প্রাচীন রাজতন্ত্র: মিশরীয় সমাজের বিভিন্ন স্তর
যেকোনো কৃষিজীবী সমাজের মতোই প্রাচীন মিশরীয় সমাজ বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত ছিল ।সমাজের সবচেয়ে উপরে ছিল রাজা বা ফ্যারাও। তিনি সাক্ষাৎ ভগবান। তার সাথে তার পরিবারের সদস্যরাও সমাজের উপরতলায় স্থান করে নিত। পরিবারের সদস্যরা অনেকে রাষ্ট্রশাসন বা মন্দির শাসনের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন। রাজার পরেই স্থান হত রাজপুরুষদের। আপাতভাবে বলা হয় যে প্রাচীন রাজতন্ত্রের যুগে শাসক আর শাসিত এই দুটি ভাগ ছিল। রাজপুরুষরা সুবিধাভোগী শাসক শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হতেন। এরা ছিলেন সমাজের শিক্ষিত অংশ। কর আদায়, সেচ ব্যবস্থার তদারকি প্রভৃতি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন কাজে এরা যুক্ত থাকতেন। রীতি ছিল যে, ফ্যারাও-এর সমাধির চারপাশে রাজপুরুষদের কবর দেওয়া; কারণ এরা রাজার মৃত্যুর পরও রাজার সহযোগী হিসেবে থেকে যাবেন।
প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে বোঝা যায় মিশরীয় সমাজে মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব ছিল। নিচুপদস্থ কর্মচারীরা এবং হস্তশিল্পীরা এর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কৃষক সম্প্রদায়ের থেকে সমাজে এরা অনেক বেশি মর্যাদা পেতেন।
সমাজের একেবারে নিম্নস্তরে ছিল কৃষক। কৃষকদের বড় অংশ ছিল ভূমিদাস। জমির মালিক ছিলেন ফেরাও নিজে। ভূমি দাসদের রাজকীয় মন্দির এবং অন্যান্য রাজকীয় জমিতে কাজ করতে হত। সম্ভবত ফসলের একটা অংশ ভূমিদাসদের বেঁচে থাকার জন্য দেওয়া হত। জমি হস্তান্তরিত হলে ভূমিদাসেরাও হস্তান্তরিত হতেন। প্রাচীন রাজতন্ত্রের শেষ লগ্নে কিছু ছোটো চাষির কথা জানা যায়। এরা ফ্যারাওকে কর দিয়ে জমি চাষ করতে পারত।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন