্রিশ বছর ব্যাপী পারস্পরিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই প্রেক্ষাপটেই সোভিয়েত রাশিয়া সমাজতান্ত্রিক পূর্ব ইউরোপের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একটি সামরিক জোট গঠন করে।  ১৯৫৫ সালের ১৪ ই মে তারিখে পোল্যান্ডের ওয়ারশ শহরে পূর্ব ইউরোপের কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলির একটি সম্মেলন আয়োজিত হয়, যেখানে সোভিয়েত রাশিয়া সহ পোল্যান্ড, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি ও আলবানিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা মিলিত হন এবং যৌথ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার প্রশ্নে ওয়ারশ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। পূর্ব জার্মানিও পরে এই জোটে শামিল হয়। এই জোটের লক্ষ্য ছিল পূ

NATO ব্যাতীত অন্যান্য মার্কিন সামরিক মোর্চা

 NATO ব্যাতীত অন্যান্য মার্কিন সামরিক মোর্চা  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক রাজনীতির চালিকাশক্তি ছিল ঠান্ডা লড়াই, যার একদিকে ছিল মার্কিন জোট এবং অন্যদিকে ছিল সোভিয়েত জোট। ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাব বিস্তারের রাজনীতির অন্যতম অঙ্গ ছিল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সামরিক মোর্চা গঠন। আমেরিকার নেতৃত্বে একাধিক সামরিক জোট গড়ে উঠেছিল।  NATO ছিল প্রথম মোর্চা। এর পর একের পর এক যে সামরিক মোর্চাগুলি গড়ে উঠেছিল সেগুলি নিম্নরূপঃ SEATO সোভিয়েত রাশিয়া ও কমিউনিস্ট চীন যাতে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় তাদের প্রভাব বিস্তার করে সেখানে পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে না পারে সেজন্য আমেরিকা ১৯৫৪ সালের ৮ ই সেপ্টেম্বর South East Asian Treaty Organization বা SEATO গঠন করে। এর সদস্য ছিল ব্রিটেন, পঃ জার্মানি, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স ও অন্যান্য দঃ পূঃ এশীয় দেশসমূহ। বিশেষজ্ঞদের অভিমত SEATO ন্যাটোর মত আগ্রাসী ও জঙ্গী ছিল না।  ANZUS ১৯৫১ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তার স্বার্থে আমেরিকা অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সাথে একটি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এটি Australia, New Zeeland, United States S