সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

The Satsuma Rebellion, 1877 | ১৮৭৭ এর সাৎসুমা বিদ্রোহ

১৮৭৭ এর সাৎসুমা বিদ্রোহ মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর মেইজি কর্তৃপক্ষ জাপানে সামন্ত ব্যবস্থার অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল, যেগুলি সরাসরিভাবে জাপানের ঐতিহ্যগত সামরিক শ্রেণী সামুরাইদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছিল। এর প্রতিক্রিয়াই ছিল একেরপর এক সামুরাই বিদ্রোহ, যার মধ্যে অন্যতম ছিল সাৎসুমা বিদ্রোহ (১৮৭৭ খ্রি:)। জাপানের মোট জনসংখ্যা ৩৪ মিলিয়নের মধ্যে ১.৭৫ মিলিয়ন ছিল সামুরাই। টোকুগাওয়া যুগে দীর্ঘদিন ধরে কোন যুদ্ধ না থাকায় সামুরাই শ্রেণীর একটা বড় অংশ তাদের দীর্ঘ অবসর সময়ে নিজেরা নিজেদেরকে শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং প্রশাসন ব্যবস্থায় নিযুক্ত করেছিল। তাই বহু সামুরাই প্রশাসন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে নিজেদের ভবিষ্যৎ খুঁজে নিয়েছিল। কিন্তু তখনও একটা বড় অংশই থেকে গেছিল যারা পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় সামরিক কাজের উপর নির্ভরশীল ছিল। মেইজী সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সামুরাইদের মাইনে বন্ধ করে দিয়ে পেনশনের ব্যবস্থা করে এবং কিছুদিন পরে সেই পেনশন বন্ধ করে দিয়ে এককালীন একটা টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এর ফলে সামুরাইদের জীবনযাত্রার মানের অবনতি হয়। দ্বিতীয়তঃ মেইজি সরকার আইন জারি করে

বাংলা থিয়েটারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

বাংলা থিয়েটারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বাংলা থিয়েটার এবং বাংলা নাট্যসাহিত্যের নিঃসঙ্গ পথিক। সময়ের দিক থেকে তাঁর স্থান নির্দেশ করা দুরূহ। তেমনি আবার তার থিয়েটার শৈলীর গায়ে কোন প্রচলিত সংজ্ঞার লেভেল এঁটে দেওয়া অসম্ভব। দীর্ঘ সময় জুড়ে তিনি নাটক রচনা করেছিলেন। উদ্দেশ্য, বিষয়বস্তু, নাট্যশরীর গঠন, ভাষা এবং ভঙ্গিতে এদের মধ্যে দেখা যায় বিস্ময়কর বৈচিত্র্য। বস্তুত তাদের মধ্যে কয়েকটি আবার নাটকের পরিচিত সংজ্ঞাকেও অতিক্রম করে যায়। তিনি প্রচলিত ধারা থেকে আলাদা। তাঁর নাট্যরচনা ও থিয়েটারের ধারণা গড়ে তুলেছিল এক স্বতন্ত্রের ঐতিহ্য। রবীন্দ্রনাথ প্রথম মঞ্চাভিনয় করেন ১৮৭৭ সালের এক পারিবারিক অভিনয়ে তাঁর দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথের লেখা একটি নাটকে। তাঁর প্রথম প্রকাশ্য অভিনয় অবশ্য ঘটে ' বাল্মিকী প্রতিভা ' নাটকে। তাঁর নিজের রচিত এই সাংগীতিক নাটকটি রামায়ণ রচয়িতা মহাকবির জীবন সংক্রান্ত ঘটনাবলী নিয়ে রচিত। যে সমস্ত আমন্ত্রিত দর্শকূল অভিনয় দেখেন তাদের মধ্যে ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এবং স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন রবীন্দ্রনাথের বয়স ২১। এর পর থেকে দীর

ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ | Vietnam War

ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ | Vietnam War দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধ একাধারে উপনিবেশবাদ ও নয়াউপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে গনসংগ্রামের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং এশিয়ার মাটিতে ঠান্ডা লড়াইয়ের উৎকট বহিপ্রকাশ। ভিয়েতনামের মুক্তি সংগ্রামের দুটি পর্ব - প্রথমটি ফরাসি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম (১৯৪৫-৫৪) এবং দ্বিতীয়টি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম (১৯৫৪-৭৫)। হো-চি-মিনের নেতৃত্বে শেষপর্যন্ত ভিয়েতনামের জনগনের জয় হয়েছিল এবং স্বাধীন সমাজতন্ত্রী ঐক্যবদ্ধ ভিয়েতনাম আত্মপ্রকাশ করেছিল।  ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রথম পর্ব  ভিয়েতনাম সহ অন্নাম, টংকিং ও কোচিন চীন তথা সমগ্র ইন্দোচীনের উপর ফরাসি উপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাময়িক ভাবে ইন্দোচীন জাপানের অধীনে চলে যায়। বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর ফ্রান্স পুনরায় মার্কিন চাপের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইন্দোচীনের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে উদ্যত হয়। এদিকে বামপন্থী নেতা হো-চি-মিন-এর নেতৃত্বে প্রবল সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাম গড়ে ওঠে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ত

কিউবা-মার্কিন সম্পর্ক| | Cuba-USA Relationship

কিউবা-মার্কিন সম্পর্ক| | Cuba-USA Relationship ফালজেন্সিও বাতিস্তা দ্বিতীয়বার কিউবায় ক্ষমতা আরোহন করে (১৯৫২) স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিমধ্যে ফিদেল কাস্ত্রো ও তার ভাই রাউল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে প্রতিবাদী আন্দোলন কিউবায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। কাস্ত্রো ভাতৃদ্বয় কিউবায় বেশ জনসমর্থন লাভ করেন। মার্কিন প্রশাসনও বাতিস্তার স্বৈরশাসনে বিরক্ত হয়ে ওঠে। এমন সময় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে ফিদেল কাস্ত্রো বিপ্লবের মাধ্যমে কিউবায় ক্ষমতা দখল করেন। প্রথমদিকে কিউবার সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক মোটামুটি ভালই ছিল। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে ফিদেল কাস্ত্রো কিউবায় আধুনিকীকরণের জন্য যে একের পর এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল সেগুলি মার্কিন স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছিল। একই সাথে সোভিয়েত তথা কমিউনিস্ট দুনিয়ার সঙ্গে কাস্ত্রোর সংসর্গ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। এর ফলে মার্কিন এর সাথে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল এবং একটা সময় তা সংঘর্ষের রূপ পরিগ্রহ করেছিল। ফিদেল ক্ষমতায় এসে প্রথম দিকে মার্কিন বিরোধিতার পরিচয় দেননি। বাতিস্তার অপশাসন মার্কিনকে ফিডেলের প্রতি সুহৃদ করেছিল। ফিদেলকে মার্কিন সরকার একজন সংস্কারপন্থী শাসক হিসেবেই দেখেছিল। ১৯৫৯ খ

SAARC

 SAARC  ১৯৮০ দশকেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিকে নিয়ে একটি আঞ্চলিক সংগঠন গড়ে তোলার সর্বপ্রথম পরিকল্পনা করেছিলেন তদানীন্তন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এই পরিকল্পনার ফলশ্রুতি হিসেবে পরবর্তীকালে গড়ে ওঠে সার্ক অর্থাৎ South Asian Association for Regional Cooperation (SAARC)। ১৮৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে সার্কের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। বর্তমানে যে সাতটি দেশ সার্কের অন্তর্ভুক্ত সেগুলি হল বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকা।  সার্কের সনদে এই সংগঠনের যে উদ্দেশ্যগুলির কথা বলা হয়েছিল সেগুলি হল ১) দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের কল্যাণ ও জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। ২) এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং প্রতিটি ব্যক্তির মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। ৩) দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ঐক্য ও আত্মবিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করা। ৪) পারস্পরিক বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে একে অন্যের সমস্যা উপলব্ধি করা। ৫) অর্থনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা স্থাপন করা।  ৬) অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে

ASEAN

 ASEAN দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ওঠে বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন। এশিয়া মহাদেশে গড়ে ওঠা এরকম একটি আঞ্চলিক সংগঠন হলো আসিয়ান। ১৯৬৭ সালের আগস্ট মাসে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার পাঁচটি রাষ্ট্র থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন এবং সিঙ্গাপুর মিলিত হয় এবং নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার উদ্দেশ্যে আসিয়ান (ASEAN) গড়ে তোলে। পরবর্তীকালে আসিয়ানে যথাক্রমে যোগদান করে ব্রুনেই, ভিয়েতনাম, লাওস, মায়ানমার এবং কম্বোডিয়া। বর্তমানে আসিয়ানের মোট সদস্য সংখ্যা দশ এবং ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা শহরে এর স্থায়ী সচিবালায় অবস্থিত। ১১৯৬৭ সালের ব্যাংকক ঘোষনায় আসিয়ানের মুখ্য উদ্দেশ্যগুলি ঘোষণা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রগতি এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা উদ্দেশ্যে আসিয়ান কাজ করবে। এছাড়া এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা এবং প্রসারের উদ্দেশ্যে ও নিজেকে নিয়োজিত করবে। ১৯৭৬ সালে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত প্রথম আসিয়ান সম্মেলনে এই সংগঠনের মৌলিক নীতিগুলি ঘোষিত হয়। মৌলিক নীতিগুলি হল: ১

আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (IMF)

আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (IMF) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে যে অর্থনৈতিক অবক্ষয়, অনিশ্চয়তা ও সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তাকে আরো জটিল ও ভয়াবহ করে তুলল। পরবর্তী ইউরোপের অর্থনৈতিক চেহারা কেমন হবে, কিভাবে আর্থিক লেনদেনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠবে নতুন বিশ্ব, আন্তর্জাতিক অর্থনীতি কোন পথে চলবে, এর চালিকাশক্তিই বা কে হবে-- এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করলেন তৎকালীন মার্কিন বাণিজ্য সচিব হেনরি মর্গানথো। সম্মেলন বসল ১৯৪৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিটন উডসের মাউন্ট ওয়াশিংটন হোটেলে। সারা বিশ্বের ৪৪টি দেশের ৭০০ জন প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করলেন এবং সম্মেলনের প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৪৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার প্রতিষ্ঠিত হলো। ১৯৪৭ সালের ১লা মার্চ থেকে এই সংস্থা তার কাজ শুরু করলো। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের একাধিক ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল:  ১) আর্থিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহায়তার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ২) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো যাতে সদস্য রাষ্ট্রগুলির সর্বাধিক কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঘটে। ৩) সদস্য রাষ্ট্রগ

মধ্য পুরাপ্রস্তর যুগ | Middle Paleolithic Age | Mousterian Culture

মধ্য পুরাপ্রস্তর যুগ নিম্নপুরা প্রস্তর যুগের পরবর্তী স্তর মধ্য পুরা প্রস্তর যুগ নামে পরিচিত। মধ্য পুরা প্রস্তর যুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কৃতির নাম হল মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতি। ফ্রান্সের লা মুস্তের এলাকায় প্রথম মধ্য পুরাপ্রস্তর যুগের সাক্ষ্য পাওয়া গেছে বলে এই সংস্কৃতি মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতি নামে পরিচিত। মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতির সূচনা আজ থেকে প্রায় এক লক্ষ আটাশ হাজার বছর আগে। ভূতাত্বিক প্লেইস্টোসিন পর্বে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ কমতে থাকে এবং একের পর এক তুষার যুগের আবির্ভাব হয়। দুটি তুষার যুগের মাঝে অপেক্ষাকৃত উষ্ণতর একটি পর্ব থাকে। এরকম শেষ তুষার যুগের আগের যে উষ্ণতর পর্ব সেই পর্বেই মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল। Remain of Neanderthal Skull মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতির শ্রষ্ঠা হল নিয়েন্ডার্থাল মানব। নিয়েন্ডার্থাল মানব পশু শিকারে পারদর্শী ছিল। তাদের স্বীকার করা পশুগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল বাইসন, ঘোড়া, লাল হরিণ এবং বলগা হরিণ। মাছ এবং সামুদ্রিক প্রাণীই তাদের খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। অপেক্ষাকৃত উষ্ণতর আবহাওয়ার জন্য বহু সমুদ্র উপকূল জলস্রোত এবং নদী তৈরি হয়েছিল এবং সেখান থেকেই তারা মা

নিম্ন পুরা প্রস্তর যুগের জীবন চিত্র | Lower Paleolithic Age

নিম্ন পুরাপ্রস্তর যুগ মানব সভ্যতার একেবারে প্রাচীনতম পর্ব প্রস্তর যুগ নামে পরিচিত। এই পর্বে মানুষ প্রথম আয়ুধ নির্মাণ ও তার ব্যবহার আয়ত্ব করে এবং এই আয়ুধগুলির অধিকাংশ ছিল প্রস্তর নির্মিত। তাই এই পর্ব প্রস্তর যুগ নামে পরিচিত। আয়ুধ নির্মাণ সংস্কৃতি ও আর্থ সামাজিক বিকাশের উপর ভিত্তি করে প্রস্তর যুগকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে- পুরা প্রস্তর, মধ্য প্রস্তর এবং নব্য প্রস্তর যুগ। ওই একই ভাবে আবার পুরাপ্রস্তর যুগকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে- নিম্ন পুরাপ্রস্তর, মধ্য পুরা প্রস্তর ও উচ্চ পুরা প্রস্তর যুগ। প্রস্তর তথা নিম্ন পুরা প্রস্তর যুগের সূচনা আজ থেকে আনুমানিক ২.৫ মিলিয়ান বছর আগে।  Australopithecus Robustus -রা প্রথম হাতিয়ার ব্যবহার করলেও হাতিয়ার নির্মাণের ধারাবাহিকতা দেখা যায় অপেক্ষাকৃত উন্নত প্রজাতি হোমো হ্যাবিলিসের হাত ধরে। নিকোলাস টথ দেখিয়েছেন আয়ুধ নির্মাণের জন্য কেবল দুই হাতের ব্যবহার নয়, গভীর মানসিক সংযোগ এবং কল্পনাশক্তির প্রয়োজন হয়, যা সম্ভব হয়েছিল Homo Habilis দের অপেক্ষাকৃত বৃহৎ মগজের (৮০০ সি. সি.) জন্য। প্রথম দিকের হাতিয়ার গুলি ছিল প্রযুক্তির একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের। ধিরে ধিরে সেগ

উপমহাদেশে নব্যপ্রস্তর যুগ | Neolithic Period in the Indian Subcontinent

উপমহাদেশে নব্যপ্রস্তর যুগ শুধু  ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস এই নয়, সমগ্র মানবজাতির ইতিহাসে নব্য প্রস্তর যুগ এক তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। উপমহাদেশে নব্য প্রস্তর যুগের সবচেয়ে ভালো নিদর্শন পাওয়া যাবে মেহেরগড়ে। মানব সভ্যতার এই স্তরে হাতিয়ার তৈরীর কৌশল উন্নততর হওয়ার পাশাপাশি সমাজে একাধিক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছিল, যার দিকে নজর রেখে জি. চাইল্ড নব্য প্রস্তর যুগকে বিপ্লব বলে অভিহিত করেছেন।  এই পর্বে মধ্য প্রস্তর যুগের ক্ষুদ্রাশ্মীয় আয়ুধের ব্যবহার অব্যহত ছিল, তবে তার বৈচিত্র্য ক্রমশ বৃদ্ধি পেল। নব প্রস্তর যুগের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো কৃষির উন্মেষ। এশিয়ার জেরিকোতে ৮ হাজার কিংবা ৭ হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রথম কৃষির প্রকাশ দেখা গিয়েছিল। উপমহাদেশেও এর রেশ দেখা গেল।  কৃষির অবিস্কারের ফলে মানুষ খাদ্য সংগ্রাহক থেকে হয়ে গেল খাদ্য উৎপাদক। এই ঘটনা মানুষের জীবনযাত্রায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনল। চাষের জন্য বীজ বোনা থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়াটি দীর্ঘদিনের ব্যাপার। তাই মানুষ এবার ক্রমশ স্থায়ী বসতি গড়ে তুলল। কৃষি উৎপাদন সঞ্চয় করে রাখা যায়। শিকার নির্ভর ও পশুপালন নির্ভর জীবনে সামাজিক ধন-সম্ব