Abdul Mojaffar Mondal
Assistant Professor,
Sonarpur Mahavidyalaya
Assistant Professor,
Sonarpur Mahavidyalaya
Somnatha Temple Plunder | মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন
আরবদের সিন্ধু বিজয়ের ৩০০ বছর পর ভারতবর্ষে পুনরায় মুসলমান আক্রমন হয় গজনীর তুর্কি সুলতানদের দ্বারা। ৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসন আরোহণের পর থেকে সুলতান মাহমুদ প্রতিবছর ভারত আক্রমণের সংকল্প নেন। কেম্ব্রিজ ঐতিহাসিকদের মতে, তিনি মোট 17 বার ভারত আক্রমন করেন (১০০০-১০২৬)। মামুদের অভিযান গুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ১০২৫ থেকে ১০২৬ খ্রিস্টাব্দে গুজরাট সোমনাথ মন্দির এর ঘটনা।
গুজরাটের কাথিওয়াড় উপকূলে অবস্থিত ছিল সোমনাথ মন্দির। মন্দিরের বিপুল ঐশ্বর্য ও আশ্চর্য মূর্তি মামুদকে প্রলুব্ধ করেছিল। ১০২৪ খ্রিস্টাব্দে ১৭ ই অক্টোবর মামুদ সোমনাথ মন্দিরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ২০ নভেম্বর মুলতানে পৌঁছান। সোমনাথের পথে অগ্রসর হয়ে তিনি অনিলওয়ারার দুর্গ দখল করেন। এরপর তিনি সোমনাথ মন্দির দখল করেন। তদানীন্তন চালুক্য শাসক প্রথম ভীম রাজধানী ছেড়ে পলায়ন করেন এবং ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে তিনি আবার ফেরত আসেন। তিন দিন যুদ্ধের পর মন্দিরের দ্বারদেশের যুদ্ধে পঞ্চাশ হাজার ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়। মন্দির লুন্ঠিত হয় এবং শিবলিঙ্গটি ভেঙে তার টুকরোগুলি গজনীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মন্দিরের লুণ্ঠিত দ্রব্য প্রায় দু'কোটি বলে অনুমান করা হয়।
সোমনাথ মন্দির লুন্ঠনের ঘটনাকে অনেক ঐতিহাসিক ধর্মনৈতিক ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাদের মতে মামুদ তার গোঁড়া ধর্ম উন্মাদনা চরিতার্থ করার জন্য বিধর্মীদের ধর্মস্থান অপবিত্র করেছেন এবং লুণ্ঠন করেছেন। নিজেকে সাচ্চা মুসলমান হিসাবে তুলে ধরার অদম্য যে বাসনা তার মনে সুপ্ত ছিল, এই ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু অধ্যাপক হাবিব দেখিয়েছেন, মামুদের কাজকর্মে হিন্দু বিদ্বেষ বা ওই ধরনের কিছু ছিল না। যেটা ছিল সেটা হল লুণ্ঠন মূলক বাসনা। কারণ তাকে কোথাও জোর করে ধর্মান্তর বা সাম্রাজ্য স্থাপনের চেষ্টা করতে দেখা যায়নি। কেবল ধনসম্পত্তি লুণ্ঠন করেই সন্তুষ্ট হয়েছেন। তাছাড়া কোরআন বা যে কোন ধর্মগ্রন্থই বিধর্মীদের ধর্মস্থান অপবিত্র করাকে মেনে নেয় না। অর্থাৎ মামুদের মন্দির লুন্ঠনের ঘটনা কখনোই ইসলামসাপেক্ষ নয়।
রোমিলা থাপার লিখিত Somnatha: Many Voice of History বইটি এই বিষয়ে বিশেষ সাহায্য করবে।
উত্তরমুছুনসোমনাথ সংস্কৃতে বলা হয় সোমনাথা। তাই রোমিলা বইটার নাম সোমনাথা রেখেছেন। Many Voice of History অর্থাৎ ইতিহাসের অনেক কন্ঠস্বর বলতে সোমনাথ মন্দিরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিতর্ক লোকশ্রুতি ও ইতিহাসকে তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। বইটা প্রকাশিত হয় 2004 সালে। Ashoka and The Decline of Maurya এর পর রোমিলা থাপারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ এটি।( যদিও মাঝে বহু কিছু নিয়ে তাঁর গবেষণা ও গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে যেগুলো ভারতের ইতিহাসের বিশিষ্ট দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করে।)
উত্তরমুছুনপ্রসঙ্গত বলা ভালো ভিনসেন্ট আর্থার স্মিথ মামুদকে "নিছক লুন্ঠনকারী দস্যু " বলেছেন।
উত্তরমুছুন