সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মৌর্যত্তর ভারতের কৃষি ও কারিগরি অর্থনীতি

 

মৌর্যত্তর ভারতের কৃষি অর্থনীতি

মৌর্য পরবর্তী ভারতবর্ষের ইতিহাস অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মৌর্যদের পতনের পর উপমহাদেশে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সূচনা হয়। মৌর্যদের মত অত বড় সাম্রাজ্য আর কেউ স্থাপন করতে পারল না। উত্তর ভারতে শুঙ্গ, কান্ব, শক, পহ্লব, কুষান এবং দক্ষিণ ভারতে সাতবাহন, ইক্ষাকু প্রভৃতি রাজবংশ বিভিন্ন সময় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেছিল। এদের মধ্যে কুষান এবং সাতবাহনদের শাসন ছিল অন্যদের তুলনায় আকারে এবং প্রকারে বৃহত্তর। তবে রাজনৈতিক টানাপোড়েন অর্থনৈতিক জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে নি। বরং রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব হ্রাস পাওয়ার ফলে অর্থনৈতিক জীবনে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ শিথিল হতে থাকে, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করে।
 
উত্তর ভারতে কৃষিই ছিল অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি। আলোচ্য পর্বে কৃষি অর্থনীতির সুদৃঢ় ভিত্তি দক্ষিণ ভারতেও প্রসারিত হল। খাদ্যশস্যের মধ্যে অন্যতম ছিল ধান, গম ও যব। শালিধান রাজকীয় আহারের জন্য উপযুক্ত ছিল। অন্যদিকে অপরান্ত ও কুমুদভন্ডিকা ছিল দাস ও ভৃত্যদের জন্য। প্লিনির রচনা থেকে জানা যায় সে যুগে আখ ও তুলোর চাষ হত। দাক্ষিণাত্যের কালো মাটি তুলা চাষের জন্য উপযুক্ত ছিল। সঙ্গম সাহিত্য এবং গ্রিক বিবরণীতে কেরলে গোলমরিচ চাষের কথা বলা হয়েছে। ডি ডি কোসাম্বি নহপানের নাসিক লেখ থেকে মহারাষ্ট্রে নারকেল চাষের প্রমাণ পেয়েছেন।
 
কৃষি কাজের যন্ত্রপাতি হিসাবে লাঙ্গল, কোদাল, কুঠার, দা প্রভৃতির ব্যবহারের প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ তক্ষশীলায় পাওয়া গেছে। এইগুলি বেশিরভাগই ছিল লৌহ নির্মিত। মধ্যপ্রদেশ সাঁচীতে লাঙ্গলের ফলার সন্ধান পাওয়া গেছে। কৃষকরা হাল চালনা করতেন বলে তাদেরকে হালিক বলা হত। হালভিত্তিক কৃষিব্যবস্থা আলোচ্য পর্বে দক্ষিণ ভারতেও প্রসার লাভ করেছিল। ফলে দক্ষিণ ভারতেও কৃষির উদ্বৃত্ত উৎপাদন সম্ভব হয়েছিল।
 
কৃষি প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো সেচব্যবস্থা। সেচ ব্যবস্থার অগ্রগতির জন্যই আলোচ্য পর্বে কৃষি সর্বভারতীয় চরিত্র লাভ করল। শাস্ত্রকারগণ সেচ ব্যবস্থার গুরুত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিলেন। সেচ প্রকল্প কেউ ধ্বংস বা ক্ষতি করলে শাস্ত্রকারগণ শাস্তির নির্দেশও দিয়েছেন। কূপ এবং জলাশয় নির্মাণকে তারা পুণ্যকর্ম হিসাবে বিবেচনা করেছেন। শক শাসক নহপান ও তার জামাতা রিষভদত্ত জলাশয় নির্মাণকর্মে উৎসাহ দিতেন এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে। কূপ এবং জলাশয় নির্মাণের মত ছোট প্রকল্পগুলি ছিল ব্যক্তিগত উদ্যোগ কিন্তু বৃহদায়তন প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি ছিল। সেচ প্রকল্পে রাজকীয় উদ্যোগের শ্রেষ্ঠ নজির ছিল কাথিয়াবাড়ের সুদর্শন হ্রদ, যার বিশদ বিবরণ পাওয়া যাবে জুনাগড় প্রশস্তিতে। মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত এটি নির্মাণ করে দেন। রুদ্রদামনের শাসনকালে এই হ্রদের বাঁধে বিশাল ফাটল দেখা দিলে তিনি তা সংস্করণের ব্যবস্থা করেন। এরকমই একটি বৃহৎ জল সেচ প্রকল্পের অবশেষ পাওয়া গেছে এলাহাবাদের কাছে। গঙ্গার জল একটি প্রণালী দিয়ে একটি পরিশ্রবণ কক্ষ হয়ে দুটি জলাশয়ে আসত, যা পরস্পর একটি নল দ্বারা যুক্ত ছিল। এটি সরাসরি সেচের কাজে লাগত কিনা বলা যায়না। তবে এরকম জটিল প্রযুক্তির উল্লেখ না করে পারা যায় না। সঙ্গম সাহিত্যে চোল গোষ্ঠীর প্রধান কারিকল সেচ প্রকল্পের জন্য ভূয়শী প্রশংসা পেয়েছেন। তিনি কাবেরী নদীর জল সেচের কাজে ব্যবহারের উপযোগী করার ব্যবস্থা করেছিলেন। নদীর পলি পরিষ্কার করে নদীগর্ভকে গভীরতর করে বারংবার প্লাবনের হাত থেকে কৃষিকর্মকে রক্ষা করা হয়েছিল।
আলোচ্য পর্বে কৃষকরা জলসেচের কাজে অরঘট্ট নামে এক যন্ত্র ব্যবহার করত। বৃহৎ কূপ বা জলাশয়ে স্থাপিত চক্রাকার এই যন্ত্রটির গায়ে ঘটি বাধা থাকতো। চক্রটি ঘুরলে ঘটি জল পূর্ণ হত এবং একটি প্রণালীর মাধ্যমে সেচের জল জমিতে চলে যেত। নাসিক লেখতে এই যন্ত্র নির্মাণের কুশলী কারিগরদের উল্লেখ আছে।
 
কৃষি বিজ্ঞান সংক্রান্ত চেতনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছিল। বৌদ্ধ গ্রন্থ মিলিন্দপঞহ-তে ফসল ফলানোর বিভিন্ন পর্ব অনুপুঙ্খসহ বর্ণিত হয়েছে।
 
কৃষি ব্যবস্থা আলোচনা প্রসঙ্গে জমির মালিকানার ব্যাপারটি এসে যায়। অর্থশাস্ত্রে যে বিশাল আয়তন রাজকীয় মালিকানাধীন 'সীতা' জমির উল্লেখ আছে আলোচ্য পর্বে তা বিরল। গৌতমীপুত্র সাতকর্ণীর নাসিকে এরকম একটি জমি ছিল বলে জানা যায়। কিন্তু সামগ্রিক বিচারে কৃষিজমির উপরে রাজার সার্বিক অধিকার ছিল না বলেই মনে হয়। শাসকগোষ্ঠীকে যখন দান করার জন্য জমি কিনতে হয় তখন ব্যক্তিমালিকানার অস্তিত্বই প্রমাণিত হয়। একটি জমি দুবার দুটি পৃথক পদ্ধতিতে প্রদান করা সমাজে জমির উপর ব্যক্তি মালিকানা ছাড়া সম্ভব নয়। যে সমাজে জমির ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠা পায় সেই সমাজে জমির উপরে সমানাধিকার থাকা সম্ভব নয়। তাই কৃষি অর্থনীতিতে অসাম্য ও জটিলতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছিল একথা অনুমান করাই যায়। লেখমালা ও সাহিত্যগত সূত্র থেকে কৃষকদের বোঝাতে যে বিভিন্ন শব্দ যেমন কর্ষক, কুটুম্বিক এবং হালিক ব্যবহৃত হয়েছে এগুলি সম্ভবত কৃষকদের পৃথক আর্থিক সঙ্গতির পরিচায়ক।
 

কারিগরি উৎপাদন 

আগেই বলা হয়েছে যে মৌর্যত্তর পর্বের অর্থনীতির মুখ্য বৈশিষ্ট ছিল রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণমুক্ত স্বাধীন অর্থনীতির বিকাশ। অর্থনীতির নতুন এই ধারা কারিগরি শিল্প ও পেশাদারী ক্রিয়া-কলাপ এর অগ্রগতিতে সহায়ক হয়েছিল। কারিগরি শিল্পের অগ্রগতির প্রমাণ আমরা পাই সমকালীন সাহিত্য যেমন মহাবস্তু, মিলিন্দপঞহো এবং জাতকের কাহিনীগুলিতে এবং সমকালীন লেখ ও দানপত্রগুলিতে।

