সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অশোকের সাম্রাজ্য সীমা | Territory of Ashokan Empire

অশোকের সাম্রাজ্য সীমা

অশোকের সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি পরিমাপ করতে হলে অশোকের অনুশাসন গুলির অবস্থান অনুধাবন করতে হবে। অশোকের শিলালিপি গুলিতে মৌর্য সাম্রাজ্যের সমার্থক শব্দ হিসেবে 'জম্বুদ্বীপ' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। জম্বুদ্বীপ কথার অর্থ জাম ফলের দ্বীপ। নিটটুরের  এর গৌণ গিরিশাসনে বলা হয়েছে যে তার সম্রাজ্য সর্বত্র তার অনুশাসন প্রেরিত হয়েছে। সুতরাং তার লিপি গুলির ভৌগোলিক অবস্থান তার সাম্রাজ্যের আয়তন নির্দেশ করে। লিপি গুলির প্রাপ্তিস্থান অনুধাবন করে বলা যায় উত্তরে আফগানিস্তান থেকে দক্ষিনে কর্ণাটক পর্যন্ত এবং পশ্চিমে কাথিয়াবাড় থেকে পূর্বে কলিঙ্গ পর্যন্ত তার সম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। মহাস্থান লেখাটি যদি মৌর্য কালিং দলিল হয় তাহলে অশোকের সাম্রাজ্যের পূর্ব সীমানা উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত প্রসারিত ছিল- এমন বলা যায়। কলিঙ্গ ছাড়া বাকি সমস্ত এলাকাই তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয়েছিলেন।

অশোকের অনুশাসন এই তার সাম্রাজ্যে এর বাইরের এলাকা গুলিকে সীমান্তবর্তী এলাকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন --
১. চোড় অর্থাৎ চোল
২. পাড় অর্থাৎ মাদুরাই এর পান্ড 
৩. কেরলপুত অর্থাৎ কেরল
৪. সত্যপুত অর্থাৎ কর্নাটকের দক্ষিণাংশ বা তামিলনাড়ুর উত্তরাংশ
৫. তাম্রপানি অর্থাৎ শ্রীলংকা

সুতরাং কর্নাটকের দক্ষিণ হস্ত এলাকা এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ছড়া সমগ্র উপমহাদেশের উপর মৌর্য সাম্রাজ্যের কর্তৃত্ব বিস্তৃত হয়েছিল।

Boundaries of Ashoka's Empire


To measure the extent of Ashoka's empire, one must understand the location of his edicts. In Ashoka's inscriptions, the term 'Jambudvipa' has been used as a synonym for the Maurya Empire. The word 'Jambudvipa' means the island of Jamun (Indian blackberry). In the secondary edict at Nettur, it is stated that his rule spread throughout his empire. Therefore, the geographical location of his inscriptions indicates the size of his empire. By analyzing the places where the inscriptions were found, it can be said that his empire extended from Afghanistan in the north to Karnataka in the south and from Kathiawar in the west to Kalinga in the east. If the Mahasthan inscription is a Mauryan document, it can be said that the eastern boundary of Ashoka's empire extended to North Bengal. Except for Kalinga, he inherited all other areas.

Ashoka's edicts mention the areas outside his empire as bordering regions. These include:

1. Choda, referring to the Cholas  
2. Pada, referring to the Pandya of Madurai  
3. Kerala-Putra, referring to Kerala  
4. Satyaputra, referring to the southern part of Karnataka or the northern part of Tamil Nadu  
5. Tamraparni, referring to Sri Lanka  

Thus, apart from the southern part of Karnataka and northeastern India, Mauryan authority extended over the entire Indian subcontinent.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ...

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগ...

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হ...