স্বত্ববিলোপ নীতি | Subsidiary Alliance
লর্ড ডালহৌসি ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারের শেষ উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধি। ডালহৌসি সাম্রাজ্য বিস্তারের সবচেয়ে ফলপ্রসূ যে নীতি অবলম্বন করেছিলেন তা হল স্বত্ববিলোপ নীতি। আসলে লর্ড ওয়েলেসলি অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির মাধ্যমে যে রাজ্যগুলিকে ক্লীবত্বের পর্যায়ে নামিয়ে এনেছিলেন সেই রাজ্যগুলিকে পুরোপুরি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করাই ছিল এই নীতির উদ্দেশ্য। স্বত্ববিলোপ নীতিতে বলা হয়েছিল যে, যে সমস্ত কোম্পানি আশ্রিত রাজ্য বা কোম্পানির করদ রাজ্যের রাজাদের পুত্রসন্তান থাকবে না তারা কোম্পানির অনুমতি ব্যতীত দত্তক নিতে পারবে না। কোম্পানির সৃষ্ট রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে অনুমতির কোন প্রশ্নই নেই। তাদের রাজ্য এক্ষেত্রে সরাসরি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হবে।
স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করে ডালহৌসি সাতারা (1848), যোৎপুর ও সম্বলপুর (1849), বঘোত ও উদয়পুর (1852), ঝাঁসি (1853) এবং নাগপুর(1854) কোম্পানি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। এই নীতি প্রয়োগ করে পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও এর দত্তকপুত্র নানা সাহেবের পেনশন বন্ধ করা হয়েছিল।
ডালহৌসির স্বত্ববিলোপ নীতি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারে ব্যাপক ফলপ্রসূ হলেও এর প্রতিক্রিয়া ভালো হয়নি। এমনিতেই ভারতের চিরাচরিত রীতি নীতির ওপর হস্তক্ষেপ ভারতীয়রা ভালোচোখে দেখতো না। তার উপর সেই হস্তক্ষেপ যখন ক্ষমতাচ্যুতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তা মেনে নেওয়া দেশীয় রাজাদের পক্ষে অসম্ভব ছিল। তাই দেখা যায় 1857-এর বিদ্রোহে বহু দেশীয় রাজা এবং ক্ষমতাচ্যুত দত্তকপুত্র (রাজার) সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন