সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মধ্য পুরাপ্রস্তর যুগ | Middle Paleolithic Age | Mousterian Culture

মধ্য পুরাপ্রস্তর যুগ

নিম্নপুরা প্রস্তর যুগের পরবর্তী স্তর মধ্য পুরা প্রস্তর যুগ নামে পরিচিত। মধ্য পুরা প্রস্তর যুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কৃতির নাম হল মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতি। ফ্রান্সের লা মুস্তের এলাকায় প্রথম মধ্য পুরাপ্রস্তর যুগের সাক্ষ্য পাওয়া গেছে বলে এই সংস্কৃতি মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতি নামে পরিচিত। মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতির সূচনা আজ থেকে প্রায় এক লক্ষ আটাশ হাজার বছর আগে। ভূতাত্বিক প্লেইস্টোসিন পর্বে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ কমতে থাকে এবং একের পর এক তুষার যুগের আবির্ভাব হয়। দুটি তুষার যুগের মাঝে অপেক্ষাকৃত উষ্ণতর একটি পর্ব থাকে। এরকম শেষ তুষার যুগের আগের যে উষ্ণতর পর্ব সেই পর্বেই মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল।
Remain of Neanderthal Skull

মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতির শ্রষ্ঠা হল নিয়েন্ডার্থাল মানব। নিয়েন্ডার্থাল মানব পশু শিকারে পারদর্শী ছিল। তাদের স্বীকার করা পশুগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল বাইসন, ঘোড়া, লাল হরিণ এবং বলগা হরিণ। মাছ এবং সামুদ্রিক প্রাণীই তাদের খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। অপেক্ষাকৃত উষ্ণতর আবহাওয়ার জন্য বহু সমুদ্র উপকূল জলস্রোত এবং নদী তৈরি হয়েছিল এবং সেখান থেকেই তারা মাছ শিকার করতে সক্ষম হয়েছিল।

মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতির পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকায় স্বতন্ত্র বিকাশ ঘটেছিল। এখানকার আদিম হোমো স্যাপিয়েন্স প্রজাতির মানুষ যে সংস্কৃতি নির্মাণ করেছিল তা মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতির সঙ্গে অনেকাংশে মিলে যায়।   জলবায়ুগত বৈচিত্রের কারণে কয়েকটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে মোটামুটি তারা একটা সমরূপ সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল।

Distribution of Homo neanderthal

মৌস্টেরিয় বা হোমো স্যাপিয়েন্স রা যে সমস্ত হাতিয়ারগুলি ব্যবহার করত সেগুলির নির্মাণ কৌশলের সাথে নিম্ন পুরা প্রস্তর যুগের হাতিয়ারের কোনো মৌলিক পার্থক্য নেই। তবে কৌশলের ক্ষেত্রে পূর্বের তুলনায় বেশ কিছুটা প্রগতি এসেছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই।
Mousterian Tools

তবে এই যে বিষয়টির জন্য মৌস্টেরিয়ান সংস্কৃতিকে নিম্নপুরা প্রস্তর যুগের সংস্কৃতি থেকে পৃথক করা যায় সেটি হল এই যে, মৌস্টেরিয়রা মৃতদেহকে যেখানে সেখানে ফেলে দিত না, সেগুলি যথার্থ সৎকারের ব্যবস্থা করত। সম্ভবত আদিম হোমো স্যাপিয়েন্স গন মৃত্যু সংক্রান্ত চিন্তা ভাবনা করতে শুরু করেছিল, যা তাদের উচ্চ চিন্তাশক্তি এবং কল্পনা শক্তির পরিচয় বহন করে। ইরাকের সানিদার গুহাবাসে এবং ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় এরকম বহু মৃতদেহ সৎকারের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

Middle Paleolithic Age | Mousterian Culture

Lower paleolithic cultures were followed by the Middle Paleolithic. The most significant culture of the Middle Paleolithic is Mousterian culture, named after the French archeological site of la moustier. The beginning of the Middle Paleolithic can be traced back to 1.28 lakh years ago, when the earth became warmer. During the Pleistocene epoch (1.68 million years to 12000 years ago) there was a significant lowering of temperature all over the world. These resulted a series of ice ages. The last ice age called Wurm Glaciation was preceded by an warmer interval (calld interglacial). Mousterian Culture emerged in this interglacial period.

Mousterian Culture was the product of neanderthals. Neanderthals were expert Hunters. The animals which they hunted where mainly Bison, horse, red deer and reindeer. Fish and see food too became a part of the diet. Due to warmer climatic conditions the got plenty of seacoast, stream and river, which were frozen and inaccessible earlier and now exploited for fish. 

Mousterian Culture developed independently in West Asia and Africa also. These were tradition of different species of early Homo Sapiens. They have features which resemble Neanderthal Mousterian Culture very closely. Apart from some nominal variation (due to climatic reason) they produced fairly uniform cultures. 

Tools used by the Mousterian/ Homo sapiens are fundamentally similar to the Lower Paleolithic, but techniques were further refined. 

There is one sense in which Mousterian Culture differ from the Lower Paleolithic. For the first time it is found that the dead bodies are not merely abandoned but carefully disposed. The early Homo Sapiens had begun to think about the phenomenon of death, thereby reflecting a much higher level of thinking and imagination. Mousterian graves have been found at Shanidar cave in Iraq and various sites in Europe.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল তা জনজীবনে তীব্রভ

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগার:-   কোনো ব্যাক্তিগত বা অলাভজনক