উল্লেখযোগ্য কারিগরি বৃত্তিগুলির মধ্যে অন্যতম হলো ছুতোরের কাজ, সমকালীন সূত্রে যাকে বদ্ধকি বলা হয়েছে। জাতকের কাহিনী থেকে জানা যায় বারাণসীর কাছে একটি গ্রামে বহুসংখ্যক ছুতোরের বসবাস ছিল। কাছাকাছি বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে তারা নানা তৈজস পত্র তৈরি করে বারানসীর বাজারে বিক্রি করত। বাঁশের কারিগরদের বসকার এবং কঞ্চির কারিগরদের কেনাচিক বলা হত। বাস এবং কঞ্চির পৃথক কারিগরের অস্তিত্ব কারিগরি শিল্পে দক্ষতা এবং বিশেষীকরণ ছাড়া সম্ভব নয়। আলোচ্য পর্বে কর্মকার এর কাজের প্রসার হচ্ছিল; কারন কৃষিক্ষেত্রে লৌহ উপকরণের প্রয়োগ বাড়ছিল। এদিকে মৃতপাত্র নির্মাণ যে তার সংখ্যা ও বৈচিত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছিল তার প্রমান পাই বৌদ্ধ সাহিত্যে। লেখমালায় গন্ধিক দের উল্লেখ আছে। এরা সম্ভবত গন্ধদ্রব্য প্রস্তুত করত। এরা সুবাসক নামেও পরিচিত ছিল। মালা গাঁথার কাজে যুক্ত কারিগরদের মালাকার বলা হ কোশাম্বী এই গন্ধদ্রব্য প্রস্তুত করা এবং মালা প্রস্তুত করার শিল্পকে বিলাসব্যসনের উপকরণ হিসাবে দেখতে চান নি; কারণ গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এই দুটি দ্রবের প্রয়োজনীয়তা থাকে।

আলোচ্য পর্বের প্রধান শিল্প ছিল বস্ত্রশিল্প। নাসিকের প্রাপ্ত রহমানের একটি লেখ কৌলিক বা তাঁতিদের কথা আছে। মথুরার একটি লিপিতে যে প্রাবরিক গোষ্ঠীর কথা আছে তারা সম্ভবত প্রবর নামে এক বিশেষ বস্ত্র তৈরির সাথে যুক্ত ছিল। পেরিপ্লাস থেকে জানা যায় দক্ষিণ ভারতের টগর বা টের ও পৈঠান ছিল বস্ত্র শিল্পের প্রধান কেন্দ্র। টগরে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কার্যের ফলে বস্ত্র রং করার বিশাল ব্যবস্থা পাওয়া গেছে। জাতকে কাপড় রং করাকে একটি পৃথক শিল্প হিসাবে দেখা হয়েছে। এর কারিগরদের রঙ্গকার বলা হত। সে সময় দামি কাপড়ের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট ছিল মসলিন বারানসী, উজ্জয়িনী প্রভৃতি এলাকায় তৈরি হতো। তবে গ্রিক রচনায় গ্যাঞ্জে অর্থাৎ বাংলার মসলিনকে শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে।

নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়াও আলোচ্য পর্বে বিলাস দ্রব্য উৎপাদনের কথা জানা। যায় হাতির দাঁতের বিভিন্ন সৌখিনদ্রব্য দ্বারা প্রস্তুত করত তাদের দন্তকার বলা হত। টলেমির ভূগোল অনুযায়ী দন্তপুরা ছিল গজদন্ত শিল্পের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। আফগানিস্তানের বেগ্রামে প্রাপ্ত গজদন্ত নির্মিত সৌখিন দ্রব্যের অবশেষ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আলোচ্য পর্বে সোনা এবং মূল্যবান পাথরের গহনা তৈরি হত। সোনার গহনা কারিগরদের সুবর্ণকার বলা হত এবং পাথরের গহনা তৈরি করলে তাদের মনিকার বলা হত।

