সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পেরিক্লিসের সংস্কারঃ এথেনীয় গণতন্ত্রের স্বর্ণযুগ | Reforms under Pericles in Athance

 

পেরিক্লিসের সংস্কারঃ এথেনীয় গণতন্ত্রের স্বর্ণযুগ

পেরিক্লিস ৪৬১-৪২৯ BCE পর্যন্ত এথেন্সে শাসন করেছিলেন। পেরিক্লিস ছিলেন গণতন্ত্রপন্থী এবং তার নেতৃত্বে এথেন্সে তথা গ্রিসের সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার যে উন্নতি ঘটেছিল তাকেই এথেন্সের ইতিহাসে পেরিক্লিসিয় স্বর্ণযুগ বলা হয়। পেরিক্লিস দক্ষ ও উদার প্রশাসনিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করেছিল।

গণপরিষদ

এটি ছিল নাগরিকদের সংগঠন। এই পরিষদ আইন প্রণয়ন এবং অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার লাভ করেছিল। গণপরিষদের অধিবেশন ১০ দিন অন্তর অনুষ্ঠিত হত। গণপরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ ও বিচার বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ করেছিল।

পাচ'শ সদস্যের পরিষদ

পাচ'শ সদস্যের পরিষদ ছিল গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত একটি পরিষদ, যারা আইন প্রয়োগের কাজের তদারকি করত। বিচারক মন্ডলী গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হতেন এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের মত অনুযায়ী বিচারের রায় দান করতেন।

জেনারেল পরিষদ

দশজন জেনারেল সমন্বয়ে গঠিত ছিল এই জেনারেলদের পরিষদ। পরিষদ এই পরিষদের সদস্যদের নির্বাচন ও কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করত। পেরিক্লিস দীর্ঘ ৩০ বছরেই জেনারেলদের পরিষদের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন।

বিচার বিভাগীয় সংস্কার

পেরিক্লিস এথেন্সে বিচারবিভাগীয় সংস্কারের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থাকে সুবিন্যস্ত করে তুলেছিলেন।নিম্ন আদালত থেকে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে দান পদ্ধতি সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্পন্ন হত। এথেন্সে আদালত এবং বিচারক নাগরিকদের ভোটে নির্বাচিত হতেন এবং বিচারের মাধ্যমে দান করতেন।

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কার

গ্রীক পারসিক যুদ্ধের ফলে এথেন্সের নেতৃত্বে 'ডেলিয়ান লীগ' নামে একটি নৌশক্তি গঠিত হয়েছিল এবং যা পরবর্তীকালে এথেনীয় সাম্রাজ্যে রূপান্তরিত হয়েছিল। নৌশক্তি জোট গঠনের ফলে এথেন্সে নৌবহরের বিকাশ ঘটেছিল এবং নৌবহরের গুরুত্ব বাড়ার সাথে সাথে নৌবাহিনীর বিভিন্ন পদে কর্মরত সাধারন জনগন এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল। এইভাবে নৌবাহিনীর বিকাশ এথেন্সে গণতন্ত্রের বিকাশের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত হয়ে পড়েছিল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল তা জনজীবনে তীব্রভ

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগার:-   কোনো ব্যাক্তিগত বা অলাভজনক