সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

নভেম্বর, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

Harshabardhana | হর্ষবর্ধন এর রাজনৈতিক অবদান

হর্ষবর্ধন এর রাজনৈতিক অবদান গুপ্ত পরবর্তী উত্তর ভারতের রাজনীতিতে হর্ষবর্ধন ছিলেন এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালের ইতিহাস জানা যায় বানভট্টের হর্ষচরিত, হিউ এন সাং এর ভ্রমণ বৃত্তান্ত বাঁশঘেরা লেখ, চালুক্য রাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর আইহোল লিপি প্রভৃতি উপাদান থেকে। হর্ষবর্ধন থানেশ্বরের পুষ্যভূতি বংশের শাসক । গৌড়ের রাজা শশাঙ্কের হাতে থানেশ্বরের রাজা রাজ্যবর্ধন মারা যান। কনৌজরাজ গ্রহবর্মন ছিলেন হর্ষবর্ধনের ভগিনীপতি নিঃসন্তান গ্রহবর্মনের মৃত্যু এবং ভগিনী রাজ্যশ্রী অপহরণের পর কনৌজের সিংহাসন শূন্য হয়ে যায় । এই প্রেক্ষিতে হর্ষবর্ধন একইসাথে থানেশ্বর ও কনৌজের রাজত্ব ভার গ্রহণ করেন। কনৌজ তার রাজধানী স্থাপন করেন ৬০৬ খ্রীষ্টাব্দ। সিংহাসন আরোহন এরপর হর্ষবর্ধন শশাঙ্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন। এই অভিযানে তিনি কামরূপরাজ ভাস্করবর্মন এর মিত্রতা লাভ করেছিলেন। রাজা হর্ষ প্রথমে বিন্ধ্যারণ্যে থেকে ভগিনী রাজ্য স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। শশাঙ্কের সঙ্গে তার যুদ্ধের ফল কি হয়েছিল তাই নিয়ে বিতর্ক আছে। রমেশচন্দ্র মজুমদার এর মতে শশাঙ্ক যতদিন জীবিত ছিলেন হর্ষবর্ধন গৌড়ের কোন ক্ষতি করতে পারেনি। শশাঙ্কের মৃত

Samudragupta | সমুদ্র গুপ্তের রাজনৈতিক অবদান

সমুদ্র গুপ্তের রাজনৈতিক অবদান  কুষাণদের পতনের ৫০ বছর বা  তার অল্প কিছু পরে উত্তর ভারতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসেবে গুপ্তদের উত্থান ঘটে। প্রথম গুপ্ত রাজা শ্রীগুপ্ত। তবে প্রথম শক্তিশালী গুপ্ত সম্রাট হলেন প্রথম চন্দ্রগুপ্ত। আর যে  সম্রাটের সময় গুপ্ত সাম্রাজ্য বিস্তৃত রূপ ধারণ করেছিল তিনি হলেন সমুদ্রগুপ্ত। সমগ্র উত্তর ভারতে সমুদ্রগুপ্ত তার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং দক্ষিণ ভারতের পূর্ব উপকূলে, এমনকি উপমহাদেশের বাইরেও তার প্রভাব বিস্তৃত হয়। সমুদ্রগুপ্তের মুদ্রা সমুদ্রগুপ্তের উত্তর ভারত আভিযান এলাহাবাদ প্রশস্তি থেকে সমুদ্রগুপ্তের রাজনৈতিক কৃতিত্বের বিবরণ পাওয়া যায়। এছাড়াও এরান(মধ্যপ্রদেশ) লেখ এবং বেশ কিছু মুদ্রা সমুদ্র গুপ্ত সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে। এলাহাবাদ প্রশস্তির সপ্তম স্তবকে এবং একাদশ স্তবকে সমুদ্রগুপ্তের উত্তর ভারত জয়ের বিবরণ আছে। তিনি উত্তর ভারতের নয়জন রাজাকে পরাজিত করেন। এরা হলেন রুদ্রদেব (বিদিশার রাজা), মতিল (বুলন্দ রাজা ), নাগ দত্ত (দত্ত নামধারী উত্তরবঙ্গীয় রাজা), চন্দ্রবর্মন (পুষ্করণা  অঞ্চলের রাজা), গণপতিনাগ (গঙ্গা যমুনা দোয়াব অঞ্চলের শাসক), নাগসেন (মথুরা ও সন্নিহি

Sources of Ancient Indian History: Archaeological : Coin | প্রাচীন ভারতের ইতিহাস উদ্ঘাটনে মুদ্রা

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস উদঘাটনে মুদ্রার ভূমিকা কি ছিল? নির্দিষ্ট ওজন বিশিষ্ট, ধাতব বিশুদ্ধিযুক্ত ধাতুর খন্ড যদি বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাকে মুদ্রা বলা হয়। মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব ৫ম -৬ষ্ঠ শতকে ভারতে মুদ্রা চালু হয়। এগুলি বিভিন্ন আকৃতিযুক্ত এবং এর একপিঠ ছাপওয়ালা। এগুলিকে অঙ্কচিহ্নিত মুদ্রা বলে। কোন রাজার নাম নেই বলে কে বা কারা জারি করেছিল তা বলা যায় না। শাসকের নাম ও প্রতিকৃতি যুক্ত মুদ্রা চালু হয় খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতকে ব্যাকট্রিয় গ্রিক রাজাদের দ্বারা। প্রথম দিকের মুদ্রাগুলি ছিল তামা ও রুপোর। কুষাণ রাজা কদফিসিসের আমলে সোনার মুদ্রার আবির্ভাব হয়। প্রাচীন ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে মুদ্রা বিশেষ সহযোগী। যে রাজা মুদ্রা জারি করেন তিনি সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। মৌর্যদের পরে উত্তর-পশ্চিম ভারতের যে গ্রিক রাজারা রাজত্ব করেছিলেন তাদের সম্পর্কে জানার একমাত্র উপাদান হল তাদের জারি করা মুদ্রা। ১ম - ২য় খ্রিষ্টাব্দে শক ও সাতবাহনদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়েছিল এবং সাতবাহনরা শকদের পরাজিত করেছিল। লিপির পাশাপাশি জোগলথম্বী হোর্ড থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। কারণ এখানকার মুদ্রাগুলি শক রাজা নহপ

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস উদ্ঘাটনে লিপি বা লেখ | Sources of Ancient Indian History: Archaeological : Inscriptions

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস উদ্ঘাটনে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানঃ লিপি বা লেখ ইতিহাস হল অতীত ও বর্তমানের মধ্যে নিরন্তর কথোপকথন। বর্তমানের জমিতে দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক ইতিহাস চর্চা করেন। অতীতে কি ঘটেছিল তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ঐতিহাসিককে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। যেখান থেকে তথ্য সংগৃহীত হয় তাকে ইতিহাসের উপাদান বলা হয়। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদানগুলিকে দু'ভাগে ভাগ করা হয় সাহিত্যিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক। প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের মধ্যে লিখিত এবং অলিখিত উপাদান রয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক মূলত চারটি ভাগে ভাগ করা হয় - 1. লিপি বা লেখ, 2. মুদ্রা, 3. স্থাপত্য বা শিল্পকর্ম, 4. সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ। প্রধান প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান হলো লিপি বা লেখ। পাথর, ধাতু বা মাটির ফলকের ওপর লিপি উৎকীর্ণ হয়। মুদ্রার ওপর উৎকীর্ণ লিখিত অংশও এক প্রকার লেখ। হরপ্পা সভ্যতার বিভিন্ন প্রত্নক্ষেত্রে খনন কার্যের ফলে প্রচুর সিলমোহর পাওয়া গেছে। এগুলির ওপর উৎকীর্ণ লেখগুলি আপাতত প্রাচীনতম লিখিত উপাদানের নিদর্শন। তবে সেগুলির সর্বজনসম্মত পাঠোদ্ধার এখনো সম্ভব হয়নি। লেখর ব্যাপক ব্যবহার দেখা গেল অশোকের আমলে। ব্রাহ্মী,খরোষ্টী লিপিতে অশোকের নির্দেশগ

Transition Debate: Dobb-Sweezy debate, Posts & Brenar |যুগসন্ধিক্ষণ: ডব-সুইজি বিতর্ক, পোস্তান, ব্রেনার

যুগসন্ধিক্ষণ: ডব-সুইজি বিতর্ক, মাইকেল পোস্তান, রবার্ট ব্রেনার কাল মার্কস সমাজ বিকাশের ধারাকে মোট চারটি পর্বে ভাগ করেছেন: আদিম সাম্যবাদ, দাস ব্যবস্থা, সামন্ত প্রথা এবং ধণতন্ত্র। পঞ্চম শতকে পশ্চিম ইউরোপে বর্বর জার্মানদের আক্রমণের পর থেকে সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার সূচনা হয়েছিল এবং ত্রয়োদশ শতকের মাঝামাঝি থেকেই এই ব্যবস্থার পতনের লক্ষনগুলি লক্ষ্য করা যাচ্ছে 14 শতকের মাঝামাঝি থেকে অবক্ষয়ের চিহ্নগুলি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এদিকে দ্বাদশ শতক থেকে ইউরোপে দূরপাল্লার বাণিজ্যের সুবাদে নগর জীবন প্রাণের সঞ্চার হচ্ছিল যা কৃষি সর্বোচ্চ অর্থনীতিকে আঘাত করছিল। পশ্চিম ইউরোপে আলোচ্য পর্বেই সামন্ততন্ত্রের অবসান ঘটে এবং ধনতন্ত্রের সূচনা হয়। এই দুই পর্বের সন্ধিক্ষণকে যুগসন্ধিক্ষণ বলা হয়। সামন্ততন্ত্রের অবক্ষয় সম্পর্কে পণ্ডিতরা সহমত হলেও তার কারণ গুলির আনুপাতিক গুরুত্ব বিষয়ে তাদের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য রয়েছে। যুগসন্ধিক্ষণ সংক্রান্ত প্রধান বিতর্কটি এসেছে মরিস ডব ও পল সুইজির পক্ষ থেকে ইতিহাসে ডব-সুইজি বিতর্ক নামে পরিচিত। মরিস ডব মরিস ডব Studies in The Development of Capitalism (1946) গ্রন্থে সামন্তপ্রথার পতনে

Akbar's Rajput Policy | আকবরের রাজপুত নীতি

আকবরের রাজপুত নীতি আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় ভারতের আঞ্চলিক রাজ্যগুলির মধ্যে রাজপুতদের শক্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। আবুল ফজলের বিবরণীতে তাদের সামরিক শক্তির বিবরন আছে। আকবর সহজেই উপলব্ধি করেন যে এই শক্তিশালী জনগোষ্ঠীকে শত্রু না বানিয়ে রাষ্ট্রপরিচালনায় এদের সহযোগী করে তোলাই সাম্রাজ্যের পক্ষে মঙ্গলজনক। তাই এক্ষেত্রে তিনি কূটনীতির আশ্রয় নিলেন। আকবরের রাজপুত নীতির তিনটি পর্ব লক্ষ্য করা যায়ঃ ১৫৭২ খ্রিস্টাব্দে গুজরাট অভিযান পর্যন্ত প্রথম পর্ব,  ১৫৭৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্ব এবং ১৫৭৮ এর পরে অবশিষ্ট বছরগুলি হলো তৃতীয় পর্ব। সুলতানি শাসনে একমাত্র আলাউদ্দিন খলজি ছাড়া কেউই রাজপুতদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেননি। হুমায়ুন অবশ্য বুঝেছিলেন যে স্থানীয় রাজন্যবর্গের সঙ্গে একটি স্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলা দরকার। এই উদ্দেশ্যে তিনি রাজপুতদের আফগান মিত্রতা থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। বৈরাম খাঁ নিজ আধিপত্য নিরঙ্কুশ করার জন্য চুগতাই অভিজাতদের দমন করে রাজপুতদের ক্ষমতার ভাগ দিয়েছিলেন। ১৫৬১-৬২ খ্রিস্টাব্দে আকবর রাজপুতনায় বিবাহ-কূটনীতি চালু করেছিলেন। সে সময় অম্বর-এর রাজা ভরমল ম

Deindustrialization debate | অবশিল্পায়ন বিতর্ক

অবশিল্পায়ন বিতর্ক Global contribution in World GDP অবশিল্পায়ন বলতে সব্যসাচী ভট্টাচার্য বুঝিয়েছেন, যদি দেশের মানুষ শিল্পকর্ম ছেড়ে চাষাবাদের জীবিকা অর্জন শুরু করে অর্থাৎ জাতীয় আয়ে কৃষিজ অংশ বাড়তে থাকে এবং শিল্পজ অংশ কমতে থাকে তাকে অবশিল্পায়ন বলে। ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অন্যতম ফলশ্রুতি ছিল অবশিল্পায়ন। যদিও ঔপনিবেশিক ঐতিহাসিকগণ অবশিল্পায়ন তত্ত্ব মানতে চান না। মুঘল যুগ থেকে কুটির শিল্পে ভারত বিশ্বে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছিল। বিশেষ করে বস্ত্র শিল্পের খ্যাতি ছিল জগৎজোড়া। ইংল্যান্ডে প্রথম শিল্প বিপ্লব হয়েছিল। তার নেগেটিভ প্রভাব পড়েছিল ভারতে। শিল্প বিপ্লব এবং ঔপনিবেশিক শাসন নীতির যৌথ আঘাতে ভারতে কুটির শিল্পের অবক্ষয় সূচিত হয়। অনেক ঐতিহাসিক অবশ্য অবশিল্পায়নের পশ্চাতে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব বা ঔপনিবেশিক ষড়যন্ত্রকে দায়ী করেন না। তাদের মতে সমসাময়িক রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, যেমন বর্গী আক্রমণ, ছিয়াত্তরের মন্বন্তর, ফকির ও সন্ন্যাসী বিদ্রোহ প্রভৃতি ঘটনা কুটির শিল্পের অগ্রগতির পথে অন্তরায় হয়েছিল। ডি. আর. গ্যাডগিল মনে করেন, আঠারো উনিশ শতকে দেশীয় রাজাদের ক্ষমতা হারানোর ফলে তাদে

Khalji Revolution | খলজি বিপ্লব

খলজি বিপ্লব জালাল উদ্দিন খলজি নেতৃত্বে খলজীগন ইলবারি তুর্কিদের বিরুদ্ধে জয় লাভ করলে ইলবারি তুর্কিদের হাত থেকে দিল্লির ক্ষমতা খলজি বংশের হাতে হস্তান্তরিত হয় ( ১২৯০ খৃঃ )। বলবনের পুত্র কায়কোবাদকে পরাস্ত করে খলজীরা ক্ষমতা দখল করেছিল। দিল্লিতে খলজীদের এই ক্ষমতা দখলকে আর. পি. ত্রিপাঠী ও এস কে লাল প্রমূখ ঐতিহাসিক 'খলজি বিপ্লব' নামে অভিহিত করেছেন। খলজি গণ তুর্কি বংশোদ্ভূত ছিল কিনা তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক আছে। জিয়াউদ্দিন বারানী খলজি গনকে তুর্কি জাতি থেকে সম্পূর্ণ পৃথক ও স্বতন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন।ঐতিহাসিক নিজামুদ্দিন মনে করেন খলজীরা চেঙ্গিস খানের জামাতা কুলিজ খানের বংশধর। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক মনে করেন খলজীরা তুর্কিদের একটি শাখা। আফগানিস্তানের হেলমন্দ নদীর উভয় তীর খলজ নামে পরিচিত ছিল। এখানে যেসব খলজীরা বসবাস করত তারা খলজী নামে পরিচিত হয়। দীর্ঘদিন আফগানিস্তানে থাকার ফলে এদের ভিতর আফগানি বৈশিষ্ট লক্ষ্য করা গেছিল।    তাবকত-ই-নাসিরি থেকে জানা যায়, খলজীগন সুলতান মাহমুদ ও মোহাম্মদ ঘরির সময় থেকেই ভারতে এসেছিলেন। তারা ধীরে ধীরে তুর্কি সুলতানদের অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন, জালাল উদ্দি

French Aristocracy Revolution | ফ্রান্সে অভিজাত বিদ্রোহ

ফ্রান্সে অভিজাত বিদ্রোহ ফরাসি বিপ্লব কে বুর্জোয়া বিপ্লব বলা হলেও, এই বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল অভিজাতদের দ্বারা। জর্জ লেফেভর অভিজাতদের বিদ্রোহ কে 'অভিজাত বিপ্লব' বলেছেন। বিপ্লবের প্রাক্কালে রাজকোষে চরম সংকট দেখা দিয়েছিল তার থেকে উত্তরনের জন্য ফরাসী সম্রাট বেশ কিছু সংস্কার প্রবর্তন করার চেষ্টা করেছিলেন, যেগুলো দ্বিতীয় এস্টেট বা অভিজাতদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছিল। এজন্যই অভিজাতরা রাজার বিরোধিতা করেছিলেন। তবে এর সঙ্গে ফরাসী বিপ্লবের মূল আদর্শ সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার কোন যোগ ছিল না।  ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি অর্থনীতির দায়িত্ব নিয়ে কালোন অভিজাত ও যাজকদের করের আওতায় নিয়ে আসার জন্য বিশদ পরিকল্পনা করেন, যার উদ্দেশ্য ছিল ন্যায্য কর নীতির প্রবর্তন করা এবং পর্যায়ক্রমে এমন একটি কর ব্যবস্থা চালু করা হবে, যার ফলে সম্পদশালীদের করের অতিরিক্ত বোঝা বইতে হবে। তিনি টাইল ও গ্যাবেলের ভার লাঘব এবং বেগার প্রথা বা কার্ভির প্রচলন কমানোর কথা বলেন। কালোন সরকারি ব্যয় হ্রাস ও স্ট্যাম্পশুল্ক ব্যাপক বিস্তৃত করার কথাও বলেন। এছাড়া তিনি ফ্রান্সের স্থানীয় শাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তনের কথা বলেন

Philosopher's Movement | French Revolution: 1989 | ফরাসী বিপ্লবের প্রাক্কালে দার্শনিকদের অবদান

১৮ শতক ইউরোপে জ্ঞানদীপ্তির যুগ। ফ্রান্স ছিল জ্ঞানদীপ্তির অন্যতম কেন্দ্র। ফেনেলো থেকে ফ্রান্সে যুক্তিবাদের জয়যাত্রা সূচনা হয়েছিল। ফরাসি দারশনিকরা কেবল দর্শন চর্চার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, তাঁরা সমকালীন ফরাসি রাষ্ট্র, সমাজ, অর্থনীতি ও ধর্মে পরিব্যপ্ত স্বৈরাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। ফরাসি বিপ্লব সময়কার বিখ্যাত তিনজন দার্শনিক হলেন, মন্টেস্কু ভলতেয়ার ও রুশো। মন্তেস্কু অভিজাত পরিবারের মানুষ হলেও উদারনৈতিক দর্শনের সমর্থক ছিলেন। তার  পার্শিয়ান লেটার্স    গ্রন্থে তিনি সমকালীন ফ্রান্সের স্বৈরাচার, দুর্নীতি, অভিজাততন্ত্রের স্বার্থপরতা ও চার্চের গোঁড়ামি তুলে ধরেন।  গ্রেটনেস এন্ড ডেকাডেন্স অব রোমানস্   গ্রন্থে দেখিয়েছেন কিভাবে ভৌগলিক পরিবেশ, জনসংখ্যা, প্রাকৃতিক সম্পদ একটি দেশের জীবনযাত্রা, আইন, শাসন, বিচারব্যবস্থা ইত্যাদির উপর প্রভাব বিস্তার করে। তিনি রোমান আইনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মন্টেস্কুর শ্রেষ্ঠ রচনা  দি স্পিরিট অফ দ্য লজ   প্রকাশিত হয় ১৭৪৮সালে। এই গ্রন্থে তিনি তার বিখ্যাত ক্ষমতা বিভাজন তত্ত্বের ব্যাখ্যা করেন। ইংল্যান্ডে গিয়ে মন্তেস্কুর ধারণা হয়েছিল সরকারের তিনটি পৃথক