সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

Kultur kamph

Kultur kamph  প্রোটোস্ট্যান্ট রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মানির ঐক্য এবং রাষ্ট্রনির্মাণ  দক্ষিণ জার্মানির ক্যাথলিক রাজ্যগুলির কাছে আপত্তিকর হয়ে উঠেছিল। ইউরোপের সর্বত্র বিজ্ঞান চেতনার অগ্রগতির ফলে চার্চ সম্পর্কে বহু স্তরে বিরুপতার সৃষ্টি হয়। উপরন্তু সাম্যবাদ ও কমিউনিজমের প্রসার চার্চের ভিত্তিকে দুর্বল করে। সুতরাং দেখা যায় ওই সময় থেকে চার্চ চেষ্টা করছে এই নবচেতনাকে বাধা দিতে এবং ধর্মীয় পুনরুত্থান ঘটাতে, যা জার্মানির ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি করেছিল। কারণ জার্মানির রাজনীতির সাথে ধর্মীয় জাগরণ জড়িত ছিল।  ক্যাথলিক পুনরুত্থানের পর্ব ফরাসি বিপ্লব থেকেই শুরু হয়ে গেছিল। যেখানে চার্চ তার প্রথম ধাক্কাটা খেয়েছিল। ১৮৬৪ তে পোপ নবম পাইয়ুস Syllabus of Error  প্রকাশ করে আধুনিক সভ্যতাকে Error বলে ঘোষণা করেন। ১৮৭০ এ পোপকে অভ্রান্ত বলে ঘোষণা করা হয়। চার্চের এই ঘোষণার প্রতিবাদে একদল রোমান ক্যাথলিক Prof: Dolinger এর নেতৃত্বে সঙ্ঘবদ্ধ হয়, যারা Old Catholic নামে পরিচিত হয় এবং চার্চের পীড়নের শিকার হয়। বিসমার্ক এই  Old Catholic দের পক্ষ নেন, Neo Catholic এর উপর আঘাত করতে। কারণ এরা ...

নেপোলিয়নের অভ্যন্তরীণ সংস্কার | Napoleon’s Internal Reforms

নেপোলিয়নের অভ্যন্তরীণ সংস্কার ফ্রান্সে মধ্যপন্থী বুর্জোয়াদের ডিরেক্টরির শাসনে বিপ্লবের বেগ স্থিমিত হয়ে আসছিল। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছিল। এইরকম সময়ে নেপোলিয়ন ফ্রান্সের প্রথম কনসাল হিসাবে নিযুক্ত হন এবং ক্ষমতার শিখরে পৌঁছে যান (১৭৯৯)। নেপোলিয়ন তার স্মৃতিকথায়, তাঁর সংস্কারগুলিকে তাঁর চল্লিশটি যুদ্ধের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তার সংস্কারগুলি ছিল স্থায়ী ও সুদূর প্রসারী। তার জীবনীকাররাও স্বীকার করেছেন ফরাসি বিপ্লব তাঁকে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিল। তবে বিপ্লবের মৌলিক আদর্শ, সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতাকে তিনি মনে প্রাণে গ্রহণ করতে পারেননি। তাঁর ধারণা ছিল ফরাসিরা (বুর্জোয়ারা) বিপ্লব করেছিল আত্মম্ভরিতা ক্ষুন্ন হয়েছে বলে, স্বাধীনতা বা সাম্যের জন্য নয়।  নেপোলিয়ান বুঝেছিলেন গত ১০ বছরে ফ্রান্সের মানুষের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। গণসার্বভৌমত্ব, জনগণের ইচ্ছায় আইন‌ প্রণয়ন, নাগরিক অধিকার, সার্বজনীন ভোটাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মাচরণের স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার ইত্যাদি জনমনে স্থায়ী জায়গা পেয়েছে। বস্তুত জনগণের মানসিকতার প্রতি লক্ষ্য রেখেই...

ভার্সাই সন্ধি | The Treaty of Versailles

ভার্সাই সন্ধি  ১৯১৪ থেকে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত চার বছর ধরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলে ছিল। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ২৮ জুন প্যারিসের শান্তি সম্মেলনে জার্মানির সঙ্গে বিজয়ী শক্তিবর্গের যে সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল তা ভার্সাই সন্ধি নামে পরিচিত। ভার্সাই চুক্তি ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্রে বিপুল পরিবর্তন ঘটায়। প্যারিসের শান্তি সম্মেলনে মূল ভূমিকায় ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। মার্কিন প্রেসিডেন্ট উইলসনের চোদ্দ দফা নীতির শান্তি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এই আদর্শ গুলির উপরে জোর দিয়ে ভার্সাই সন্ধির শর্তগুলি নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে সেগুলি কতটা অনুসৃত হয়েছিল তা আলোচনা করা যেতে পারে।   জার্মানি উইলসনের চোদ্দ দফা ঘোষণার প্রতি আশ্বস্ত হয়েছিল। কিন্তু প্যারিসে শান্তি সম্মেলনে আসলে মিত্রশক্তি বর্গ জার্মানির উপর প্রতিশোধের মনোভাব প্রকাশ করেছিল। পরাজিত শত্রুর প্রতি বিদ্বেষ, ক্ষতিপূরণ আদায়, তার উপনিবেশ গুলির প্রতি লোভ এবং বলশেভিক ভীতি মিত্রশক্তির কার্যকলাপকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জার্মানিকে দুর্বল করে ইউরোপের শক্তি সাম্য ফিরিয়ে আনা। উইলসনের আ...

মুঘল রাষ্ট্রের প্রকৃতি | The Nature of the Mughal State

 মুঘল রাষ্ট্রের প্রকৃতি  ভারতে মুঘল শাসনের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কের প্রধানতম দিক মুঘল রাষ্ট্র কি ধর্মাশ্রয়ী বা Theoeracy? যদি না হয় তাহলে কি স্বৈরাচারী? আর যদি স্বৈরাচারী হয় তাহলে সেটা কি নিরঙ্কুশ নাকি জনকল্যাণমূলক?  মুঘল রাষ্ট্র কতটা সামরিক ও কতটা অভিজাততান্ত্রিক তা-ও বিতর্কের বিষয়। ঐতিহাসিক শ্রীরাম শর্মা এবং ইশতিয়াক হুসেন কুরেশি মুঘল রাষ্ট্র ব্যবস্থার সাম্প্রদায়িক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। শ্রীরাম শর্মা তাঁর The Religious Policy of Mughal Emperor গ্রন্থে দেখিয়েছেন যে মুঘল শাসকরা প্রত্যেকে ছিলেন ধর্ম গোঁড়া একমাত্র আকবর ছাড়া। তিনি সবচেয়ে বেশি আঙ্গুল তুলেছেন অরঙ্গজেবের দিকে। ধর্মীয় বিদ্বেষবসত কারণে আকবর থেকে ঔরঙ্গজেব সকলেই শাসনব্যবস্থায় হিন্দুদের নিয়োগ করতে চাইতেন না। তাই দরবারে হিন্দুর সংখ্যা ছিল কম। হিন্দুদের কাছ থেকে নিপীড়নমূলক জিজিয়া আদায় করতেন এবং মন্দির ধ্বংস সহ হিন্দুদের নানা অকারণ হেনস্তার শিকার হতে হত। কিন্তু আলীগড় ঐতিহাসিক আতাহার আলি উক্ত গ্রন্থের সমালোচনা করে যা প্রকাশিত হয়েছে  ইরফান হাবিব সম্পাদিত মধ্যকালীন ভারত- এর দ...

ইতালির ঐক্য আন্দোলন ও কাভ্যুর | The Italian Unification Movement and Cavour

ইতালির ঐক্য আন্দোলন ও কাভ্যুর  উনিশ শতকের ইতালির ঐক্য আন্দোলন বিশ্ব ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ইতালি ছিল বহুধাবিভক্ত, যাকে মেটারনিক ভৌগোলিক সংজ্ঞামাত্র বলে উল্লেখ করেছেন। নেপোলিয়নের তরবারি জোরে ইটালি একবার এক হয়েছিল, তবে তা কোনো স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া ছিল না । নেপোলিয়নের সময়েই ইটালিতে নবজাগরণের সূত্রপাত হয়েছিল, যা রিসর্জিমেন্টো  নামে পরিচিত এবং এর অনুপ্রেরণা ছিল ফরাসি বিপ্লবের আদর্শ। নেপোলিয়নের পতনের পর ভিয়েনা সম্মেলনে মেটারনিক আবার ইটালিকে একাধিক অঞ্চলে বিভক্ত করেছিল। কিন্তু ইতালির জাতীয়তাবাদকে রুখে দেওয়া সম্ভব হয় নি। একাধিক গুপ্ত সমিতি গড়ে উঠেছিল যেগুলির মধ্যে সবথেকে প্রভাবশালী ছিল কার্বোনারি নামক একটি গুপ্ত সমতি। এই পরিস্থিতিতে জোসেফ মাজ্জিনির আবির্ভাব এবং তাঁর জাতীয়তাবাদি কার্যকলাপ ইতালির ঐক্য আন্দোলনের ভিত্তিপ্রস্তর রচনা করে, যার উপর দাঁড়িয়ে কাভ্যুর ইতালির ঐক্যকে বাস্তবায়িত করতে পেরেছিলেন।  অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে কাভ্যুরের রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চে প্রবেশের আগেই ইতালির জাতীয়তাবাদ শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। কার্বোনারির সন্ত্রাসবাদ, মাজ্জিনির জাতীয়তা...