সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সামরিক বিপ্লব | The Revolution in War Techniques

সামরিক বিপ্লব 

১৫ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপে যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে এক ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। পরবর্তী  দুই দশকে নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ, কৌশলগত পরিবর্তন এবং বন্দুক ও কামানের ব্যবহার একটি বিপ্লব নিয়ে আসে। নতুন সামরিক সংগঠন ও যুদ্ধ কৌশল সমকালীন রাজনীতি ও সামাজিক জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এই পরিবর্তনের মূলে ছিল বারুদের ব্যবহার।

এতদিন পর্যন্ত যুদ্ধের প্রধান অস্ত্র গুলি ছিল তীর-ধনুক, বর্শা, তলোয়ার, ছোরা এবং তার সঙ্গে আপাদমস্তক লোহার বর্ম পরা নাইট বাহিনী। নাইটরা যুদ্ধকে কিছুটা ব্যক্তিগত বীরত্ব প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বলে মনে করত। এই সময় ইউরোপে তাই নাইটদের নিয়ে একাধিক বীরগাথাও রচিত হয়েছিল।

জেফ্রি পার্কার মনে করেন, নবম শতক নাগাদ সোরা, কাঠ-কয়লা ও গন্ধক দিয়ে তৈরি বারুদ চীনেই প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল। এই প্রযুক্তি আরবদের হাত ধরে ইউরোপে চলে আসে খ্রিস্টীয় ১৪ শতকের গোড়ায়। এই সময় বিভিন্ন আরব ও ইউরোপীয় সূত্রে বারুদের উল্লেখ রয়েছে। ১৩২৬ খ্রিস্টাব্দে ফ্লোরেন্সের একটি নথিতে আগ্নেয়াস্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। রাজার বেকন পটাকা সম্পর্কে যে বিবরণ দিয়েছেন তাতেই মনে হয় তিনি বারুদের ব্যবহার সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। শতবর্ষ ব্যাপী যুদ্ধে ফরাসিরা ইংরেজদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের সাহায্যে নরম্যান্ডি পুনর্দখল করতে পেরেছিল। প্রথমদিকে ভারী কামান নির্মাণের ঝোঁক ছিল বেশি। ১৫ শতকে ভারী কামান ব্যবহার করে সামন্ত যুগে নির্মিত পাথরের দুর্গের প্রাচীর  এবং শহরকে ঘিরে রাখা দেওয়াল সহজে ভেঙে দেওয়া যেত। যেমন ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে অটোমান তুর্কিরা কামানের সুদক্ষ প্রয়োগ করে কনস্টান্টিনোপলের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল। ধাতু বিদ্যার উন্নতির ফলে অনেক বড় আকারের কামান বানানো সম্ভব হয়েছিল। এই সময় ইউরোপে ধাতু উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফলে ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের এবং প্রায় ১৫০ পাউন্ড ওজনের গোলা সহজেই এই বড় কামান গুলি থেকে নিক্ষেপ করা সম্ভব হত।

বড় কামানের কিছু অসুবিধা ছিল। এগুলিকে স্থানান্তরিত করতে হলে অনেকগুলি বলদে টানা গাড়ি ব্যবহার করতে হত। তাই খুব বড় যুদ্ধে এগুলিকে সেনাবাহিনীর সাথে খুব ধীরগতিতে নিয়ে যাওয়া হত। পরবর্তীকালে ছোট ছোট কামানের ব্যবহার বৃদ্ধি পায় এবং এগুলিকে চাকাবিশিষ্ট করে যুদ্ধে সহজে স্থানান্তর করার ব্যবস্থা করা হয়। প্রথম ব্যবহারের পর প্রায় ১৫০ বছর অবরোধ ভাঙার ক্ষেত্রে মূলত গোলাবারুদ ব্যবহৃত হত।  আসল যুদ্ধ করত পদাতিকরা।

বারুদ অবরোধ যুদ্ধের চরিত্র পাল্টে দিয়েছিল। ম্যাকিয়াভেলি লিখেছেন এমন কোনো শক্ত দেওয়াল থাকতে পারে না, যা কামান দিয়ে ধ্বংস করা যায় না। তাই কামানের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নতুন দুর্গ নির্মাণের প্রচেষ্টা শুরু হয়। এই উদ্যোগ প্রথম এসেছিল ইটালিতে। ইতালির স্থপতি আলবেরতি ১৪৬০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পুস্তিকা On the Art of Bunting -এ এই নতুন ধরনের দুর্গের নীলনকশা রচনা করেছিলেন। এরপর এই প্রযুক্তি ইউরোপের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রযুক্তিকে ত্রাস ইটালিয়ান বলা হয়। এই দুর্গ থেকে যেমন শত্রুপক্ষের গোলন্দাজ বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করা যাবে তেমনি তাদের বিরুদ্ধে দুর্গের প্রাকার থেকে কার্যকর ভাবে আগ্নেয়াস্ত্রও ব্যবহার করা যাবে। শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তীরের ফলার মত আকৃতিবিশিষ্ট ব্যস্টিয়নের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে টাওয়ারের ঠিক নিচে শত্রুপক্ষ আশ্রয় নিতে না পারে। এই ব্যস্টিয়ন দুর্গের দেয়াল থেকে কিছুটা বেরিয়ে থাকত। পরবর্তী শতক গুলিতে এই দুর্গ নির্মাণ পদ্ধতি আরো পরিণত ও উন্নত হয়। ফ্রান্স ১৭ ও ১৮ শতক জুড়ে সাফল্যের সাথে সীমান্ত রক্ষায় এই দুর্গের ব্যবহার করেছিল।

টমস এফ আর্নল্ড ১৬ শতকে উত্তর ইটালিতে আরো এক ধরনের দুর্গের অস্তিত্বের কথা বলেছেন। এই দুর্গ মান্তুয়া ও মন্তফেরাতের গণজাগা শাসকগণ তৈরি করেছিলেন। তীরের ফলার মত কোনাচে গম্বুজ যুক্ত কেল্লা (Bastion) নির্মাণ এই রীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স ও জার্মানিতে এই রীতির প্রয়োগ ঘটেছিল।

সেনাবাহিনী সংগঠনেও বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছিল। মধ্যযুগীয় সেনাবাহিনীর সব থেকে কার্যকর অংশ ছিল অশ্বারোহী বাহিনী। নতুন পরিস্থিতে পদাতিক বাহিনী ক্রমশ অশ্বারোহী বাহিনীর জায়গা দখল করে। অগ্রণী শক্তিগুলির সেনাবাহিনীতে ঘোরসাওয়ারের সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ফ্রান্সের বাহিনীর ১১ ভাগের ১ ভাগ এবং স্পেনের বাহিনীর ১২ ভাগের ১ ভাগ ছিল অশ্বারোহী বাহিনী। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ফলে পদাতিকরা বহনের উপযোগী আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার শুরু করে, যার সাহায্যে তারা খুব সহজেই নাইটদের দ্বারা পরিচালিত ঘোরসাওয়ার বাহিনীকে পরাস্ত করতে পারত। বারুদের আবিষ্কার হলে পদাতিকরা আরকুইবাস (Arquebus) নামে এক ধরনের বন্দুকের ব্যবহার শুরু করে।

পদাতিক বাহিনীর সমাবেশ ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে সুইসরা দিকনির্দেশক ভূমিকা পালন করেছিল। তারা প্রায় ৬ হাজার সৈন্য নিয়ে একটি বর্গাকার কাঠামো তৈরি করত এবং এই বর্গ দলবদ্ধভাবে এগিয়ে যেত। এই বর্গ একই সাথে আক্রমণাত্মক ও রক্ষণাত্মক দুই যুদ্ধই করতে পারত। এদের মূল অস্ত্র ছিল পাইক, বল্লম ও আরকুইবাস। ১০ ফুট লম্বা ধারালো ফলা লাগানো পাইক নিয়ে তারা অশ্বারোহীদের সামনে ব্যূহ রচনা করত। সেই ব্যূহ অশ্বারোহী বাহিনী ভাঙতে আসলে বল্লমের খোঁচায় তাদের ঘোড়া থেকে ফেলে মেরে ফেলা হত। আবার কেউ ব্যূহর মধ্যে ঢুকে পড়লে তাকেও ওই একই অবস্থা করা হত। আরকুইবাস ছিল এমন এক ধরনের বন্দুক যাকে তেপায়ার উপর রেখে তার গুলি ছোড়া হত। স্পেনীয়রা একে আরও উন্নত করেছিল এবং পরবর্তীকালে এগুলিকে কাঁধের উপরে ভর দিয়ে রেখে গুলি ছোড়া যেত। এই নতুন ধরনের বন্দুককে বলা হত মাস্কেট। এখন মাস্কেটধারী ও পাইকধারী পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক হয়ে গেল। মাস্কেট থেকে একটি গুলি ছোড়ার পর দ্বিতীয় গুলি ছাড়ার জন্য যে সময় লাগত সেই সময় ঘোর সওয়াররা তাদের মেরে ফেলতে পারত। তখন পাইক ধারী সৈন্যগণ মাস্কেটবাহিনীকে বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিত। আবার মাস্কেটবাহিনীর গুলিবর্ষণ পাইকবাহিনীকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সুযোগ করে দিত।

সামরিক বিপ্লবের অর্থনৈতিক দিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কামানের গোলা ও মাস্কেটের টোটা তৈরির জন্য প্রচুর ধাতুর দরকার হতো। একটা ভারি কামান তৈরি করতে ৩-৪ টন ব্রোঞ্জের দরকার হত। ধাতুর ক্রমবর্ধমান চাহিদা খনিজ উত্তোলনকে উৎসাহিত করে। খনিজ ধাতু তথা আকরিককে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার জন্য নতুন কারিগরি বিদ্যাচর্চা শুরু হয়। লোহার উত্তোলন সবচেয়ে বৃদ্ধি পায়।

নতুন যুদ্ধরীতি ইউরোপে রাষ্ট্র গঠনকেও প্রভাবিত করে। সামরিক বিপ্লবের ফলে সার্বভৌম ও সর্বশক্তিমান আধুনিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। বৃহৎ সেনাবাহিনী ও নতুন অস্ত্রের সাহায্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ ধ্বংস করা সম্ভবপর হয় এবং আগ্রাসনের মাধ্যমে রাজ্য সীমানা বাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব হয়। বিশাল সেনাবাহিনী ও আগ্নেয়াস্ত্রের জন্য যুদ্ধ এখন ব্যয় সাপেক্ষ হয়ে গেল। তাই যুদ্ধের উপর রাজকীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হল; কারণ এত অর্থের যোগান দেওয়া কোন ব্যক্তি অর্থাৎ সামন্ত প্রভুর পক্ষে সম্ভব ছিল না। এদিকে মধ্যযুগীয় সামন্ত প্রভুদের সামরিক ব্যবস্থার ভিত্তি ছিল অশ্বারোহী নাইট বাহিনী, যার দ্বারা তারা রাজশক্তিকে সীমাবদ্ধ করে রাখত। বারুদ আবিষ্কারের ফলে অশ্বারোহী বাহিনী অপ্রধান এবং পরে তা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। এভাবে রাজার অধীনে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।

মধ্যযুগীয় যুদ্ধ রীতির অবসানের ফলে পুরানো নাইটদের সৌর্যের গাঁথা গল্প কাহিনীতে পরিণত হল। কারণ যুদ্ধ আর ব্যক্তিগত বীরত্বের উপর নির্ভরশীল থাকল না। সংগঠিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সৈনিকদের উপর এবং যুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের উপর সাফল্য নির্ভর করত। ফলে একজন সাধারণ সৈনিক সহজে বীর নাইটকে খতম করে দিতে পারত। এইভাবে বারুদের আবিষ্কার যুদ্ধকে কেবল রাজকীয় নয়, প্রলেতারীও ও জনতামুখী করল।

পরিশেষে সামরিক বিপ্লব ইউরোপীয় শক্তিগুলির মধ্যে সামরিক প্রতিযোগীতাকে এত তীব্র করে তুলল যে যুদ্ধ, হিংসা এবং ধ্বংস বহুল পরিমানে বৃদ্ধি পেল। খ্রিস্টান ও মুসলিম দুনিয়ার মধ্যে দীর্ঘ সংঘাতের পিছনে এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল। 

The Revolution in War Techniques

In the mid-15th century, Europe witnessed a profound transformation in the conduct of warfare. Over the next two decades, the application of new technologies, tactical changes, and the use of guns and cannons brought about a revolution. The new military organizations and combat strategies deeply influenced contemporary politics and social life. At the heart of this change was the use of gunpowder.  

Until then, the primary weapons of war were bows and arrows, spears, swords, daggers, and heavily armored knightly forces. Knights viewed warfare as a stage for displaying personal valor. This period in Europe also saw the composition of numerous heroic tales centered around knights.  

Geoffrey Parker believes that gunpowder, made from saltpeter, charcoal, and sulfur, was first discovered in China by the 9th century. This technology reached Europe through the Arabs in the early 14th century. References to gunpowder appear in various Arab and European sources. A document from Florence in 1326 mentions firearms. The descriptions given by Roger Bacon suggest that he was aware of gunpowder’s use. During the Hundred Years' War, the French were able to reclaim Normandy from the English with the help of firearms. Initially, there was a strong inclination toward constructing heavy cannons. By the 15th century, these heavy cannons could easily demolish the stone walls of feudal castles and city fortifications. For instance, in 1453, the Ottoman Turks effectively used cannons to bring about the fall of Constantinople. Advances in metallurgy allowed the production of much larger cannons. During this period, metal production and supply in Europe increased significantly, enabling the firing of 30-inch diameter cannonballs weighing around 150 pounds.  

However, large cannons had some drawbacks. Transporting them required multiple ox-drawn carts, making their movement with armies slow in major battles. Later, the use of smaller, wheeled cannons became more widespread, allowing easier mobility on the battlefield. For nearly 150 years after their initial use, gunpowder was primarily employed in siege warfare, while infantry remained the main combat force.  

Gunpowder changed the nature of siege warfare. Machiavelli wrote that no wall could be strong enough to withstand cannon fire. Consequently, efforts began to construct new types of fortresses to resist artillery attacks. Italy pioneered this initiative. The Italian architect Alberti designed blueprints for these new fortresses in his 1460 treatise On the Art of Bunting. This technology later spread across Europe and became known as the trace Italienne. These fortresses could withstand enemy artillery while effectively using firearms from their ramparts. To protect against enemy assaults, bastions shaped like arrowheads were constructed, preventing enemies from sheltering directly beneath the towers. These bastions protruded slightly from the fortress walls. Over the following centuries, fortress construction techniques became more refined. France successfully used these fortifications to defend its borders throughout the 17th and 18th centuries.  

Thomas F. Arnold mentions another type of fortress in 16th-century northern Italy, built by the ruling dynasties of Mantua and Montferrat. These fortresses featured angular bastions with pointed domes, a style later adopted in Austria, France, and Germany.  

Significant changes also occurred in the military organization. The most effective component of medieval armies was the cavalry. In the new era, infantry gradually replaced cavalry. The number of heavy knights in leading armies rapidly declined. By 1530, cavalry made up only one-eleventh of the French military and one-twelfth of the Spanish army. The use of firearms enabled infantry to carry portable guns, allowing them to easily defeat knight-led cavalry forces. With the advent of gunpowder, infantry began using firearms like the arquebus.  

The organization of infantry was crucial. The Swiss played a pioneering role in this regard, forming square formations with around 6,000 soldiers, which could advance in tight groups. These squares were effective in both offensive and defensive combat. Their primary weapons were pikes, spears, and arquebuses. With 10-foot-long sharp pikes, they formed defensive lines against cavalry charges. When cavalry attempted to break these formations, they were struck down by pike thrusts. If any enemy breached the formation, they met the same fate. The arquebus was a type of gun fired from a tripod. The Spanish later improved it, allowing it to be fired from the shoulder. This upgraded firearm was called the musket. Now, musketeers and pikemen complemented each other. After firing a musket shot, the time taken to reload left soldiers vulnerable to cavalry attacks. Pikemen played a vital role in protecting musketeers during this interval, while musket fire provided cover for pikemen to advance.  

The economic aspect of the military revolution was highly significant. The production of cannonballs and musket bullets required vast quantities of metal. A single heavy cannon needed 3-4 tons of bronze. The growing demand for metals encouraged mining. New metallurgical techniques emerged to process ores into usable materials, with iron production increasing the most.  

The new warfare tactics also influenced state formation in Europe. The military revolution enabled the rise of sovereign and all-powerful modern states. Large armies and new weapons made it possible to crush internal rebellions and expand territories through conquest. However, maintaining massive armies and firearms made warfare expensive. As a result, royal control over warfare was established, as no individual feudal lord could finance such expenditures. Meanwhile, the medieval feudal military system, based on knightly cavalry, had kept royal power in check. The invention of gunpowder diminished the importance of cavalry, rendering it obsolete. This shift allowed the consolidation of power under monarchies.  

The decline of medieval warfare turned the heroic tales of knights into mere legends, as success in battle no longer depended on individual valor but on organized, trained soldiers and firearms. An ordinary soldier could now easily defeat a heroic knight. Thus, gunpowder democratized warfare, making it not just royal but also proletarian and populist.  

Finally, the military revolution intensified competition among European powers, leading to increased war, violence, and destruction. The arms race became a key factor in the prolonged conflicts between the Christian and Muslim worlds.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযানঃ প্রত্যক্ষ কারণ ও তাৎপর্য | Arab Conquest of Sindh: Immediate Causes and Significance

আরবদের সিন্ধু অভিযানঃ প্রত্যক্ষ কারণ ও তাৎপর্য সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আগেও বহুবার ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পাঠানো হয়েছিল। তবে এই(712 খৃ:) অভিযানের একটি প্রত্যক্ষ কারণ ছিল। জানা যায় যে সিংহলের রাজা ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কে কয়েকটি জাহাজে করে উপঢৌকন পাঠাচ্ছিলেন কিন্তু পথে সিন্ধু দেশের জলদস্যুরা দেবল বন্দরে এ...

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগ...

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হ...