সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র

Friends, if you like this post please comment and share it. মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র আফগানিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে গজনী ও হেরাতের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ছিল ঘুর রাজ্য। ঘুর রাজ্য প্রথমে গজনীর অধীনে ছিল। গজনীর দুর্বলতার সুযোগে ঘুর রাজ্য স্বাধীন হয়ে যায় এবং ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করে। এই দুই রাজ্য  পরস্পর বিবাদে লিপ্ত ছিল। এই বিবাদের সূত্র ধরেই 1173 খ্রিস্টাব্দে ঘুর শাসক গিয়াস উদ্দিন মোহাম্মদ গজনী রাজ্য দখল করেন এবং তিনি তাঁর ভ্রাতা মইজুদ্দিন মহম্মদ বিন সামকে গজনীর শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। ইনি ভারতের ইতিহাসে মহাম্মদ ঘুরি নামে পরিচিত। বড় ভাই এর অধীনে নিযুক্ত সেনাপতি হিসাবেই মোহাম্মদ ঘুরি ভারতে অভিযান করেছিলেন।     মামুদের ভারত অভিযানের ঘটনাক্রম : # ১১৭৫ খ্রিস্টাব্দে ঘুরি মুলতান অধিকার এবং উচ দুর্গ দখল করে নিজ মনোনীত শাসক নিয়োগ করেন। # ১১৭৭ খ্রিস্টাব্দে গুজরাট অভিযান করেন এবং গুজরাটের বাঘেল বংশীয় রাজা ভীমদেবের হাতে দারুন ভাবে পরাস্ত হন। # ১১৭৯ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাব আক্রমন করে পেশোয়ার দখল করেন। ১১৮১ খ্রিস্টাব্দে শিয়ালকোটে একটি দুর্গ নির্মাণ করেন। # ইতিমধ্য...

মুঘল কারখানা | Mughal Karkhana

Friends, if you like this post please comment and share it. মুঘল কারখানা | Mughal Karkhana মুঘল যুগে আজকের মত বৃহদায়তন শিল্পের অস্তিত্ব ছিল না। তবে গ্রামীণ কুটির শিল্প ছাড়াও সরকারি তত্ত্বাবধানে বা কোন অভিজাতের ব্যক্তিগত উদ্যোগে যে অতি উন্নত মানের উৎপাদন ব্যবস্থা সে যুগে চালু ছিল তাকে সমসাময়িক বিবরণীতে 'কারখানা' নামে অভিহিত করা হয়েছে। 'আইন-ই-আকবরী' ও 'আকবরনামা' গ্রন্থে 'কারখানা'র উল্লেখ রয়েছে। ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্যে এই ধরনের রাষ্ট্রীয় কারখানার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। মৌর্যদের শাসনে এবং সুলতানি শাসনে এরকম কারখানা গড়ে তোলা হত। অভিজাত তথা শাসক শ্রেণীর বিলাসবহুল জীবন যাত্রায় অজস্র পণ্যের প্রয়োজন হত। বৃহৎ আয়তন উৎপাদন ব্যবস্থার অভাবে রাষ্ট্রই সর্ববৃহৎ উৎপাদকে পরিণত হয়েছিল।           প্রস্তাবিত টপিকগুলি  Suggested Topics || মুঘল হারেম || Mughal Harem || ,  || ঝরোকা দর্শন || Jharoka || ,  || মুঘল জমিদার || Mughal Jamindar || ,  || মুঘল কৃষক || Mughal Cultivators || ,  ||Bell of Justice|| বিচারের ঘণ্টা||   সপ...

মহাবিদ্রোহের কারণ

Friends, if you like this post please comment and share it. মহাবিদ্রোহের কারণ ১৮৫৭ সালে উত্তর ও মধ্য ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহ দেখা দেয়। এর ফলে সেসব অঞ্চলে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে বসন্তকাল পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসন ভেঙে পড়ে। সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনীর সাহায্যে যদিও আবার শৃঙ্খলা আবার ফিরিয়ে আনা হয়। এবং কোম্পানি ও বিদ্রোহী উভয় তরফ থেকে ব্যাপক হিংসার আশ্রয় নেওয়া হয়। যেহেতু বেঙ্গল আর্মির সেনারাই এই বিদ্রোহ শুরু করে তাই অনেক দিন ধরেই একে সিপাহিদের বিদ্রোহ বলা হত। কিন্তু বিদ্রোহে উত্তর ভারতের দুর্দশাগ্রস্ত কৃষকদের যোগদান প্রচলিত ধারণাকে বদলে দিয়েছে। তাই এই বিদ্রোহের কারণ শুধু সিপাহী অসন্তোষের মধ্যে নয়, বহুদিন ধরে ঘটমান  আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্যে খুঁজতে হবে। মহাবিদ্রোহের কারণ হিসেবে সেনা অসন্তোষ এর বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ১৮২০ দশক থেকে সার্বজনীন সামরিক সংস্কৃতি চালু করার উদ্দেশ্যে সেনা প্রশাসনের ওপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ চাপানো হয়। ফলে সেনাবাহিনীর ভারতীয় সৈন্যরা পূর্বে যেসব জাতিগত সুযোগ সুবিধা পেত তা থেকে বঞ্চিত হয়। এর ফলে প্রতিরোধও শুরু হয়ে যায়। ১৮৫৭ জ...

