নেপোলিয়নের অভ্যন্তরীণ সংস্কার
ফ্রান্সে মধ্যপন্থী বুর্জোয়াদের ডিরেক্টরির শাসনে বিপ্লবের বেগ স্থিমিত হয়ে আসছিল। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছিল। এইরকম সময়ে নেপোলিয়ন ফ্রান্সের প্রথম কনসাল হিসাবে নিযুক্ত হন এবং ক্ষমতার শিখরে পৌঁছে যান (১৭৯৯)।
নেপোলিয়ন তার স্মৃতিকথায়, তাঁর সংস্কারগুলিকে তাঁর চল্লিশটি যুদ্ধের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তার সংস্কারগুলি ছিল স্থায়ী ও সুদূর প্রসারী। তার জীবনীকাররাও স্বীকার করেছেন ফরাসি বিপ্লব তাঁকে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিল। তবে বিপ্লবের মৌলিক আদর্শ, সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতাকে তিনি মনে প্রাণে গ্রহণ করতে পারেননি। তাঁর ধারণা ছিল ফরাসিরা (বুর্জোয়ারা) বিপ্লব করেছিল আত্মম্ভরিতা ক্ষুন্ন হয়েছে বলে, স্বাধীনতা বা সাম্যের জন্য নয়।
নেপোলিয়ান বুঝেছিলেন গত ১০ বছরে ফ্রান্সের মানুষের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। গণসার্বভৌমত্ব, জনগণের ইচ্ছায় আইন প্রণয়ন, নাগরিক অধিকার, সার্বজনীন ভোটাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মাচরণের স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার ইত্যাদি জনমনে স্থায়ী জায়গা পেয়েছে। বস্তুত জনগণের মানসিকতার প্রতি লক্ষ্য রেখেই নেপোলিয়ন তার সংস্কারগুলি প্রবর্তন করেন। ১৮০০-১৮০৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তার যাবতীয় সংস্কার গুলি সাধিত হয়।
ক্ষমতা দখলের পর নেপোলিয়ন তার অষ্টম বর্ষের সংবিধান রচনা করে। সংবিধানে মানবিক অধিকারের কথা ছিল না, স্বাধীনতা ও সাম্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি; তবে জনগণকে ভোটাধিকার দেওয়া হয়। ঠিক হয় প্রাথমিক স্তরে নির্বাচনের মাধ্যমে ১০ শতাংশ সদস্য ডিপার্টমেন্ট গুলিতে যাবেন, ডিপার্টমেন্ট গুলি থেকে ১০ শতাংশ জাতীয় নির্বাচন মন্ডলী গঠন করবে এবং এদের মধ্য থেকে সেনেট গঠন করা হবে। এই এই সেনেটের সদস্যরা দুই কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার সদস্যদের নির্বাচন করবে। উচ্চকক্ষের অর্থাৎ ট্রিবুনেট আইনের প্রস্তাব দেবে এবং নিম্নকক্ষ অর্থাৎ লেজিসলেচার তা পাস করবে। সেনেট সংবিধানের তদারকি সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। শাসন ব্যবস্থার শীর্ষে থাকবে কাউন্সিল অফ স্টেট। আইনের খসড়া রচনা, শাসনের তদারকি, আইনের ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ এই সংস্থার হাতে ছিল।
শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করবে তিনজন কনসাল। নেপোলিয়ন প্রথম কনসাল। বাকি দুজন প্রথম কনসালের অধীনে বৈদেশিক সম্পর্ক ও অভ্যন্তরীণ শাসনব্যবস্থার তদারকি করবে। কনসালদের ১০ বছরের নিযুক্তির কথা বলা হলেও নেপোলিয়ন ১৮০২ খ্রিস্টাব্দের গণভোটের পর নিজেকে যাবজ্জীবন কনসাল হিসেবে ঘোষণা করেন। প্রথম কনসাল হিসাবে সব ক্ষমতা তিনি কুক্ষিগত করেন। আইনসভাকে উপেক্ষা করে তিনি আইন তৈরি করতে পারতেন। এইভাবে গণতন্ত্রের মুখোশে তিনি স্বৈরতন্ত্র স্থাপন করেন।
কর ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ছিল পুরাতন ব্যবস্থার সবচেয়ে ক্ষতিকারক দিক। তাই নেপোলিয়ন ক্ষমতায় এসে এদিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। তিনি মার্কেনটাইলবাদকেই অনুসরণ করেন। প্যারিসের ব্যঙ্কার পেরেগঁর সহযোগিতায় ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ব্যাংক অব ফ্রান্স প্রতিষ্ঠা করেন। সরকারের আর্থিক লেনদেন ও নোট চালু করার অধিকার এই ব্যাংককে দেওয়া হয়। সরকারি দপ্তরগুলিতে ব্যয় সংকোচনের নির্দেশ দেন এবং অডিট প্রথা চালু করেন। কর ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস করা হয়। প্রত্যক্ষ করগুলি পরিমাপ করা এবং সেগুলির আদায় করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে দেওয়া হয়। সংবিধানসভার আমলে যে পরোক্ষ করগুলি বাতিল করা হয়েছিল সেগুলি আবার চালু করা হয়। লবণ, মদ ও তামাকের উপর পরোক্ষ কর নির্ধারিত করা হয়। ফ্রান্সে শিল্পায়নের উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরীর জন্য নেপোলিয়ন বহু রাস্তাঘাট, বন্দর, পোতাশ্রয়, জলপথ ইত্যাদি নির্মাণ করেন। পুঁজিপতিদের উৎসাহ দেন, ইউরোপের বাজার তাদের জন্য উন্মুক্ত করেন। তবে আমদানি কমিয়ে রপ্তানির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। মূল্যের মান স্থিতিশীল রাখতে নেপোলিয়ন মজুতদর ও কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেন। খাদ্যশস্য ও রুটির মূল্য নির্ধারণ করে দেন। উৎপাদন যাতে বন্ধ না হয় তাই শ্রমিক ধর্মঘট নিষিদ্ধ হয়। নেপোলিয়ন যুদ্ধে পরাজিত শক্তির কাছ থেকে অর্থ আদায় করতেন।
শাসনের কেন্দ্রীকরণ ও কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধির উপর নজর দেন। প্যারিস থেকে সারাদেশ শাসনের জন্য তিনি কেন্দ্রীয় বিভাগগুলি গড়ে তোলেন। কেন্দ্রীয় সচিবালয় স্থাপিত হয়। বিপ্লবের সময়কার স্বায়ত্বশাসন বজায় রাখেন এবং সেখানে নির্বাচন ব্যবস্থাও বহাল রাখেন। তবে শাসক, মেয়রদের তিনি মনোনীত করতেন। পুরাতন ব্যবস্থার ইনট্যানড্যান্টদের ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনেন।
১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে সংবিধান সভা সিভিল কনস্টিটিউশন অফ দা ক্লার্জি চালু করে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করেছিল। একদিকে পোপ উপলব্ধি করেছিলেন যে, সমস্ত ইতালিকে যে নিয়ন্ত্রণ করছে তার সাথে বোঝাপড়া দরকার। অন্যদিকে নেপোলিয়ান দেখেন চার্চ বিরোধিতাকে ধর্মভীরু ফরাসি জনতা মনেপ্রাণে মেনে নেননি। তাছাড়া তিনি জানতেন ধর্মীয় নীতিবোধ অসম্যের উপর প্রতিষ্ঠিত সমাজকে ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাই নেপোলিয়ন তৎকালীন পোপের সাথে কনকরডাট বা ধর্ম মীমাংসা চুক্তি সাক্ষর করেন। ঠিক হয় সরকার ক্যাথলিক ধর্মমতকে ফ্রান্সের সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মমত হিসেবে মেনে নেবে, জনগণ ধর্মাচারণের স্বাধীনতা পাবে। গির্জার বায়োজাপ্ত করা সম্পত্তি ফেরত পাবে না। যাজকরা সরকার কর্তৃক মনোনীত হবেন ও বেতন পাবেন। পোপ তাদের স্বীকৃতি দেবেন কিন্তু সরকারের কাজের নিয়মবিধ তাদের উপর খাটবে না। ১৮০২ তে Law of public Warship জারি করে কনকরডাট বাস্তবায়িত করা হয়।
নেপোলিয়নের শ্রেষ্ঠ কীর্তি আইন সংহিতা বা কোড নেপোলিয়ন। ফ্রান্সের এযাবতকাল কোনো লিখিত আইন ছিল না কারণ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন আইন প্রচলিত ছিল। আইনের সমতা ছিলনা। নেপোলিয়নের নেতৃত্বে কাউন্সিল অফ স্টেট ৮৪ টি অধিবেশনে মিলিত হয়ে বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় ২২৮৭ ধারা বিশিষ্ট "কোড নেপোলিয়ন" সংকলিত হয়। আইনের ক্ষেত্রে সমতা, ধর্মীয় সহিষ্ণুতার নীতি, বিশেষ সুবিধার অবসান এবং সামন্ত প্রভূদের প্রতি আনুগত্যের অবলুপ্তির কথা বলা হয়। সম্পত্তির অধিকার স্বীকৃত হয়। বৈধ সন্তানের পিতার সম্পত্তিতে সমানাধিকার স্বীকৃত হয়। এই আইনে রোমান কর্তৃত্ববাদী আইনের প্রভাব ছিল বেশি। পরিবার, বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, নারীর উপর পুরুষের কর্তৃত্ব এইসব দিকগুলি রোমান কর্তৃত্ববাদী আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে বিপ্লবী ভাবধারা এবং প্রথাগত আইনের আদর্শের সাথে মিশে এমন এক উপযোগী আইন তৈরি হয়েছিল যা ইউরোপের অন্যান্য দেশ গুলি গ্রহণ করেছিল।
বিপ্লব চার্চ নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল। কিন্তু নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা গঠন করতে পারিনি। নেপোলিয়নের উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ কর্মচারী (প্রশাসক ও কর্মী) তৈরি করা। তিনি মহিলাদের শিক্ষার কোন ব্যবস্থাই করেননি, গরিবদের শিক্ষা কেবল প্রাথমিক স্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। বড়লোকদের জন্যই কেবল উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত ছিল। প্রাথমিক শিক্ষার ভার ছিল পৌরসভা গুলির উপর। নেপোলিয়ান ১৫ টি লাইসি নামক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থাকে তিনি একটি ইউরোপীয় ইউনিভার্সিটির অধীনে আনেন, যার প্রধান গ্র্যান্ড মাস্টার সম্রাট কর্তৃক মনোনীত হতেন।
নেপোলিয়নের একটি বিশেষ সংস্কার লিজিয়ন অব অনার। সামরিক, অসামরিক ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এই সম্মান দেওয়া হত। নেপোলিয়ন অবশ্যই বিপ্লব বিরোধী ছিলেন। তিনি সম্রাটের পদ বংশানুক্রমিক করেন। জৌলুসপূর্ণ সভাগৃহ নির্মাণ করেন, ভাই ও আত্মীয়দের উচ্চপদ ও নানা উপাধি দেন। লিজিয়ন অব অনার প্রবর্তন করেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেন, তখন তাকে বিপ্লবের সন্তান বলা যায় না। তিনি শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকারও দেননি।
তবে নেপোলিয়ন এমন এক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন, যাতে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসে। তার কৃষি ও বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর জন্য খাদ্য ও রসদ সরবরাহ বজায় রাখা। তবে সাধারণ জনতা যাতে খাদ্যাভাবে না ভোগে তার জন্য রপ্তানি বন্ধ করে খাদ্যের মূল্য বেঁধে দেন। এভাবে জনসাধারণেরও আনুগত্য অর্জন করেন। বস্তুত নেপোলিয়নীয় ব্যবস্থা ছিল প্রয়োজন ভিত্তিক যা অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল এবং যা করতে গিয়ে তাকে অনেক ক্ষেত্রে বিপ্লবের আদর্শকে ত্যাগ করতে হয়।
Napoleon’s Internal Reforms
Under the rule of the Directory dominated by the moderate bourgeoisie, the momentum of the French Revolution had begun to slow down. Internal politics became destabilized due to factional conflicts. At such a time, Napoleon was appointed First Consul of France and rose to the pinnacle of power in 1799.
In his memoirs, Napoleon attached greater importance to his reforms than to his forty battles. His reforms were permanent and far-reaching. His biographers have also acknowledged that it was the French Revolution that elevated him to the height of power. However, he could not wholeheartedly accept the fundamental ideals of the Revolution—liberty, equality, and fraternity. He believed that the French (the bourgeoisie) had made the Revolution not for liberty or equality, but because their sense of pride had been wounded.
Napoleon realized that over the previous ten years, significant changes had taken place in the mindset of the French people. Popular sovereignty, law-making according to the will of the people, civil rights, universal suffrage, freedom of the press, freedom of religion, and the right to property had become firmly rooted in public consciousness. In fact, it was with due regard to this popular mentality that Napoleon introduced his reforms. Most of his reforms were carried out between 1800 and 1803.
After seizing power, Napoleon framed the Constitution of the Year VIII. The constitution made no mention of human rights and offered no promise of liberty or equality; nevertheless, it granted voting rights to the people. It was decided that at the primary level, elections would send 10 percent of members to the departments; from these departments, 10 percent would form a national electoral body, from which the Senate would be constituted. The members of this Senate would then elect the members of the bicameral legislature. The upper chamber, the Tribunate, would propose laws, while the lower chamber, the Legislative Body, would pass them. The Senate would function as the guardian of the constitution. At the apex of the administrative system stood the Council of State, which was entrusted with drafting laws, supervising administration, and interpreting and enforcing laws.
The administration was to be conducted by three consuls, with Napoleon as the First Consul. The other two consuls were subordinate to him and were to oversee foreign relations and internal administration. Although the consuls were formally appointed for ten years, after a plebiscite in 1802, Napoleon declared himself Consul for Life. As First Consul, he concentrated all powers in his own hands. He could legislate by ignoring the legislature. In this way, under the guise of democracy, he established an autocratic regime.
The system of taxation and finance had been among the most harmful aspects of the old regime, and Napoleon therefore focused special attention on this sector. He followed mercantilist principles. With the assistance of the Parisian banker Perrégaux, he founded the Bank of France in 1800. This bank was entrusted with handling government financial transactions and issuing currency notes. He ordered reductions in expenditure in government departments and introduced an audit system. The tax system was reorganized: the assessment and collection of direct taxes were placed under central authorities. Indirect taxes that had been abolished during the period of the Constituent Assembly were reintroduced, notably on salt, liquor, and tobacco. To create suitable infrastructure for industrialization in France, Napoleon constructed numerous roads, ports, harbours, and waterways. He encouraged capitalists and opened European markets to them, while emphasizing exports and reducing imports. To stabilize prices, Napoleon took strict measures against hoarders and black marketeers. Prices of food grains and bread were fixed. Workers’ strikes were banned to prevent disruption of production. Napoleon also extracted indemnities from defeated powers in war.
He paid close attention to the centralization of administration and the strengthening of central authority. To govern the entire country from Paris, he established central departments and set up a central secretariat. While he retained the system of local self-government introduced during the Revolution and continued elections at that level, he himself appointed administrators and mayors. He restored the powers of the intendants of the old regime.
In 1791, the Constituent Assembly had introduced the Civil Constitution of the Clergy, which created religious divisions. On the one hand, the Pope realized the necessity of reaching an understanding with the power that controlled all of Italy. On the other hand, Napoleon observed that the devout French population had not wholeheartedly accepted hostility toward the Church. Moreover, he knew that religious morality helped sustain a socially unequal society. Therefore, Napoleon signed the Concordat, or religious settlement, with the Pope of the time. It was agreed that the government would recognize Catholicism as the religion of the majority of the French people and guarantee freedom of worship. Church properties that had been confiscated would not be returned. Clergy would be nominated and paid by the government; the Pope would confer spiritual recognition, but church regulations would not apply to the government. In 1802, the Concordat was implemented through the Law of Public Worship.
Napoleon’s greatest achievement was the Civil Code, or the Code Napoléon. Until then, France had no uniform written law, as different laws prevailed in different regions, and there was no equality before the law. Under Napoleon’s leadership, the Council of State met in eighty-four sessions and, with the assistance of experts, compiled the Code Napoléon, consisting of 2,287 articles. It proclaimed equality before the law, religious tolerance, the abolition of special privileges, and the end of feudal allegiance. The property right was recognized, and legitimate children were granted equal rights to inherit their father’s property. The code bore a strong influence of Roman authoritarian law. Provisions relating to family, marriage, divorce, and male authority over women conformed closely to Roman legal traditions. Nevertheless, by blending revolutionary ideas with traditional legal principles, a practical legal system was created, which was later adopted by several other European countries.
The Revolution had destroyed the Church-controlled education system but had failed to create a new one. Napoleon’s objective was to produce efficient personnel—administrators and officials—required by the state. He made no arrangements for women’s education, and education for the poor was limited to the primary level. Higher education was effectively reserved for the wealthy. Primary education was placed under the responsibility of municipalities. Napoleon established fifteen schools known as lycées. The entire education system was brought under a centralized body known as the University of France, headed by a Grand Master appointed by the Emperor.
One of Napoleon’s distinctive reforms was the institution of the Legion of Honour, awarded to distinguished individuals in both military and civil fields. Napoleon was undoubtedly anti-revolutionary in several respects. He made the imperial office hereditary, built magnificent palaces, conferred high offices and titles upon his brothers and relatives, introduced the Legion of Honour, curtailed the freedom of the press, denied workers the right to strike, and thus could no longer be regarded as a true child of the Revolution.
Yet Napoleon introduced a system that restored peace and order. The primary objective of his agricultural and commercial policies was to ensure food and supplies for the army. At the same time, to prevent shortages among the general population, he halted exports and fixed food prices. In this manner, he secured popular loyalty. In essence, the Napoleonic system was need-based, acceptable to the majority of the population, and in the process of establishing it, Napoleon often had to abandon the ideals of the Revolution.
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন