সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মধ্যযুগের ইউরোপে মঠ জীবন | Monastic Life in Medieval Europe

মধ্যযুগের ইউরোপে মঠ জীবন


মধ্যযুগে ইউরোপের সমাজে মঠ একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মঠকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা জীবনকে বলা হয় মঠ জীবন। মনে করা হত সমস্ত নৈতিক অধঃপতনের উৎস হল 'বস্তু'। তাই 'বস্তু'কে পরিহার করতে পারলে ঈশ্বর লাভ সম্ভব। তাই অনেকেই লোকালয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্গম পাহাড়,মরুভূমিতে একাকী বাস করত এবং ঈশ্বর সাধনায় ও অনুশোচনায় মগ্ন থাকত। প্রথমদিকে একাকী বাস করলেও তারা ক্রমে  একাকীত্ব জীবনে সংঘবদ্ধতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। ফলে গড়ে ওঠে মঠ। সন্ন্যাসীরা একটি সম্প্রদায় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

ইউরোপে মঠ জীবন জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে যথার্থ পটভূমি ছিল। ৪৭৬ খ্রিস্টাব্দে রোম সাম্রাজ্যের পতন হয়েছিল। চূড়ান্ত পতনের অনেক আগেই ইউরোপের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক জীবনে অবক্ষয়ের সূচনা হয়েছিল। সম্রাট থেকে শুরু করে সামন্তপ্রভু পর্যন্ত সকল উচ্চশ্রেণীর লোকজন ভোগবিলাসে মত্ত হয়েছিলেন। এরপর বর্বর আক্রমণে 'সাম্রাজ্যের জনগণ' অসহায় হয়ে পড়েছিল। বর্বর আক্রমণ ও লুটতরাজ থেকে বাঁচতে জনগণ আশ্রমের ধর্মীয় পরিবেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। কারণ দেশীয় শাসকবর্গ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি। এদিকে চিন্তাশীল মানুষ ও ধর্মগুরুরা নব উদ্ভূত পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দেয় এইভাবে যে, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রচন্ড নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের পাপের জন্যই পৃথিবী ধ্বংস হতে চলেছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হলো আত্মার উন্নতিসাধন,  যা একমাত্র ঈশ্বরের সান্নিধ্যলাভ ও সন্ন্যাসজীবন গ্রহণের মধ্য দিয়ে সম্ভব ছিল। যাজকদের দুর্নীতি মানুষকে চার্চবিমুখ করে তোলে এবং তারা আকৃষ্ট হয়েছিল মঠ জীবনের প্রতি।

সন্ন্যাস জীবনে ঈশ্বর লাভের দুটি পদ্ধতি ছিল। প্রথম পদ্ধতিটি ছিল অমানুষিক অত্যাচার সহ্য করা। সন্ন্যাসীরা আত্মার মুক্তি ও দৈহিক পবিত্রতার জন্য বিভিন্ন নির্যাতন যেমন -ঘন্টার পর ঘন্টা মরুভূমিতে সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকা, এক গলা জলে ডুবে শীতের রাত কাটানো, কাঁটা ঝোপ এর উপরে গড়াগড়ি খাওয়া প্রভৃতি করতে হতো। এই প্রক্রিয়ায় আত্মার সন্তুষ্টির থেকে মৃত্যু বেশি হত। এই প্রক্রিয়াটি বাতিল হয়ে পরিবর্তে 'সিনোবাইট' নামক এক প্রকার সন্ন্যাসবাদ এর চর্চা শুরু হয়। শারীরিক নির্যাতন এখানে ছিলনা, তবে আড়ম্বরপূর্ণ জীবন ত্যাগ করে সন্ন্যাসীদের সংঘবদ্ধভাবে ধর্ম চর্চা করতে হতো। দ্বিতীয় পন্থাটি বেশ জনপ্রিয় হয়।