অষ্টাদশ শতকে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে বাংলার উত্থান

Pravat Bhushan Bandyopadhyay, Lecturer, Sonarpur Mahavidyalaya অষ্টাদশ শতকে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে বাংলার উত্থান অষ্টাদশ শতকে ভারতবর্ষে মুঘল শক্তি দুর্বল হয়ে পড়লে ভারতবর্ষে একাধিক আঞ্চলিক শক্তির উত্থান ঘটে। এগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল বাংলা। সুবা বাংলার রাজস্ব ব্যবস্থা কে গতিশীল করার উদ্দেশ্যে মুর্শিদকুলি খানকে প্রথম বাংলার দেওয়ান নিযুক্ত করেছিলেন ওরঙ্গজেব। তার মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে 1717 খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলি খান বাংলার শাসক এ পরিণত হয়েছিলেন। তিনি বাংলার দেওয়ান ও নিজামের দায়িত্ব একসাথে সামলাতেন। যদিও মুঘল কর্তৃত্বকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অস্বীকার করতেন না। মুর্শিদকুলি সুবা বাংলার কার্যকরী ও সফল রাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। মুঘল সাম্রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলের বিশৃংখলার সময়ে ও, বাংলাদেশের রাজস্ব মুঘল রাজকোষে জমা পড়তো। রাজস্ব আদায়ের ব্যাপারে মুর্শিদকুলি ছোটখাটো জমিদারদের তুলনায় বড় জমিদারদের উপর বেশি ভরসা করতেন। 1727 খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যুর সময় 15 টি বড় মাপের জমিদার সুবা বাংলার অর্ধেক রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে ছিল। মুর্শিদকুলির সময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিরতা ও কৃষিজ পণ্য উ...

তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ব

Abdul Mojaffar Mondal, Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ব আফগানিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে গজনী ও হেরাতের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ছিল ঘুর রাজ্য। গজনীর এবং ঘুর রাজ্য ছিল পরস্পর বিবাদমান। এই বিবাদের সূত্র ধরেই 1173 খ্রিস্টাব্দে ঘুর শাসক গিয়াস উদ্দিন মোহাম্মদ গজনী রাজ্য দখল করেন এবং তিনি তাঁর ভ্রাতা মইজুদ্দিন মহম্মদ বিন সাম কে গজনীর শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। ইনি ভারতের ইতিহাসে মহাম্মদ ঘরি নামে পরিচিত। বড় ভাই এর অধীনে নিযুক্ত সেনাপতি হিসাবেই মোহাম্মদ ঘরি ভারতে অভিযান করেছিলেন। মোহাম্মদ ঘরি যখন ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিকে বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান করছিলেন সেই সময় উত্তর ভারতে চৌহান রাজবংশ তৃতীয় পৃথ্বীরাজ এর নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। মোহাম্মদ ঘরি ও পৃথ্বীরাজ চৌহান এর মধ্যে তরাইনের প্রান্তরে দুটি যুদ্ধ হয়েছিল (1191 ও 1192 সালে), যা যথাক্রমে তরাইনের প্রথম ও দ্বিতীয় যুদ্ধ নামে পরিচিত। 1189 খ্রিস্টাব্দে মোহাম্মদ ঘরি ভাতিন্ডা আক্রমণ করে অধিকার করেন এবং জিয়াউদ্দিন নামে একজন অনুচরকে দুর্গের অধিপতি নিযুক্ত করেন। এরপর তরাইনের প্রথম য...

