সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্রাচীন রাজতন্ত্র: মিশরীয়দের ধর্মবিশ্বাস | Old Kingdom: Egyptian Religious Thinking

প্রাচীন রাজতন্ত্র: মিশরীয়দের ধর্মবিশ্বাস

প্রাচীন মিশরের ধর্ম বিশ্বাস বুঝতে হলে মিশরের প্রকৃতি, বিশেষ করে নীলনদের গুরুত্ব বুঝতে হবে। নীলনদ মিশরের তটভূমিকে জলসিক্ত করে জীবনের সঞ্চার করে থাকে, সেখানে শস্য জন্মায়। প্রতি বছর নীল-নদের জন্ম-মৃত্যুর আবর্তন দেখা দেয়। প্রতি বছরের বর্ষায় দুকূল ভাসিয়ে দেয়, তারপর জল যখন নেমে যায় কৃষিক্ষেত্রে পলি পড়ে উর্বর হয় এবং সেখানে সবুজ শস্য জন্মায়। এই পর্ব জীবনের পর্ব। গ্রীষ্ম এলে উপত্যকা ভূমি প্রাণহীন হয়ে যায়। মিশরীয় চিন্তা অনুযায়ী সূর্যদেবের উদয় এবং অস্ত তাঁর জীবন মরণের বিচিত্র লীলা। মিশরীয়রা যেমন নৌকায় ভ্রমণ করে, সূর্যদেব রেতেমন আকাশ নামক জল ভাগে নৌকায় করে উদয় হন। এই পর্ব জীবনের পর্ব তথা আলোর পর্ব। ১২ ঘন্টা আলোর পর্ব পেরিয়ে সূর্যদেব অন্ধকার পর্বে প্রবেশ করে, যা মৃত্যুর রাজ্য।

মিশরীয় ধর্মের মেরুদন্ড অসিরিস মিথ। পঞ্চম রাজবংশের রাজত্বকালের আগেই সূর্যদেব রে-এর পুত্র ফ্যারাওয়ের সঙ্গে কৃষি দেবতা অসিরিস ঐক্যের বাঁধনে বাঁধা পড়েন। ক্রমে অসিরিস পূজাই জনগণের ধর্মে পরিণত হয়। অসিরিসের পিতা পৃথিবী দেবতা গেব এবং মাতা আকাশদেবী ধৎ। অসিরিসের এক ভাই অপদেবতা সেট বা সুট, অসিরিসের স্ত্রী আইসিস, অসিরিস ও আইসিসের পুত্র হোরাস। সেট/সুট ষড়যন্ত্র করে অসিরিসকে মেরে ফেলে এবং টুকরো টুকরো করে মিশরের নানা স্থানে পুতে দেয়। একটি ছবিতে দেখা যায় অসিরিস শুয়ে আছেন এবং তার দেহ থেকে যবের চারা ফুঁড়ে উঠেছে। আসলে অসিরিসের দেহখন্ড বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়ার অর্থ হল আবাদি জমির ওপর শস্য বীজ ছড়ানোরই ইঙ্গিত। মরনের পর অসিরিস হয়ে যান মৃতের রাজা।

মিশরীয়দের পরকালে বিশ্বাস ছিল । সূর্যপুত্র ফ্যারাও মারা গেলে তিনি মৃতের দেবতা অসিরিসে পরিণত হতেন। মন্দির গাত্রে উৎকীর্ণ ছবিগুলিতে দেখা যায় মৃতের রাজ্যের কল্পনার ছাপ। এই দানব কুলে ঠাঁই পেয়েছে অপদেবতা এবং বিভিন্ন সাপ। প্রত্যেক দানবই দেবতাদের প্রতি শত্রু অথবা বন্ধুত্বপূর্ণ। যেমন সূর্য দেবতার শত্রু হলো সর্পরাজ আপোপিস। এই আঁধারের দেবতা প্রতিনিয়তই সূর্যকে গ্রাস করে চলেছে রাতের অন্ধকারের। মৃতের জীবন নিয়ে যেসব কথা প্যাপিরাস বা সমাধির উপর লেখা আছে সেগুলিকে সংকলিত করে কতগুলি গ্রন্থ লেখা হয়েছে; যেমনঃ Book of Amdust, Book of the Gates এবং Book of the Dead.