সন্ন্যাসীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে যত, বিশৃংখলা বাড়তে থাকে তত। ফলে আইন কানুন প্রতিষ্ঠিত হয়। সেন্ট বেসিল নামে একজন বিশপ যে নিয়ম-কানুন চালু করেছিলেন মোটামুটি সেগুলি অনুসরণ করা হত পূর্ব ইউরোপে। যেমন সঙ্ঘবদ্ধ নৈতিক জীবনযাপন, প্রয়োজনীয় দৈহিক পরিশ্রম, দারিদ্র্য বরণ, দৈহিক স্বেচ্ছা নির্যাতন থেকে বিরত থাকা, সর্বদা ঈশ্বর সাধনায় মন থাকা প্রভৃতি। এখানে দৈহিক পরিশ্রম বলতে জাগতিক কাজে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহন করাকে বোঝানো হয়েছে। এই জাগতিক কাজের অংশ হিসাবে সন্ন্যাসীরা মঠভিত্তিক বিভিন্ন ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তুলেছিল। তবে অধিক সম্পদ অর্জন করা থেকে নিরুৎসাহিত করা হত। সাধু বেসিল ক্যাপ্পাডোসিয়াতে সন্ন্যাসিদের জন্য যে মঠটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই মথেই প্রথম এইসব নিয়ম-কানুন চালু হয়েছিল। পরবর্তীকালে এই নিয়মবিধি সিরিয়া, প্যালেস্টাইন, গ্রিস প্রভৃতি এলাকার মঠগুলিতে অনুসৃত হয়েছিল।

পশ্চিম ইউরোপের জনপ্রিয় হয়েছিল সেন্ট বেনেডিক্ট এর নীতি। মোটামুটিভাবে বেসিল এর  নিয়ম-নীতি সঙ্গে সেগুলি মিলে যায়। তবে এক্ষেত্রে একটি অতিরিক্ত বিধি ছিল, সেটি হল সন্নাসীদের বিবাহিত জীবন যাপন থেকে বিরত থাকা অর্থাৎ কৌমার্য পালন করা। এছাড়া বেসিলের মতই দারিদ্র্য বরণ তথা সম্পত্তির মালিক না হওয়া এবং প্রার্থনা ও উপাসনায় মগ্ন থাকার সপথ সন্ন্যাসীদের নিতে হত। নিয়ম-কানুন এর ব্যাপারে বেনেডিক্ট মঠ-এ কড়াকড়ি ছিল। মঠজীবনে আগ্রহীদের দু'বছরের জন্য প্রাথমিক নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাশ করতে হত, নতুবা মঠজীবনে অনুপ্রবেশের অনুমতি ছিল না। বেনেডিক্ট বিধির মূল উদ্দেশ্য ছিল খ্রিষ্টীয় জীবন প্রনালী অনুশরন করে মুক্তি অর্জন করা। বেনেডিক্ট আইনে সংঘবদ্ধতার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হত। সমবেত প্রার্থনা থেকে শুরু করে, এক কক্ষে ভোজন এবং ডরমিটরি মডেলে ঘুমানো ইত্যাদি মান্য করতে হত। বেনেডিক্ট বিধি একটি সহজ সরল খ্রিষ্টিয় জীবনযাত্রার সন্ধান দিয়েছিল, যার ফলে এর জনপ্রিয়তা যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। পোপ গ্রেগরি এই বিধি ইতালি ও ইংল্যন্ডের বহু স্থানে চালু করেছিলেন। দশম শতকে মঠজীবনের অবক্ষয়ের প্রেক্ষিতে  ইউরোপে ক্লুনির সংস্কার আন্দোলন পর্যন্ত বেনেডিক্ট বিধি সগৌরবে বহু মঠে চালু ছিল।

মঠতন্ত্রের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল , সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ভাঙ্গনকে ত্বরান্বিত করেছিল এই মঠজীবন। কারণ অনেকেই বাধ্যতামূলক সামরিক বাহিনীতে যোগদান থেকে বাঁচতে সন্ন্যাস গ্রহণ করত। সন্ন্যাসীদের গোঁড়ামি ও অসহিষ্ণুতার মনোভাব সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর হয়েছিল। যদিও মঠগুলি অসহায় মানুষকে আশ্রয় দিতে সক্ষম হয়েছিল। মঠগুলির কাছ থেকেই সাধারণ মানুষ বৈজ্ঞানিক ভাবে ভুমিকর্ষণ করতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে এবং চালাতে, বিশাল পরিবারকে ভালোভাবে পরিচালনা করতে শিখেছিল। মঠজীবন থেকেই সমাজে কৃতজ্ঞতা, শিষ্টাচার, ভদ্রতা প্রভৃতি মানবিক গুণগুলো প্রসার লাভ করেছিল।

