সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আদিম মানুষের বিবর্তনঃ হোমিনিড থেকে হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স | Human Evalution: From Hominid to Homo Sapience Sapience

আদিম মানুষের বিবর্তনঃ হোমিনিড থেকে হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স 

আজ থেকে প্রায় ৩৫০০ মিলিয়ান বছর আগে পৃথিবীতে একপ্রকার জীবের আবির্ভাব হয়েছিল। এরা ছিল দ্বিপদী (Bipedal) এবং এদের মাথার খুলির আয়তন ছিল অন্যান্য জীবের তুলনায় বড়। সময়টা ছিল সোনোজোয়িক যুগ।*  Cenozoic era-র সূচনা প্রায় ৬৬ মিলিয়ান বছর আগে। এই যুগের দ্বিপদ বিশিষ্ট স্তন্যপায়ী প্রানী প্রাইমেট নামে পরিচিত ছিল। Cenozoic era-র দুটি ভাগ-- টারশিয়ারি ও কোয়ার্টারনারি period. কোয়ার্টারনারি period এর মধ্যে আছে দুটি এপখ- প্লিস্টোসিন এবং হলোসিন। এই প্লিস্টোসিন পর্বেই মানুষের বিবর্তনের প্রক্রিয়ায় গতি সঞ্চারিত হয়েছিল। প্রায় ৮ লক্ষ বছর ধরে ছলেছিল প্লিস্টোসিন পর্ব। এই পর্ব ছিল বরফের যুগ এবং আনুমানিক ১০০০০ হাজার বছর আগের প্লিস্টোসিন পর্বের সমাপ্তি ঘটেছিল এবং আধুনিক হলোসিন যুগের আবির্ভাব হয়েছিল। 

প্রাইমেটদের উন্নত শারিরিক গঠনের জন্য গাছে গাছে বিচরন করতে পারত। প্রাইমেটদের দুটি ভাগ- প্রসিমি ও এন্থ্রোপয়েড। প্রসিমিদের মধ্যে ছিল লেমুর, টারসিয়ের, লোরিস এবং অন্যান্য গাছে চড়া প্রানী। এরা অপেক্ষাকৃত অনুন্নত। এদের থেকে উন্নত ছিল এন্থ্রোপয়েডরা। এদের মধ্যে তিনটি পর্যায় ছিল- সারকোপিথেইকোডিয়া, লেবোইডিয়া এবং হোমিনোইডিয়া। হোমিনোইডিয়া অর্থাৎ বন মানুষ-এর মধ্যে পড়ে শিম্পাঞ্জি, গোরিলা, গিবন ও ওরাং ওটাং।  এই হোমিনোইডিয়া থেকেই মানুষের উৎপত্তি। 

পূর্ণাঙ্গ বনমানুষ তথা এপ-এর আবির্ভাব ঘটেছিল আনুমানিক ২০ মায়া নাগাদ। এপ থেকেই হোমিনিডের আবির্ভাব। এপ এবং হোমিনিড দের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য ছিল, হোমিনিডরা দুপায়ের উপর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারত। এদের উদ্ভব মোটামুটি ৭ মায়া নাগাদ। হোমিনিড গোষ্ঠীকে আবার দুভাগে ভাগ করা হয়- আস্ট্রালোপিথেকাস ও হোমো। 

আস্ট্রালোপিথেকাসদের ফসিল আবিষ্কারের পশ্চাদে যাদের অবদান সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তাঁরা হলেন লুই লিকে এবং মেরি লিকে। তাঁদের গবেষণায় এটা প্রমানিত যে আস্ট্রালোপিথেকাসদের প্রথম আবির্ভাব ঘটে পূর্ব আফ্রিকার ইথিওপিয়ায় (আনুমানিক ৩.৭৫-৩ মায়া)। ইথিওপিয়ার হাডার অঞ্চলে এই প্রজাতির যে পূর্ণাঙ্গ কঙ্কালটি পাওয়া গেছে তার নাম দেওয়া হয়েছে 'লুসি'। এটি কোনো বালিকার কঙ্কাল। এই দ্বিপদ বিশষ্ট মানব প্রজাতির মস্তিস্ক গহ্বরের আয়তন শিম্পাঞ্জীর মতই এবং এদের দেহের ঊর্ধ্বাঙ্গের তুলনায় নিম্নাঙ্গ ছোট ছিল। এদের করোটির ধারন ক্ষমতা ছিল ৪৫০-৫০০ সি.সি.

'হোমো' দের মস্তিস্কের অয়তন ছিল তুলনামুলক বড়। এদের বুড়ো আঙুলের অবস্থান ছিল অন্যান্য আঙুলের ঠিক বিপরীতে। এর ফলে এরা যে কোনো জিনিস ঠিকমত ধরতে পারত। এদের দাঁত ছিলো ধারালো ও ছোট। বৃহৎ মস্তিস্কের অধিকারী হওয়ার সুবাদে এরা হাতিয়ার নির্মাণ, সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং ভাষা আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। হোমো গোষ্ঠীর প্রথম ভাগ হল হোমো হ্যাবিলিস। এদের আবির্ভাব আনুমানিক ২.৫ মায়া নাগাদ। তানজানিয়ায় এদের প্রাচীনতম ফসিল পাওয়া গেছে। পূর্ব আফ্রিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এদের অস্তিত্বের প্রমান পাওয়া গেছে। এরা আস্ট্রালোপিথেকাসদের মতই কম ওজন বিশিষ্ট (৪০ কে. জি.) এবং অল্প উচ্চতা বিশিষ্ট (৪.৩ ফুট)। এরা মাংসাশী ছিল না। এদের করোটির ধারন ক্ষমতা ছিল আস্ট্রালোপিথেকাস দের তুলনায় বেশি (৬৫০ সি.সি.)। এদের মাথার আকৃতি ছিল গোলাকার এবং অবস্থান ছিল অনেকটা উঁচুতে। এদের চোয়াল ছোটো ছিল এবং মুখমন্ডল বহির্গামী নয়। 

হোমো হ্যাবিলিসদের পরবর্তী প্রজাতি হোমো ইরেকটাস। এই প্রজাতির প্রাচীনতম ফসিল মোটামুটি ১.৭ মায়া নাগাদ। এদের প্রথম আবির্ভাব আফ্রিকায়। প্রাচীনতম ফসিল পাওয়া গেছে কেনিয়া থেকে। তারপর সেখান থেকে তারা এশিয়া ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিন এশিয়ার জাভা মানব, যারা সিনান্থ্রোপাস নামে পরিচিত তারাও এই প্রজাতির। এই প্রজাতি পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে পারত। এদের মগজ অপেক্ষাকৃত বড় ছিল। এদের করোটির ধারন ক্ষমতা ১০০০ সি.সি.। এদের উচ্চতা ৫-৬ ফুট এবং ওজন ছিল ৪০-৭৫ কিলোগ্রাম। সুতরাং এরা শারীরিক ভাবে শক্তিশালী ছিল। এদের কন্ঠস্বর ছিল উন্নততর। তাই পূর্ববর্তী প্রজাতির তুলনায় এরা ভাব বিনিময়ে অধিক সক্ষম ছিল। এজন্য দলগত শিকার করতে পারত। এরা আগুনের ব্যবহারও জানত।

হোমো ইরেক্টাসদের থেকে এসেছে হোমো স্যাপিয়েন্স। এদের প্রাচীনতম ফসিল পাওয়া গেছে আতাপুয়েরকাতে । এদের সময়কাল মোটামুটি আজ থেকে ৩ লক্ষ বছর আগে। এদের উত্তরসুরি হল হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স বা আধুনিক মানব। কিন্তু এই দুই প্রজাতির মাঝে আরও একটি প্রজাতির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এটি হল নিয়েন্ডারথাল। এদের আগমন আজ থেকে প্রায় ১.২৫ লক্ষ বছর আগে। এদের প্রাচীনতম ফসিল পাওয়া গেছে জার্মানির ডুসেলডরফ এলাকার কাছে নিয়েন্ডার উপত্যকায়। এদের গড় উচ্চতা ৫.৫ ফুট এবং ওজন ৭০ কি.গ্রা.। এদের মস্তিস্ক বড়। এদের করোটির গড় ক্ষমতা প্রায় ১৫০০ সি.সি.। আনুমানিক ৫০০০০ বছর আগে এদের বিলুপ্তি শুরু হয়।

আধুনিক কালের মানুষের আকৃতি সম্পন্ন মানুষের প্রথম নিদর্শনগুলি পাওয়া গেছে আফ্রিকার বিভিন্ন স্থানে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, পৃথিবীতে দীর্ঘ সময় ধরে (প্রায় ৩০-৪০ হাজার বছর) বিভিন্ন প্রকার হোমো স্যাপিয়েন্স প্রজাতির মানুষের আবির্ভাব হয়েছিল এবং নিয়েন্ডারথাল তাদের মধ্যে অন্যতম প্রজাতি। এদের মধ্যে কোনো একটি প্রজাতির হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্সে রূপান্তর ঘটেছিল। হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স তথা আধুনিক মানুষের মস্তিস্কের আয়তন ছিল সবচেয়ে বেশি। এদের করোটির গড় ক্ষমতা ছিল ১৫০০ সি.সি.। বৃহত্তর মস্তিস্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল দুটি স্বাধীন হাত। এদের হাত, আঙুলের গড়ন এবং অবস্থিতি ছিল উন্নততর, যা তাদের জটিলতর হাতিয়ার নির্মাণে ও ব্যবহারে নিপুন করে তুলেছিল। এরা সামাজিক ভাববিনিময় এবং পারস্পরিক সহযোগীতার ক্ষেত্রে অনেকটাই সক্ষম ছিল। ফিলিপ লিবেরম্যান দেখিয়েছেন এদের মাথার খুলির রূপ ছিল নিচু ও স্ফীত। এই ধরনের খুলির জন্যই তারা কণ্ঠনালী থেকে বৈচিত্র্যময় শব্দ তৈরি করতে সক্ষম হয়, ফলে বিভিন্ন ধরনের ভাষার আবির্ভাব হয়। আধুনিক মানুষের বোধ শক্তির বিকাশে মস্তিস্কের পাশাপাশি ভাষার গুরুত্বপূর্ণ আবদান রয়েছে।

সুতরাং আদিম মানুষের বিবর্তন প্রক্রিয়া কেবল জৈব তথা দৈহিক বিবর্তনের উপর নির্ভরশীল ছিল না, নতুন ও প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সাংস্কৃতিক অগ্রগতির ভূমিকা এখানে অনস্বীকার্য। 

*পৃথিবীর ক্রমবিবর্তনের প্রক্রিয়ায় ভূতত্ত্ববিদরা পরিবেশগত অবস্থার ভিত্তিতে কতকগুলি Eon-এ ভাগ করেছেন। প্রতিটি Eon আবার কতকগুলি Era-এ বিভক্ত। Eraগুলি Period-এ বিভক্ত এবং Period গুলি কতকগুলি Epokh-এ বিভক্ত।

Human Evolution: From Hominid to Homo Sapience Sapience

Around 3.5 billion years ago, a type of creature appeared on the Earth. These beings were bipedal, and their cranial size was larger compared to other creatures. This period belonged to the Cenozoic era.* The Cenozoic era began approximately 66 million years ago. The bipedal mammals of this era were known as primates. The Cenozoic era is divided into two periods—the Tertiary and Quaternary periods. The Quaternary period includes two epochs—the Pleistocene and the Holocene. During the Pleistocene epoch, the evolution of humans gained momentum. The Pleistocene epoch lasted about 800,000 years. It was the Ice Age, and approximately 10,000 years ago, the Pleistocene epoch ended, giving way to the modern Holocene epoch.


Due to their advanced physical structure, primates could move from tree to tree. Primates are divided into two groups—Prosimians and Anthropoids. Among the Prosimians were lemurs, tarsiers, lorises, and other tree-dwelling animals. They were relatively primitive. The Anthropoids were more advanced. They are categorized into three stages—Cercopithecoidea, Ceboidea, and Hominoidea. The Hominoidea, or apes, include chimpanzees, gorillas, gibbons, and orangutans. Humans originated from the Hominoidea.

The fully developed apes, or great apes, appeared around 20 million years ago. From apes, the Hominids emerged. The biggest difference between apes and hominids was that hominids could stand upright on two feet. Their emergence occurred roughly around 7 million years ago. The Hominid group is further divided into two categories—Australopithecus and Homo.


Louis Leakey and Mary Leakey played the most significant role in discovering the fossils of Australopithecus. Their research proved that Australopithecus first appeared in East Africa, specifically in Ethiopia, around 3.75-3 million years ago. The complete skeleton of this species found in the Hadar region of Ethiopia was named 'Lucy.' It was the skeleton of a young girl. The brain cavity of this bipedal human species was similar in size to that of a chimpanzee, and their lower limbs were shorter than their upper limbs. Their cranial capacity was 450-500 cc.


The brain size of the 'Homo' species was comparatively larger. Their thumbs were positioned opposite the other fingers, enabling them to grasp objects properly. Their teeth were sharp and small. Possessing a larger brain allowed them to create tools, build social relationships, and master language. The first species of the Homo group was Homo habilis. They appeared around 2.5 million years ago. The oldest fossils of Homo habilis were found in Tanzania. Evidence of their existence have been found in East Africa, South Africa, and Southeast Asia. They were similar to Australopithecus in that they were light in weight (around 40 kg) and short in height (around 4.3 feet). They were not carnivorous. Their cranial capacity was larger than that of Australopithecus (650 cc). Their head shape was rounded and positioned higher. They had a smaller jaw and a less protruding face.

The next species after Homo habilis was Homo erectus. The oldest fossils of this species date back to approximately 1.7 million years ago. They first appeared in Africa, with the oldest fossils found in Kenya. From there, they spread to Asia and Europe. The Java Man of Southeast Asia, also known as Sinanthropus, belonged to this species. Homo erectus could adapt to changing circumstances. Their brain size was relatively large, with a cranial capacity of 1000 cc. They were 5-6 feet tall and weighed between 40-75 kg, making them physically strong. Their vocal abilities were more advanced, allowing them to communicate more effectively than previous species. This enabled them to hunt in groups. They also knew how to use fire.


Homo sapiens evolved from Homo erectus. Their oldest fossils have been found in Atapuerca, dating back approximately 300,000 years. Their successors were Homo sapiens sapiens or modern humans. However, between these two species, another species called Neanderthal existed. Neanderthals appeared around 125,000 years ago, with the oldest fossils found near the Neander Valley in Düsseldorf, Germany. They had an average height of 5.5 feet and weighed around 70 kg. Their brains were larger, with an average cranial capacity of about 1500 cc. Around 50,000 years ago, they began to go extinct.

The first evidence of modern humans was found in various places across Africa. Scientists believe that for a long period (around 30-40 thousand years), different types of Homo sapiens species appeared on Earth, with Neanderthals being one of them. One of these species eventually evolved into Homo sapiens sapiens or modern humans. The brain size of Homo sapiens sapiens was the largest. Their average cranial capacity was 1500 cc. With a larger brain, they also had two independent hands. Their hand and finger structure was more advanced, making them adept at creating and using complex tools. They were more capable of social communication and mutual cooperation. Philip Lieberman has shown that the skull shape of modern humans is lower and more swollen. This type of skull allowed them to produce a variety of sounds from the larynx, leading to the emergence of different languages. Language played an important role in the development of modern human cognition.

Thus, the evolution of early humans was not solely dependent on biological or physical evolution; the role of cultural advancement in adapting to new and adverse conditions was also undeniable.

*Geologists have divided the process of Earth's evolution into several Eons based on environmental conditions. Each Eon is further divided into several Eras, which are divided into Periods, and the Periods are subdivided into Epochs.


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ...

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগ...

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হ...