রাষ্ট্র সরাসরি নিজে হাতে বেশকিছু শিল্প দ্রব্যের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করত। ধর্মশাস্ত্র মতে খনি এবং খনিজ দ্রব্যের উপর রাজকীয় নিয়ন্ত্রণ থাকা বাঞ্ছনীয় ছিল। টলেমির ভূগোল থেকে জানা যায় মালব দেশের পূর্বভাগে কোষা নামে এক এলাকায় হীরার খনি ছিল। লেখমালার তথ্য থেকে জানা যায় যে ওই এলাকার ওপরে শাসকের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য শক, সাতবাহন এবং কুষান দের মধ্যে বিভিন্ন সময় পারস্পরিক দ্বন্দ্ব হয়েছিল। আর একটি মূল্যবান খনিজ সম্পদ হলো বৈদুর্য টলেমির মতে যার উৎপত্তি স্থান বর্তমান কোয়েম্বাটুর এর কাছে পুনটা নামক কোন এক স্থানে। মুক্ত উৎপাদনের উপর শাসকের কর্তৃত্ব বজায় থাকত। পেরিপ্লাস থেকে জানা যায় মুক্ত উৎপাদন কেন্দ্র গুলি পান্ড রাজারা প্রত্যক্ষ ভাবে পরিচালনা করত। মৃত্যুদণ্ডজ্ঞাপ্রাপ্ত অপরাধীদের ডুবুরি হিসাবে কাজে লাগানো হত। লবণ উৎপাদনের উপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ বজায় না থাকলেও শাসকরা রাজস্ব সংগ্রহের উৎসাহ দেখাত। সাতবাহন আমলে একটি অগ্রহর ভুমিদানে লবন এর উপরে কর ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এর থেকেই অনুমান করা যায় যে সে যুগে লবণ উৎপাদনের ওপরে কর আদায় করা হত। লবণ উৎপাদন কতটা ব্যাপক রূপ লাভ করেছিল তার নমুনা আমরা পাব প্লিনির একটি মন্তব্য থেকে। তিনি বলছেন আরমেনাস (সল্ট রেঞ্জ) পাহাড়ে নুনের উৎপাদন থেকে যে পরিমাণ শুল্ক আদায় হয় তা বোধহয় হীরার খনি থেকেও হয়না।

Agrarian Economy of Post-Mauryan India

The economic history of post-Mauryan India holds significant importance. Following the fall of the Mauryan dynasty, political conflicts arose across the subcontinent. No empire comparable in size and power to the Mauryas could be established again. In northern India, dynasties such as the Shungas, Kanvas, Shakas, Pahlavas, and Kushanas came to power, while in southern India, dynasties like the Satavahanas and Ikshvakus held control at different times. Among them, the Kushanas and Satavahanas had larger and more influential reigns compared to others. However, these political tensions did not disrupt the economy. On the contrary, the decrease in state control led to a gradual relaxation in government regulations on economic life, accelerating economic progress.

In northern India, agriculture was the main economic foundation. During this period, the strong agricultural base extended to southern India as well. Key crops included rice, wheat, and barley. Shali rice was considered suitable for royal consumption, while grains like Aparanta and Kumudavandika were reserved for slaves and servants. According to Pliny’s accounts, crops such as sugarcane and cotton were cultivated at the time. The black soil in the Deccan region was particularly suited for cotton cultivation. Sangam literature and Greek writings mention pepper cultivation in Kerala. D.D. Kosambi found evidence of coconut cultivation in Maharashtra from inscriptions by Nahapana at Nasik.

Archaeological evidence from Taxila reveals the use of agricultural tools like the plow, hoe, axe, and sickle, mostly made of iron. At Sanchi in Madhya Pradesh, remains of plowshares have been found. Farmers who used plows were known as "Halikas." This plow-based agricultural system spread to southern India during this period, leading to surplus production in agriculture there as well.

Irrigation systems were the most crucial part of agricultural technology. Due to advancements in irrigation, agriculture attained a pan-Indian character during this period. The Shastrakars (ancient legal scholars) were well aware of the importance of irrigation and even prescribed penalties for those who damaged irrigation projects. They considered the construction of wells and reservoirs a meritorious act. Shaka ruler Nahapana and his son-in-law Rishabhadatta actively encouraged reservoir construction. Small-scale projects like wells and reservoirs were built through private efforts, but large-scale projects required state intervention. A prominent example of royal involvement in irrigation projects was the Sudarshan Lake in Kathiawar, which was originally constructed by Mauryan Emperor Chandragupta. During the reign of Rudradaman, when cracks appeared in the lake’s dam, he arranged for its repair. Another major irrigation project has been found near Allahabad, where water from the Ganges was channeled through a filtration chamber into two connected reservoirs. Although it’s unclear if this system was directly used for irrigation, it demonstrates a high level of technological complexity. In Sangam literature, Karikala Chola is praised for his irrigation projects, such as utilizing the Kaveri River’s water for irrigation, by clearing the river’s silt and deepening the riverbed to prevent recurrent floods from disrupting farming.

During this period, farmers used a device called the *arghatta* for irrigation. This wheel-like device, often placed in large wells or reservoirs, had pots attached to it. When the wheel turned, the pots filled with water, which was then distributed to the fields through channels. The Nasik inscriptions mention skilled craftsmen who specialized in building this device.

Awareness of agricultural science was gradually increasing. The Buddhist text Milindapanha describes various stages of crop production in detail.

In discussing the agricultural system, land ownership becomes a significant factor. In the Arthashastra, there are references to large tracts of royal land known as Seeta lands, but such ownership appears rare during this period. According to an inscription at Nasik, Gautamiputra Satakarni possessed such a land. However, the king did not have complete authority over agricultural land. When rulers had to purchase land to grant it as a gift, it indicated the presence of private land ownership. Land donations through separate methods suggest the existence of private land ownership. In societies with established private land ownership, equality of access to land was not feasible. Hence, inequality and complexity in the agrarian economy were likely increasing. From inscriptions and literary sources, we find terms like Korshaka, Kutumbika, and Halika used to refer to farmers, likely indicating differences in their economic status.

Craft Production

The hallmark of the post-Mauryan economy was the growth of an independent economy free from state control, which encouraged the development of artisanal and professional crafts. Evidence of the advancement of artisanal industries is found in contemporary literature like Mahavastu, Milindapanho, Jataka Tales, and inscriptions and donation records.

Among notable crafts, woodworking was prominent, referred to as Badhaki in contemporary sources. According to the Jataka Tales, a village near Varanasi was home to numerous carpenters who collected wood from nearby forests to craft various household items for sale in Varanasi’s markets. Bamboo and cane artisans were known as Baskara and Kenachik, respectively, showing the specialization and expertise within the artisanal industry. During this period, blacksmithing also expanded, as iron tools became more common in agriculture. Buddhist literature provides evidence of the increasing diversity and number of pottery items. Inscriptions mention Gandhikas, possibly perfumers, who were also known as Subasaka. Garland makers, called Malakaras, were noted for their craft. Kosambi argues that in a hot climate, both perfume and garlands served practical purposes beyond luxury.

The textile industry was the primary industry of the period. An inscription from Nasik mentions weavers known as Kaulika. Another inscription from Mathura refers to the Pravarika community, likely engaged in weaving a special fabric known as Pravar. According to Periplus, southern Indian towns like Tagara (present-day Ter) and Paithan were major textile centers. Archaeological excavations at Tagara have revealed extensive facilities for dyeing fabrics. In the Jataka Tales, fabric dyeing is treated as a distinct craft, with its artisans called Rangakaras. Among luxurious fabrics, the finest was Muslin, made in areas like Varanasi and Ujjain. However, Greek writings consider Ganges Muslin from Bengal to be the finest.

In addition to essentials, the production of luxury goods was also known during this period. Artisans created various decorative items from ivory, known as Dantakara. According to Ptolemy’s geography, Dantapura was a key center of ivory craft. Exquisite ivory artifacts discovered in Begram, Afghanistan, highlight this art form. Goldsmiths, called Suvarnakaras, and stone jewelers, called Manikaras, crafted ornaments from gold and precious stones.

The state directly controlled certain industries. According to religious texts, royal control over mines and minerals was advised. Ptolemy’s geography mentions diamond mines in Kosa (eastern Malwa). Records suggest that conflicts between the Shakas, Satavahanas, and Kushanas were driven by control over such resource-rich areas. Another valuable mineral, beryl, originated near Coimbatore in a place called Punta, according to Ptolemy. Pearl production remained under royal control, with records indicating that Pandyan rulers managed the pearl centers. Convicted criminals were employed as divers for pearl harvesting. Although salt production was not directly controlled, it was a source of revenue. During the Satavahana era, a land grant document mentions tax exemption on salt, suggesting that taxes were indeed imposed on salt production. The scale of salt production is exemplified by Pliny’s statement that the revenue from salt production in the Salt Range of Armenia might even surpass that from diamond mines.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য

