সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আকবরের স্থাপত্য কীর্তি | Mughal Architecture under Akbar

আকবরের স্থাপত্য কীর্তি মুঘল সম্রাটরা ছিলেন একান্তভাবে শিল্পমনস্ক। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতবর্ষে এক অভূতপূর্ব শিল্প সমন্বয় সাধনের সূচনা হয়েছিল। মুঘল স্থাপত্য শিল্পের গৌরবময় যুগের সূত্রপাত হয়েছিল আকবরের হাত ধরে। আকবরের পূর্বে বাবর ও হুমায়ুন যে শিল্প-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন না এমনটা নয়। তবে তাদের সময় নানান রাজনৈতিক সংকটের জন্য সম্ভবত তারা এ বিষয়ে বিশেষ অগ্রগতি করতে পারেননি। যাইহোক আকবর স্থাপত্য নির্মাণে চরম অনুরাগ দেখিয়েছিলেন। পারস্য ও বাগদাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য গজনী হয়ে তুর্কি শাসকরা ভারতের মাটিতে যে ধারা বহন করে এনেছিলেন সেই ধারা আকবরের প্রচেষ্টাতেই প্রথম ভারতীয় জাতীয় ধারায় রূপান্তরিত হয়ে উৎকর্ষ লাভ করে। দেশীয় ও বিদেশী ধারার সংমিশ্রণে যে অভিনব শিল্পরীতির বিকাশ ঘটে তাকে ইন্দো-পারসিক শিল্পরীতি বলে অভিহিত করাই শ্রেয়। আকবর আগ্রা, লাহোর ও এলাহবাদে তিনটি বিরাট দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। আগ্রা দুর্গের ভিতর প্রায় ৫০০ টি লাল বেলেপাথরের অট্টালিকা নির্মিত হয়েছিল। এই অট্টালিকা গুলির মধ্যে বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। আজও পর্যন্ত যেগুলি ঠিকই আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো আকবরীমহল ও জাহাঙ্গীর

আকবরের দাক্ষিণাত্য অভিযান | Deccan Policy of Akbar

আকবরের দাক্ষিণাত্য অভিযান  পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধের পর থেকে মুঘলদের আত্মরক্ষার যুদ্ধ আর করতে হয়নি। এবার থেকে মুঘলরা সম্রাজ্য সম্প্রসারনের দিকে নজর দেয়। মুঘল সম্রাট আকবরের সময়ে সাম্রাজ্যের সর্বাধিক সম্প্রসারণ ঘটেছিল। প্রথমে উত্তর ভারতের বিভিন্ন এলাকা দখলের পর দক্ষিণ ভারতের দিকে তিনি দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। সাম্রাজ্য বিস্তারের পাশাপাশি পর্তুগীজদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ন্ত্রণ করাও তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। দক্ষিণ ভারতে চারটি স্বাধীন রাজ্যের উপস্থিতি ছিল- আহম্মদনগর, বিজাপুর, খান্দেশ ও গোলকুণ্ডা। বাহমনী রাজ্যের পতনের পর তার বুকের উপর এই চারটি রাজ্যের উৎপত্তি হয়েছিল। এই চারটি রাজ্যের সম্মিলিত বাহিনী বিজয়নগর রাজ্যকে তালিকোটার যুদ্ধে (১৫৬৫ খৃ:) ধ্বংস করেছিল। এই চারটি রাজ্যকে আকবর তার অধীনতা স্বীকার করে নেওয়ার জন্য দূত প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু খান্দেশ ছাড়া কোন রাজ্যেই মুঘলদের অধীনে আসতে রাজী হয় নি। তাই আকবর দাক্ষিণাত্য অভিযানের জন্য মনস্থির করেন। আহাম্মদনগরের নাবালক সুলতান বাহাদুরকে বন্দি করে আমির গোষ্ঠীর চক্রান্তে আহম্মদ নামক এক যুবক নিজেকে সুলতান বলে ঘোষণা করে। কিন্তু প্রাক্তন সুলতান হুসেন শাহের

প্রাচীন রোমে ব্যবসা বাণিজ্য | Trade in Ancient Rome

প্রাচীন রোমে ব্যবসা বাণিজ্য প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্য ব্যবসা-বাণিজ্যে লক্ষনীয় সাফল্য অর্জন করেছিল। রোমের এই বাণিজ্যিক সাফল্যের পশ্চাতে ছিল সস্তা দাস শ্রমের উপর নির্ভর করে অপরিমিত কৃষি ও কারিগরি উৎপাদন। একইসঙ্গে কার্যকর ছিল রোমান সাম্রাজ্যের অভিজাত সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌখিন দ্রব্যের ব্যাপক চাহিদা।  রোমে অভ্যন্তরীণ এবং বহির্বাণিজ্য দুই প্রকার বাণিজ্যই চলত। অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র ছিল  'ফোরাম' গুলি। গ্রামাঞ্চলে অভিজাতরা যেখানে বাস করত সেখানে একটি গ্রামীণ বাজার গড়ে উঠত। এই বাজার গুলি ফোরাম নামে পরিচিত ছিল। ফোরাম গুলিকে কেন্দ্র করে পরবর্তীকালে নগরের বিকাশ ঘটে। ফোরামগুলিতে পণ্যের জোগান দিতে বৃহৎ কৃষিজমি বা ল্যটিফানডিয়া গুলিতে উৎপাদিত পণ্য। কৃষি পণ্যের মধ্যে খাদ্যশস্য অলিভ ও মদ এবং ও কৃষি পণ্যের মধ্যে মৃৎপাত্র বস্ত্র ধাতুনির্মিত পণ্য ও কাচের জিনিস প্রধান বাণিজ্য পণ্যে পরিণত হয়েছিল। রুমে বিলাসপণ্যের একটা বড় অংশ আমদানি করা হত বিদেশ থেকে। সোমালিল্যান্ড থেকে আসতো ধুনো। বাল্টিক উপকূল থেকে আনা হতো গয়না তৈরির প্রয়োজনীয় একরকম হলুদ রঙের পাথর অ্যাম্বার, ভারত থেকে এডেন হয়ে রোমে গ

প্রাচীন রোমের দাস ব্যবস্থার স্বরূপ | Slavery in Ancient Rome

প্রাচীন রোমের দাস ব্যবস্থার স্বরূপ আলোচনা কর। প্রাচীন রোমান সভ্যতার অন্যতম প্রতিষ্ঠান ছিল ক্রীতদাস ব্যবস্থা। সমগ্র জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশই ছিল দাস। রোমের এহেন সমাজব্যবস্থাকে ঐতিহাসিকগণ দাস সমাজ বলে অভিহিত করেছেন। খ্রিস্ট পূর্ব পঞ্চম শতক থেকে পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতন পর্যন্ত রোমের ক্রীতদাস প্রথার অস্তিত্ব ছিল। রোমান সমাজ এবং অর্থনীতি অসম্ভব ভাবে দাস নির্ভর হয়ে উঠেছিল। কোন কোন উৎস থেকে রোমে দাস সংগ্রহ করা হতো তা পৃথিবীর অন্যান্য জায়গা থেকে খুব একটা পৃথক নয়। রোমে দাস সংগ্রহের প্রধানতম উৎস ছিল যুদ্ধ। যুদ্ধে পরাজিত পুরুষ মহিলা এবং শিশুদের দাসে পরিণত করা হত। বহু ক্ষেত্রে পিতা-মাতা কর্তৃক পরিত্যক্ত অবাঞ্ছিত সন্তানদের দাসে পরিণত করা হত। কতকগুলি অপরাধের শাস্তি হিসেবেও দাসে পরিণত করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাছাড়া বংশানুক্রমিকভাবে একজন দাস বা দাসীর সন্তান অনিবার্যভাবে দাসত্ব বরণ করতে বাধ্য ছিল। এই সমস্ত উৎসের মধ্যে সম্ভবত যুদ্ধ ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস; কারণ রোমান শাসকরা অনবরত যুদ্ধে লিপ্ত থাকতেন এবং পরাজিত এলাকার উপরে নিউজ প্রভুত্ব স্থাপন করতেন। পূর্বেই বলা হয়েছে যে, রোমের সমাজ ও অ

জেনেভা চুক্তি (১৯৫৪) | Geneva Protocol (1954)

