সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নিম্ন পুরা প্রস্তর যুগের জীবন চিত্র | Lower Paleolithic Age

নিম্ন পুরাপ্রস্তর যুগ

মানব সভ্যতার একেবারে প্রাচীনতম পর্ব প্রস্তর যুগ নামে পরিচিত। এই পর্বে মানুষ প্রথম আয়ুধ নির্মাণ ও তার ব্যবহার আয়ত্ব করে এবং এই আয়ুধগুলির অধিকাংশ ছিল প্রস্তর নির্মিত। তাই এই পর্ব প্রস্তর যুগ নামে পরিচিত। আয়ুধ নির্মাণ সংস্কৃতি ও আর্থ সামাজিক বিকাশের উপর ভিত্তি করে প্রস্তর যুগকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে- পুরা প্রস্তর, মধ্য প্রস্তর এবং নব্য প্রস্তর যুগ। ওই একই ভাবে আবার পুরাপ্রস্তর যুগকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে- নিম্ন পুরাপ্রস্তর, মধ্য পুরা প্রস্তর ও উচ্চ পুরা প্রস্তর যুগ। প্রস্তর তথা নিম্ন পুরা প্রস্তর যুগের সূচনা আজ থেকে আনুমানিক ২.৫ মিলিয়ান বছর আগে।  Australopithecus Robustus -রা প্রথম হাতিয়ার ব্যবহার করলেও হাতিয়ার নির্মাণের ধারাবাহিকতা দেখা যায় অপেক্ষাকৃত উন্নত প্রজাতি হোমো হ্যাবিলিসের হাত ধরে। নিকোলাস টথ দেখিয়েছেন আয়ুধ নির্মাণের জন্য কেবল দুই হাতের ব্যবহার নয়, গভীর মানসিক সংযোগ এবং কল্পনাশক্তির প্রয়োজন হয়, যা সম্ভব হয়েছিল Homo Habilis দের অপেক্ষাকৃত বৃহৎ মগজের (৮০০ সি. সি.) জন্য। প্রথম দিকের হাতিয়ার গুলি ছিল প্রযুক্তির একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের। ধিরে ধিরে সেগুলি ক্রমশ উন্নততর পর্যায়ে পৌঁছেছে।
Oldowan Tools


Oldowan সংস্কৃতিকে পুরা প্রস্তর যুগের সূচনা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। আফ্রিকার তাঞ্জানিয়ার ওল্ডুভাই গর্জ এলাকায় এই সংস্কৃতির সন্ধান পাওয়া গেছিল। এই সংস্কৃতির প্রধান আবিস্কারক লুই লিকে ও মেরি লিকে। ওল্ডুয়ান আয়ুধের ব্যবহারকারি কারা তা নিয়ে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। এক সময় মনে করা হত হোমো প্রজাতিই এই সংস্কৃতির স্রষ্টা। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে Australopithecus দের উন্নততর প্রজাতি এবং হোমো প্রজাতির প্রারম্ভিক অংশ ওল্ডওয়ান আয়ুধের নির্মাতা ও ব্যবহারকারী। ওল্ডওয়ান হাতিয়ারগুলি মুলত গাছপালা কাটা, বাদাম ভাঙ্গা, গর্ত খোঁড়া, কাট কাটা অথবা মধু সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত হত। সাধারনত এরা উদ্ভিজ খাদ্য গ্রহণ করত। কখনো কখনো ছোটো ছোটো প্রানী শিকার করত। হোমো হ্যাবিলিসরা অনেক সময় অন্যান্য শিকারি প্রানীর শিকার করে ফেলে রাখা প্রাণীর মাংস ভক্ষন করত। ওল্ডওয়ান হাতিয়ারগুলির কিছু কিছু চামড়া ছাড়ানো এবং হাড়ের ঘিলু বের করার ক্ষেত্রে কাজে লাগত। সুতরাং নিম্ন পুরা প্রস্তর যুগের প্রারম্ভিক পর্বে মানুষ যতটা না শিকারি ছিল তার থেকে বেশি ছিল পরিত্যক্ত মাংস সংগ্রাহক (scavenger)। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন যে ওল্ডওয়ান হাতিয়ারগুলি দিয়ে মাংস কাটা যেত বলে তারা যে মাংস কাটত বা মাংস খেত তার প্রমান কি? সাম্প্রতিক প্রত্নজীববিদ্যা ও প্রত্নবিদ্যার গবেষণায় দেখা গেছে যে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ বছর আগের পশুর জীবাশ্মগুলিতেও অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুতরাং আদিম মানুষের মাংস ভক্ষন নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন থাকে না।

Lower Paleolithic Age
Acheulian Hand Axe
 

হমো হ্যাবিলিসদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বৃহৎ মস্তিস্কের অধিকারী (১০০০ সি.সি.) হোমো ইরেক্টাসদের আগমন ঘটে আনুমানিক ১.৫ মিলিয়ান বছর আগে। আফ্রিকায় এদের উৎপত্তি এবং ধিরে ধিরে এরা এশিয়া ও ইউরোপের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। হোমো ইরেক্টাস দের আগমনের ফলে হাতিয়ার নির্মাণ প্রযুক্তির তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি ঘটে। এদের ব্যবহৃত হাতিয়ার গুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল হাতকুঠার। দেখতে এটি চোখের জলের ফোঁটার মত; এর একদিক সুচালো এবং আরেকদিক মোটা, যেদিকটি হাতে ধরে সুচলো দিক দিয়ে আঘাত করা হত। হাতকুঠার ছিল আকারে বড় এবং ভারি। এই ধরনের হাতিয়ার পুরাতত্ত্বের ভাষায় 'কোর টুল' নামে পরিচিত। J. Desmond Clarke বলেছেন, হাতকুঠার ছিল "an all purpose skinning tool and meat chopper". হাতকুঠার নির্মাণের পর মানুষ বড় পশু হত্যা করতে সক্ষম হল। সাম্প্রতিক আরও একটি গবেষণায় দেখা গেছে কেবল হাত কুঠার নয়, হোমো ইরেক্টাসরা ছোটো ছোটো হাতিয়ারও ব্যবহার করত, যেগুলিকে flake tool বলা যেতে পারে। যেমন দূর প্রাচ্যের প্রত্নক্ষেত্র গুলিতে হাত কুঠারের ব্যবহারের প্রমান নেই। এখানে  ছোটো চপার জাতীয় আয়ুধের অস্তিত্ব ছিল। উত্তর ইউরোপের কিছু এলাকায় এবং ইংল্যন্ডে ভিন্ন ধরনের হাতকুঠার পাওয়া গেছে। প্রথমটিতে ছিল কাছিমের মত আকৃতির এবং দ্বিতীয়টিতে ছিল গোলাকৃতির হাতকুঠার। এই দুই সংস্কৃতি যথাক্রমে Clactonian এবং Levalloisian সংস্কৃতি নামে পরিচিত।

Clactonian Hand Axe
Levallosian Hand Axe

হোমো ইরেক্টাস সংস্কৃতি Acheulian সংস্কৃতি নামে পরিচিত। উত্তর ফ্রান্সের St. Acheul অঞ্চলে প্রথম হাত কুঠারের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে পুরাতত্ত্বের নিয়মে সর্বত্র হাতকুঠার সংস্কৃতির নাম Acheulian সংস্কৃতি। Acheulian আয়ুধ ফ্রান্সসহ ইউরোপের বিভিন্ন এলাকায়, পশ্চিম এশিয়া এবং ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে, আবিস্কৃত হয়েছে। Acheulian-রা বড় বড় পশু হত্যা করত। স্পেনের Torralba একটি Acheulian প্রত্নক্ষেত্র যেখানে হাতি হত্যা করে তার মাংস ভক্ষনের প্রমান পাওয়া গেছে। সম্ভবত হাতিকে কোনো একটা ফাঁদে ফেলে তারপর তাকে হাতকুঠার দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হত। 

হোমো ইরেক্টাসদের সবথেকে বড়  সুবিধা ছিল উন্নততর মস্তিস্ক, যা অধিক তথ্য সংরক্ষনে সক্ষম। তাই তারা হাতিয়ার নির্মাণের জটিল প্রযুক্তি আয়ত্ব করতে পেরেছিল এবং তা যুগ যুগ ধরে এক প্রজন্ম তার পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে পৌঁছে দিতে পেরেছে। চিত্তাকর্ষক বিষয় এটাই যে হোমো ইরেক্টাসরা পৃথিবীর যে প্রান্তে গেছে সেখানে হাত কুঠার প্রযুক্তি নিয়ে গেছে এবং কয়েকটি ব্যাতিক্রম বাদে সর্বত্রই এর কৃতকৌশল মোটামুটি এক। যথার্থ সামাজিক বন্ধন এবং বার্তালাপের মাধ্যম না থাকলে এটা সম্ভব ছিল না। 

হোমো ইরেক্টাসরা আগুনের ব্যবহারও আয়ত্ত্ব করেছিল। বাসস্থান গরম রাখা, আক্রমণকারী হিংস্র পশুদের তাড়াতে এবং মাংস ঝলসাতে আগুনের ব্যবহার হত। বেইজিং এর কাছে উত্তর চিনের ঝৌকোদিয়েনে যে নিম্ন পুরাপ্রস্তর যুগীয় (আজ থেকে প্রায় ৫০,০০০ বছর পুরানো) প্রত্নক্ষেত্রটি রয়েছে সেখানে মানুষের আগুন ব্যবহারের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এছাড়া ইংল্যান্ডের হক্সনে এবং স্পেনের টোরালবাতেও আগুনের ব্যবহার ছিল।    

সুতরাং নিম্ন পুরাপ্রস্তর যুগে প্রস্তরায়ুধ নির্মাণের মাধ্যমে মানব সভ্যতার জয়যাত্রা সূচিত হয়েছিল। প্রারম্ভিক মানব প্রজাতি যেমন হোমো হ্যাবিলিস এবং হোমো ইরেক্টাস শুধু আয়ুধ নির্মাণ প্রযুক্তিতেই উন্নতি করেনি, তারা সামাজিক যোগাযোগ স্থাপন এবং আগুন ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন করেছিল। এই উদ্ভাবনগুলি পরবর্তী মানব অগ্রগতি এবং সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

 Lower Paleolithic Age

The Lithic Age is the earliest phase of human prehistory. During this period, humans first mastered the creation and use of tools, most of which were made of stone. Hence, this era is called the Stone Age or Lithic Age. Based on the development of tool-making culture and socio-economic growth, the Stone Age is mainly divided into three periods: the Paleolithic, Mesolithic, and Neolithic. The Paleolithic Age is further divided into three stages: Lower Paleolithic, Middle Paleolithic, and Upper Paleolithic. The Lower Paleolithic period began approximately 2.5 million years ago. Although Australopithecus Robustus first used tools, the consistent tool-making tradition is observed with the more advanced species, Homo habilis. Nicholas Toth demonstrated that tool-making required not only the use of both hands but also deep concentration, imagination and coordination of various parts of the body (limbs, eye, finger), which was possible due to the larger brain (800 cc) of Homo habilis. The earliest tools were at a very rudimentary level of technology, gradually becoming more advanced over time.

The Oldowan culture marks the beginning of the Paleolithic Age. This culture was discovered in the Olduvai Gorge area of Tanzania, primarily by Louis Leakey and Mary Leakey. It is uncertain who exactly created and used the Oldowan tools. Initially, it was thought that the early Homo species were the creators of this culture, but recent research suggests that both the late species of Australopithecus and early Homo species were the makers and users of Oldowan tools. These tools were mainly used for cutting plants, cracking nuts, digging, cutting meat, or collecting honey. Generally, they consumed plant-based foods and occasionally hunted small animals. Homo habilis often scavenged the remains of animals hunted by other predators. Some Oldowan tools were used for skinning and extracting marrow from bones. Therefore, in the early phase of the Lower Paleolithic period, humans were more scavengers than hunters. A question has arisen about the evidence of meat consumption with Oldowan tools, but recent paleontological and archaeological studies have shown that animal fossils from 1.5 to 2 million years ago bear marks of tool-induced cuts, confirming early human meat consumption.

Homo erectus, with a larger brain capacity (1000 cc) compared to Homo habilis, appeared around 1.5 million years ago. Originating in Africa, they gradually spread to various parts of Asia and Europe. The advent of Homo erectus led to significant advancements in tool-making technology. Among their tools, the most notable was the hand axe, shaped like a teardrop, with one end pointed and the other broad for gripping. The hand axe, large and heavy, is known in archaeology as a "core tool." J. Desmond Clarke described the hand axe as "an all-purpose skinning tool and meat chopper." With the development of hand axes, humans became capable of hunting large animals. Recent research also indicates that Homo erectus used smaller tools, known as flake tools. Evidence from archaeological sites in the Far East shows the absence of hand axes but the presence of small chopper-like tools. Different types of hand axes, like turtle-shaped and round ones, were found in Northern Europe and England, respectively, associated with the Clactonian and Levalloisian cultures.

The Homo erectus culture is known as the Acheulian culture. The first discovery of hand axes in St. Acheul, northern France, led to this naming convention in archaeology. Acheulian tools have been found in various parts of Europe, Western Asia, and South Asia, including India. Acheulian people hunted large animals; for instance, evidence from the Torralba site in Spain shows they hunted and consumed elephants. They likely used traps and then killed the animals with hand axes.

Homo erectus' most significant advantage was their larger brain, capable of storing more information. This enabled them to master complex tool-making technologies and pass them down through generations. Fascinatingly, wherever Homo erectus migrated, they carried the hand axe technology, maintaining a relatively consistent technique, barring a few exceptions. Such technological transmission would not have been possible without substantial social bonds and communication methods.

Homo erectus also mastered the use of fire. Fire was used to keep their dwellings warm, ward off predators, and roast meat. Evidence of fire usage by early humans, dating back approximately 500,000 years, has been found at a Lower Paleolithic site near Zhoukoudian in northern China. Other sites in England's Hoxne and Spain's Torralba also show signs of fire use.     

So the Lower Paleolithic culture marks the dawn of human civilization, characterized by the development and use of stone tools. Early human species like Homo habilis and Homo erectus not only advanced tool-making technology but also established social communication and mastered fire use. These innovations laid the foundation for subsequent human progress and cultural evolution.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল তা জনজীবনে তীব্রভ

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগার:-   কোনো ব্যাক্তিগত বা অলাভজনক