সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বৈদিক যুগে ধর্মীয় জীবনের বিবর্তন | Transformation in Religious Life in the Vedic Age

বৈদিক যুগে ধর্মীয় জীবনের বিবর্তন

বৈদিক যুগের ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে জানতে হলে প্রধানত আমাদের নির্ভর করতে হবে বৈদিক সাহিত্যের উপর। রাজনীতি সমাজ ও অর্থনীতির মতই বৈদিক আমলের ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপ ও  ধ্যান-ধারণা ছিল পরিবর্তনশীল, যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় ঋকবেদের আমল থেকে পরবর্তী বৈদিক যুগ পর্যন্ত।  

ঋক বৈদিক যুগ  

বৈদিক যুগে কোথাও মূর্তি পূজার পরিচয় পাওয়া যায় না। ঋকবেদে দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে যে স্তুতি করা হয়েছে তার অন্যতম উদ্দেশ্য হল অতীতে দেবদেবীর সহায়তা লাভের স্মৃতিকে জাগ্রত করা এবং তারই ভিত্তিতে ঋষিগণ আশা করতেন যে দেবতার কৃপা আবার‌ও সাহায্য প্রার্থীর উপর পড়বে। জন্মান্তরবাদের ধারণা ঋগ্বেদে অনুপস্থিত। মৃত্যুর পর কি ঘটে সেই প্রশ্ন ঋষিদের আলোড়িত করেছিল। একটি মত অনুযায়ী  মৃত্যুর পর দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। অপর একটি মত অনুযায়ী মৃত্যুর পর মানুষের গতি হয় যমলোকে। মৃত্যুর পর সূর্য লোকেও যেতে পারে । অর্থাৎ মৃত্যুর পরবর্তী অবস্থার স্বরূপ নিয়ে ঋকবেদে কোন নিশ্চিত ধারণা গড়ে ওঠেনি। 

বিশ্ব সৃষ্টির প্রসঙ্গটি ঋকবেদে স্থান পেয়েছে। একটি সূক্তে প্রশ্ন করা হয়েছে, প্রথম জাতক কে দেখেছে? পৃথিবী ও জীবনের উদ্ভব কোথা থেকে? আদিমতম বস্তু হিসেবে জলকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা থেকে সমস্ত বস্তু সৃষ্টি হয়েছে। এই আদিম জল থেকে হিরণ্যগর্ভের উৎপত্তি, যিনি বিশ্বচরাচরের স্রষ্টা। বিশ্ব সৃষ্টির সংশয় ধারণাটি সর্বাপেক্ষা প্রকাশ হয়েছে ঋকবেদের নাসদীয়  সূক্তে। আদিমতম এমন সময়ের ধারণা করা হয়েছে যখন পৃথিবী, আকাশ, দিবারাত্র-- কিছুই ছিল না , মৃত্যু ও অমরত্ব ছিল না। কেবলমাত্র সেই একমাত্র বস্তু বিদ্যমান ছিলেন। মনের উপর কামের আবির্ভাবকে সকল উৎপত্তির কারণ হিসেবে দেখানো  হয়েছে। তারপরও ওই সূক্তে সংশয় বাণী উচ্চারিত -- কে প্রকৃত জানে বিশ্বচরাচরের উৎপত্তি রহস্য!; কারণ দেবতাগণ বহু পরে আবির্ভূত, হয়তো তিনি জানেন না বা জানেন তিনি প্রভু স্বরূপ পরমধামে বিরাজমান। 

বৈদিক সমাজ যেহেতু পিতৃতান্ত্রিক তাই ঋকবেদে উল্লেখিত দেব-দেবীর মধ্যে দেবতারা সংখ্যাগরিষ্ঠ, দেবীর সংখ্যা কম। যাক্সা তার নিরুক্তিতে দেব-দেবীকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছেন

১) দ্যুলোক বা স্বর্গের দেবদেবী - মিত্র, বিষ্ণু, ঊষা, আদিত্যগণ  প্রভৃতি।

২) আন্তরীক্ষ বা আকাশের দেবতা - ইন্দ্র, রুদ্র, মারুদগাণ, বায়ু প্রভৃতি।

৩) ভূলোক বা পৃথিবীর দেবতা - অগ্নি ,পৃথিবী ,সোম।

ত্রিলোকের দেবতাবৃন্দের  ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক পটভূমি লক্ষ্য করা যায়। কোথাও সেই পটভূমি স্পষ্ট, যেমন অগ্নি, ঊষা, সূর্য ,বাযু ,দ্যৌঃ। দ্যৌঃ কথাটির সাথে গ্রীক দেবতা জিউসের মিল পাওয়া যায়। দ্যৌঃ এর অর্থ আকাশ।দ্যৌঃ এর  প্রণয়নী হলেন পৃথিবী। তাদের যুগ্মরূপ হল দাব্যপৃথিবী, যার মধ্যে সমস্ত জগতের পিতা-মাতার ধারণা স্থান পেয়েছে। বিখ্যাত গায়ত্রী মন্ত্রে প্রভাতের দেবীর উপর উপাসিত হয়েছে উষা। অসামান্য এই দেবী চিরযৌবনা তিনি পূর্ব দিকে উদিতা হন। তিনি একাধারে সূর্যের মাতা ও প্রণয়নী। প্রণয়নী যেমন প্রেমীদের সামনে আপন আবরণ উন্মোচন করে্‌ ঋকবেদ অনুযায়ী উষাও  তেমনি নিজেকে উদ্ভাসিত করেন। ঋকবেদে কুড়িটি সূক্ত উষার উদ্দেশ্যে নিবেদিত, যা এই দেবীর গুরুত্বের পরিচয় দেবে।

আন্তরীক্ষ বা আকাশের দেবতার মধ্যে বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে বরুণ ও ইন্দ্র। বরুণ ঋকবেদে ধৃতব্রত অভিধায় চিহ্নিত, কারণ তিনি সকল কিছু ধারণ করেন। ঋতু  নিয়ামক হিসেবে তিনি বর্ষনেরও দেবতা। সেই কারণে জলের অধীশ্বর হিসেবেও তিনি চিহ্নিত হন। আবেস্তায় বরুণ ,অহুর মেজদা (অসুর মেধা) হিসেবে আরোগ্য। আদি বৈদিক ধর্মে বরুণ সম্ভবত মুখ্য দেবতা ছিলেন এই অভিমত দিয়েছেন নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য । 

ঋকবেদে সব থেকে অগ্রগণ্য দেবতা হিসেবে স্থান পেয়েছে ইন্দ্র। তার প্রমান হিসেবে ঋকবেদে তারই উদ্দেশ্যে সর্বাধিক সংখ্যক সূক্ত রচিত হয়। তিনি দেবতাদের প্রধান। তিনি অসামান্য বীর হিসেবে দেবতাদের দলপতি। তার প্রধান অস্ত্র হলো বজ্র। দুইটি শক্তিশালী অশ্ব তার সুবর্ণময় রথকে বহন করে তাঁর এমন রূপকল্পনা ঋগ্বেদে করা আছে। তাঁর অপর পরিচয় হলো তিনি বৃত্র-সংহারক । ঋকবেদে বৃত্র আক্ষরিক অর্থ "যা আবরণ করে"। ইন্দ্রের অপর অভিধা "সোমপা" কারণ তিনি প্রচুর পরিমাণে সোমরস পান করেন।

পৃথিবীর দেবতাদের মধ্যে ঋকবেদে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছেন অগ্নি। তিনি একাধারে দেবতাদের পুরোহিত আবার যজ্ঞে প্রদত্ত আহুতি। তিনি দেবতাদের হয়ে গ্রহণ করেন (আসলে ভক্ষণ করেন)। পার্থিব দেবতাদের মধ্যে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে সোম কে। সমগ্র নবম মন্ডলটি যার উদ্দেশ্যে নিবেদিত। সোম লতা থেকেই সোম রস পাওয়া যায়। ঋকবেদে যা সোম ,আবেস্তাতে তাই হ‌ওম। সোম লতার শীর্ষ ভাগ পাথরের জাঁতায় পিষ্ট করলে যে রস নিষ্কাশিত হয় তাকে প্ররিশ্রুত করে তারপর সেই সোম রস পানীয় হিসেবে গ্রহণ করা হত। সোম এর স্তুতি করা হয়েছে অমৃততুল্য মৃতসঞ্জীবনী এক পানীয়রূপে।

পরবর্তী বৈদিক যুগ

পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে যজ্ঞ প্রধান ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপ হিসাবে গুরুত্ব পেয়েছে। ব্রাহ্মণ গ্রন্থগুলি যজ্ঞকে সর্বোচ্চ মহাজাগতিক শক্তিরূপে তুলে ধরে। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী যাবতীয় সৃষ্টি যজ্ঞ  ক্রিয়ার ফলে উৎসারিত বলে মনে করা হয়। অসংখ্য আচার অনুষ্ঠান ও নিখুঁত মন্ত্র উচ্চারণ যজ্ঞক্রীয়ার সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত হয়ে গিয়েছিল। এই যজ্ঞগুলি ব্যয়বহুলও বটে এবং পশুবলি তার অপরিহার্য অংশ। নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য যজ্ঞ অনুষ্ঠানের সাথে আদিম জাদু বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক লক্ষ্য করেছেন। এর সঙ্গে বৈদিক যাগ-যজ্ঞগুলিতে বহুক্ষেত্রে নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য উর্বরতা ও প্রজননের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যৌনাচরের উপস্থিতি দেখেছেন। ব্রাহ্মণ গ্রন্থ সমূহে  প্রায়ই যজ্ঞবেদীকে যৌন ও যঞ্জাগ্নীর উৎপাদনকে যৌনক্রিয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে।

ঋকবেদের তুলনায় পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে  রুদ্র- শিবের গুরুত্ব সম্ভবত বৃদ্ধি পেয়েছিল। শতপথ ব্রাহ্মনে রুদ্র ও অগ্নির মধ্যে অভেদও বর্ণনা করা হয়েছে। রুদ্র নানা স্থানে নানা নামে পরিচিত। তিনি শর্ব নামে পরিচিত পূর্ব দিকে, বাহ্লীকদেশে তার নাম ভব। তিনি পশুপতি নামেও ভূষিত। এই অভিধাগুলি থেকে বোঝা যায় যে বৈদিক রুদ্র ধীরে ধীরে পরবর্তী আমলের শিবে রূপান্তরিত হচ্ছেন। 

একই সঙ্গে বিষ্ণুর মর্যাদা বৃদ্ধি পরবর্তী বৈদিক গ্রন্থমালায় দেখা যায়। শতপথ ব্রাহ্মণে বিষ্ণুর তিনটি স্থান হিসেবে পৃথিবী, বায়ুমণ্ডল ও আকাশের কথা বলা হয়েছে। বিষ্ণু ও যজ্ঞ অভিন্ন বলেও অভিহিত। শতপথ ব্রাহ্মন, পঞ্চবিংশ ব্রাহ্মণ এবং তৈত্তরীয় অরণ্যক মিলিয়ে পড়লে মনে হয় যজ্ঞের চরম ফল লাভ করার প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার দরুন বিষ্ণু শ্রেষ্ঠ মর্যাদা পেয়েছিলেন। 

যে দেবতা পরবর্তী বৈদিক আমলের পূর্বে অজানা ছিল তিনি হলেন প্রজাপতি। অথর্ববেদে তিনি বিশ্ব চরাচরের সৃষ্টিকর্তা ও রক্ষক বলে বিশেষ সম্মানিত। প্রজাপতি যঞ্জের প্রতীক হিসেবে উল্লেখিত।

