সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

দাক্ষিনাত্য বিদ্রোহ | Deccan Uprising

 দাক্ষিনাত্য বিদ্রোহ উনিশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে ভারতে যেসব কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল ১৮৭৫ এর দাক্ষিণাত্য বিদ্রোহ তার মধ্যে অন্যতম। মহারাষ্ট্রের এই কৃষক অসন্তোষের পশ্চাতে ছিল ঔপনিবেশিক সরকার প্রবর্তিত রাওতওয়ারি ব্যবস্থা এবং মহাজনি শোষণ। রায়তওয়ারি ব্যবস্থায় রাজস্বের হার ছিল যথেষ্ট উঁচু। এই ব্যবস্থায় সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করত। রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন গ্রামের প্যাটেল বা মোড়লরা। খরা প্রবন মহারাষ্ট্রে প্রায়ই উৎপাদনে ঘাটতি হত এবং এর ফলে কৃষকরা সরকারের খাজনার দাবি মেটাতে পারত না। তখন তারা মাড়োয়ারি মহাজন সাউকার এবং গুজরাটি মহাজন বনি 'র দ্বারস্ত হত। সাধারন কৃষকদের কুনবি বলা হত। সাউকার ও বনি' রা কুনবি দের জমি দেনার দায়ে গ্রাস করে নিতে সর্বদাই উৎসাহী থাকত। তবে অনেক পন্ডিত দাক্ষিণাত্য বিদ্রোহের পশ্চাতে এই মহাজনি শোষণকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চান না। তাঁদের মতে, N. Charlesworth তাঁর Myth of Deccan Riots  গ্রন্থে দেখিয়েছেন কৃষজমির কেবল ৫% মহাজনেদের হস্তগত হয়েছিল। আর এদের মধ্যে স্থানীয় মহাজনই বেশি ছিলেন। কিন্তু কৃষকরা বহিরাগত কৃষকদের আক্রমণের মুলত টার্গেট করেছিল। তিনি

মোপলা বিদ্রোহ | Malabar Rebellion

 মোপলা বিদ্রোহ | Malabar Rebellion উনিশ শতকের কৃষক বিদ্রোহগুলির মধ্যে অন্যতম হল মালাবার অঞ্চলের মোপলা বিদ্রোহ (১৮৪৯-৫২)। মোপলারা আরব ব্যবসায়ীদের উত্তরপুরুষ। মালাবার উপকূলে আগত আরব ব্যবসায়ীদের একটি অংশ দেশে ফিরে না গিয়ে স্থানীয় নায়ার ও তিয়ার মহিলাদের সঙ্গে বিবাহ করে মালাবার এলাকাতেই থেকে যায় এবং কৃষিকাজকে পেশা হিসাবে বেছে নেয়। স্থানীয় দাস জাতি ছিল চেরুমা। ১৮৪৩ সালে দাস প্রথা অবলুপ্তি আইন পাশ হলে চেরুমা-রা মুক্তি পায় কিন্তু সমাজ তাদের ঠাঁই দেয় নি। ফলে এঁরা ইসলাম গ্রহণ করে। এভাবে মোপলারা সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়। এরা বেশিরভাগই ছিল ভূমিহীন কৃষক, ছোট ব্যবসায়ী বা জেলে। ১৭৯২ সালে মালাবার ব্রিটিশ অধিকারে আসে এবং মালাবার এলাকায় নতুন ভূমি ব্যবস্থা চালু হয়, যাতে স্থানীয় হিন্দু জেন্মিরা জমির মালিক হিসাবে পরিগনিত হন এবং কৃষক ও কনমদার (ভূমিস্বত্ব ভোগ দখলকারী) দের জমি থেকে উৎখাত করার অধিকার পেয়ে যান। এতদিন জেনমি, কনমদার ও কৃষকের  মধ্যে উৎপন্ন সমান সমান ভাগাভাগি হত। এই নতুন ব্যবস্থা মোপলা কৃষকদের চুড়ান্ত প্রতিকূলে যায় এবং এই শ্রেনীর মধ্যে বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়। উচ্চ কর হার এবং আইন বহির্ভূত কর আদায়, পুলিশ ও বিচা

