রাওলাট সত্যাগ্রহ
চম্পারন, খেদা ও আমেদাবাদ সত্যাগ্রহের আংশিক সাফল্যের পর গান্ধী চাইলেন তার সত্যাগ্রহের অস্ত্রকে সর্বভারতীয় কোন দাবির প্রেক্ষিতে প্রয়োগ করতে। আর সে সুযোগ করে দিল রাওলাট আইন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে কুখ্যাত জনবিরোধি রাওলাট আইন জারি করে বলা হয়, পুলিশ যে কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে রাজদ্রোহী হিসেবে বিবেচিত করে তাকে বিশেষ আদালতে হাজির করতে পারবে, তাকে বিনা বিচারে দু'বছর আটক করে করা যাবে। এই আইনের রাজদ্রোহমূলক বলে ঘোষিত কোন পুস্তিকা বাড়িতে রাখাও রাজদ্রোহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। নিঃসন্দেহে এই আইন ছিল ভারতীয় বিপ্লবীদের দমন করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকারের অগণতান্ত্রিক একটি কৌশল।
সমসাময়িক পত্র-পত্রিকাগুলি এবং হোমরুল নেতারা এই জনবিরোধী আইনের প্রতিবাদে সরব হয়। গান্ধী ডাক দেন সত্যাগ্রহের। হোমরুল লীগের বহু সদস্য তাঁকে সমর্থন জানান। তবে কংগ্রেসের নরমপন্থী ও চরমপন্থী গোষ্ঠী তাঁর বিরোধিতা করে। উপবাস, প্রার্থনা এবং সভা সমিতির মাধ্যমে গান্ধী রাওলাট আইনের প্রতিবাদ করতে বলেন। কিন্তু আন্দোলন শীঘ্রই হিংসাশ্রয়ী হয়ে ওঠে, বিশেষ করে ৯ এপ্রিল গান্ধীর কারারুদ্ধ হবার পর। জনরোসের পালটা জবাবে সরকারও দমননীতি গ্রহণ করে। ১৩ই এপ্রিল জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ড এই দমন নীতির নিকৃষ্ঠতম প্রমাণ।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে সত্যাগ্রহের ধার কমতে থাকে এবং ১৮ই এপ্রিল সত্যাগ্রহ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। রাজনৈতিক আন্দোলন হিসেবে রাওলাট সত্যাগ্রহ ব্যর্থ বলেই মনে হয়; কারণ আন্দোলনের একমাত্র লক্ষ্য, রাওলাট আইন প্রত্যাহার করা হয়নি। তাছাড়া সত্যাগ্রহের আদর্শ সাধারণের বোধগম্য হয়নি। যার ফলে অহিংস আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে পড়ে। এ কথা গান্ধীও স্বীকার করেন। ভারতের সর্বস্তরে এই আন্দোলন বিস্তৃত করা সম্ভব হয় নি এবং স্থানীয় আন্দোলনের ক্ষেত্রে স্থানীয় অভিযোগগুলি বেশি কার্যকর ছিল। কারণ রাওলাট বিল সম্পর্কে সাধারনের কোনো ধারণা ছিল না। ব্যর্থতা থেকে গান্ধী উপলব্ধি করলেন যে, কংগ্রেসের মতো একটি নৈব্যক্তিক সংগঠনের প্রয়োজন আছে। তাই তার পরবর্তী পদক্ষেপ ছিল কংগ্রেসের নেতৃত্ব গ্রহণ। তবে এই আন্দোলনে গনরাজনৈতিক চরিত্র প্রশংসার যোগ্য।
KHUB VLO BUJTE PARLAM SUBJECT TA PORE
উত্তরমুছুন