সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রাচীন বালার বিভিন্ন বিভাগসমূহ

প্রাচীন বালার বিভিন্ন বিভাগসমূহ প্রাচীন যুগে বাংলা কোনো একক ও অখণ্ড রাষ্ট্র বা রাজ্য ছিল না। বাংলার বিভিন্ন অংশ অনেকগুলো ছোট ছোট অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। এই ছোট ছোট অঞ্চলগুলোতে শাসক থাকতেন, যারা তাদের মতো করে অঞ্চলগুলো শাসন করতেন। সেই সময়ের বাংলার এই অঞ্চলগুলোকেই সমষ্টিগতভাবে জনপদ বলা হয়। প্রাচীন বাংলার জনপদ: প্রাচীন বাংলা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব থাকায় প্রাচীন বাংলার জনপদ কোথায় বা কতখানি জায়গা জুড়ে ছিল এমন অনেক কিছুই সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবুও চার শতক থেকে গুপ্ত, গুপ্ত পরবর্তী যুগ, পাল, সেন এসব আমলের শিলালিপি ও সাহিত্য গ্রন্থগুলোতে প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায়। এছাড়া প্রাচীনকালের যে ঐতিহাসিক উপাদানগুলো পাওয়া যায় সেগুলো থেকে প্রাচীন বাংলার জনপদ এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে কিছুটা জানা যায়। প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর কয়েকটি সম্পর্কে দেখে নেয়া যাক। গৌড় পাণিনির গ্রন্থে সর্বপ্রথম গৌড় জনপদটির উল্লেখ পাওয়া যায়। গৌড় জনপদটি সুপরিচিত একটি জনপদ হলেও এর নামকরণের কারণ কিংবা কোন কোন অঞ্চল নিয়ে এটি গঠিত ছিল তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে হর্ষবর্ধন এর কিছু শিলালিপি থেকে এটুকু জানা যায় যে, গৌড়দেশ সমু...

উর্দু ভাষার উতপত্তি ও বিকাশ

উর্দু ভাষার উতপত্তি ও বিকাশ   উর্দু   ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার অন্তর্গত ইন্দো-আর্য শাখার একটি ভাষা। বর্তমানে উর্দু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। উর্দু ভারতেরও একটি সরকারি ভাষা। ' উর্দু' শব্দটি গৃহীত হয়েছে তুর্কি ভাষা থেকে। এর অর্থ হলো "সৈনিক"। মূলত মুসলিম শাসনামলে সেনা শিবির থেকে এই ভাষার উদ্ভব হয়েছিল। উর্দু ভাষার উদ্ভব ভাষাতাত্ত্বিকদের মতে,  ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষা পরিবারের অন্তর্গত  ইন্দো-ইরানিয়া ন   ভাষা  উপ-পরিবারের একটি শাখার নাম −     ভারতীয়-আর্য ভাষা । এই শাখার উপশাখা হলো  পূর্ব মধ্যাঞ্চলীয়  ভাষা।  মূলত স্থানীয় প্রাকৃতজনের ভাষার (অনার্য ভাষা) সংমিশ্রণে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা ধরনের মিশ্র ভাষার উদ্ভব হয়। এই সূত্রে বর্তমান ভারতের পূর্ব-মধ্যাঞ্চলে হিন্দি ভাষার উদ্ভব ঘটে। মুসলমানদের সিন্ধু বিজয়ের সময়, হিন্দি নামের কোনো উল্লেখযোগ্য ভাষা ছিল না। সে সময়ের প্রাকৃতভাষাকে প্রাক্-হিন্দি ভাষা বলা যেতে পারে। ভারতের পূর্ব-মধ্যাঞ্চলের সেকালের ঘরোয়া ভাষায় ছিল সংস্কৃত ভাষার জটিল উচ্চারণ থেকে বেরিয়ে আসা  সহজে উচ্চারণযোগ্য শব্দের আধিক্য। ...

বিজয়নগর রাজ্যের শিল্প, স্থাপত্য ও সাহিত্য

 বিজয়নগর রাজ্যের শিল্প, স্থাপত্য ও সাহিত্য ১৪ শতকের মাঝামাঝি সময় দিল্লি সুলতানির পতনের যুগে বিজয়নগর রাজ্য স্থাপিত হয়। এই রাজ্য ২০০ বছরেরও অধিক সময় ধরে তার কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পেরেছিল। দীর্ঘ সময় জুড়ে পার্শ্ববর্তী বাহমনি রাজ্যের সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত থাকলেও এই রাজ্যের অর্থনৈতিক অগ্রগতি স্থবির থাকেনি। বিজয়নগরের একটি আকর্ষক বিশেষত্ব এই যে এখানকার শাসকেরা সাহিত্য ও শিল্পের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং তাঁদের যোগ্য তত্ত্বাবধানে এই রাজ্যে কালজয়ী সাহিত্য, স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এই রাজ্যে পায়েজ, নুনিজ, বারবােসা, নিকোলাে কন্টি, আবদুর বুজ্জাক প্রমুখ বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে আসেন। তাঁরা তাঁদের বিবরণে তৎকালীন বিজয়নগরের সাংস্কৃতিক জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছেন। ভারতে সুলতানি শাসনকালে বিজয়নগর সাম্রাজ্য হিন্দু সভ্যতা ও সংস্কৃতির মহান কেন্দ্র হিসেবে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিল। সেই সময় রাজকীয় পৃষ্ঠপােষকতায় দক্ষিণ ভারতে সংস্কৃত ভাষা নবজীবন লাভ করেছিল। পাশাপাশি তামিল, তেলেগু, কন্নড় প্রভৃতি আলিক ভাষাও সেই সময় উৎকর্ষ লাভ করে। তেলুগু কবি শ্রীনাথ ও পেড্ডন, রাজা দ্বিতীয় দেবরায...

সুফি আন্দোলন | Sufi Movement

সুফি আন্দোলন খ্রীস্টীয় নবম – দশম শতকে ইসলাম ধর্মের মধ্যে একটি প্রগতিশীল আন্দোলনের সূত্রপাত হয় । এই আন্দোলন ‘ সুফি আন্দোলন ’ নামে পরিচিত। যারা সুফ বা পশমের বস্ত্র পরিধান করে তাদেরকেই সুফি বলা হয়। অর্থাৎ , সুফি কথাটির সঙ্গে ‘ সাফা ’ বা পবিত্রতা ও ‘ সাফ ’ বা অবস্থানের কোন সম্পর্ক নেই। সুফি মতাদর্শের উদ্ভবের পিছনে বিভিন্ন তত্ত্ব আছে । এই তত্ত্বগুলির মধ্যেও আবার স্ববিরোধ আছে। সুফি মতাদর্শের ওপর যোগ , উপনিষদ ও বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব ছিল। সুলতানি সাম্রাজ্য স্থাপনের ফলে মুসলমানদের মধ্যে ভোগবিলাস ও ঐশ্বর্যের উন্মাদনা এবং তাদের নৈতিক অবক্ষয় ও অধঃপতন লক্ষ্য করে কয়েকজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান মর্মাহত হন। তাঁরা রাষ্ট্রের সঙ্গে সর্বপ্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করতে মনস্থ করেন । এঁদের অনেকেই ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের ভালবাসার বন্ধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এঁদের চিন্তাধারা গোঁড়া মুসলমানদের মনঃপূত হয় নি। তাঁরা সুফিদের ইসলাম বিরোধী বলে মনে করেন। ফলে সুফিরা ক্রমশ নিজেদের সরিয়ে নিয়ে নির্জনে ধর্মচর্চা করতে শুরু করেন। এঁরা একজন পীর বা শেখের অধীনে একটি ধর্ম সংগঠন গড়ে তোলেন। সংগঠনের সদস্যদের বলা হত ফকির বা দরবেশ। এঁরা ঈশ্বরে এ...

আদি মধ্য যুগে রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রকৃতি | Early Medieval Indian State

 আদি মধ্য যুগে রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রকৃতি আদি মধ্য যুগে রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রকৃতি নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। বিশ শতকের গোড়ার দিকের ঐতিহাসিকগন যেখানে কেন্দ্রিভূত রাষ্ট্রের ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করে ছিলেন সেখানে ঐ শতকের মাঝামাঝি সময় বেশ কিছু ঐতিহাসিক সামান্ততন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করেছেন। আবার সত্তরের দশকে আরও একটি নতুন তত্ত্ব উঠে এসেছে, সেটি হল বিভাজিত রাষ্ট্র ব্যবস্থার তত্ত্ব। কোনো পক্ষই তাদের মতামতের সমর্থনে অকাট্য প্রমান হাজির করতে পারিনি বলেই কোনো তত্ত্বই আজও সম্পূর্ণ গ্রহনযোগ্য হয়ে ওঠে নি।  গুপ্ত শাসনের অবসানের পর উত্তর ভারতে একাধিক আঞ্চলিক রাজশক্তির বিকাশ ঘটেছিল। দক্ষিণ ভারতেও ছবিটা একই রকম ছিল। আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলির শাসন ও রাষ্ট্রব্যবস্থার চরিত্র বিশ্লেষণ করতে গিয়ে   A. S. Altekar, K. A. Nilkantha Sastri, R. K. Mukharjee প্রমুখ ঐতিহাসিক কেন্দ্রীভূত রাষ্ট্রের কল্পনা করেছেন। কিন্তু মার্কসবাদী ঐতিহাসিকগন মার্ক্সের 'এশীয় উৎপাদন পদ্ধতি' তত্ত্বের দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে ভারতীয় রাষ্ট্রসমূহ কে নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ, স্বৈরাচারী শাসকের দ্বারা পরিচালিত, উদ্বৃত্ত শোষনকারী ...