সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বৈদিক যুগের অথনীতির রুপান্তরঃ পশুচারন অর্থনীতি থেকে কৃষি অর্থনীতি | Transformation of Vedic Economy: From Pastoral to Agrarian

বৈদিক যুগের অথনীতির রুপান্তর

বৈদিক সাহিত্য ধর্মীয় সাহিত্য হলেও বেদের বহু প্রার্থনা একান্তভাবে পার্থিব কামনায় উচ্চারিত। তাই বৈদিক সাহিত্য থেকে এই পর্বের অর্থনৈতিক জীবনের পরিচয় পাওয়া যায়। বৈদিক যুগের প্রথম অর্ধ সহস্রাব্দ সময়কাল ঋক বৈদিক যুগ হিসাবে পরিচিত। এই পর্বে অর্থনীতির মেরুদন্ড ছিল পশুচারন। তখনও পাকাপাকি কৃষিব্যবস্থার পত্তন হয় নি। কিন্তু পরবর্তী বৈদিক যুগে সমাজে এক ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়। এই পর্বে অর্থনীতি পশুপালন নির্ভর থেকে কৃষিভিত্তিক হয়ে ওঠে।

১. ঋক বৈদিক যুগের পশুচারণ নির্ভর অর্থনীতি

ঋক বেদে পশুপালন ও কৃষি দুই-ই উল্লিখিত কিন্তু পশুপালন সংক্রান্ত শব্দ অনেক বেশি পরিমাণে উল্লিখিত। গো অর্থাৎ গবাদি পশু এবং তার ব্যুৎপত্তি জাত শব্দের উল্লেখ হয়েছে মোট ১৭৬ বার আর কৃষি বিষয়ক শব্দের উল্লেখ হয়েছে মাত্র ২১ বার। এর থেকেই অনুমান করা যায় অর্থনীতিতে গবাদি পশুর গুরুত্ব ছিল সবথেকে বেশি। একজন সম্পন্ন ব্যক্তিকে বোঝাতে গোমান শব্দ ব্যবহৃত হত। অর্থাৎ গবাদি পশুই ছিল সমাজের ধনসম্বল। রাজাকে বলা হচ্ছে গোপতি অর্থাৎ গবাদি পশুর মালিক, যুদ্ধকে বলা হত গাবিষ্টি , অর্থাৎ গবাদি পশুর বাসনায় যুদ্ধ হত। গোসম্পদ লাভের আশায় সোমের প্রতি প্রার্থনাও রয়েছে। কন্যা সন্তান বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে দুহিতা শব্দ। এই শব্দের উতপত্তি দুহিতৃ থেকে যার অর্থ দুগ্ধ দোহনকারী। শুধু লিখিত উপাদানে নয়, কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে যেগুলি থেকে পশুপালনের ও গবাদি সম্পদের প্রমান পাওয়া গেছে। হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং জম্মুর বহু এলাকায় প্রচুর পরিমানে গবাদি পশু, ছাগল এবং ভেড়ার অস্থি পাওয়া গেছে। 

কৃষিকাজের উল্লেখ নগন্য হলেও তা একেবারেই অপরিচিত ছিল না। ক্ষেত্রপতি হলেন কৃষির অধিষ্ঠাতা দেবতা। তার উদ্দেশ্যে রচিত হয়েছে বিখ্যাত কৃষিসূক্তি। ক্ষেত্র বলতে এখানে নিঃসন্দেহে জমি বোঝাচ্ছে। কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট যে সমস্ত শব্দসমূহের ব্যবহার হয়েছে সেগুলি হল শুন (লাঙ্গল), সীর (লাঙ্গলের ফলা), সীতা (জমিতে লাঙলের রেখা), দাত্র (দা), সৃনী (কাস্তে) প্রভৃতি। পাকিস্তানের সোয়াট অঞ্চলের আলিগ্রামে ঋকবৈদিক যুগের একটি কৃষিক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। উৎপন্ন ফসলের মধ্যে ছিল যব প্রধান। সরাসরি গম উৎপাদনের উল্লেখ নেই। তবে অনুমান করা হয় গমের উৎপাদন প্রচলিত ছিল। ঋকবেদে ব্রীহি শব্দের উল্লেখ রয়েছে কিন্তু ব্রীহি শব্দের অর্থ এখানে ধান নয়, এখানে যে কোনো ফসল বোঝাতে ব্রীহি শব্দের ব্যবহার হয়েছে। অতএব ঋক বৈদিক যুগে ধান উৎপাদন প্রমান করা কঠিন। 

কারিগরি উৎপাদনের উল্লেখ ঋকবেদে মুষ্টিমেয়। যে সমস্ত কারিগরি উৎপাদনের উল্লেখ রয়েছে তার মধ্যে সর্বাধিক উল্লখযোগ্য হল কাঠের কাজ। তক্ষক বলতে ছুতোরকে বোঝানো হয়েছে, বৃক্ষছেদক গাছ কাটার কাজ করতেন, রথকার ছিল বিশেষ ধরনের কাষ্ঠশিল্পী যারা রাজকীয় রথ নির্মাণের কাজে নিযুক্ত ছিলেন। ঋকবৈদিক যুগে চম্মম্ন বলতে চর্মশিল্পীদের বোঝানো হয়েছে। সেই সময় মেষলোম দিয়ে পরিধেয় বস্ত্র বানানো হত। কার্পাস বা সুতোর সরাসরি উল্লেখ নেই তবে তন্তু ওতু নামে দুই প্রকার সুতোর ব্যবহার জানা ছিল। নাক, কান ও গলার কয়েক প্রকার অলঙ্কারের কথা ঋক বেদে বলা হয়েছে। অর্থাৎ সেযুগে অলঙ্কার নির্মাতার অস্তিত্ব ছিল। অলঙ্কার নির্মাণে সোনার ব্যবহার তাঁদের জানা ছিল।তামা দিয়ে তারা বিভিন্ন কৃষি উপকরণ তৈরী করত। লোহার ব্যবহার তখনো চালু হয় নি। অয়স শব্দের উল্লেখ রয়েছে কিন্তু তখন অয়স বলতে যে কোনো ধাতুকে বোঝানো হত। 

যে সমাজে কৃষি সুপ্রতিষ্ঠিত নয়, কারিগরি উৎপাদন যথেষ্ট নয় সেই সমাজে বাণিজ্যের সম্ভাবনা না থাকাই স্বাভাবিক। ঋকবেদে পণি শব্দের উল্লেখ রয়েছে। পণি আখ্যা দেওয়া হয়েছে তাঁদের যা বহু সম্পদের অধিকারী এবং যারা দূর দেশে যাত্রা করেন। কিন্তু ঋকবেদ এদের নিন্দা করেছেন। ডি ডি কোশাম্বী দেখিয়েছে এই ব্যবসায়ীগন বৈদিক সমাজের অঙ্গ নন। এঁরা সম্ভবত অনার্য সম্প্রদায়ের লোক। ঋকবেদে সমুদ্রের উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু সরাসরি সমুদ্রবাণিজ্যের কোনো উল্লেখ নেই। বেশ কিছু পন্ডিত শতরিত্র নৌ বা শতদাঁড় যুক্ত নৌকার উল্লেখ থেকে প্রমান করার চেষ্টা করেছেন যে ঋক বৈদিক যুগ থেকেই সমুদ্রগামী জাহাজের ব্যবহার ছিল। কিন্তু এত বড় জাহাজ ভেড়ানোর জন্য যে বিশাল বন্দরের দরকার তার কোনো উল্লেখ নেই। সুতরাং সমুদ্র বাণিজ্যের প্রমান দেওয়া খুব মুস্কিল। বিনিময় মাধ্যমে লেনদেন সেযুগে চলত কিন্তু পুরোদস্তুর বাণিজ্য বলতে যা বোঝায় তা সেই যুগে ছিল না। 