কালক্রমে সকল মানুষই যখন মৃত্যুর পর অসিরিসে পরিণত হচ্ছিল তখন পাপ-পুণ্যের বিচারের দরকার হল। মানুষ মারা গেলে তার আত্মা কাঅসিরিসের দরবারে যায় এবং সেখানে পাপপুণ্যের বিচারের পর স্বর্গ এবং নরক নির্দিষ্ট হয়। মৃতের গ্রন্থ (Book of the Dead) অনুশারে শেয়ালমুখো দেবতা আনুবিস পথ দেখিয়ে নিয়ে আসেন মৃত ব্যাক্তিকে অসিরিসের দরবারে। সেখানে তাকে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে হয় নতুবা ৪২ টি পাপের নাম করে নিজেকে নির্দোষ ঘোষনা করতে হয়। তার সত্যপাঠ যাচাই করেন জ্ঞানের দেবতা ধত (Thoth) এবং অসিরিসপুত্র হোরাস। মৃতের হৃদপিন্ড দাঁড়িপাল্লার একদিকে রেখে অন্যদিকে থাকে ন্যায়ের প্রতীক (Symbol of Justice)। এভাবে তার পাপ-পূন্যের বিচার হয়। জ্ঞানের দেবতা ধত ফলাফল ঘোষণা করেন। শাস্তি বা পুরস্কার সম্পর্কে বিস্তৃত কিছু পাওয়া যায় না। তবে দুস্কৃতকারীকে কোন ভক্ষকের কাছে দেওয়া হত তাকে ধ্বংস করার জন্য। অন্যদিকে ফটকের গ্রন্থে (Book of the Gate) বলা হচ্ছে, পরলোকে বিভিন্ন দরজা দিয়ে বিচার কামরায় ঢুকতে হয়। বিচার কামরার সংলগ্ন দুটি স্বর্গ ও নরককুণ্ড। পুণ্যাত্মারা আলু নামক স্বর্গে প্রবেশ করেন, যেখানে তারা মহানন্দে শস্যক্ষেত্র চাষ করেন এবং পাপাত্মাদের নরকে খুঁটির সাথে বেঁধে রাখা হয়, অগ্নিকুণ্ডে অথবা মহাসমুদ্রে নিক্ষেপের জন্য।  পূণ্যবান ব্যক্তি স্বর্গে থাকাকালীন চাইলে যেকোন প্রাণী রূপে পৃথিবীতে পুনর্জন্ম নিতে পারে। 

মিশরীয়রা প্রাকৃতিক শক্তিকেও পূজা করত। জলহস্তি, কুমির, ঘাস, ছাগল, কুকুর, শিয়াল সকল উদ্ভিদ বা প্রাণী ছিল কোন না কোন দেবতার প্রতীক। যেমন- হোরাসের প্রতীক বাজপাখি। রোমান লেখক প্লুটার্ক উল্লেখ করেছেন, মেন্ডিস নামক একটি জায়গায় ছাগলের সঙ্গে অতি সুন্দরী রমণীর যৌন সংযোগ ঘটানো হত। অসিরিসের যৌন সম্ভোগের জন্য স্ত্রীলোককে সেজন্য উৎসর্গ করতে হত। ছাগল ও বৃষ ছিল উর্বরতার প্রতীক। মনে রাখতে হবে অসিরিসের মূর্তির প্রধান অঙ্গ ছিল পুরুষ লিঙ্গ। নানান অদ্ভুত উপায়ে মিশরে লিঙ্গ পুজা হত। এর প্রমাণ বিভিন্ন প্রাচীন চিত্রে পাওয়া যায়।

এতক্ষন যা আলোচিত হল তা ছিল মিশরীয় ধর্মবিশ্বাসের প্রাতিষ্ঠানিক ধারা, রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা ধর্মীয় বিশ্বাস, যা সমগ্র দেশকে আবৃত্ত করতে চায়। কিন্তু এই ধারার বাইরেও বিভিন্ন প্রদেশে, বিভিন্ন নগরীতে আঞ্চলিক উপাসনার ধারা বজায় ছিল। উদাহরনস্বরূপ বলা যায়, আস্যুত প্রদেশে জনপ্রিয় দেবতা ছিলেন খেনশিয়ামেনতিউ বা শেয়াল দেবতা, থিবস-এ স্যেবেক বা কুমীর দেবতা, হেরাক্লিও তে জনপ্রিয় ছিলেন আরসাফেস বা রাম ছাগল রুপি দেবতা এবং মেম্ফিসে উপাসিত হতেন সোকার বা ঈগলমুখী দেবতা। এই উপাসনাগুলি প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত প্রতীক বা টোটেমকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল। এছাড়াও এমন কিছু ব্যতিক্রমী তথ্য পাওয়া যায় যে একটা সংখ্যক মানুষের মৃত্যু পরবর্তী জীবন সম্পর্কে কোনো বিশ্বাস ছিল না। 

মিশরীয় সমাজে পুরিহিতরা একটি প্রভাবশালী শ্রেণী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। এরা সরাসরি রাজশক্তির ভাগীদার না হলেও রাজনীতিতে এদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকত। রাজতন্ত্রের সংকটের সময় পুরোহিতদের জনগনের মনের উপর যে নিয়ন্ত্রণ থাকত তা কাজে আসত। প্রাচীন রাজতন্ত্রের যুগে হেলিওপলিশের (Heliopolis) পুরহিতরা বিশেষ মর্যাদা পেতেন। হেলিওপলিস মেম্ফিসের কাছে অবস্থিত ছিল। হেলিওপলিসের পুরোহিতরা অটুমের (Atum) পুজা করতেন এবং এরা সূর্য দেবতা 'রে' কে অটুমের সাথে অভিন্ন প্রতিপন্ন করেছিলেন। এভাবে তারা সমাজে অটুমের গ্রহনযোগ্যতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। অটুম-রে কাল্ট মিশরিয় সমাজে প্রভাবশালি কাল্ট হিসাবে আত্ম প্রকাশ করেছিল। চতুর্থ রাজবংশের পতনের পর মিশরীয় রাজনীতিতে যখন সংকটময় পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছিল তখন হেলিওপলিশের পুরহিতরা নিজেদের রাজনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছিল এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ রাজবংশের সময়ে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল। 

The Old Kingdom: Egyptian Religious Beliefs

To understand the religious beliefs of ancient Egypt, one must grasp the significance of the Nile River in Egypt's nature. The Nile nourishes Egypt's lands, bringing life and allowing crops to grow. Every year, the Nile goes through cycles of birth and death. During the annual floods, it overflows its banks, and when the waters recede, the fields become fertile with silt, allowing green crops to sprout. This cycle represents the cycle of life. In summer, the valley land becomes lifeless. According to Egyptian thought, the rising and setting of the sun god symbolize his life and death. Just as Egyptians travel by boat, the sun god Ra rises in a boat on the sky's waters. This represents the period of life and light. After 12 hours of light, the sun god enters the dark period, the realm of death.

The backbone of Egyptian religion is the Osiris myth. Before the Fifth Dynasty, the sun god Ra's son, the Pharaoh, was diluted with the agricultural god Osiris. Gradually, Osiris worship became the religion of the people. Osiris' father was the earth god Geb, and his mother was the sky goddess Nut. Osiris had a brother, the evil god Set or Seth, a wife, Isis, and a son, Horus. Set conspired to kill Osiris and scattered his body parts throughout Egypt. In one depiction, Osiris is shown lying down with barley sprouts growing from his body. This scattering of Osiris' body symbolizes the sowing of seeds on cultivated land. After death, Osiris becomes the king of the dead.

The Egyptians believed in the afterlife. When the sun god's son, the Pharaoh, died, he became the god of the dead, Osiris. Temple carvings depict the imagery of the realm of the dead, filled with demons and various serpents. Each demon was either hostile or friendly towards the gods. For example, the serpent king Apep was the enemy of the sun god. This dark deity continuously tried to devour the sun during the night. Various texts about the deceased's life have been compiled into books such as the "Book of Amduat," "Book of Gates," and "Book of the Dead."

Over time, as everyone became Osiris after death, the need for judgment of sins and virtues arose. When a person died, their soul, or "ka," would go to Osiris' court, where their sins and virtues were judged, determining their fate in heaven or hell. According to the "Book of the Dead," the jackal-headed god Anubis would guide the deceased to Osiris' court. There, the deceased would have to repent for their actions or declare their innocence by listing 42 sins they did not commit. The god of wisdom, Thoth, and Horus, Osiris' son, would verify their truthfulness. The deceased's heart would be weighed against the symbol of justice on the scales. Thoth would announce the results. While the texts do not elaborate on rewards or punishments, wrongdoers would be handed over to a devourer for destruction. The "Book of Gates" describes that in the afterlife, one must pass through various gates to enter the judgment chamber. Adjacent to this chamber are two regions: a heavenly field for the righteous, where they joyfully cultivate crops, and a hellish pit for the wicked, bound to stakes and cast into fire or the ocean. The righteous in heaven could choose to reincarnate on earth as any creature.

The Egyptians also worshipped natural forces. Animals like hippos, crocodiles, goats, dogs, and jackals, as well as plants, were symbols of various gods. For instance, Horus was symbolized by a falcon. Roman writer Plutarch mentioned that in a place called Mendes, a beautiful woman would have intercourse with a goat, dedicated to Osiris. The goat and the bull were symbols of fertility. It should be noted that the prominent feature of Osiris' statue was the phallus. Phallic worship in various forms is evidenced by ancient Egyptian artwork.

The discussed religious beliefs represent the institutionalized religion supported by the state, encompassing the entire country. However, beyond this, regional worship practices persisted in various provinces and cities. For example, in Asyut, the popular deity was the jackal god Khentyamentiu; in Thebes, the crocodile god Sobek; in Heracleopolis, the ram god Hershef; and in Memphis, the hawk-headed god Sokar. These worship practices centered around ancient symbols or totems. Additionally, some records indicate that a segment of the population did not believe in an afterlife.

In Egyptian society, priests emerged as a dominant class. While they did not directly share royal power, they played a significant role in politics. During times of royal crisis, the priests' control over the people's minds proved handy to reduce public outrages. During the old kingdom, the priests of Heliopolis (near Memphis) held special prestige. They worshipped Atum and identified the sun god Ra with Atum, thereby enhancing Atum's acceptance in society. The Atum-Ra cult became a powerful influence in Egyptian society. After the fall of the Fourth Dynasty, when political crises arose in Egypt, the priests of Heliopolis gained political power, which further increased during the Fifth and Sixth Dynasties

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল তা জনজীবনে তীব্রভ

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগার:-   কোনো ব্যাক্তিগত বা অলাভজনক