সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

লোহা আবিস্কার বিতর্ক | Debate on Iron Invention

লোহা আবিষ্কার বিতর্ক লোহার আবিষ্কার ঠিক কবে, কোথায়, কাদের হাত ধরে হয়েছিল এই নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক বিদ্যমান। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পণ্ডিতদের অনুমান ছিল যে, হিটাইটদের রাজ্য আনাতোলিয়া ছিল লৌহপ্রযুক্তির উদ্ভাবন কেন্দ্র। হিটাইটদের সামরিক সাফল্যের পিছনেও এই লৌহপ্রযুক্তির অবদানকে বৃহৎ আকারে দেখা হতো। এও মনে করা হত যে পশ্চিম এশিয়া ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে বিভিন্ন গোষ্ঠীর অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে হিতাইট সাম্রাজ্যের অবসানের পর এই প্রযুক্তি বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল। সাম্প্রতিক গবেষণায় অবশ্য লৌহপ্রযুক্তির আবিষ্কারের উপর হিটাইটদের কৃতিত্বের এই দাবি বাতিল হয়ে গেছে। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাবদে এবং দ্বিতীয় সহস্রাবদের প্রথমার্ধে পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ৫০০ রকম লৌহ নির্মিত শিল্পকলার নিদর্শন পাওয়া গেছে, যা হিটটাইটদের উত্থানের বহু আগেকার। এর থেকেই অনুমান করা যায় যে  হিটটাইট রা লোহার আবিস্কারক নয়। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে জানা গেছে যে ওই সময়কার লোহার জিনিসগুলি উল্কাপিণ্ড থেকে নিষ্কাশিত লোহা দিয়ে তৈরি হত। সুতরাং দ্বিতীয় সহস্রাবদের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বিশুদ্ধ ল

নব্য প্রস্তর যুগীয় বিপ্লব | Neolithic Revolution

 নব্য প্রস্তর যুগীয় বিপ্লব আজ থেকে প্রায় ১০,৫০০ বছর আগে পশ্চিম এশিয়ায় প্রথম নব্য প্রস্তর যুগীয় সংস্কৃতির সন্ধান পাওয়া যায়। নিয়মিত কৃষিকাজ এবং পশুপালন তথা খাদ্য উৎপাদক অর্থনীতি দিয়ে আমরা নব্য প্রস্তর যুগকে চিহ্নিত করা যায়। তবে পৃথিবীর সর্বত্র একই সাথে খাদ্য উৎপাদন তথা নব্য প্রস্তর যুগের সূচনা হয়েছিল এমন নয়। পশ্চিম এশিয়া থেকে শুরু হয়ে কৃষিকাজ ক্রমশ দক্ষিণ ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে (আজ থেকে ৬০০০-৭০০০ বছর আগে)।  কৃষির আবির্ভাব এবং স্থায়ী বসতি মানব সমাজে যে ব্যপক পরিবর্তন এনেছিল তাকেই গর্ডন চাইল্ড 'বিপ্লব' বলে অভিহিত করেছেন।  নব্য প্রস্তর যুগ তথা খাদ্য উৎপাদনের সবথেকে প্রাচীনতম নজির পাওয়া গেছে প্যালেস্টাইনের জেরিকো'তে (১০,৫০০ বছর পুরানো)। উত্তর ইরাকের জাওয়াই জাওয়াই শেমি শনিদার (১১০০০ বছর পুরানো), যেখানে পশুপালক আধা-স্থায়ি জীবনের প্রমান পাওয়া গেছে। এছাড়া রয়েছে উত্তর ইরাকের জারমো (৭০০০ বছর পুরানো) এবং আনাতোলিয়ার ক্যাটাল হুউইক (৮০০০ বছর পুরানো), যেখানে নিয়মিত কৃষির প্রমান পাওয়া গেছে। এই প্রত্নক্ষেত্রগুলি থেকে প্রাপ্ত তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে আমরা নব্যপ্রস্তর য

পশ্চিম এশিয়ায় নব্যপ্রস্তর যুগীয় সংস্কৃতির বিস্তার | Neolithic Culture in West Asia

