সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মার্চ, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

নাদির শাহের ভারত আক্রমণ | Nadir Shah's Invasion

  নাদির শাহের ভারত আক্রমণের কারন কি মূলত অর্থনৈতিক? এই আক্রমণের রাজনৈতিক ফল কি হয়েছিল?  মুঘল সম্রাট মোহাম্মদ শাহ এর শাসনকালে ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে পারস্য সম্রাট নাদির শাহ ভারত আক্রমণ করেন। প্রচুর ধনরত্ন লুন্ঠন করেন এবং বেশ কিছু এলাকা তিনি দখল করেন। তাঁর আক্রমণের পিছনে সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক স্বার্থ থাকলেও তৎকালীন ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাকে ভারত আক্রমণের উৎসাহিত করেছিল। যাইহোক নাদির শাহের আক্রমণ প্রতিরোধ করতে মুঘল সামরিক শক্তি ব্যর্থ হয় এবং সাম্রাজ্যের উপরে এই পরাজয় ক্ষতিকারক প্রভাব বিস্তার করে। পারস্য সাফাবিদ বংশীয়দের শাসনে আফগানদের দ্বারা আক্রান্ত হলে নাদির কুলি নামক এক দক্ষ সেনাপতি তার সামরিক কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে পারস্য থেকে আফগানদের বিতাড়িত করতে সক্ষম হন এবং তিনি সাম্রাজ্যে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। এরপর তিনি সাফাবিদ শাসকগোষ্ঠীকে সিংহাসনচ্যুত করে নিজেকে পারস্যের 'শাহ' ঘোষণা করেন। নাদির শাহ অটোমান তুর্কিদেরও পারস্য থেকে বিতাড়িত করতে  সক্ষম হন। কিন্তু তুর্কিদের সঙ্গে অনবরত লড়াই চালিয়ে যেতে গেলে যে বিশাল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন ছিল সেই পরিমান অর্থের মজুত সেই মুহূর্তে সাম্র

শাহজাহানের রাজত্বকাল | Shahajahan's Reign

  মুঘল যুগে শাহজাহানের রাজত্বকাল শাহজাহানের রাজত্বকালে (১৬২৮-১৬৫৮) মুঘল সাম্রাজ্য তার গৌরবের শীর্ষে পৌঁছায়। তাঁর রাজত্বকাল মুঘলদের ইতিহাসে 'স্বর্ণযুগ' নামেই খ্যাত। তার সময়ে ভারতীয় মুঘল সাম্রাজ্য সমগ্র ভারতবর্ষে সম্প্রসারিত হয়, দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্টিত হয় এবং শিল্প-সাহিত্য উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছায়। তবে উন্নতির আড়ালে পতন ও অবক্ষয়ের চিহ্নগুলিও ফুটে ওঠে বলে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন। শাহজাহানের রাজত্বকাল যে ভারত ইতিহাসে সমৃদ্ধি ও গৌরবের চরম শিখরে আরোহণ করেছিল, তা বিভিন্ন ঐতিহাসিক সাক্ষ্যে সমর্থিত। 'লুব-উৎ-তওরিখ' গ্রন্থের লেখক দেখিয়েছেন শাহজাহানের গৃহীত শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থাগুলি ছিল প্রজা কল্যাণকামী এবং দক্ষ শাসনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি প্রশাসনিক কাজে কোনো গাফিলতি সহ্য করতেন না। প্রশাসনিক ব্যবস্থার উপর পুঙ্খানুপুঙ্খ নজর রাখতেন। তাঁর সময়ে আইন-শৃঙ্খলা যথেষ্ট মজবুত ছিল। জনগণের যাতায়াতের এবং সম্পত্তির পূর্ণ নিরাপত্তা ছিল। সম্রাট 'ঝরোকা দর্শন ' এর মাধ্যমে জনগণের সামনে আসতেন এবং জনগণ তার কাছে সুবিচার চাইতে  পারতেন। তবে মনে করা হয়, খুব কম লোকই এরকম সম্রাটের কাছ

মুঘলদের প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা | Mughal Provincial Administration

  মুঘলদের প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা  ভারতে মুঘল শাসন ব্যবস্থার অন্যতম প্রাধান অঙ্গ ছিল প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা। শাসন ব্যবস্থার সুবিধার জন্য মোগল শাসকরা সমগ্র সাম্রাজ্যকে কতগুলি সুবা বা প্রদেশে বিভক্ত করতেন। আকবরের সময় সুবার সংখ্যা ছিল ১৫। জাহাঙ্গীর এর সময় সুবার সংখ্যা হয়ে দাঁড়ায় ১৭; শাহজাহানের সময় ২২ এবং পরবর্তীকালে  কান্দাহার হস্তচ্যুত হলে সেই সংখ্যা ২১-এ এসে দাঁড়ায়। ঔরঙ্গজেবের সময়েও এই সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকে। প্রত্যেকটি সুবা কতগুলি সরকার এবং প্রত্যেকটি সরকার কতগুলি পরগনায় বিভক্ত থাকত। শাসন ব্যবস্থার প্রতিটি এককে উপযুক্ত কর্মচারী নিয়োগ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়াস মোগল শাসকরা চালাতেন। প্রদেশগুলির সাথে কেন্দ্রের যোগাযোগ ছিল সুশাসনের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। প্রতিটি প্রদেশের রাজধানী থাকত, যেখান থেকে প্রাদেশিক শাসন পরিচালিত হত এবং কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা হত। প্রত্যেকটি সুবার শাসন ছিল কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থার অনুরূপ। সুবার সামরিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতেন সুবাদার নামে কেন্দ্রীয় সরকারের নিযুক্ত উচ্চপদস্থ কর্মচারী। প্রাদেশিক ব্যবস্থায় তাকে সাহায্য করার জন্য অনেক কর্মচারীও

জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালের গুরুত্ব | Jahangir's Reign

  ভারতের ইতিহাসে জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালের গুরুত্ব মহান সম্রাট আকবরের পুত্র এবং তার পরবর্তী মুঘল শাসক ছিলেন জাহাঙ্গীর। ১৬০৫ খ্রিস্টাব্দে আকবরের মৃত্যু হলে জ্যেষ্ঠ পুত্র সেলিম ৩৬ বছর বয়সে আগ্রা দুর্গে নুরুদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর নাম ধারণ করে মুঘল সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। আকবরের রাজত্বকালের অগ্রগতির সঙ্গে জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালকে তুলনা করা যায় না ঠিকই, কিন্তু মুঘলদের যে ঐতিহ্য-- ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংস্কৃতিমনস্কতা-- তা থেকে জাহাঙ্গীর এক ইঞ্চিও সরে আসেননি। জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালের প্রথম উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল পুত্র খসরুর বিদ্রোহ (১৬০৭)। আকবরের মৃত্যুর পর সভাসদদের অনেকেই সেলিমের পরিবর্তে আকবরের পৌত্র খসরুকে সিংহাসনের উপযুক্ত মনে করেছিলেন। সুতরাং খসরুর যথেষ্ট জনপ্রিয়তাও ছিল। মানসিংহ, আজিজ কোকা, শিখ গুরু অর্জুন খসরুর পক্ষেই ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খসরুর বিদ্রোহ দমন করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে যুবরাজ খুররমের হাতে খসরুর মৃত্যু হয়েছিল। যে ঘটনার জন্য জাহাঙ্গীরকে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে সেটি হল নুরজাহানের সঙ্গে তার বিবাহ। পারসিক কন্যা নুরজাহান জাহাঙ্গীরের দরবারে অগ্রমহিষীর মর্যাদাও পেয়েছ

Annals School

Annals School Annals School হল ফরাসি ইতিহাসবিদদের একটি গোষ্ঠী, যারা ২০ শতকের গোড়ার দিকে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং ইতিহাস চর্চার পদ্ধতিতে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। এই গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা স্ট্রাসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক মার্ক ব্লক এবং লুসিয়েন ফেব্রে। উভয়ের দ্বারা ১৯২৯ খ্রীঃ  প্রকাশিত পত্রিকার নাম ছিল Annals of Economic and Social History (সংক্ষেপে Annals)। এই পত্রিকা থেকেই উক্ত ঐতিহাসিকদের গোষ্ঠীর নাম হয়েছিল  Annals School.  এই গোষ্ঠী ইতিহাস লেখার ঐতিহ্যগত পদ্ধতিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, যা রাজনৈতিক ও সামরিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠত এবং ইতিহাসের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক দিকগুলিকে উপেক্ষা করত। পরিবর্তে, তারা একটি নতুন পদ্ধতির পক্ষে সওয়াল করেছিল যেখানে তৃনমূল স্তরের মানুষের জীবনের দিনগত বিশ্লেষণ, জনতার মানসিকতা ও ক্রিয়াকলাপের প্রতিচ্ছবিকে পুঁজি করে ইতিহাসের সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। অ্যানালস স্কুলের মূল নীতিগুলির মধ্যে একটি ছিল দীর্ঘমেয়াদী প্রবণতা এবং কাঠামো অধ্যয়নের গুরুত্ব। তারা যুক্তি দিয়েছিলেন যে ইতিহাসকে বিচ্ছিন্ন ঘটনার একটি সিরিজ হিসাবে দেখা উচিত নয়, বরং প