প্রাচীন ভারতে অস্পৃশ্যতার ধারনা

Abdul Mojaffar Mondal, Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya প্রাচীন ভারতে অস্পৃশ্যতার ধারনা জাতিপ্রথার সঙ্গে অস্পৃশ্যতাকে এক করে দেখার একটা প্রবণতা আমাদের সমাজে প্রচলিত। কিন্তু অস্পৃশ্যতার সঙ্গে জাতিপ্রথার কোন কার্যকারণগত সম্পর্ক নেই এবং অস্পৃশ্যতা জাতিপ্রথার কোনও পরিনামও নয়। ভারতের জাতি কাঠামোয় একের সঙ্গে অন্যের পার্থক্য স্বীকৃত এবং প্রতিটি জাতিরই-- তা সে ব্রাহ্মণই হোক আর ডোমই হোক-- নিজস্ব ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত। জাতি কাঠামোয় যাদের স্থান বেশ উঁচুতে তারাও এক পঙক্তিতে ভোজন করে না। এই মনোভাবের পেছনে সম্ভবত পবিত্রতা-অপবিত্রতা বোধ সংক্রান্ত কয়েকটি বিচিত্র ধারণা বর্তমান। মোটামুটিভাবে বলা যায় যে, মৃত্যু, ক্ষয়, দৈহিক পরিতক্ত সামগ্রী, রোগ, অপরিচ্ছন্নতা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে এখানে পবিত্রতা-অপবিত্রতার ধারণা গড়ে উঠেছে। জীবন যেহেতু পবিত্র সেহেতু জীবনহানি কর কোন পেশা, যেমন শিকার, অপবিত্র। মৃত জীব স্বাভাবিকভাবেই তাই অপবিত্র এবং যেসব মানুষেরা মৃত জীবের চামড়া নাড়িভুঁড়ি ইত্যাদি নিয়ে কাজকর্ম করে বা কসাইয়ের কাজ করে তাদের পেশা অপবিত্র। আবার রজস্বলা নারী, সে যতই নিকট আত্মীয়া হো...

Bell of Justice | বিচারের ঘন্টা

Abdul Mojaffar Mondal, Assistant Professor,  Sonarpur Mahavidyalaya . Bell of Justice | বিচারের ঘন্টা জা হাঙ্গীর ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য সকলের প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরকমই একটি পদক্ষেপ ছিল 'ন্যায় কা জাঞ্জির" বা ''বিচারের ঘণ্টা'' বা Bell of Justice . সাধারণ মানুষ যাতে রাজার কাছে সরাসরি বিচার চাইতে পারে, রাজকর্মচারীদের দ্বারা তারা যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হন তার জন্য তিনি আগ্রা দুর্গ এর ভিতর একটি ঘণ্টা টাঙিয়ে দেন এবং ঘন্টাতে যুক্ত একটি সোনার শিকল যমুনা নদীর তীর পর্যন্ত ত্রিশ গজ দূরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। জাহাঙ্গীর তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, যদি বিচার বিভাগীয় অফিসাররা নিপীড়িত ব্যাক্তির অভিযোগ তদন্তে ও তাকে যথাযথ বিচার প্রদানে ব্যর্থ হন তাহলে উক্ত ব্যাক্তি সম্রাটের কাছ থেকে সরাসরি বিচার পাওয়ার জন্য এই ঘণ্টার শিকলটি ধরে টানতে পারে।  উইলিয়াম ফিঞ্চের লেখা থেকে জানা যায়, সম্রাটের দরবারে বিচারপ্রার্থীকে ডাক করা হত এবং অন্যায়ের বিষয়টি তার মুখ থেকে শোনা হত।  তবে অভিযোগ মিথ্যা হলে অভিযোগকারীকে শাস্তি দেওয়া হত। ...

Ahmadabad Satyagraha | আহমেদাবাদ সত্যাগ্রহ

Susmita Mondal, PG Student, JU Ahmadabad Satyagraha | আহমেদাবাদ সত্যাগ্রহ জা তীয় রাজনীতিতে গান্ধীর উত্থান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। 1915 খ্রীস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন গান্ধীজী দঃ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন এবং সর্বভারতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের পূর্বে তিনি (1917-1918) আঞ্চলিক স্তরে তিনটি পৃথক এলাকায় তাঁর রাজনৈতিক অস্ত্র 'সত্যাগ্রহ' নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেন। সত্যাগ্রহ হল আক্ষরিক অর্থে সত্যের প্রতি আগ্রহ। কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির আঙিনায় গান্ধী প্রবর্তিত সত্যাগ্রহ ছিল সত্য ও অহিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত এবং অন্যায়ের বিরূদ্ধে পরিচালিত সংগ্রাম। তাঁর আদর্শের উপর গীতার ইংরাজী ভাষ্য (the song celestial), টলস্টয় (light of Asia within you), রাসকিন প্রমুখ পশ্চিমী লেখক এবং বৈষ্ণব ও জৈন ধর্মতত্ত্বের প্রভাব ছিল। তাঁর মতে,মানুষের সত্যের শক্তিকে ব্যবহার করে অশুভ শক্তির অন্তরের শুভবুদ্ধির জাগরণ ঘটানোই হল সত্যাগ্রহের উদ্দেশ্য। Suggested Posts      || Champaran Satyagraha || চম্পারন সত্যাগ্রহ ||   || Kheda Satyagraha || খেদা সত্যাগ্রহ ||   || Bardauli Decision || বারদৌ...

Women in Medieval Europe | মধ্যযুগীয় ইউরোপে নারী

Women in Medieval Europe | মধ্যযুগীয় ইউরোপে নারী যে কোন সভ্যতার উৎকর্ষতা বিচার করতে গেলে সেই সময়ের নারীর অবস্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। মধ্যযুগের ইউরোপে নারীর অবস্থান নির্ধারিত হয়েছিল বাইবেলের বর্ণনা অনুসারে। আদমের পাঁজর থেকে তৈরি হওয়া ইভ নৈতিক ভাবে দুর্বল ছিলেন। ইভ পাপের প্রলোভনে ধরা দিয়েছিলেন, নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণ করেছিলেন। এইজন্য বাইবেল অনুসারে, নারী পুরুষের কর্তৃত্বাধীনে থাকবে বলে মনে করা হয়। একমাত্র কুমারী মাতা মেরী ছিলেন পরম পূজনীয় ও শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তিত্ব।  মধ্যযুগের পরিবার ছিল পিতৃতান্ত্রিক। সমাজে সর্বত্রই পুরুষের শাসন। রাজতন্ত্র, শাসনতন্ত্র, অর্থনীতি সর্বক্ষেত্রেই পুরুষের কর্তৃত্ব বিদ্যমান ছিল। তবে ক্রুসেডের সময় থেকে মহিলাদের অবস্থানের উন্নতি হয়েছিল। কারণ ইউরোপ যুদ্ধবিগ্রহে জড়িয়ে পড়ার ফলে পরিবারগুলোতে পুরুষের নিয়ন্ত্রণ কমে যায়। মহিলাদের হাতে পরিবারগুলো দেখভালের দায়িত্ত্ব পড়েছিল। এমনকি তারা সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতেন। অভিজাত মহিলাদের তুলনায় নিম্নবর্গীয় মেয়েরা অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাধীনতা ভোগ করত। কৃষক রমণীরা তার পুরুষ সহকর্মীদের...

Kheda Satyagraha | খেদা সত্যাগ্রহ

Susmita Mondal, PG Student, JU Kheda Satyagraha | খেদা সত্যাগ্রহ জাতীয় রাজনীতিতে গান্ধীর উত্থান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। 1915 খ্রীস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন গান্ধীজী দঃ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন এবং সর্বভারতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের পূর্বে তিনি (1917-1918) আঞ্চলিক স্তরে তিনটি পৃথক এলাকায় তাঁর রাজনৈতিক অস্ত্র 'সত্যাগ্রহ' নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেন। সত্যাগ্রহ হল আক্ষরিক অর্থে সত্যের প্রতি আগ্রহ। কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির আঙিনায় গান্ধী প্রবর্তিত সত্যাগ্রহ ছিল সত্য ও অহিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত এবং অন্যায়ের বিরূদ্ধে পরিচালিত সংগ্রাম।তাঁর আদর্শের উপর গীতার ইংরাজী ভাষ্য (the song celestial), টলস্টয় (light of Asia within you), রাসকিন প্রমুখ পশ্চিমী লেখক এবং বৈষ্ণব ও জৈন ধর্মতত্ত্বের প্রভাব ছিল। তাঁর মতে,মানুষের সত্যের শক্তিকে ব্যবহার করে অশুভ শক্তির অন্তরের শুভবুদ্ধির জাগরণ ঘটানোই হল সত্যাগ্রহের উদ্দেশ্য। গান্ধীর দ্বিতীয় সত্যাগ্রহ ছিল গুজরাটের খেদা অঞ্চলের পাতিদার কৃষকদের স্বার্থে। 1917-1918 খ্রীঃ দুর্ভিক্ষ, অতিবৃষ্টি, অজন্মা, শস্যহানি এবং প্লেগের প্রাদুর্ভাবের ফলে খেদা জেল...

Champaran Satyagraha | চম্পারন সত্যাগ্রহ

Susmita Mondal, PG Student, JU Champaran  Satyagraha | চম্পারন সত্যাগ্রহ জাতীয় রাজনীতিতে গান্ধীর উত্থান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। 1915 খ্রীস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন গান্ধীজী দঃ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন এবং সর্বভারতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের পূর্বে তিনি (1917-1918) আঞ্চলিক স্তরে তিনটি পৃথক এলাকায় তাঁর রাজনৈতিক অস্ত্র 'সত্যাগ্রহ' নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেন। সত্যাগ্রহ হল আক্ষরিক অর্থে সত্যের প্রতি আগ্রহ। কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির আঙিনায় গান্ধী প্রবর্তিত সত্যাগ্রহ ছিল সত্য ও অহিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত এবং অন্যায়ের বিরূদ্ধে পরিচালিত সংগ্রাম।তাঁর আদর্শের উপর গীতার ইংরাজী ভাষ্য ('the song celestial'), টলস্টয় ('light of Asia within you'), রাসকিন প্রমুখ পশ্চিমী লেখক এবং বৈষ্ণব ও জৈন ধর্মতত্ত্বের প্রভাব ছিল। তাঁর মতে,মানুষের সত্যের শক্তিকে ব্যবহার করে অশুভ শক্তির অন্তরের শুভবুদ্ধির জাগরণ ঘটানোই হল সত্যাগ্রহের উদ্দেশ্য। গান্ধির প্রথম সত্যাগ্রহ ছিল চম্পারন সত্যাগ্রহ। নীলকর সাহেবদের অমানবিক অত্যাচারে বিহারের চম্পারণ জেলার নীলচাষীদের অবস্থা চরমে উঠেছিল। নীলকররা ত...

Somnatha Temple Plunder | মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন

Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya Somnatha Temple Plunder | মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন আরবদের সিন্ধু বিজয়ের ৩০০ বছর পর ভারতবর্ষে পুনরায় মুসলমান আক্রমন হয় গজনীর তুর্কি সুলতানদের দ্বারা। ৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসন আরোহণের পর থেকে সুলতান মাহমুদ প্রতিবছর ভারত আক্রমণের সংকল্প নেন। কেম্ব্রিজ ঐতিহাসিকদের মতে, তিনি মোট 17 বার ভারত আক্রমন করেন (১০০০-১০২৬)। মামুদের অভিযান গুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ১০২৫ থেকে ১০২৬ খ্রিস্টাব্দে গুজরাট সোমনাথ মন্দির এর ঘটনা। গুজরাটের কাথিওয়াড় উপকূলে অবস্থিত ছিল সোমনাথ মন্দির। মন্দিরের বিপুল ঐশ্বর্য ও আশ্চর্য মূর্তি মামুদকে প্রলুব্ধ করেছিল। ১০২৪ খ্রিস্টাব্দে ১৭ ই অক্টোবর মামুদ সোমনাথ মন্দিরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ২০ নভেম্বর মুলতানে পৌঁছান। সোমনাথের পথে অগ্রসর হয়ে তিনি অনিলওয়ারার দুর্গ দখল করেন। এরপর তিনি সোমনাথ মন্দির দখল করেন। তদানীন্তন চালুক্য শাসক প্রথম ভীম রাজধানী ছেড়ে পলায়ন করেন এবং ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে তিনি আবার ফেরত আসেন। তিন দিন যুদ্ধের পর মন্দিরের দ্বারদেশের যুদ্ধে পঞ্চাশ হাজার ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়...

Mughal Harem | মুঘল হারেম

Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya Mughal Harem | মুঘল হারেম মুঘল যুগের ইতিহাস চর্চায় সবচেয়ে জল্পনা এবং কৌতূহলের বিষয় হল মুঘল হারেম। রাজদরবারের মহিলা এবং তাঁদের সখি ও সহযোগিনীদের বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট স্থান 'হারেম' নামে পরিচিত। হারেম শব্দের উৎপত্তি আরবি শব্দ 'হারাম' থেকে, যার অর্থ নিষিদ্ধ। মুঘল রমণীদের বসবাসের স্থানে বিশেষ কারন ছাড়া, যেমন: শিক্ষা ও চিকিৎসা, পরপুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। হারেমের তুর্কি প্রতিশব্দ সেরাগলিও, পারসিক প্রতিশব্দ জেনানা, এবং সংস্কৃত প্রতিশব্দ  অন্ত:পুর। মুঘল হারেমের ব্যাপারে খুবই অল্পসংখ্যক তথ্য পাওয়া যায়। কোন প্রত্যক্ষ বিবরণ নেই। যেটুকু পাওয়া যায় তার প্রধান উৎস ইউরোপীয় পর্যটকদের কাহিনি, যারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের মনগড়া কথা লিখে গেছেন এবং সেগুলিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, যেখান থেকে সত্য উদ্ধার করা সহজ নয় । অনেকেই বলে থাকেন যে, সম্রাটের হেরেমের সব মহিলাই তাঁর স্ত্রী, উপপত্নী, নর্তকী, বাইজি, গায়িকা ও বাঁদি। এই ভাবনা সঠিক নয়। এই ধরনের মহিলা অবশ্যই থাকতেন। তবে তারাই সব ন...

Jharoka | ঝরোকা দর্শন

Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya Jharoka | ঝরোকা দর্শন মুঘল সম্রাটদের প্রত্যহ প্রজাদের দর্শন দেওয়ার প্রথা ঝরোকা দর্শন নামে পরিচিত। আবুল ফজল ও আব্দুল হামিদ লাহোরীর রচনা থেকে জানা যায় আকবর এই ব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যাতে তার প্রজারা বিনা বাধায় সম্রাটের কাছে এসে তাদের নিজেদের কথা বলতে পারে। তিনি যখন রাজধানীতে থাকতেন তখন প্রত্যেকদিন সকালে 'খোয়াবগাহ' অর্থাৎ রাতে তিনি যে গৃহে ঘুমাতেন তার বাইরের বারান্দায় এসে প্রজাদের কথা শোনার জন্য দাঁড়াতেন। বদাউনি অবশ্য লিখেছেন হিন্দুরা সম্রাটকে মর্ত্যে ঈশ্বরের প্রতিনিধি ভেবে ভক্তি প্রদর্শন করত। সেই ভক্তি নিবেদন স্বরূপ তারা প্রত্যহ সম্রাটের দর্শন পেতে চাইতেন এবং দর্শন পেলেই তবে সকালের জল গ্রহণ করতেন।  আকবর এবং জাহাঙ্গীর ঝরোকা দর্শন-এ প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা সময় দিতেন। ইউরোপীয় পর্যটকদের বিবরণ থেকে জানা যায় জাহাঙ্গীর ঝরোকা দর্শনের শুরুতে উদীয়মান সূর্যকে অভিবাদন জানাতেন। তারপর মনসবদার এবং সাধারন প্রজা বাদশার জয়ধ্বনি করতেন। এরপর তিনি প্রজাদের অভাব-অভিযোগ শুনতেন। জাহাঙ্গীর এভাবেই দ্রুত কিছু বিবাদের বিচ...

গ্লাসনস্ত ও পেরেস্ত্রইকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন

Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya গ্লাসনস্ত ও পেরেস্ত্রৈকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন 1985 সালের মার্চ মাসে সংস্কারকামী বামপন্থী নেতা মিখাইল গর্বাচেভ সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক তথা সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেন। তিনি লক্ষ্য করেন যে, সমগ্র সোভিয়েত ব্যবস্থার মধ্যে অন্তর্গত দুর্বলতা ও ব্যর্থতা পুরোদস্তুর অনাবৃত হয়ে গেছে এবং বিশেষ করে আর্থিকভাবে সোভিয়েত রাশিয়া দেউলিয়ার পর্যায়ে নেমে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে নিত্যনতুন সমরাস্ত্র নির্মাণ ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে হয়েছে। ফলে অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে, ভোগ্য পণ্যের উৎপাদন প্রায় স্তব্ধ হয়ে গেছে। জনগণের জীবনযাত্রার মান নিম্নমুখী হয়েছে। এই জটিল পরিস্থিতিতে সোভিয়েত ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখতে, তিনি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। তার গ্লাসনস্ত ও পেরেস্ত্রইকা নীতি ঘোষণার কিছুদিনের মধ্যেই বিভিন্ন ঘটনা পরম্পরায় সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটে। গ্লাসনস্ত কথার অর্থ হল মুক্ততা (openness)। দীর্ঘদিনের একদলীয় এবং বদ্ধ শাসন...

মধ্যযুগের ইউরোপে মঠ জীবন | Monastic Life in Medieval Europe

মধ্যযুগের ইউরোপে মঠ জীবন মধ্যযুগে ইউরোপের সমাজে মঠ একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মঠকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা জীবনকে বলা হয় মঠ জীবন। মনে করা হত সমস্ত নৈতিক অধঃপতনের উৎস হল 'বস্তু'। তাই 'বস্তু'কে পরিহার করতে পারলে ঈশ্বর লাভ সম্ভব। তাই অনেকেই লোকালয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্গম পাহাড়,মরুভূমিতে একাকী বাস করত এবং ঈশ্বর সাধনায় ও অনুশোচনায় মগ্ন থাকত। প্রথমদিকে একাকী বাস করলেও তারা ক্রমে  একাকীত্ব জীবনে সংঘবদ্ধতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। ফলে গড়ে ওঠে মঠ। সন্ন্যাসীরা একটি সম্প্রদায় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ইউরোপে মঠ জীবন জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে যথার্থ পটভূমি ছিল। ৪৭৬ খ্রিস্টাব্দে রোম সাম্রাজ্যের পতন হয়েছিল। চূড়ান্ত পতনের অনেক আগেই ইউরোপের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক জীবনে অবক্ষয়ের সূচনা হয়েছিল। সম্রাট থেকে শুরু করে সামন্তপ্রভু পর্যন্ত সকল উচ্চশ্রেণীর লোকজন ভোগবিলাসে মত্ত হয়েছিলেন। এরপর বর্বর আক্রমণে 'সাম্রাজ্যের জনগণ' অসহায় হয়ে পড়েছিল। বর্বর আক্রমণ ও লুটতরাজ থেকে বাঁচতে জনগণ আশ্রমের ধর্মীয় পরিবেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। কারণ দেশীয় শাসকবর্গ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পার...

ক্লুনির সংস্কার আন্দোলন

ক্লুনির সংস্কার আন্দোলন খ্রিষ্টীয় দশম শতক খ্রিস্টধর্মের ইতিহাসের এক গভীর তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত। বিশুদ্ধ ও সংযত জীবনের আদর্শ বেনেডিক্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছিল তা ক্রমেই ম্লান হয়ে আসছিল। এই পরিস্থিতিতে নতুন কোনো আদর্শের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল খ্রিস্টান সমাজে। আশ্রমিক দের জীবনেও শুদ্ধিকরণের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। আর এই শুদ্ধিকরণের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিল বর্গান্ডির ক্লুনির মঠ। সেন্ট পিটারের স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত ক্লুনির প্রভাব ছিল দূরবিস্তৃত। ক্লুনি অ্যাবির সৃষ্টি হয়েছিল ৯১০ খ্রিস্টাব্দে অ্যাঁকুতার ডিউক উইলিয়ামের বদান্যতায়। বেনেডিক্ট এর আদর্শে বিশ্বাসী সেন্ড বার্ণো এই মঠের প্রথম অ্যাবট ছিলেন। প্রতিষ্ঠার সময় থেকে মঠটিকে সমস্ত রকমের লৌকিক নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। দেশের শাসকদের ক্লুনির জীবনে প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তারের সামান্যতম সুযোগও ছিল না। ক্লুনি বিকশিত হয়েছিল আপন সাবলীল ছন্দে। ক্লুনির এই অসামান্য খ্যাতির মূলে ছিল তার কয়েকজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় অ্যাবটের ভূমিকা, যাদের মধ্যে অন্যতম অডো,মায়োলাস,ওডিলো প্রমুখ। প্রারম্ভিক ...

|| মহাবিদ্রোহ কেন ব্যর্থ হয়? ||

Samoresh Mondal, UG Student, Sonarpur Mahavidyalaya মহাবিদ্রোহ (1857 খ্রী:) নৃশংস ভাবে দমন করা হয়। কলকাতায় সৈন জড়ো করে,  লর্ড ক্যানিং ব্রিটিশ বাহিনী পাঠিয়ে দেয় দিল্লী  মুক্ত করার উদ্দেশ্যে। 20 সেপ্টেম্বর দিল্লী চূড়ান্তভাবে পুনরাধিকার করা হয়। বাহাদুর শাহকে বন্দি করে নির্বাসিত করা হয়। খুব ধীরে ধীরে বারানসী, এলাহাবাদ, কানপুর পুনরাধিগ্রহণ করা হয়।  ব্রিটিশরা পল্লী অঞ্চলে চরম সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।  অক্টোবরে কলকাতায় নতুন ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এসে হাজির হয় । ব্রিটিশ সেনাবাহিনী আস্তে আস্তে গোয়ালিয়র, দোয়াব, লখনৌ ও অযোধ্যার বাকি অংশ রোহিলখন্ড এবং মধ্যভারতের বাকি এলাকা পুনরাধিকার করে নেয়।  বিদ্রোহীদের পরাজয়ের সমকালীন উপনিবেশিক ব্যাখ্যায় ব্রিটিশের সাহসিকতা, শ্রেষ্ঠ জাতি চরিত্র, উচ্চতর নেতৃত্বগুণ ও সমরকুশলতা এবং অন্যদিকে বিদ্রোহীদের শৃঙ্খলা ও ঐক্যের অভাব এর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আগেকার কিছু ভারতীয় ঐতিহাসিকও এই তত্ত্বে বিশ্বাস করতেন।   আধুনিক ঐতিহাসিকরা অবশ্য বলেছেন, ব্রিটিশরা জিতে গিয়েছিল কারণ সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য অসংখ্য ল...

তেলেঙ্গানা আন্দোলন | Telengana Movement

Samoresh Mondal, UG Student, Sonarpur Mahavidyalaya তেলেঙ্গানা আন্দোলন নি জাম শাসিত দেশীয় রাজ্য হায়দ্রাবাদের তেলেঙ্গানা কৃষক অভ্যুত্থান নানা দিক দিয়ে সমকালীন গণ-আন্দোলন গুলিকে ছাপিয়ে গিয়েছিল । কৃষক গেরিলা  যুদ্ধের উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত এই তেলেঙ্গানা কৃষক বিদ্রোহ,  আন্দোলনের অন্যতম নেতা পি সুন্দরাইয়া লিখেছেন 3000 গ্রামে 30 লক্ষ মানুষ প্রায় 16 হাজার বর্গমাইল এলাকা জুড়ে তেলেঙ্গানা সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিল।  নিজাম শাসিত হায়দ্রাবাদ ছিল সামন্ততান্ত্রিক,  স্বৈরশাসনের অধীনে । সেখানে কোন আইনের শাসন ছিল না, কোন নাগরিক অধিকারও ছিলনা ।  ভূস্বামীরা কৃষকদের কাছ থেকে বেগার আদায় করত।  নির্যাতন চালিয়ে ইচ্ছামত কর আদায় করত । কমিউনিস্ট পার্টি উক্ত বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে কৃষকদের সংগঠিত করে। কমিউনিস্টদের গণসংগঠনের নাম ছিল অন্ধ্র মহাসভা । তেলেঙ্গানা আন্দোলন কমিউনিস্টদের উদ্যোগে জমি ও ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে পরিণত হয়।  নিজামের গুন্ডাবাহিনী আন্দোলনকারীদের উপর অত্যাচার শুরু করলে গ্রামবাসীরা হাতে অস্ত্র তুলে নেয়, এবং পাল্টা আক্রমণের পরিকল্পনা করে। সশস্ত্র গ্...

কামসূত্রে বর্ণিত গুপ্তযুগে নাগরকদের জীবনচর্যা

Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya কামসূত্রে বর্ণিত গুপ্তযুগে নাগরকদের জীবনচর্যা গু প্ত যুগে সম্ভ্রান্ত নগরবাসীদের বলা হত নাগরক। বাৎসায়ন রচিত কামসুত্রে এই নাগরকদের জীবনচর্যার একটি মনোজ্ঞ বিবরণ আছে। নাগরকরা প্রচুর সম্পত্তির অধিকারী ছিলেন। কৃষিজ উৎপাদনের উদ্বৃত্ত এবং সফল বাণিজ্য পরিচালনার মাধ্যমে এরা প্রভূত সম্পদ উপার্জন করেছিলেন। সম্পত্তির অপ্রতুলতার ছাপ পড়েছিল তাদের নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে। একটি বিশেষ ধরনের জীবনে তারা অভ্যস্ত ছিল, যেখানে প্রতিনিয়ত ভোগ বিলাস এবং সাংস্কৃতিক রুচির সংমিশ্রণ লক্ষণীয়। নাগরকদের আবাস ছিল বিলাসবহুল। অন্দরমহল পরিবারের নারীদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। প্রতিটি কক্ষ এক একটি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো। শয়ন কক্ষে থাকতো দুটি সুখপ্রদ শয্যা ও বালিশ, দেয়ালে কুলুঙ্গি ও তাক এবং সেই তাকে বীণাযন্ত্র, অঙ্কন সামগ্রী, পুস্তক ও মাল্য থাকতো। মেঝেতে পিকদানি এবং এক পাশে পাশা ও দাবা খেলার ছক থাকতো। স্তম্ভযুক্ত বারান্দা ছিল এবং দেয়ালে নানা রংয়ের কারুকার্য ছিল। ঘরের মেঝে মূল্যবান পাথর বা টালি দিয়ে নির্মিত হতো। বাইরে সম্মুখে থাকতো ফুল ও ফলের বাগান। সে...

সুলতান মামুদের ভারত আক্রমণের চরিত্র

Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya সুলতান মামুদের ভারত আক্রমণের চরিত্র আ রবদের সিন্ধু বিজয়ের পর দীর্ঘ 300 বছর ধরে ভারতে কোন মুসলমান আক্রমণ লক্ষ্য করা যায়নি। ভারতে মুসলমান রাজত্ব স্থাপনের কৃতিত্ব মূলত তুর্কিদের এবং এই কাজের সূচনা করেছিলেন গজনীর সুলতানরা। আব্বাসীয় খলিফা তন্ত্রের পতনের পর বিভিন্ন জায়গায় যে আঞ্চলিক শক্তির আবির্ভাব ঘটেছিল তার মধ্যে অন্যতম হল আলপ্তিগীনের নেতৃত্বে  আফগানিস্তানে গজনী রাজ্যের প্রতিষ্ঠা। সবুক্তগীন 977 খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসে ভারতের দিকে অভিযান শুরু করেন এবং পাঞ্জাবের শাসক জয়পাল তার হাতে পরাজিত হয়। 997 খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর পুত্র মামুদ সিংহাসনে বসেন এবং 1000 থেকে 1026 খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত (কেমব্রিজ ঐতিহাসিকদের মতে) মোট 17 বার ভারত আক্রমন করেন।  মামুদের ভারত আক্রমণের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিভিন্ন রকম মত পোষণ করেছেন। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ বলেছেন, মামুদ ছিলেন একজন ধর্মান্ধ তুর্কি সৈনিক। ধর্মের অনুশাসন কঠোরভাবে পালন করতে গিয়ে  বিধর্মীর রাজ্যগুলিতে একের পর এক আক্রমণ ও...