জেনেভা চুক্তি (1954) শর্তাবলী উল্লেখ করে এই চুক্তির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ। ভিয়েতনামের মুক্তি সংগ্রামের দুটি পর্ব - প্রথমটি ফরাসি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম এবং দ্বিতীয়টি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম। ভিয়েতনামসহ অন্নাম, টংকিং ও কোচিন চীন তথা সমগ্র ইন্দোচীনের উপর ফরাসি উপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাময়িক ভাবে ইন্দোচীন জাপানের অধীনে চলে যায়। বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর ফ্রান্স পুনরায় মার্কিন চাপের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইন্দোচীনের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে উদ্যত হয়। এদিকে বামপন্থী নেতা হো-চি-মিন এর নেতৃত্বে প্রবল সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাম গড়ে ওঠে। হো-চি-মিন এর ভিয়েতমিন বাহিনীর কাছে ফরাসি বাহিনী পরাজিত হয়। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে দিয়েন - বিয়েন - ফু এর যুদ্ধে ফরাসি বাহিনী প্রধান জেনারেল গিয়াপ এর চূড়ান্ত পরাজয় এবং আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্বের অবসান ঘটে। দিয়েন - বিয়েন - ফু এর যুদ্ধে পরাজয়ের পর নবনির্বাচিত ফর

হুমায়ুন এর রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ব্যর্থতা | Humayun

শাসক হিসেবে হুমায়ূনের কর্তৃত্বের আলোচনা কর?  শাসক হিসেবে হুমায়ূন কি কি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল? সেগুলি সমাধানে তিনি কতটা সফল হয়ে ছিলেন? ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দে ২৬ শে ডিসেম্বর বাবরের মৃত্যুর ৪ দিন পর ৩০ শে ডিসেম্বর তার পুত্র হুমায়ূন ২৩ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। সিংহাসন আরোহনের ৪ দিন বিলম্ব হওয়ায় পশ্চাতে কী কারন ছিল তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে ঐতিহাসিকগণ দেখিয়েছেন যে, বাবরের ভগ্নিপতি মেহদি খাজা সিংহাসনের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠেছিলেন। এই বিবাদের মিটমাট হতে সম্ভবত ৪ দিন বিলম্ব হয়েছিল। যাই হোক সিংহাসন আরোহনের পর হুমায়ূনকে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল এবং এই সমস্যাগুলির যথার্থ সমাধান করতে তিনি ব্যার্থ হয়েছিলেন। আফগান নেতা শের খাঁ - র সঙ্গে শক্তির পরীক্ষায় পরাস্ত হয়ে তাঁকে ১৫ বছর (পারস্যে) নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়। যদিও শের খাঁ- র উত্তরাধিকারিদের পরাজিত করে তিনি পুনর্বার সিংহাসন দখল করতে সক্ষম হন। হুমায়ুনের সমস্যাসমূহ বাবর হুমায়ূনের জন্য যে সাম্রাজ্য রেখে যান তা মধ্য এশিয়ার কিছু অংশ থেকে বর্তমান ভারতের পাঞ্জাব, মুলতান, উত্তর প্রদেশ, গোয়ালিয়র, ডোলপুর, বায়ানা এবং চান্দেরি পর্যন্ত

দ্বিমেরুতা কি? । What is Bi-polarity?

 দ্বিমেরুতা দ্বিমেরুতা শব্দটি প্রথম প্রয়োগ করেন আর্নল্ড টয়েনবি। এরিক হবসবম মনে করেন দ্বিমেরুতা হল ঠান্ডা লড়াইয়ের রাজিনৈতিক পরিণতি, যা বিশ্বে দুটি পরস্পর বিরোধী শক্তিকেন্দ্রের জন্ম দিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পরিবর্তে আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন দুটি বৃহৎ শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়। পুজিবাদের রক্ষক আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম ইউরোপের পুঁজিবাদী দেশগুলিকে নিয়ে একটি ঐক্যজোট গড়ে তোলে এবং বিশ্বে পুঁজিবাদ সম্প্রসারণ ও রক্ষার দায়িত্ব স্বেচ্ছায় গ্রহন করেন। এই উদ্দেশ্যেই একাধিক অর্থনৈতিক সহয়তা প্রকল্প ও সামরিক জোট গঠন করে। অন্যদিকে সমজতন্ত্রী ব্যবস্থার অভিভাবক সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপের কমিউনিষ্ট দেশগুলিকে নিয়ে জোট গঠন করে। এইভাবে আন্তর্জাতিক পরিসরে শক্তি ও মতাদর্শের নতুন মেরুকরণ ঘটেছিল। এই নতুন পরিস্থিতি দ্বিমেরুতা নামে পরিচিত।  দ্বিমেরুকৃত ব্যবস্থার প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে রাধারমণ চক্রবর্তী বলেছেন, এই মূল কাঠামোটি এমন যে দুটি অতিবৃহৎ শক্তিকে ঘিরে অন্যান্য রাষ্ট্র সমষ্টিবদ্ধ হতে থাকে। এইরকম অবস্থায় দুটি প্রধান শক্তি সর্বদা একে অপরের সঙ্গে এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতায়