Monastic Life in Medieval Europe

In medieval Europe, monasteries were an essential part of society, and life centered around them was referred to as monastic life. It was believed that material possessions were the root cause of all moral decay. Therefore, renouncing materialism was seen as the path to attaining divine grace. Many individuals isolated themselves in remote mountains or deserts, leading solitary lives devoted to penance and divine worship. Although initially solitary, over time, these hermits felt the need for community life, resulting in the establishment of monasteries. This marked the beginning of a collective way of life for monks.

Background of Monastic Life in Europe

The popularity of monastic life in Europe had a significant historical context. The Roman Empire fell in 476 AD, but moral and socio-political decay had begun long before. The ruling classes, from emperors to feudal lords, were engrossed in luxury and indulgence. Meanwhile, barbarian invasions left the common people helpless. Unable to find protection from local rulers, many sought refuge in the religious environment of monasteries. Religious leaders and intellectuals interpreted these turbulent times as the result of moral corruption and widespread sinfulness, claiming that humanity's spiritual downfall was leading to destruction. They advocated that the only salvation lay in spiritual elevation through divine communion and monastic life. The corruption of priests further alienated people from the Church, drawing them toward monasticism.

Paths to Spiritual Attainment in Monastic Life

Monastic life offered two primary paths to attain divine grace:

  1. Enduring Severe Physical Torture:
    Monks subjected themselves to extreme hardships to achieve spiritual purity, such as staring at the sun for hours in the desert, spending freezing nights submerged in water, or rolling over thorny bushes. However, these practices often led to death rather than spiritual satisfaction. Over time, this approach was abandoned in favor of Cenobitic Monasticism, a form of collective monasticism. This emphasized communal worship and renunciation of luxury without physical torture.

  2. Cenobitic Monasticism:
    This method gained popularity as monks began living together, practicing religion in a structured, community-oriented environment.

Development of Rules and Regulations

As the number of monks increased, so did the disorder within monastic communities. To address this, laws and regulations were established.

  • St. Basil's Rule:
    Introduced by Bishop St. Basil, these regulations emphasized communal moral living, necessary physical labor, embracing poverty, avoiding self-inflicted physical suffering, and remaining focused on divine worship. Physical labor often included participating in productive activities such as small-scale industries based within monasteries. However, accumulating wealth was discouraged. The first monastery to implement these rules was founded by St. Basil in Cappadocia. Over time, these guidelines were adopted in monasteries across Syria, Palestine, and Greece.

  • St. Benedict’s Rule:
    St. Benedict’s rules became highly popular in Western Europe. While similar to St. Basil’s principles, they introduced additional guidelines, such as celibacy. Monks were required to renounce personal property, embrace poverty, and devote themselves to prayer and worship. Admission to Benedictine monasteries was stringent, requiring candidates to pass a two-year preliminary examination. The simplicity and discipline of Benedictine life gained immense popularity, and Pope Gregory implemented these rules in many monasteries across Italy and England. The Benedictine Rule remained prominent until the Cluniac Reforms of the 10th century, which sought to address the decline in monastic standards.

Contributions and Criticism of Monastic Life

While monasteries played a vital role in medieval society, they also faced significant criticism.

  • Criticism:
    Many joined monastic life to escape mandatory military service, weakening the state’s defense systems. Additionally, the monks’ intolerance and dogmatism were seen as detrimental to society.
  • Contributions:
    Despite criticisms, monasteries provided shelter to the helpless, taught scientific agriculture, established and managed educational institutions, and helped people organize large families efficiently. Monastic life also spread values like gratitude, courtesy, and civility, enriching societal norms.

In summary, monastic life in medieval Europe was not merely a religious phenomenon but a cultural and social institution that profoundly influenced the moral and structural development of society.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ...

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগ...

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হ...