যাগযজ্ঞের উল্লেখ অরণ্যক ও উপনিষদ দুই সাহিত্যে থাকলেও যজ্ঞের কেন্দ্রীয় গুরুত্ব এই দুই সাহিত্যে প্রশ্নাতিত নয়। দুই সাহিত্যেই যজ্ঞ নির্ভর ক্রিয়া-কলাপের বিকল্প ধ্যান-ধারণা পাওয়া যায়। এই বিকল্প সংস্কৃতির অনুসন্ধান করেছিলেন রোমিলা থাপার। তার গবেষণায় দেখা গেছে জটিল ও আচার সর্ব‌ত্র যাগযজ্ঞের দ্বারা নয়, মুক্তির প্রকৃত উপায়ে যে ধ্যান নির্ভর উপলব্ধি ও জ্ঞান এই বিকল্প ধারণা অরণ্যক ও বিশেষত উপনিষদ গ্রন্থাবলিতে স্পষ্ট। উপনিষদের প্রধান প্রতিপাদ্য ব্রহ্মতত্ত্ব। সংক্ষেপে বলে যাই যে ব্রহ্মবিদ্যার মূল কথাই জগত ব্রহ্মের প্রকাশ। জগতের সকল প্রাণী ও উপস্থিত এক অনাদি অনন্ত ব্রহ্ম। অবিনশ্বর আত্মা যা মৃত্যুর পরও বিদ্যমান থাকে তার সাথে ব্রহ্মের অবেধ উপনিষদে বারবার উল্লেখিত। অর্থাৎ ব্যক্তি, আত্মা ও ব্রহ্মের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

Transformation in Religious Life in the Vedic Age

To understand the religious life during the Vedic age, we need to depend on Vedic literature. Similar to politics, society, and economics, the religious practices in Vedic conduct were dynamic, evolving from the practices found in the Rigveda to those in the later Vedic periods.

Rig Vedic Age

In the Rig Veda, there is no mention of idol worship. The hymns in the Rigveda primarily praise the deities for their past assistance and express the hope that, based on their previous kindness, the deities will continue to bless the worshiper. The concept of reincarnation is absent there. Questions about what happens after death were illuminated by the seers. According to one viewpoint, after death, the body dissolves into the five elements. Another perspective suggests that after death, a person's soul travels to the realm of Yama, the god of death, or even the realm of the sun. Thus, the Rigveda does not provide a definite conception of the post-mortem state.

The concept of the creation of the universe finds its place in the Rigveda. In a hymn, the question is posed: who witnessed the first creation? The origin of the earth and life is attributed to water, symbolizing the primordial substance from which all things were created. The Nasadiya Sukta in the Rigveda presents a skeptical inquiry into the doubt surrounding the creation of the universe. It describes a time when there was nothing - no earth, no sky, no day or night, and even death and immortality did not exist. Only the divine being existed, and from that, the entire creation originated. The emergence of the Hiranyagarbha, the cosmic egg, who is the creator of the universe, is described. The doubt expressed in the hymn emphasizes the mysterious nature of the universe's origin.

Since Vedic society was patriarchal, the Rigveda mentions more male deities than female ones. Yaska, in his Nirukta, categorizes the deities into three groups:

  1. Deities of Heaven (Dyuloka) - Mitra, Vishnu, Usha, Adityas, etc.
  2. Deities of the Atmosphere (Antariksha) - Indra, Rudra, Maruts, Vayu, etc.
  3. Deities of Earth (Bhuloka) - Agni, Prithvi, Soma, etc.

In the realm of the three worlds, the focus is on the deities associated with the natural elements. Some of these deities, such as Agni, Usha, Surya, Vayu, and Dyau, are explicitly mentioned. The term "Dyau" has a correlation with the Greek deity Zeus. "Dyau" translates to "sky" or "heaven," and its consort is considered to be Prithivi or Earth. Together, they form the divine couple known as Dyaus-Prithivi, symbolizing the parents of the entire world.

The famous Gayatri mantra venerates Usha, the goddess of dawn, as the object of worship. This extraordinary deity, eternal and youthful, rises in the east at dawn. She is simultaneously regarded as the mother of the sun and a beloved consort. Similar to how a lover unveils themselves before their beloved, Usha, according to the Rigveda, reveals herself by dispelling the darkness. The Rigveda, particularly in the Khudi Sukta, offers hymns dedicated to Usha, providing an introduction to this significant goddess.

Among the deities in the sky or celestial realm, Varuna and Indra hold special significance. Varuna is identified in the Rigveda with the term Dhritabrata because he holds everything. He is also recognized as the deity regulating the seasons. In the Avesta, Varuna is identified with Ahura Mazda, the god of wisdom and righteousness. In early Vedic religion, Varuna appears to have been a prominent deity, possibly even the chief deity, as suggested by Narendra Nath Bhattacharya.

In the Rigveda, the most prominent deity is recognized as Indra. As evidenced in the Rigveda, he is the subject of the highest number of hymns. He is considered the chief among the deities, an extraordinary warrior, and the leader of the divine assembly. His primary weapon is the thunderbolt (vajra). Descriptions in the Rigveda envision him being carried on a golden chariot pulled by two powerful horses. Indra is also identified as the slayer of Vritra, a mythical serpent. The term "Vritra" literally means "that which covers."Indra's epithet "Somapa" suggests that he regularly consumes the Soma juice in large quantities.

Among the earthly deities, Agni holds a special status in the Rigveda. He serves as the priest for the other deities and receives offerings in the yajnas (ritual sacrifices). He is invoked by the worshipers and is the receiver of offerings in the form of oblations. Agni is both the intermediary and participant in the yajnas, symbolizing the sacred fire.

In the context of earthly deities, it is essential to mention Soma. The entire ninth mandala of the Rigveda is dedicated to Soma. Soma is obtained from the Soma plant, and it is said that the Soma ritual is crucial for connecting with the divine. In the Rigveda, there is a hymn that begins with "Soma, I praise." Soma is described as being pressed from the top of the Soma plant, and the juice obtained is considered a rejuvenating and life-giving elixir. The hymns glorify Soma as an ambrosial, immortal, and life-giving beverage.


Later Vedic Age

In the later Vedic literature, sacrifices (yajnas) emerged as the predominant religious activity. The Brahmana texts elevated Yajna to the highest cosmic power. According to this perspective, the continual performance of yajnas was believed to sustain the universal order. Countless rituals and the recitation of flawless mantras became inseparable parts of the yajna ceremonies. These yajnas were elaborate affairs involving substantial offerings and sacrificial animals. Narendra Nath Bhattacharya noted a strong connection between the practice of yajna and the deep-rooted belief in ancient magic. In Vedic yajnas, the presence of sexual and reproductive symbolism is evident, suggesting a connection with fertility and procreation. Brahmana texts often draw comparisons between yajna and sexual activities.

In comparison to the Rigveda, Rudra's importance possibly increased in later Vedic literature. The Shatapatha Brahmana describes an identity between Rudra and Agni. Rudra is known by various names and is associated with different regions. He is known as Sharva in the east, Bhava in the west, and Pashupati, indicating his association with animals. From these divisions, it can be inferred that in Vedic times, Rudra gradually transformed into the form of Shiva in later periods.

Similarly, the status of Vishnu also saw an elevation in later Vedic literature. In the Shatapatha Brahmana, Vishnu is mentioned in three aspects: as the earth, as the atmospheric realm, and as the sky. Vishnu is considered inseparable from yajna in these texts. Shatapatha Brahmana, Pancavimsa Brahmana, and Taittiriya Aranyaka collectively suggest that Vishnu achieved the highest honor by winning the competition for the ultimate result of the yajna.

Prajapati, a deity unknown in earlier Vedic practices, gained significance in later Vedic literature. In Atharvaveda, Prajapati is revered as the creator and protector of the entire universe. He is symbolized by the yoni (female reproductive organ), emphasizing his association with creation.

Despite references to yajna in both Aranyaka and Upanishad literature, these texts do not prioritize yajna as the central focus. Instead, they present alternative contemplative practices that emphasize meditation and knowledge. The Upanishads, the primary exponents of Brahmavidya, assert that the core truth is the manifestation of the world in Brahma. The indivisibility of the individual, soul, and Brahma is repeatedly emphasized, conveying the idea that there is no distinction between them.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ...

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগ...

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হ...