সোভিয়েত সামরিক মোর্চা গঠন- ওয়ারশ চুক্তি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন একের পর এক সামরিক মোর্চা গঠন করছে তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন একেবারে বসে রইল না। ঠান্ডা লড়াইয়ের আর্থিক যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল। সেই ব্যর্থতাকে এবার সে সামরিক দিক দিয়ে পুষিয়ে দিতে চাইল। এদিকে ১৯৪৭ সালে পোল্যান্ডে, ১৯৪৮ সালে রোমানিয়ায়, হাঙ্গেরিতে এবং চেকোস্লোভাকিয়া সোভিয়েত মদদপুষ্ট সাম্যবাদী দল ক্ষমতায় চলে আসে। ১৯৫০ সালে রাশিয়া গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে ত্রিশ বছর ব্যাপী পারস্পরিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই প্রেক্ষাপটেই সোভিয়েত রাশিয়া সমাজতান্ত্রিক পূর্ব ইউরোপের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একটি সামরিক জোট গঠন করে।
১৯৫৫ সালের ১৪ ই মে তারিখে পোল্যান্ডের ওয়ারশ শহরে পূর্ব ইউরোপের কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলির একটি সম্মেলন আয়োজিত হয়, যেখানে সোভিয়েত রাশিয়া সহ পোল্যান্ড, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি ও আলবানিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা মিলিত হন এবং যৌথ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার প্রশ্নে ওয়ারশ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। পূর্ব জার্মানিও পরে এই জোটে শামিল হয়। এই জোটের লক্ষ্য ছিল পূর্ব ইউরোপে পশ্চিমি সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন রুখে দেওয়া এবং সংশোধনবাদ ও পুঁজিবাদের অনুপ্রবেশ প্রতিহত করা। ওয়ারশ চুক্তি ব্যবস্থা কে কার্যকর করতে গিয়ে জোটভুক্ত দেশগুলি থেকে সেনা নিয়ে একতি যৌথ বাহিনী গড়ে তোলা হয়। এই বাহিনীর সদর দপ্তর ছিল মস্কোতে এবং এই বাহিনীর প্রধান ছিলেন মার্শাল কনিয়েভ।
আপাতদৃষ্টিতে এটি আঞ্চলিক আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ঘোষিত হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল ন্যাটোর বিরুদ্ধে পাল্টা ভারসাম্য তৈরি করার প্রয়াস। মনে রাখতে হবে মাও সে তুংয়ের মহাচীন এই জোটের শামিল হয়নি। এই জোটে সামিল হলে কোন রাষ্ট্র এই ধরনের অন্য কোনো জোটে যুক্ত থাকতে পারত না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন