সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জানুয়ারী, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আদি মধ্যযুগের ইতিহাস চর্চায় সাহিত্যিক উপাদান | Literary Sources of Early Medieval Indian History

আদি মধ্যযুগের ইতিহাস চর্চায় সাহিত্যিক উপাদান সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত ভারতবর্ষে  আদি মধ্যযুগ। এই যুগে রচিত ইতিহাস গ্রন্থ বলতে একমাত্র রাজতরঙ্গিনী ।  তবে ইতিহাস গ্রন্থের অভাব থাকলেও ইতিহাস চর্চা অসাধ্য হয় নি। সাহিত্যিক উপাদানের প্রতুলতা এবং বহু লিপি ও মুদ্রা এই পর্বের ইতিহাস চর্চায় কাজে আসে। আদি মধ্যযুগের সবচেয়ে বড় উপাদান হল সাহিত্য। এই পর্বে রাজার গুণকীর্তন করে প্রচুর জীবনচরিত লেখা হয়। চালুক্য রাজ ষষ্ঠ বিক্রমাদিত্যের  জীবন নিয়ে  বিক্রমাঙ্কদেবচরিত   রচনা করেছেন বিলহন। সন্ধ্যাকর নন্দী রচনা করেছিলেন রামচরিত । এটি দ্ব্যর্থক ভাষায় লেখা। এখানে পাল রাজা রামপাল এবং ভগবান রামচন্দ্রের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। জৈন গুরু জয়সিংহ দ্বাদশ শতকের চালুক্য বংশীয় শাসক কুমার পালের জীবনী কুমারপালচরিত রচনা করেছিলেন। সিন্ধু রাজা নবশশাঙ্কের জীবনী নবশশাঙ্কচরিত রচনা করেছেন পদ্মগুপ্ত। এছাড়াও আছে চাঁদ বরদৈ রচিত পৃথ্বীরাজ রাসো । এই জীবন রচিত গুলির নিরপক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কারন এ ক্ষেত্রে প্রভুর প্রতি পক্ষপাতিত্ব থেকে যায়। তাই জীবনচরিতের তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকদের সাবধানতা অবলম্বন করতে

সংগ্রহশালার বস্তু সংগ্রহের পদ্ধতি

 সংগ্রহশালার বস্তু সংগ্রহের পদ্ধতি কোন একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলার প্রথম ধাপ হল বস্তু সংগ্রহ। বস্তু ছাড়া কোন সংগ্রহশালার অস্তিত্ব থাকে না। সংগ্রহশালা বিভিন্ন উপায়ে বস্তু সংগ্রহ হয়। তবে প্রধানত ন'টি উপায় এখানে আলোচনা করা হলো। ১. দানের মাধ্যমে:  ২. ক্রয়ের মাধ্যমেঃ ৩. ফিল্ড কালেকশনঃ  ৪. বিনিময়ের মাধ্যমেঃ ৫. ঋণের মাধ্যমে ৬. উত্তরাধিকার সূত্রেঃ ৭. বাজেয়াপ্ত করার মাধ্যমেঃ ৮. প্রত্যাবাসনঃ ৯. কৃত্রিম উদ্ভাবনঃ 

বৈদিক যুগে ধর্মীয় জীবনের বিবর্তন | Transformation in Religious Life in the Vedic Age

বৈদিক যুগে ধর্মীয় জীবনের বিবর্তন বৈদিক যুগের ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে জানতে হলে প্রধানত আমাদের নির্ভর করতে হবে বৈদিক সাহিত্যের উপর। রাজনীতি সমাজ ও অর্থনীতির মতই বৈদিক আমলের ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপ ও  ধ্যান-ধারণা ছিল পরিবর্তনশীল, যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় ঋকবেদের আমল থেকে পরবর্তী বৈদিক যুগ পর্যন্ত।   ঋক বৈদিক যুগ   বৈদিক যুগে কোথাও মূর্তি পূজার পরিচয় পাওয়া যায় না। ঋকবেদে দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে যে স্তুতি করা হয়েছে তার অন্যতম উদ্দেশ্য হল অতীতে দেবদেবীর সহায়তা লাভের স্মৃতিকে জাগ্রত করা এবং তারই ভিত্তিতে ঋষিগণ আশা করতেন যে দেবতার কৃপা আবার‌ও সাহায্য প্রার্থীর উপর পড়বে। জন্মান্তরবাদের ধারণা ঋগ্বেদে অনুপস্থিত। মৃত্যুর পর কি ঘটে সেই প্রশ্ন ঋষিদের আলোড়িত করেছিল। একটি মত অনুযায়ী  মৃত্যুর পর দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। অপর একটি মত অনুযায়ী মৃত্যুর পর মানুষের গতি হয় যমলোকে। মৃত্যুর পর সূর্য লোকেও যেতে পারে । অর্থাৎ মৃত্যুর পরবর্তী অবস্থার স্বরূপ নিয়ে ঋকবেদে কোন নিশ্চিত ধারণা গড়ে ওঠেনি।  বিশ্ব সৃষ্টির প্রসঙ্গটি ঋকবেদে স্থান পেয়েছে। একটি সূক্তে প্রশ্ন করা হয়েছে, প্রথম জাতক কে দেখেছে? পৃথিবী ও

সংগ্রহশালায় বস্তুর লেবেলে করার পদ্ধতি। Labelling of objects in Museum

 সংগ্রহশালায় বস্তুর লেবেলে করার পদ্ধতি সংগ্রহশালায় বস্তুসমূহ প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বস্তুর লেবেলিং করা আবশ্যিক। লেবেল ছাড়া দর্শকের পক্ষে বস্তুটির পরিচয় জানা অসম্ভব। লেবেলের তথ্য কখনো কম হয় কখনওবা তথ্য বেশি হয়। লেবেলের প্রকারভেদ লেবেল মোটামুটি তিন ধরনের হয়-- ১. প্রারম্ভিক লেবেল (Introductory Label), ২. বিভাগীয় লেবেল (Section Label) এবং ৩. বস্তু লেবেল (Object Label)। ১. প্রারম্ভিক লেবেল (Introductory Label) সংগ্রহশালার প্রদর্শন কক্ষ বা গ্যালারির দরজার সন্নিকটে এই লেবেল থাকে। এই লেবেলে প্রদর্শন কক্ষের শিরোনাম, প্রদর্শন কক্ষে প্রদর্শিত বস্তুর সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং প্রদর্শনের উদ্দেশ্য লেখা থাকে। অর্থাৎ কক্ষটি ভ্রমণের পর দর্শকরা কি কি শিখতে পারবে তার সংক্ষিপ্ত আকারে এই লেবেলে জানিয়ে দেওয়া হয়। ১০-১৫ টি শব্দে শিরোনাম, ৬০-১০০ টি শব্দে কক্ষের বিবরণ এবং ৪-৬ টি ছবি থাকে এই লেবেলে। ২. বিভাগীয় লেবেল (Section Label) একটি প্রদর্শন কক্ষের মধ্যে আবার অনেকগুলি বিভাগ থাকে। প্রতিটি বিভাগে কি কি বস্তু রয়েছে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া থাকে এই বিভাগীয় লেবেলে। যেমন, কোনো মিউজিয়ামের ভূতত্ত্ব গ্যালারিতে আগ্নেয়

বৈদিক যুগের অথনীতির রুপান্তরঃ পশুচারন অর্থনীতি থেকে কৃষি অর্থনীতি | Transformation of Vedic Economy: From Pastoral to Agrarian

বৈদিক যুগের অথনীতির রুপান্তর বৈদিক সাহিত্য ধর্মীয় সাহিত্য হলেও বেদের বহু প্রার্থনা একান্তভাবে পার্থিব কামনায় উচ্চারিত। তাই বৈদিক সাহিত্য থেকে এই পর্বের অর্থনৈতিক জীবনের পরিচয় পাওয়া যায়। বৈদিক যুগের প্রথম অর্ধ সহস্রাব্দ সময়কাল ঋক বৈদিক যুগ হিসাবে পরিচিত। এই পর্বে অর্থনীতির মেরুদন্ড ছিল পশুচারন। তখনও পাকাপাকি কৃষিব্যবস্থার পত্তন হয় নি। কিন্তু পরবর্তী বৈদিক যুগে সমাজে এক ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়। এই পর্বে অর্থনীতি পশুপালন নির্ভর থেকে কৃষিভিত্তিক হয়ে ওঠে। ১. ঋক বৈদিক যুগের পশুচারণ নির্ভর অর্থনীতি ঋক বেদে পশুপালন ও কৃষি দুই-ই উল্লিখিত কিন্তু পশুপালন সংক্রান্ত শব্দ অনেক বেশি পরিমাণে উল্লিখিত। গো অর্থাৎ গবাদি পশু এবং তার ব্যুৎপত্তি জাত শব্দের উল্লেখ হয়েছে মোট ১৭৬ বার আর কৃষি বিষয়ক শব্দের উল্লেখ হয়েছে মাত্র ২১ বার। এর থেকেই অনুমান করা যায় অর্থনীতিতে গবাদি পশুর গুরুত্ব ছিল সবথেকে বেশি। একজন সম্পন্ন ব্যক্তিকে বোঝাতে গোমান শব্দ ব্যবহৃত হত। অর্থাৎ গবাদি পশুই ছিল সমাজের ধনসম্বল। রাজাকে বলা হচ্ছে গোপতি অর্থাৎ গবাদি পশুর মালিক, যুদ্ধকে বলা হত গাবিষ্টি  , অর্থাৎ গবাদি পশুর বাসনায় যুদ্ধ হত। গোসম্পদ

প্রতিবাদী ধর্ম হিসাবে আজীবিক ধর্ম | Ajivika as Protestant Religion

আজীবিক ধর্ম খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে উত্তর ভারতে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরুদ্ধে বহু প্রতিবাদী ধর্মমতের উদ্ভব হয়। এগুলির সংখ্যা ছিল আনুমানিক ষাট বা তার বেশি। এদের মধ্যে আজীবিক ধর্ম বেশি জনপ্রিয় ছিল। অশোকের শিলালিপি থেকে এ কথা জানা যায়। গুপ্ত যুগেও আজীবিকদের গুহা বা গুম্ফার কথা জানা যায়। আজীবিক ধর্মের প্রবক্তা ছিলেন গোশাল মঙ্খলিপুত্ত। তিনি জৈন ধর্মের প্রবর্তক বর্তমান মহাবীরের সমসাময়িক ছিলেন। গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর অল্পকাল আগে সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ৪৮৪ অব্দে তার মৃত্যু হয়েছিল। অবশ্য উপকথা অনুসারে তিনি আরও আগের লোক ছিলেন বলে কেউ কেউ মনে করেন। আজিবিকদের ধর্মীয় কোন গ্রন্থ পাওয়া যায়নি। জৈন বা বৌদ্ধ রচনায় আজিবিকদের সম্পর্কে যে উল্লেখ আছে তা থেকে আমরা তাদের সম্পর্কে জানতে পারি। আজীবিক ধর্মবিশ্বাসে নাস্তিক্যবাদের প্রভাব বিশেষভাবে দেখা যায়। যাগযজ্ঞ বা দেবদেবীর পূজার কোনো নিয়ম তারা মানতেন না। আজীবিকরা বিশ্বাস করতো যে মানুষের কর্ম অখন্ডনীয়। এর হাত থেকে তার পরিত্রাণ নেই। নিয়তি মানুষের ভবিষ্যৎকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। মানুষ বহু জন্ম সৎ ভাবে কাটাতে পারলে তবে নিয়তি বা কর্মফলের হাত থেকে নিস্তার পেতে প