সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

গৌতম পুত্র সাতকর্ণীর রাজনৈতিক অবদান | Gautamiputra Satakarni

গৌতম পুত্র সাতকর্ণীর রাজনৈতিক অবদান | Political Contribution of Gautamiputra Satakarni  দাক্ষিণাত্যে যারা প্রথম পরাক্রান্ত রাজশক্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল তারা হল সাতবাহন। সাতবাহন বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সিমুক। পুরান-এ সাতবাহনদের অন্ধ্রভৃত্য বলা হয়েছে। তাই অনেকেই দাক্ষিণাত্যের পূর্বাংশকে সাতবাহনদের আদি বাসভূমি বলে মনে করেন। কিন্তু আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে সাতবাহনদের উত্থান ঘটেছিল দাক্ষিণাত্যের পশ্চিম দিকে। নানাঘাট এবং নাসিকে তাদের প্রাচীনতম লেখগুলি পাওয়া গেছে। এখানেই প্রতিষ্ঠান (পৈঠান) এলাকায় তাদের রাজধানী ছিল। সাতবাহন রাজবংশের রাজনৈতিক বিস্তারের সূচনা হয়েছিল প্রথম সাতকর্ণীর সময়, যিনি খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকের দ্বিতীয়ার্ধ নাগাদ কলিঙ্গরাজ খারবেলের সমসাময়িক ছিলেন। তবে গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী ছিলেন সাতবাহন বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক। প্রথম সাতকর্ণীর সময় সাতবাহনরা যখন তাদের রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করছিল সেই সময় পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ালো শক ক্ষত্রপ নহপান। নহপান সাতবাহন রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র নাসিক দখল করে নেয়। রোমিলা থাপার মনে করেন যে, আলোচ্য পর্বে পশ্চিম উপকূল একটি প্রতিযোগিতামূলক এলাকায় পরিণত

সামুদ্রিক অভিযান এর ফলাফল | Impact of European Voyages

সামুদ্রিক অভিযানের ফলাফল ইউরোপীয় শক্তিগুলি বিশেষত পর্তুগিজ স্পেনের নেতৃত্বে যে নতুনদেশ আবিষ্কারের নেশায় সমুদ্র অভিযানগুলি সংঘটিত হয়েছিল তার ফলাফল ছিল সুদুরপ্রসারি। এইরূপ আঞ্চলিক বিস্তৃতি ইউরোপীয়দের মানসিক প্রসার ঘটায়। নতুন বিশ্বের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের ফলে এই সব দেশের নাগরিকদের মধ্যযুগীয় কুসংস্কার, অজ্ঞতা এবং কুপমন্ডুকতা দূর হয়। মানুষের বুদ্ধি তথা জ্ঞানের পরিধি সম্প্রসারিত হয়। ভৌগলিক আবিষ্কারের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের দ্রুত প্রসার লাভ এবং এর ফলে ইউরোপের অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি। এতদিন পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর ছিল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একমাত্র পথ। উপকূলবর্তী ইতালির শহরগুলি এবং হেনসিয়াটিকভুক্ত শহরগুলি এতদিন ধরে ইউরোপীয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিল। ভৌগোলিক আবিষ্কারের ফলে ভুমধ্যসাগরের গুরুত্ব ক্রমশ কমে যায় এবং তার জায়গা নেয় আটলান্টিক মহাসাগর। আটলান্টিক সাগরের তীরবর্তী পর্তুগাল স্পেন ব্যবসা-বাণিজ্যের ঘাঁটিতে পরিণত হয়। ঔপনিবেশিক বাণিজ্যের বিকাশের সাথে সাথে বাণিজ্যের পদ্ধতিগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। নতুন ব্যবস্থায় আগের থেকে অনেক বেশি পরিমাণ পুঁ

স্পেনীয় সামুদ্রিক অভিযান | Spanish Voyages

স্পেনীয় সামুদ্রিক অভিযান | Spanish Voyages   ইউরোপের ইতিহাসে  একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা হল এই যে, একটি আপাত অনুন্নত দরিদ্র এবং প্রায় বিচ্ছিন্ন একটি দেশ স্পেন ভৌগোলিক আবিষ্কারে এক দুর্দান্ত সাফল্য লাভ করেছিল। 1500 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1550 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে স্থল এবং জলে স্পেনের সাফল্য ছিল চোখ ধাঁধানো। উদাহরণস্বরূপ ইতালি ও নেদারল্যান্ডের ওপর স্পেনের আধিপত্য; তুর্কি, ওলন্দাজ ও ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্পেনের লড়াই প্রভৃতি। কিন্তু এই সব কিছুকে অতিক্রম করেছিল ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য বিস্তারের স্পেনের দক্ষতা। আমেরিকার ওপর স্পেনের দখলদারি একইসঙ্গে স্মরণীয় এবং নিষ্ঠুর এক অধ্যায় রূপে পরিচিত।  পর্তুগিজরা যখন আফ্রিকা ঘুরে পূর্বদিকে অভিযানে রত ছিল তখন পশ্চিম দিকে অভিযান শুরু হলো স্পেনের পৃষ্ঠপোষকতায় ক্রিস্টোফার কলম্বাস এর নেতৃত্বে। তিনি জন্মসূত্রে জেনোয়ার মানুষ ছিলেন। পর্তুগিজ সরকার এই সময়ে আফ্রিকা ঘুরে দক্ষিনে অভিযান চালাতে বিশেষ আগ্রহী ছিল বলে তিনি পর্তুগালে বিশেষ জায়গা করতে পারেন নি। তিনি স্পেনের রাজা ও রানীর অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন। কাস্তিলের রানী ইসাবেলা ও আরাগণের রাজা ফার্ডিন্যান্ড বিবাহ বন্ধনে যুক্ত হয়

বক্সারের যুদ্ধ: প্রেক্ষাপট, কারণ ও গুরুত্ব | Battle of Buxar: Background & Importance

বক্সারের যুদ্ধ: প্রেক্ষাপট, কারন ও গুরুত্ব  পলাশীর যুদ্ধে সিরাজকে ক্ষমতাচ্যুত করে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মীরজাফরকে বাংলা নবাব করেছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই মীরজাফর এর সঙ্গে ইংরেজদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তখন তারা মীর জাফরের জামাতা মীর কাসিমের সাথে গোপন চুক্তি করে তাকে বাংলার মসনদে বসান(১৭৫৯)। বিনা যুদ্ধে এহেন রাজা বদল এর ঘটনা বাংলার ইতিহাসে রক্তপাতহীন বিপ্লব নামে পরিচিত। মসনদে অধিষ্ঠিত হয়ে মীর কাসেম চুক্তিমতো ইংরেজদের সমস্ত পাওনা মিটিয়ে দেন। মেদিনীপুর, বর্ধমান ও চট্টগ্রামের জমিদারি, নগদ দশ লক্ষ টাকা এবং উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের 29 লক্ষ টাকা উপঢৌকন দিয়ে দেন। এরপর তিনি রাজ্যের শক্তি বৃদ্ধির দিকে নজর দেন। অবাধ্য কর্মচারী বিহারের দেওয়ান রাম নারায়নকে পদচ্যুত করে হত্যা করেন। রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে বিহারের মুঙ্গেরে স্থানান্তর করেন। সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য সেনাবাহিনীকে ইউরোপীয় প্রথায় শিক্ষিত করার উদ্যোগ নেন। সমরু, মার্কার ও জেন্টিল নামে তিন ইউরোপীয় সেনাপতি কে নিয়ে আসা হয়। মুঙ্গেরে একটি কামান ও বন্দুকের কারখানাও খোলেন। জগত সেঠ ও তার মতো অসৎ ব্যাংকারদের নতুন ব্যবস্থা থ

বক্সার প্রটোকল | Boxer Protocol

বক্সার প্রটোকল বক্সার বিদ্রোহ ছিল শুধু বিদেশি বিরোধী। যদিও প্রথমদিকে বিদ্রোহীরা একইসঙ্গে বিদেশিদের এবং মাঞ্চু শাসক বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু কিছুকালের মধ্যে রাজপরিবারের একটা বড় অংশ বিদ্রোহে যোগদান করায় এবং বিধবা রাজমাতা জুসি সমর্থন করায় এই বিদ্রোহ কেবলমাত্র বিদেশিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়। ইউরোপীয় উপনিবেশিক শক্তির হাতে বিদ্রোহ হয়। বিদ্রোহ ব্যর্থতা ছিল প্রকৃতপক্ষে মাঞ্চু রাজশক্তির পশ্চিমী শক্তিগুলির হাতে আরও একবার পরাজয়। বিদ্রোহ দমনের পর এগারোটি ইউরোপীয় শক্তি 1901 খ্রিস্টাব্দে চীনের সঙ্গে আরো একটি অসম চুক্তি স্বাক্ষর করে যা বক্সার প্রটোকল নামে পরিচিত। বক্সার প্রটোকল এর শর্ত গুলি নিম্নরূপ: ১. 12 জন রাজপুরুষ যারা বক্সার বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিল তাদের হয় মৃত্যুদণ্ড নেওয়ার অথবা আত্মহত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর প্রায় একশত রাজপুরুষ কে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। ২. চীন ক্ষতিপূরণ হিসেবে 500 মিলিয়ন আমেরিকান ডলার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। 1901 থেকে 1940 সালের মধ্যে বিভিন্ন কিস্তিতে এই অর্থ পরিশোধের কথা বলা হয়। ৩. যেসব শহরে বিদেশি বিরোধী আন্দোলন তীব্র রূপ নিয়েছিল সেই সব অঞ্চলে সরকারি পরীক্

চিনে প্রজাতন্ত্রিক বিপ্লব ও সান-ইয়াৎ-সেন | 1911 Revolution & San-Yat-Sen

আধুনিক চীনের ইতিহাসে 1911 খ্রিস্টাব্দে গণতান্ত্রিক বিপ্লব উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে চীনে মাঞ্চু রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং একটি প্রজাতান্ত্রিক সরকার সান-ইয়াৎ-সেনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে। যদিও এই প্রজাতন্ত্র ক্ষণস্থায়ী হয়েছিল এবং সানের পদত্যাগ এবং ইউয়ান সি কাই একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বিপ্লবের সমাপ্তি হয়। 1911 এর বিপ্লবের পটভূমি আলোচনা প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ইমানুয়েল স্যু বলেছেন উনিশ শতক থেকে চীনের ইতিহাসে জাতীয় অবমাননার ইতিহাস। 1842 খ্রিস্টাব্দে নানকিং এর সন্ধি থেকে শুরু করে 1901 এর বক্সার প্রটোকল পর্যন্ত বিদেশী শক্তির সাথে চিন নানান অসম চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিল। চীনের কোন রাজ্য গুলি হাতছাড়া হয়েছিল এতদিন যারা মধ্য রাজ্যের বাসিন্দা হিসাবে গর্ব বোধ করত তাদের দেশ আধা-ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছিল যে চীনের এই দুরাবস্থার জন্য, মর্যাদাহানির জন্য মাঞ্চু রাজবংশই দায়ী। তাই মাঞ্চু রাজারা যখন সংস্কারের মাধ্যমে রাজতন্ত্র কে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছিল চিনা জনসাধারণ তখন মাঞ্চু রাজাদের ক্ষমতাচ্যুত করার চিন্তাভাবনা করছিল। চিনা জনসাধারণ মনে করত

ধর্মসংস্কার আন্দোলনে মার্টিন লুথারের ভূমিকা | Reformation and Martin Luthar

ধর্মসংস্কার আন্দোলন ও মার্টিন লুথার  ইউরোপে ধর্মসংস্কার আনন্দলনের সূত্রপাত হয়েছিল জার্মানিতে মার্টিন লুথারের নেতৃত্বে। 1517 খ্রীষ্টাব্দে রোমান ক‍্যাথলিক চার্চের  আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশেষ করে Indulgence বা ক্ষমাবিক্রয়পত্রের তীব্র সমালোচনা করেন। দুপক্ষের এই বাদানুবাদ সংস্কার আন্দোলনে পরিণত হয়। লুথার পোপতন্ত্রের সমালোচনা করলেও রাজশক্তির পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলেন। রাষ্ট্র ও পোপের মধ‍্যকার দ্বন্দ্ব ধর্মসংস্কার আন্দলনের পক্ষে লাভজনক হয়েছিল। 15 শতকের শেষ দিকে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে মানবতাবাদী পণ্ডিতদের সমাবেশ ঘটতে থাকে। উচ্চশিক্ষায় ছাত্রসংখ‍্যাও বাড়ছিল। একই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার প্রসারও ঘটেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে  নতুন চিন্তা ভাবনার জোয়ার সমাজের নিম্নতর স্তরেও পৌঁছে যাচ্ছিল। ফলে সমাজে বিশেষত শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ‍্যে ধর্মীয়  জীবনে কিছু সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়ে ছিল। সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্তিতি ধর্মসংস্কার আন্দোলনকে তরাণ্বিত করেছিল। জার্মানিতে লুথার যখন র্মাজনা পত্র বিক্রয়কে আক্রমণ করলে তখন যাজক সম্প্রদায়ের মধ‍্যে যে বির্তকের সূত্রপাত হয়। তাকে দুটি ভিন্নধর্মী মতার্দশের

ওয়াহাবি বিদ্রোহ ও তার চরিত্র | Wahabi Movement and it's Charecter

ওয়াহাবি বিদ্রোহ ও তার চরিত্র ওয়াহাবি আদর্শের প্রকৃত নাম 'তরিকা ই মহম্মদিয়া' অর্থাৎ মহম্মদের আদর্শিত পথ। আরব দেশে আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে ইসলাম ধর্মাবলম্বী দের মধ্যে যে অ- ইসলামিক রীতিনীতি প্রচলিত ছিল অর্থাৎ 'বিদ-আত' তা দূরীকরণের জন্য যে শুদ্ধিকরণ আন্দোলন শুরু হয়েছিল তাই তরিকা ই মুহাম্মদিয়া নামে পরিচিত। যেহেতু আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল তাই এই আন্দোলন ওয়াহাবি আন্দোলন নামেও পরিচিত। ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা ভারতবর্ষে হয় শাহ ওয়ালীউল্লাহ এর হাত ধরে। কিন্তু বিস্তার লাভ করে সৈয়দ আহমেদ বারেলির নেতৃত্বে। বঙ্গদেশে তিতুমীরের নেতৃত্বে ওয়াহাবি আন্দোলন একটি ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের রূপ নিয়েছিল। সৈয়দ আহমেদ বারেলির নেতৃত্বে সিন্ধু এলাকায় যে ধর্মীয় আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল তাতে একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক চিন্তার ছাপ ছিল। একদিকে তারা শির্ক ও বিদআতের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করত এবং মোহাম্মদের নির্দেশিত পথে চলার পরামর্শ দিত। অন্যদিকে তিনি ইংরেজ শাসিত ভারতকে দার উল হারব শত্রু দেশ হিসাবে অভিহিত করেন এবং মোহাম্মদের অনুগামীদের ভারতকে দারুল ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আহবান ক

ব্রিটিশ শক্তির সম্প্রসারণ প্রতিরোধে মাইসোরের অবদান | Hydar Ali and Tipu Sulatan

ব্রিটিশ শক্তির সম্প্রসারণ প্রতিরোধে মাইসোরের অবদান ওয়েদর বংশীয় রাজাদের ক্ষমতাচ‍্যুত করে হায়দার আলীর 1761 খ্রিস্টাব্দে মহীশূরের ক্ষমতা দখল করেন। 1764 এর মধ্যে হায়দার আলী পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলি দখল করে মহীশূরকে একটি শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত করেন। মহীশুরের অমিত সম্পদ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাদ্রাজ কুটিকে প্রলুব্ধ করেছিল। রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের কালো মাটিতে প্রচুর তুলা চাষ হতো। পশ্চিম দিকেও মৃত্তিকা অত্যন্ত উর্বর। প্রচুর দক্ষ কারিগর এবং আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের প্রচুর্য মহীশুরের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছিল। ফরাসিদের সাথে ঘনিষ্ঠতা মাদ্রাজ কুঠির উষ্মার অন্যতম কারণও ছিল। তার দরবারে একাধিক ফরাসি অফিসারদের যাতায়াত ছিল। ইঙ্গ-ফরাসি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হায়দার ফরাসিদের নানাভাবে সাহায্য করেছিল। তবে এর পিছনে হায়দারের মনে ইংরেজ বিরোধী কোন মনোভাব ছিল না। ছিল ফরাসিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। কারণ ফরাসিরা মহীশুরের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার সময় হায়দারকে সাহায্য করেছিল। হায়দার ইংরেজ মিত্র আর্কটের নবাবের শত্রুদের নানাভাবে সাহায্য করে ব্রিটিশের আরও বিরাগভাজন হন। মাহফুজ খানকে আশ্রয় দেন, চাঁদা সাহেবের পুত্রকে চাকরি দেন। এছাড়া

আদিমধ্য যুগে সমুদ্র বাণিজ্য | Overseas Trade in Early Medieval India

আদিমধ্য যুগে সমুদ্র বাণিজ্য রামশরণ শর্মা ও তার অনুগামীগন মনে করেন যে, গুপ্ত যুগের শেষ দিকে রোম-ভারত বাণিজ্যের অবনতিজনিত কারণে খ্রিস্টীয় চতুর্থ থেকে সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত ভারতীয় অর্থনীতিতে সমুদ্র বাণিজ্যের গুরুত্ব কমে যায়। যদিও সপ্তম শতাব্দীর পর থেকে বাণিজ্যের  পুনরায় অগ্রগতি ঘটতে থাকে বলে তিনি মনে করেন। চতুর্থ থেকে সপ্তম শতকে ভারতের বহির্বাণিজ্য কতটা ছিল তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও অষ্টম শতক থেকে সচল সমুদ্র বাণিজ্য সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। রোম ভারত বাণিজ্য অবনতি ঘটলেও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার ফলে সমুদ্র বাণিজ্য কিছুটা চাঙ্গা হয়। ভারতের পশ্চিম উপকূলে পারস্য উপসাগরের মধ্য দিয়ে আরব সাগরীয় বাণিজ্যের অংশ নিত বাইজানটাইন বণিক ও ইরানের সাসানীয় বণিকেরা। পূর্ব উপকূলে বাণিজ্য চলত মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে এবং এই বাণিজ্যে অংশগ্রহণকারী গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ছিল তাম্রলিপ্ত। ইসলামের আবির্ভাবের ফলে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে থেকে ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়; কারণ ইসলাম নগর ও বাণিজ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিল। আরব বণিকরা অষ্টম শতকে হরমুজ, মোখা ও এডেন বন্দর থেকে জাহাজ নিয়ে পশ্চিম উপকূলে আসত এবং এখ