পশ্চিম এশিয়ায় নব্যপ্রস্তর যুগীয় সংস্কৃতির বিস্তার  নব্য প্রস্তর যুগীয় সংস্কৃতিকে চিহ্নিত করা যায় মানুষের খাদ্য উৎপাদক হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে। কোথায় প্রথম মানুষ কৃষিকাজ করতে শুরু করেছিল তা নিয়ে ১৯৪০ এর দশক পর্যন্ত পণ্ডিত মহলে একটি ভ্রান্ত ধারণা ছিল। অনুমান করা হত যে প্রাচীন নদীমাতৃক সভ্যতা গুলি যেখানে অবস্থিত ছিল (যেমন মিশরীয়, মেসোপটেমিয়া ইত্যাদি) সেখানেই প্রথম চাষাবাদ শুরু হয়েছিল। কিন্তু ১৯৫০ এর দশকে এই ধারনার আপাদমস্তক বদল ঘটে উইলিয়ার্ড লিবির Radio Carbon Dating আবিষ্কারের ফলে। Radio Carbon Dating প্রযুক্তি প্রয়োগ করে আজ এটা প্রমানিত যে চাষাবাদ কোনো নদী তীরবর্তী আদ্র এলাকায় সূচনা হয় নি, হয়েছিল পাহাড়ের পাদদেশে বা তৃনভূমি এলাকায়।  পশ্চিম এশিয়ায় চাষাবাদের সূচনা হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ১০,৫০০ বছর আগে। যে সমস্ত প্রত্নক্ষেত্রগুলি আবিস্কৃত হয়েছে সেগুলির অবস্থান মোটামুটি ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের মরুসাগর উপকূল বরাবর এলাকা, জর্ডন উপত্যকা, সিরিয়া, ইরাক, জাগ্রোস পর্বতমালা এবং উত্তর-পশ্চিম ইরানে। পশ্চিমে প্রায় তুরস্ক পর্যন্ত এলাকায় চাষাবাদের সূচনা হয়েছিল। তবে সবথকে প্রাচীনতম প্রত্নক্ষেত্রগুলি হল প্যালেস্

আদিম মানুষের বিবর্তনঃ হোমিনিড থেকে হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স | Human Evalution: From Hominid to Homo Sapience Sapience

আদিম মানুষের বিবর্তনঃ হোমিনিড থেকে হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স  আজ থেকে প্রায় ৩৫০০ মিলিয়ান বছর আগে পৃথিবীতে একপ্রকার জীবের আবির্ভাব হয়েছিল। এরা ছিল দ্বিপদী (Bipedal) এবং এদের মাথার খুলির আয়তন ছিল অন্যান্য জীবের তুলনায় বড়। সময়টা ছিল সোনোজোয়িক যুগ।*  Cenozoic era-র সূচনা প্রায় ৬৬ মিলিয়ান বছর আগে। এই যুগের দ্বিপদ বিশিষ্ট স্তন্যপায়ী প্রানী প্রাইমেট নামে পরিচিত ছিল। Cenozoic era-র দুটি ভাগ-- টারশিয়ারি ও কোয়ার্টারনারি period. কোয়ার্টারনারি period এর মধ্যে আছে দুটি এপখ- প্লিস্টোসিন এবং হলোসিন। এই প্লিস্টোসিন পর্বেই মানুষের বিবর্তনের প্রক্রিয়ায় গতি সঞ্চারিত হয়েছিল। প্রায় ৮ লক্ষ বছর ধরে ছলেছিল প্লিস্টোসিন পর্ব। এই পর্ব ছিল বরফের যুগ এবং আনুমানিক ১০০০০ হাজার বছর আগের প্লিস্টোসিন পর্বের সমাপ্তি ঘটেছিল এবং আধুনিক হলোসিন যুগের আবির্ভাব হয়েছিল।  প্রাইমেটদের উন্নত শারিরিক গঠনের জন্য গাছে গাছে বিচরন করতে পারত। প্রাইমেটদের দুটি ভাগ- প্রসিমি ও এন্থ্রোপয়েড। প্রসিমিদের মধ্যে ছিল লেমুর, টারসিয়ের, লোরিস এবং অন্যান্য গাছে চড়া প্রানী। এরা অপেক্ষাকৃত অনুন্নত। এদের থেকে উন্নত ছিল এন্থ্রোপয়েডরা। এদের মধ্যে তিনট

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ব্যবস্থাপনায় সংগ্রহশালার ভূমিকা | Role Museum in Cultural Heritage Management

