দ্বিতীয় পানিপথের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ব
১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুনের মৃত্যুর পর আকবর যখন সিংহাসনে বসেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। তিনি পঞ্জাবের সামান্য অংশের নাম মাত্র শাসক ছিলেন। সিংহাসন আরোহনের পর যাদের হাতে তার উৎপাটিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম এবং সবচেয়ে শক্তি শালী হলেন আদিল শাহের সেনাপতি হিমু। হিমু অসামান্য সামরিক যোগ্যতা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আগ্রা ও দিল্লি দখল করে বিক্রমাদিত্য উপাধি গ্রহণ করে দিল্লির সিংহাসন দখল করেন। এই প্রেক্ষিতে আকবর তার উপদেষ্টাদের কাবুলে ফিরবার পরামর্শ অগ্রাহ্য করে হিমুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে আকবরের অভিভাবক বৈরাম খাঁ- র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বৈরাম খাঁ- র যোগ্য সেনাপতিত্বে তুলনামূলক ভাবে কম সৈন্য সম্পন্ন মুঘল বাহিনী হিমুর বিরাট বাহিনীকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়। হিমুর বহু যুদ্ধউপকরন এবং হাতি মুঘলদের হস্তগত হয়। বৈরাম খাঁ বন্দী হিমুর মাথা কেটে ( শিরচ্ছেদ ) করে হত্যা করে।
পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ ভারতের ইতিহাসে সুদূর প্রসারী প্রভাব বিস্তার করেছিল। এই যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে আফগানদের ভারতে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্টার স্বপ্ন চিরতরে ভেঙে যায়। হুমায়ূনের মাছিওয়ারা ও সিরহিন্দের যুদ্ধ পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে সম্পূর্ণতা লাভ করে। এখান থেকেই মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাসের প্রকৃতপক্ষে সূচনা হয়। আকবর দ্রুত আগ্রা দখল করেন এবং সিকন্দর সুর, আদিল শাহ এবং ইব্রাহিম শূরের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে আকবর আফগান প্রতিদ্বন্দ্বিতার সমাপ্তি ঘটান। বাবরের পানিপথের যুদ্ধ থেকে যে মুঘল আফগান প্রতিদ্বন্দ্বিতার সূচনা হয়েছিল ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় পানিপথের যুদ্ধে তার অবসান ঘটে। অন্য দিক থেকে বলা যায় পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ ছিল মুঘলদের শেষ আত্মরক্ষার যুদ্ধ। এরপর আকবরযে যুদ্ধ গুলি করেছিলেন সেগুলি ছিল সম্প্রসারণমূলক যুদ্ধ।
ধন্যবাদ স্যার
উত্তরমুছুন