দাঁতাত এর কারণ | Reasons Behind the Detente Politics

দাঁতাত এর কারণ বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকের সময় থেকেই দুই পরস্পরবিরোধী মহাশক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন পারস্পরিক সংঘাতের উত্তেজনা হ্রাস করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি গ্রহণ করে। আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এই নীতি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দাঁতাত নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভাষ্যকাররা মনে করেন সমসাময়িক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি উভয়পক্ষকে দাঁতাত রাজনীতি গ্রহণে বাধ্য করেছিল। দাঁতাত এর কারণগুলো নিম্নে আলোচিত হল- 1. আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন দুটি রাষ্ট্রই ছিল পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র। উভয়পক্ষই এই চরম সত্যটা বুঝেছিলো যে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার রাশ টানা না হলে তা একদিকে যেমন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না, অন্যদিকে তেমনি তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাঁধা স্বরূপ হয়ে উঠবে। এর পাশাপাশি আরেকটি সমস্যা তীব্রতর হয়ে উঠেছিল-- একের পর এক দেশের পারমাণবিক শক্তিধর হয়ে ওঠা। এক সময় ব্রিটেন, ফ্রান্স ও চীন পারমানবিক বোমা নির্মাণে সক্ষম হয়ে ওঠে। পাশাপাশি ইজরায়েল, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান, ইরাক প্রভৃতি রাষ্ট্রসঙ

দাঁতাত রাজনীতির স্বরূপ | D'etente

 দাঁতাত কি?  'দাঁতাত' একটি ফরাসি শব্দ যার অর্থ হলো উত্তেজনার অবসান। দাঁতাত বলতে বোঝায়, আলাপ আলোচনার পরিবেশ তৈরীর মধ্যে দিয়ে দীর্ঘকালব্যাপী ঠান্ডা লড়াই এর অন্তিম কালে আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন এই দুই পরস্পর বিরোধী শক্তির মধ্যে বিরোধের অবসান ঘটানোর কূটনৈতিক প্রয়াস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কুড়ি বছর ধরে ঠান্ডা লড়াইয়ের উত্তেজনা যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে সেই উত্তেজনার পারদ নামতে শুরু করে। এই দুই পরাশক্তি নিজেদের মধ্যে নমনীয় সহবস্থান এবং আপস-মীমাংসার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বিরোধ ও তজ্জনিত আন্তর্জাতিক বিরোধের অবসান ঘটানোর উদ্যোগ নেয়। এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রথম পর্বে প্রায় 10 বছর টিকে ছিল। এবং দ্বিতীয় পর্বে ছয় বছর এই পরিবর্তিত শান্তিপূর্ণ পরিবেশটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির ইতিহাসে দাঁতাত নামে পরিচিত। ফরাসি রাষ্ট্রপতি De Gaulle আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে প্রথম দাঁতাত শব্দটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীকালে সত্তরের দশকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এর নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার দাঁতাত কে জনপ্রিয় করে তোলেন। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞদের অভিমত কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র

NATO

 NATO দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে এবং হিটলারকে পরাজিত করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বাহিনীর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়েছিল। অন্যদিকে, জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকির ওপরে পারমাণবিক বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বোঝাতে চেয়েছিল যে, তারা সোভিয়েতের Red Army -র থেকেও শক্তিশালী। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত মার্কিন স্নায়ুযুদ্ধের বাতাবরণে 1949 সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সফল পারমাণবিক বিস্ফোরণ আমেরিকার একচেটিয়া পারমাণবিক আধিপত্যের অবসান ঘটায়। এই প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে 'সাম্যবাদী সম্প্রসারণ' প্রতিহত করতে এবং পুঁজিবাদের চরিত্র বজায় রাখতে 1949 সালে এপ্রিল মাসে আমেরিকা 12টি পশ্চিম ইউরোপীয় রাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে একটি সামরিক জোট গঠন করে। এই শক্তি জোট 'North Atlantic treaty organisation' (NATO) নামে পরিচিত।  NATO গঠনের উদ্যোগ দেখা গিয়েছিল 1948 সালে। ওই বছর মার্চ মাসে ব্রিটেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, লাক্সেম্বোর্গ এই পাঁচটি ইউরোপীয় রাষ্ট্র মিলে ব্রাসেলস -এ একটি যৌথ সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এর

মার্শাল পরিকল্পনা | Marshal Plan

মার্শাল পরিকল্পনা | Marshal Plan ট্রুম্যান নীতির পরিপূরক ও সম্প্রসারিত অর্থনৈতিক কর্মসূচি ছিল মার্শাল পরিকল্পনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পশ্চিম ইউরোপের অর্থনৈতিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটেছিল। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশে এমনকি ফ্রান্স ও ইতালিতেও কমিউনিস্টদের প্রভাব দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীর চিন্তা-ভাবনা শুরু করে। প্রথমে ডিন একিসন এবং পরে জর্জ মার্শাল ইউরোপের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন এর মার্কিন সাহায্য প্রদানের পক্ষে জোর সওয়াল করেন। 1947 সালের 5 ই জুন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ মার্শাল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা এক বক্তৃতায় ইউরোপীয় অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন এর পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এটিই সাধারণভাবে মার্শাল পরিকল্পনা নামে পরিচিত। মার্শাল পরিকল্পনা স্পষ্ট বলা হলো যে ক্ষুধা-দারিদ্র্য অর্থাভাব থেকে যুদ্ধোত্তর ইউরোপীয় দেশ গুলিকে রক্ষা করতে আমেরিকা উদারহস্তে অর্থনৈতিক সাহায্য দান করে যাবে। আরও বলা হল এই নীতি বা কর্মসূচি কোন দেশের বিরুদ্ধে নয়। অবশ্য প্রকাশ্যে না বলা হলেও এই পরিকল্পনার অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্যই ছ

ট্রুম্যান নীতি | Truman Doctrine

ট্রুম্যান নীতি | Truman Doctrine 1947 এর 15 ই মার্চ ট্রুম্যান নীতি ঘোষিত হয়েছিল। এই নীতিতে বলা হয়েছিল বিশ্বের যে কোনো দেশ বা জাতি নিজেদের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার প্রয়োজনে অথবা বিদেশি চাপ ও প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে নিজ নিজ রাষ্ট্রীয় ঐক্য ও সংহতি অক্ষুন্ন রাখতে চাইলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পুরোমাত্রায় সাহায্য ও সহযোগিতা পাবে। এই বহিরাগত চাপ বলতে কমিউনিস্ট ভাবাদর্শ ও তার সঞ্চালক সোভিয়েত রাশিয়ার রাজনৈতিক ও সামরিক তৎপরতার দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন আর্থিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল। গ্রিস ও তুরস্ককে আর্থিক ও সামারিক ভাবে সহযোগিতা করা তার পক্ষে আর সম্ভব ছিল না। ব্রিটেন হাতগুটিয়ে নিলে পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন তার পূর্ব ইউরোপীয় বলয় গড়ে তোলার পর তুরস্কের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সচেষ্ট হয়। সাথে সাথে মস্কোর মদদপুষ্ট বামপন্থী গেরিলারা গ্রিসের দক্ষিণপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই পরিস্থিতিতে উক্ত দু'টি দেশে সোভিয়েত প্রভাব প্রতিরোধ করার জন্য গ্রিস ও তুরস্ককে আর্থিক সহায়তা প্রদান আমেরিকার পক্ষে অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। 1947