আরবদের সিন্ধু অভিযান | কারণ ও তাৎপর্য Please visit our Homepage and subscribe us. Suggested Topics || Ghajnavid Invasion || গজনী আক্রমণ || || মামুদের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন || Somnath Temple Plunder || || তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ত্ব || মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমন ও তার চরিত্র || সপ্তম শতকের প্রথমার্ধে আরবদেশে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে। ইসলাম আরবদের নতুন করে জীবনীশক্তির সঞ্চার করে । ইসলাম ক্রমশ: একটি ধর্ম থেকে রাজনৈতিক শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা আরবীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ভারতবর্ষের সঙ্গে আরবদের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক সূত্রে তারা নিয়মিত ভারতের উপকূল গুলিতে, বিশেষ করে মালাবার উপকূলে আসত। ভারতীয় ও চীনা পণ্য 'ধাও' নামক বিশেষ জাহাজে করে নিয়ে তারা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করত। 712 খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর সেনাপতি ও জামাতা মোহাম্মদ বিন কাসেম সিন্ধু দেশে একটি সফল অভিযান করেন এবং সিন্ধুদেশ আরবীয় মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। অভিযানের(প্রত্যক্ষ) কারণ ভারতবর্ষের প্রতি আরবদের দীর্ঘদিনের নজর ছিল। এর আ...

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ | Category of Archives

মহাফেজখানার শ্রেণীবিভাগ মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারগুলি সাধারণ জনতার জন্য নয় মূলত গবেষক, ঐতিহাসিক, আইনবিদ, চিত্র পরিচালক প্রভৃতি পেশার লোকজন তাদের গবেষণার কাজে লেখ্যাগারে নথি পত্র দেখতে পারেন।  লেখ্যাগার পরিচালনা ও সংরক্ষিত নথির ভিত্তিতে লেখ্যাগগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।   1. সরকারি লেখ্যাগার:- কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে যে লেখ্যাগারগুলি গড়ে ওঠে। সেগুলিকে সরকারি লেখ্যাগার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সরকার পরিচালিত এক বা একাধিক লেখ্যাগার থাকে। যেমন, আমেরিকার Natonal Archive And records Administration (NARA)। ভারতবর্ষে র কেন্দ্রীয় লেখ্যাগার National Archive of India নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও আইনগত নথি, মানচিত্র, নক্সা,  পাণ্ডুলিপি প্রভৃতি সংরক্ষিত থাকে। 2. বানিজ্যিক লেখ্যাগার:-  এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লেখ্যাগার বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান   মূলত তাদের সংস্থার ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক নথি সংরক্ষিত রাখে। যেমন, ভারতের প্রথম বানিজ্যিক লেখ্যাগার হলো পুনার Tata Centrel Archive। 3. অলাভজনক লেখ্যাগ...

ষোড়শ শতকীয় ইউরোপে মূল্যবিপ্লব | Price Revolution

 ষোড়শ শতকের ইউরোপে মূল্য বিপ্লব   16 শতাব্দীতে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো মূল্য বিপ্লব। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য প্রায় 150 বছর সুস্থির থাকার পর ঊর্ধ্বমুখী হতে আরম্ভ করে, এবং 16 শতাব্দীর শেষে খাদ্যপণ্যের মূল্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। পশ্চিম ইউরোপের অর্থনীতিতে এমন অভাবনীয় এবং সুদুরপ্রসারী ফলাফলসম্পন্ন ঘটনা মূল্য বিপ্লব নামে পরিচিত। মূল্য বিপ্লবের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা--    (১) কৃষিজ পণ্যের তুলনায় শিল্পজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ছিল কম, এবং খাদ্যশস্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। (২) ভূমি রাজস্ব সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক, তোলা ইত্যাদির হার বৃদ্ধি এবং ফটকাবাজির আবির্ভাব। (৩) মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় মজুরির হার খুবই কম ছিল বলে প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছিল। (৪) ভূমি বিক্রয়যোগ্য পণ্যে পরিণত হওয়া। (৫) গ্রামীণ বুর্জোয়াজি শ্রেণীর আবির্ভাব। ষোড়শ শতকের আগেও প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল, তবে তা ছিল 2, 3 শতাংশের মতো, যা অস্বাভাবিক মনে হতো না। কিন্তু ষোল শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যবৃদ্ধি হ...