২.পরবর্তী বৈদিক যুগের কৃষি নির্ভর অর্থনীতি 

ঋকবেদে কৌম সুলভ আর্থসামাজিক পরিস্থিতির তুলনায় পরবর্তী বৈদিক যুগ আরও জটিলতর হয়। গঙ্গা-যমুনার পূর্ব সীমান্ত এলাকায় কৃষির পাকাপাকি পত্তন ঘটে। উর্বর ও আর্দ্রতর গাঙ্গেয় এলাকায় স্থায়ী কৃষি সমাজ গড়ে ওঠে। উৎপন্ন ফসলের মধ্যে গম ও যব তো ছিলই। পাশাপাশি ধান উৎপাদনও শুরু হয়। পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে ব্রীহি বলতে কেবল ধান-ই বোঝানো হয়েছে। হস্তিনাপুরে চিত্রিত ধূসর মৃৎপাত্রের স্তর থেকে ধানের অবশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে। তৈত্তরিয় সংহিতায় বলা হয়েছে যবের বীজ শীতকালে বপন করা হয় এবং গ্রীষ্মকালে সেই ফসল পাকে। ধানের বীজ বপন করা হয় গ্রীষ্মে। শতপথ ব্রাহ্মনে হলকর্ষণ, বীজ বপন, ফসল কাটা এবং পাকা ফসলের ঝাড়াই বাছাই-- কৃষি কর্মের এই চারটি পর্যায়ের উল্লেখ করা হয়েছে। সূক্ষ্ম ও ধারালো লাঙ্গলের ফলা যে হলকর্ষণের জন্য আদর্শ তা তাদের জানা ছিল। সাধারণত খাদির বা উদূম্বর গাছের কাঠ দিয়ে লাঙলের ফলা তৈরি করত। তামার ফলাও চালু ছিল কিন্তু লোহার উপকরণের মধ্যে লাঙলের ফলা ছিল না। পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে নিয়মিতভাবে হাল চালানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ৬, ৮, ১২, এমন কি ২৪ টি বৃষ দিয়ে হাল চালানোর কথা রয়েছে। সম্ভবত আঠালো মাটির জন্য এতে পরিমাণ পশু শক্তির দরকার হতো। আবার এই বিবরণ থেকে জমির উপর অসম অধিকারের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এই পশু শক্তির হিসাব যদি জমির আয়তনের তারতম্যের ভিত্তিতে করা হয় তাহলে ২৪ টি বৃষ নিয়ে হাল চালানোর মতো বড় জমি কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির থেকে থাকতে পারে।

লোহার ব্যবহার পরবর্তী বৈদিক যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। গাঙ্গেয় অববাহিকায় জঙ্গল পরিষ্কার করে কৃষি বসতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে লোহার হাতিয়ার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল বলে অনেকে মনে করেন। পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে শ্যামায়স বা কৃষ্ণায়স বলতে লোহাকেই বোঝানো হয়েছে। অত্রঞ্জিখেড়া ও নোহতে লোহার হাতিয়ার কুড়ুল, বর্ষার ফলা, তীরের ফলা, পাওয়া গেছে কিন্তু লাঙ্গলের ফলা পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণের ক্ষেত্রেই লোহার প্রচলন ছিল, যা শাসকের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করেছিল।

ধাতু শিল্প ছাড়াও কারিগরি শিল্প ছিল মৃৎপাত্র বা কৌলাল নির্মাণ। পুরাতাত্ত্বিক ভাষায় একে ধূসর চিত্রিত মৃৎপাত্র বলে। পাত্রগুলি বেশিরভাগই ছিল থালা ও বাটি প্রকৃতির। মৃৎপাত্র নির্মাণের বহু প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণও পাওয়া গেছে। কুম্ভকার ছাড়াও বাজসনেয়ী সংহিতায় ১৮ রকমের কারিগরের উল্লেখ রয়েছে। এগুলি হল কামার, গহনা নির্মাতা, তীর নির্মাতা ,ধনুক নির্মাতা, ধনুকের ছিলা নির্মাতা, দড়ি নির্মাতা প্রভৃতি । তীর , ধনুক ও ধনুকের ছিলার জন্য আলাদা আলাদা কারিগরের উপস্থিতি কারিগরি বিদ্যায় বিশেষীকরণের ইঙ্গিত দেয়। উদ্বৃত্ত উৎপাদন সম্ভব হয়েছিল বলেই কারিগরি উৎপাদনে এত উন্নতি হয়েছিল। এমনকি বাজসনেয়ী সংহিতা ও তৈত্তরীয় ব্রাহ্মণে চিকিৎসকের উল্লেখ রয়েছে।

পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে পণ্য বিনিময় সংক্রান্ত তথ্য ঋগ্বেদের তুলনায় বেশি। বণিকের পুত্রকে বণিজ বলা হয়। অর্থাৎ ব্যবসা বাণিজ্য বংশানুক্রমিক পেশা হয়ে উঠেছিল। শ্রেষ্ঠী নামক অতি  বৃত্তশালী বণিকের উল্লেখ পাওয়া যায়। শতপথ ব্রাহ্মনে ঋণ বা কুসিদ এবং সুদখোর বা কুসিদিনের উল্লেখ রয়েছে। তবে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে মুদ্রার ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক আছে। কৃষ্ণল ও শতমন শব্দ দুটিকে অনেকে মুদ্রা বলে অবিহিত করতে চেয়েছেন। তবে তা সর্বজনগ্রাহ্য হয়নি। সেই যুগে সমুদ্র সম্পর্কে সচেতনতার প্রমাণ পাওয়া গেলেও সমুদ্র বাণিজ্যের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

Transformation of Vedic Economy

While Vedic literature is primarily religious, the numerous prayers in the Vedas also reflect the economic life deeply rooted in earthly desires. Thus, this portion of Vedic literature provides insights into the economic life of that era. The Vedic Age, spanning the second half of the second millennium BCE, is recognized as the time of the Rig Vedic period. In this era, the economic foundation revolved around animal husbandry. But in the later Vedic period a great change began in the society. During this phase, the economy changed from pastoral to agrarian.

Rig Vedic Age

The Rig Veda mentions both animal husbandry and agriculture, but the term related to animal husbandry appears much more frequently. The word for cattle, "go," is mentioned a total of 176 times, while agricultural terms are mentioned only 21 times. This suggests that in the economic context, the significance of cattle, particularly the cow, was paramount. The term "gomana" was used to denote a wealthy person, emphasizing the importance of cattle in society. The ruler was referred to as "gopati," meaning the lord of cattle, and war was called "gavishti," indicating a desire for cattle in battle. Prayers for prosperity in the Rig Veda often mentioned Soma, emphasizing the hope for gaining wealth through cattle. Some archaeological findings in regions like Haryana, Punjab, and Jammu have revealed the remains of cattle, sheep, and goat bones in abundance.

While agriculture is not explicitly emphasized, it was not entirely unknown. The term used for the lord of the field was "kshetrapati," and a famous agricultural hymn, "Krishisukti," was composed for the presiding deity of agriculture. The various terms related to agriculture include "shun" (plow), "sir" (plowshare), "sita" (furrow), "datra" (chopper), and "srini" (sickle). These terms indicate a connection between agriculture and economic activities. Barley and wheat cultivation were common, but rice cultivation is not mentioned in the Rig Veda. The term "brihi" appears, which is commonly understood as rice. However, in this context, "brihi" may refer to any cereal crop, making it challenging to ascertain rice cultivation during the Rig Vedic period.

References to handicraft production are found in the Rig Veda, mentioning various craftsmen. Notably, woodworking is highlighted, with terms like "takshaka" (carpenter) and "rathakara" (chariot-maker). The artisans involved in chariot construction were a special category of woodworkers appointed for the royal chariot-building task. In the Rigveda chammamna meant tanners. At that time, sheep wool was used to make clothing. While direct references to textiles are scarce, the terms "tantu" and "otu" are used to describe two types of threads, suggesting some knowledge of textile production. The use of gold in the context of ornamentation was common. Copper was used by the blacksmith, but the term "ayas" likely encompassed any metal rather than specifically indicating iron.

In a society where agriculture is not well-established and craft production is insufficient, the absence of commerce is natural. The Rig Veda mentions the term "pani," referring to those who are possessors of abundant wealth and who undertake journeys to distant lands. However, the Rig Veda criticizes them. D.D. Kosambi suggests that these traders were not integral to Vedic society; they were likely outsiders or belonged to non-Aryan communities. The Rig Veda mentions the sea, but there is no direct reference to maritime trade. Some scholars have attempted to infer the use of sea-faring vessels from mentions of hundred-oared ship, but there is no mention of the large harbors needed for such a large ship. Therefore, providing evidence for maritime trade in the Rigvedic Age is quite challenging. Although exchanges through barter systems may have existed, but proper trade and commerce in that era is lacking.

Later Vedic Period


In the Later Vedic period, compared to the Rigvedic period, the socio-economic conditions were relatively complex. The region east of the Ganga and Yamuna witnessed the emergence of agricultural settlements. A stable agricultural society developed in the fertile and moist Ganges region. Among the crops produced, barley and wheat were common, and rice cultivation began to start. Subsequently, in later Vedic literature, the term "brihi" is used specifically to refer to rice. Archaeological findings from Hastinapur, depicting a painted grey clay pot, have revealed remnants of rice. The Taittiriya Samhita mentions that the sowing of rice seeds took place during the winter, and the crop ripened in the summer. The Shatapatha Brahmana describes four stages of agricultural activities: plowing, sowing seeds, harvesting, and collecting ripe crops from the field. Fine and Sharp plow blade was considered ideal for ploughing. Typically, the plow was constructed using the wood of the 'khadira' or 'udumbara' tree. In the later Vedic period, regular plowing became a norm, with mentions of plowing with six, eight, twelve, and even twenty-four bullocks. The need for substantial animal power in plowing implies a correlation with the size of the cultivated land, suggesting the possibility of differentiated land ownership and cultivation practices in society. If we calculate animal power based on the dimensions of the land, then plowing with twenty-four bullocks could have been managed by a prosperous individual.

The use of iron tools is a significant feature of the later Vedic period. In the Ganges basin, iron axes were extensively used for clearing jungles and establishing agricultural settlements. Later Vedic literature refers to iron as "shyamayas" or "krishnayas," indicating its association with the color black. The presence of iron artifacts, such as plowshares, sickles, arrowheads, etc. have been found in archaeological sites like Ahichchhatra and Noha, emphasizing the importance of iron in agriculture, warfare and governance.

Besides metalworking, craftsmanship also extended to the production of clay utensils, particularly wheel-made vessels. The vessels were primarily used for natural products like flat plates and bowls. The construction of these vessels had advanced significantly during this period. While "kumbhakara" refers to a potter, the Taittiriya and Shatapatha Brahmanas list 18 different types of craftsmen, including the maker of bows, arrows, bows' coverings, and more. The presence of various craftsmen for different items indicates a specialization in craftsmanship during this period. Even in the medical field, later Vedic literature mentions physicians (chikitsak), indicating the awareness of medical practices.

Trade and commerce are more elaborately discussed in later Vedic literature compared to the Rig Veda. The term "banija" refers to a trader, indicating the rise of trade and commerce as a profession. The mention of a wealthy trader named 'Shresthi' highlights the prosperity of trade during this period. The Shatapatha Brahmana mentions debt and lenders, reflecting the economic activities related to borrowing and lending. The later Vedic literature provides more details about the exchange of goods, with mentions of various items being exchanged.

Overall, the later Vedic period saw advancements in various fields, including agriculture, craftsmanship, trade, and medicine, reflecting a more complex and developed society compared to the earlier Rig Vedic period.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ...

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগ...

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হ...