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ব্যবস্থাপনায় সংগ্রহশালার ভূমিকা সংগ্রহশালা বা মিউজিয়াম ছিল এক সময়ে কেবল মজুদ কক্ষ। তখন বিভিন্ন শিল্পজাত বস্তু সংগ্রহ করে তা মিউজিয়ামে মজুদ করা হত। পরবর্তীকালে সেগুলি সংরক্ষণ করার কথা ভাবা হয় এবং বর্তমানে সেগুলির সর্বজনীন প্রদর্শন মিউজিয়ামের অন্যতম প্রধান দায়িত্বে পরিণত হয়েছে। সুতরাং প্রথম থেকেই মিউজিয়ামের কাজ ছিল দেশ বা জাতির সাংস্কৃতিক সম্পদ গচ্ছিত রাখা। তখন ঐতিহ্যবাহী সম্পদ বলতে কেবল সাংস্কৃতিক সম্পদকেই বোঝা হত। নদী, সমুদ্র, পাহাড় ইত্যাদিকে তখনো ঐতিহ্য হিসাবে গন্য করা হয় নি। ঐতিহ্য দুই প্রকার: প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বলতে প্রাচীন স্থাপত্য, ভাস্কর্য, চিত্রকলা, প্রত্নতাত্বিক ধ্বংসাবশেষ, মুদ্রা, লিপি, লোককথা, লোক নৃত্য, ভাষা, লিপি, প্রথা পদ্ধতি ইত্যাদি। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আবার দুই প্রকার মূর্ত ঐতিহ্য এবং বিমূর্ত ঐতিহ্য। মূর্ত ঐতিহ্যের মধ্যে পড়ে বস্তুগত ঐতিহ্য, যেমন- স্থাপত্য, ভাস্কর্য ইত্যাদি। আর বিমূর্ত ঐতিহ্যের মধ্যে পড়ে ভাষা, লিপি ইত্যাদি। এগুলোকে ছুঁয়ে অনুভব করা যায় না। তাই এগুলিকে অস্পর্শক ঐতিহ্যও বলে। মূর্ত ও বিমূর্ত দুই প্রকার সাংস্কৃতিক

Heritage Walk

হেরিটেজ ওয়াক পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করে কোনো স্থানের ইতিহাস ও ঐতিহ্য কে অনুধাবন করার নাম হেরিটেজ ওয়াক। নগর বা জনপদ গুলিতে এমনকি গ্রামেও সড়ক পথের ধারে ছড়িয়ে থাকে সেই জনপদের ইতিহাস, তার মূর্ত ও বিমূর্ত ঐতিহ্য এবং জীবন্ত পরম্পরা (living traditions)। এগুলি সাধারণ ট্যুরিস্ট-এই চোখে ধরা পড়ে না। এগুলির সঠিক অনুধাবনের জন্য প্রয়োজন পদব্রজ, যেমনটা প্রাচীনকালে পর্যটকগণ করতেন। আর এজন্যই অনুষ্ঠিত হয় হেরিটেজ ওয়াক। হেরিটেজ ওয়াকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব পায় ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য, পৌরাণিক ঐতিহ্য এবং শহরের জীবন্ত পরম্পরা  (living traditions)। তবে এক্ষেত্রে গাইড বা প্রদর্শকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হেরিটেজ ওয়াকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ঐতিহ্য গুলি সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি সেগুলি সংরক্ষণ করার সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। সংশ্লিষ্ট ঐতিহ্য গুলির তাৎপর্য ও গুরুত্ব সমাজের কাছে প্রকাশিত হয়।  ভারতের  একাধিক  ঐতিহ্যবাহী  নগরে হেরিটেজ ওয়াক অনুষ্ঠিত হয়। এগুলির অনেকগুলিই বাণিজ্যিক ভাবে আয়োজিত। তবে অনেক ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাগুলি নিজে থেকে বা কোনো বেসরকারি সংস্থার সাথে যুক্ত হয়ে আয়োজন করে। ২০১৫ সালে ২৭শে সেপ্টেম্বর World

ভারতে ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইনসমূহ | Heritage Protection and Conservation Act in India

ভারতে ঐতিহ্য সংরক্ষণ আইন কোন দেশের ঐতিহ্যই সেই রাষ্ট্রের পরিচয়। ঐতিহ্য সামাজিক তথা জাতির সম্পদ। প্রাকৃতিক কিংবা সংস্কৃতিক, মূর্ত কি বিমূর্ত সকল প্রকার ঐতিহ্যই সংরক্ষণ প্রয়োজন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণ এবং মনুষ্য সৃষ্ট ক্রিয়া-কলাপ এর ফলে ভারতবর্ষের প্রাচীন ঐতিহ্য গুলি বিপদের সম্মুখীন হয়েছে এবং কিছু কিছু ঐতিহ্য বিনষ্ট হয়েছে। তাই কোম্পানির আমল থেকে শুরু করি ভারতে ঐতিহ্য সংরক্ষণের আইনি প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেছিল এবং স্বাধীনতার পর থেকে সেই প্রচেষ্টা আরো বেশী দৃঢ় হয়েছে। ভারতে ঐতিহ্য সংরক্ষণ একটি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। সংবিধানের ৫১ক অনুচ্ছেদে নির্দেশমূলক নীতিতে আমাদের দেশের বৈচিত্র্যপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কে রক্ষা করার ক্ষেত্রে নাগরিকদের দায়িত্বকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সাথে জাতির কাছে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ভবন বা সৌধ এবং বস্তুকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকাও উল্লেখ করা হয়েছে। ব্রিটিশ যুগে সংরক্ষণ আইন  ঐতিহাসিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভবন গুলি সংরক্ষণের আইনগত প্রয়াস প্রথম লক্ষ্য করা যায় কোম্পানি শাসনকালে। বাংলায় ১৮১০ সালের ১৯ নম্বর রেগুলেশনে, মাদ্রাজে ১৮১৭ স

শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলাঃ বাংলার একটি ঐতিহ্য | Poush Mela of Shantiniketan: A Cultural Heritage of Bengal

শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলাঃ বাংলার একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মেলার আক্ষরিক অর্থ মিলন। সামাজিক, ধর্মীয়, বাণিজ্যিক বা অন্য কোনো উপলক্ষ্যে যখন কোনো স্থানে মিলনোৎসব আয়োজিত হয় তখন তাকে মেলা বলে। মেলায় বহু মানুষের সমাগম হয় এবং পারস্পরিক ভাববিনিময় হয়। মেলার সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির যোগাযোগ মেলাকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনে আসে প্রাণচাঞ্চল্য। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন , ‘ প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র দীন একাকী। কিন্তু উৎসবের দিন মানুষ বৃহৎ , সেদিন সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ , সেদিন সে সমস্ত মনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ ’ । কবিগুরু যথার্থই বলেছেন। উপলক্ষ যাই হোক না কেন , বাঙালির সকল উৎসবের মধ্যে একটা সার্বজনীন রূপ আছে। এতে ধর্ম , সম্প্রদায় , জাত-পাত বা ধনী-গরিবের সামাজিক বিভক্তি বাধা হয়ে দাঁড়ায় না বরং সকল শ্রেণির মধ্যে সেতুবন্ধন রচিত হয়। আর এ কারণেই কালের বিবর্তনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকতার ধরন পাল্টালেও আবহমান বাংলার সামাজিক উৎসব , পার্বণ বা গণমানুষের মেলবন্ধনের ঐতিহ্য-কৃষ্টিগুলো আজও হারিয়ে যায়নি। মেলা মানেই মহামিলন। মানুষের উচ্ছ্বাস-উল্লাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটে মেলার ম

প্রাচীন এথেন্সের দর্শন চর্চা

প্রাচীন এথেন্সের দর্শন চর্চা                প্রাচীন গ্রিক সংস্কৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপাদান ছিল দর্শন। ধ্রুপদী গ্রিসের দর্শনের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে পাশ্চাত্য দর্শনের বিকাশ ঘটেছিল। সেই যুগের তিনজন শ্রেষ্ঠ দার্শনিক হলেন সক্রেটিস, প্লেটো ও অ্যারিস্টটল।                  প্রাচীন গ্রিক দর্শনে সোফিষ্ট মতবাদের ব্যাপক প্রভাব ছিল। সোফিষ্ট কথাটির দ্বারা দক্ষ ও জ্ঞানী মানুষকে বোঝায়। সোফিস্টদের উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন বিষয়ে মানুষকে শিক্ষিত করে তোলে। ইতিহাস, ভূগোল, নৃতত্ত্ব, গণিত, আয়োনীয় বিজ্ঞান, ভাষাতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয় তারা শিক্ষা দিতেন। এরা ধনী পরিবারের তরুণ প্রজন্মকে সফল করে গড়ে তোলার চেষ্টা করতেন। এদিক থেকে তাদের প্রয়াস সার্বিক ছিল না। সোফিষ্ট দর্শন ও শিক্ষার মূল ভিত্তি ছিল Nomos Physis বৈপরীত্য। Nomos হলো রাষ্ট্রীয় আইন, যা মানুষেরই তৈরি এবং যা আপেক্ষিক ও পরিবর্তনশীল। Physis হল চিরন্তন বা স্বাশত। সোফিষ্ট দার্শনিকগণ এই দুইয়ের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন রেখা টেনে দিয়েছিলেন। তারা বোঝাতে চেয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় আইন কৃত্রিমভাবে আরোপিত, তাই সেখানে বিরোধিতা করা যেতে পারে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়মকে অস্বীকার