TISCO | টাটা আয়রন এন্ড স্টিল কোম্পানি

  TISCO | টাটা আয়রন এন্ড স্টিল কোম্পানি আধুনিক ভারতে যে সকল আধুনিক শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল লৌহ ইস্পাত শিল্প তার মধ্যে অন্যতম। রেলপথ ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশের ফলে ভারতে লৌহ-ইস্পাত শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। ১৮৭৫ খ্রিঃ বরাকরে বেঙ্গল আয়রন এণ্ড স্টিল কোম্পানি (BISCO) তৈরি হয়েছিল। ১৯০৩ সালে এই কোম্পানি ইস্পাত নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, কিন্তু তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ভারতের ইস্পাত শিল্পের ইতিহাস মুলত টাটা আয়রন এন্ড স্টিল কোম্পানির (TISCO) ইতিহাস। TISCO গড়ে ওঠার ইতিহাসে তিনজন ব্যক্তির নাম অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। এঁরা হলেন জামশেদজি টাটা, তাঁর পুত্র দোরাবজি টাটা এবং ভূতত্ত্ববিদ প্রেমনাথ বসু। ১৯০৩-৪ সালে প্রেমনাথ বসু ওড়িশার ময়ুরভঞ্জ এলাকায় আকরিক লোহার খনি আবিস্কার করেন। এই এলাকা ছিল বাংলার কয়লা খনি গুলির খুব কাছে অবস্থিত। এর পর জামশেদপুরকে বেছে নেওয়া হয় ইস্পাত কারখানা গড়ে তোলার জন্য। TISCO গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভারতের ঔপনিবেশিক সরকারের গুরুত্ব কম নয়। ১৯০৫ সালে ভারত সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প দপ্তর সরকারি রেলের তরফে টাটাদের সাথে এক দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করে। ঠিক হয় যে আগামী ১০ বছরে রেল কোম্পানী টাটাদের কাছ থেকে ২০,০০০

মুঘল স্থাপত্যকলায় শাহ জাহানের অবদান | Mughal Architecture under Shah Jahan

মুঘল স্থাপত্যকলায় শাহ জাহানের অবদান | Mughal Architecture under Shah Jahan ভারতবর্ষের স্থাপত্যকলার ইতিহাসে শাহ জাহানের রাজত্বকাল স্বর্ণযুগ। মুঘল আমলে জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে যেমন চিত্রকলার চরম বিকাশ ঘটেছিল তেমন শাহাজাহানের রাজত্বকালে মুঘল স্থাপত্য শিল্প উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছেছিল। তাঁর পূর্বপুরুষ মহান আকবরের সময় থেকে মুঘল স্থাপত্যের জয় যাত্রা শুরু হয়েছিল, কিন্তু জাহাঙ্গীর চিত্রশিল্পে অত্যধিক নজর দেওয়ায় স্থাপত্য নির্মাণ অবহেলিত হয়েছিল। শাহ জাহান আবার নতুন উদ্যমে স্থাপত্য নির্মাণ শুরু করেন। পূর্বসূরিদের অনুসৃত নির্মাণশৈলী থেকে সরে এসে এক নতুন আঙ্গিকে নির্মাণকার্য শুরু হয়। শাহ জাহানের প্রথম জীবনের নির্মাণগুলি সবই আগ্রা দুর্গের অভ্যন্তরে অবস্থিত। আগ্রা দুর্গের ভিতরে তিনি দেওয়ান-ই-আম, দেওয়ান-ই-খাস, মতি মসজিদ, শিসমহল, মুসম্মান বারজ নির্মাণ করেন। ১৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি দিল্লির কাছে শাহজাহানাবাদ নামে প্রাসাদ-দূর্গ সহ শহর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই নির্মাণ কাজ চলে। আগ্রা দুর্গের অনুকরণে এখানে লাল বেলেপাথর দিয়ে নির্মিত হয় লালকেল্লা। এই দুর্গের দুটি প্রবেশ পথ-- পশ্চিম দিক

ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ের রচনা | François Bernier

ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ের রচনা | François Bernier আকবরের রাজত্বকাল থেকেই মুঘল দরবারের সঙ্গে ইউরোপীয়দের যোগাযোগের সূচনা হয়। শাহজাহানের দরবারে কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ইউরোপীয় পর্যটকের আগমন হয়েছিল। এরা হলেন ট্যাভার্নিয়ে, পিটার মান্ড্‌ মানুচি এবং বার্নিয়ে। বার্নিয়ে ছিলেন একজন ফরাসি চিকিৎসক। শাহজাহানের রাজত্বকালের শেষ দিকে, ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে উত্তরাধিকারী দ্বন্দ্বের সময় তিনি ভারতবর্ষে এসেছিলেন এবং ১৬৬৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি এদেশে ছিলেন। তার লেখা বিতর্কিত গ্রন্থটি হল The War of Succession of 1658 . এই গ্রন্থটি একসময় নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হলেও আধুনিক ঐতিহাসিকরা এই গ্রন্থের ঐতিহাসিক নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যান্য ইউরোপীয় পর্যটকদের মত বার্নিয়েও তাঁর স্বদেশের সাথে ভারতের তুলনা করতে গিয়ে ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির অবমুল্যায়ন করেছেন। তিনি লিখেছেন ভারতে কোনো রাষ্ট্র নেই। এখানে সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে প্রবল দ্বন্দ্ব চলে। জ্যেষ্ঠ পুত্রের উত্তরাধিকার স্বীকৃত থাকলে এমন হত না। আসলে বার্নিয়ে যখন ভারতে এসেছিলেন তখন শাহাজাহানের পুত্রদের মধ্যে উত্তরাধিকার দ্বন্দ্ব চলছিল। তাই তাঁ