সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Great Calcutta Killing | Jinnah's Direct Action Day | প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস |

Great Calcutta Killing |Jinnah's Direct Action Day | গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং | জিন্নাহ্'র প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস 

(English Virsion)

The Direct Action Day, also known as the Great Calcutta Killing, was an extremely violent incident in the history of Bengal, specifically in Calcutta (now Kolkata), during the pre-independence era of India. It was a consequence of the divide-and-rule policy introduced throughout India after the suppression of the 1857 Rebellion by the British rulers. The development of communal politics in India, fueled by the Muslim League, Arya Samaj, Hindu Mahasabha, and the R.S.S. led to the intensification of the struggle for India's independence along communal lines.

Under the leadership of the Muslim League, the demand for the creation of a separate state, Pakistan, gained momentum. Mohammad Ali Jinnah, the leader of the Muslim League, advocated for the formation of Pakistan, which included Bengal also. However, only 48.3% of the population in Bengal was Non-Muslim. Therefore, when the Cabinet Mission as per the Rajaji formula proposed the formation of Pakistan within a weak confederation framework, disregarding the aspirations of Bengal and Assam. Jinnah had accepted the proposal of the Cabinet Mission. However, Congress rejected the proposal on 10th July. Jinnah saw this incident as an act of betrayal and, in response, decided to abandon the path of constitutional politics and called for direct action on 30th July.

On August 16, communal riots erupted in Calcutta. The riots were instigated by Muslim communal forces. On that day, a Muslim League rally was organized at the Maidan in Calcutta. After the rally, clashes broke out in the Chowringhee area. Then a mob of armed Muslim League supporters or goons attacked Hindu shopkeepers. The police took no action to intervene. The League's Prime Minister Suhrawardy played a negative role in inciting the violence. It is mentioned by Ashok Mitra in his memoir that this violence occurred with the direct patronage of the League government and the British government, as they delayed the deployment of military forces. From August 18 onwards, Hindu communal forces also became active. Sumit Sarkar mentioned in his book "The Swadeshi Movement in Bengal" that Hindu goons collaborated with Sikh goons and launched attacks on the Muslim population. However, no party targeted the government or European properties.

During the period of August 16 to 20, approximately 4,000 people were killed, and 15,000 were injured in Calcutta, resulting in extensive destruction of property. The aftermath of this violence witnessed the advancement of Hindus, as described by Lord Wavell. In a letter, Congress leader Sardar Patel had written the fact that Hindus have won in Calcutta Riot. Penderel Moon commented on the overall violence of 1946, stating that in this riot, Muslims lost more lives and Hindus suffered greater property damage.

The politics of violence initiated in Calcutta quickly spread to East Bengal and Bihar, ultimately leading to the triumph of communal forces. The decision of partition was accepted, and East Bengal (later Bangladesh) became part of Pakistan. The Great Calcutta Killing was a tragic event that left a lasting impact on the history of Bengal and the Indian subcontinent as a whole

(Bengali Virsion)

প্রত্যক্ষ সংগ্রাম তথা গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে অত্যন্ত কলঙ্কজনক একটি ঘটনা। ব্রিটিশ শাসকগন ১৮৫৭ এর মহাবিদ্রোহ দমনের পর সারা ভারতবর্ষে যে বিভেদ ও শাসন নীতির সূচনা করেছিল তার অনিবার্য ফল ছিল সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিকাশ। মুসলিম লিগ, আর্যসমাজ, হিন্দু মহাসভা এবং আর. এস. এস. এর সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ফলে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ক্রমশ সাম্প্রদায়িক বিষে বিষাক্ত হয়ে ওঠে। ফলে মুসলিম লিগের নেতৃত্বে পৃথক রাষ্ট্র পাকিস্তান গঠনের দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। মুসলিম লিগ নেতা মহম্মদ আলি জিন্নাহ যে পাকিস্তানের দাবি করে আসছিলেন তাতে বাংলাও ছিল। তবে বাঙলার ৪৮.৩ শতাংশ মানুষ ছিল অমুসলমান। তাই চক্রবর্তী রাজা গোপালাচারীর সুত্র মেনে গান্ধির সম্মতিতে ক্যাবিনেট মিশন একটি দুর্বল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভিতরে মুসলিম প্রধান প্রদেশগুলিকে নিয়ে পাকিস্তান গঠনের দাবি মেনে নিলেও বাংলা ও আসামকে বাদ রেখেছিল। জিন্নাহ ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস ১০ই জুলাই এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল। এই ঘটনাকে জিন্নাহ প্রতারণা হিসাবেই দেখলেন এবং প্রতিক্রিয়াস্বরূপ নিয়মতান্ত্রিক রাজিনীতি ত্যাগ করে এবং ৩০ শে জুলাই প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাক দেন।

প্রত্যক্ষ সংগ্রাম কার বিরুদ্ধে তা অবশ্য স্পষ্ট করে বলা হয় নি। ১৬ ই আগষ্ট কলকাতার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূচনা হয়। দাঙ্গার সূচনা হয় মুসলমান সাম্প্রদায়িক শক্তির দিক থেকে। ঐ দিন সকালে কলকাতার ময়দানে মুসলিম লিগের সভা আয়োজিত হয়। সভার পর চৌরঙ্গি এলাকায় ছোটোখাটো সংঘর্ষ হয়। তারপরই কিছু সশস্ত্র মুসলিম লিগ সমর্থক তথা গুন্ডা বাহিনী হিন্দু দোকানদারদের উপর আক্রমণ চালায়। পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয় নি। লিগ মুখ্যমন্ত্রী সুরহাবর্দির ভূমিকা ছিল একেবারের পক্ষপাতদুষ্ট। অশোক মিত্র তাঁর স্মৃতিচারণে লিখেছেন লিগ সরকারের প্রত্যক্ষ মদতেই এই দাঙ্গা হয়েছিল এবং ব্রিটিশ সরকারও চেয়েছিল দাঙ্গা হোক। কারন সেনাবিহিনী নামাতে আনেক দেরি করেছিল।১৮ই আগস্ট থেকে হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তিও সক্রিয় হয়ে ওঠে। সুমিত সরকার লিখেছেন হিন্দু গুন্ডাদের সাথে শিখ গুন্ডারাও হাত মিলিয়েছিল। সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতেই হিন্দু ও শিখ গুন্ডারা মুসলমান জনতার উপর নিধনযজ্ঞ চালায়। সুরঞ্জন দাস তাঁর Communal Riots in Bengal গ্রন্থে দেখিয়েছেন মুসলমান গুন্ডারা হিন্দু জনতার উপর এবং হিন্দু গুন্ডারা মুসলমান জনতার উপর আক্রমন করলেও কোনো পক্ষই সরকারি বা ইউরোপীয় সম্পত্তির উপর আক্রমণ করেনি।

১৬ থেকে ২০ আগষ্টের মধ্যে কলকাতায় প্রায় ৪০০০ মানুষ নিহত হয়েছিল এবং ১৫০০০ মানুষ আহত হয়েছিল। আর প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট হয়েছিল। এই খুনোখুনির অঙ্কে শেষপর্যন্ত যে হিন্দুরা এগিয়েছিল তা বড়লাট ওয়াভেল উল্লেখ করেছেন। কংগ্রেস নেতা সর্দার প্যাটেলও এক চিঠিতে ক্রিপসকে লিখেছিলেন যে কলকাতায় হিন্দুরাই জিতেছে। পেন্ডেরেল মুন ১৯৪৬ এর সামগ্রিক দাঙ্গার হিসাব করে মন্ত্যব্য করেছিলেন এই দাঙ্গায় মুসলমানরা প্রান হারিয়েছে বেশি এবং হিন্দুর সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে বেশি।

কলকাতা থেকে শুরু হওয়া দাঙ্গার রাজনীতি দ্রুত পূর্ব বঙ্গে এবং বিহারে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং শেষপর্যন্ত সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলির জয় হয়েছিল। দেশবিভাজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হল এবং এর ফলস্বরুপ বাংলা বিভাজিত হল, যার ক্ষয়ক্ষতির বোঝা আজও দুই বাংলাকে বহন করতে হয়।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল তা জনজীবনে তীব্রভ

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগার:-   কোনো ব্যাক্তিগত বা অলাভজনক