সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শের শাহের শাসন সংস্কার | Sher Shah’s Administrative Reforms

শের শাহের শাসন সংস্কার পানিপথ (১৫২৬) ও ঘর্ঘরার যুদ্ধে (১৫২৯) বাবর আফগানদের পরাজিত করে মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করলেও আফগানরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি। পূর্ব ভারতের আফগানরা তাদের নতুন নেতা শের খাঁ-র নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। এই শের খাঁ-ই বাবর এর উত্তরসূরী হুমায়ূনকে পর্যদুস্ত করে মুঘলদের ভারত ত্যাগে বাধ্য করেছিলেন। দিল্লি আগ্রা দখল করে তিনি নিজেকে 'শাহ' বা শাসক বলে ঘোষণা করেন (১৫৩৯)। সাম্রাজ্য স্থাপনের পাশাপাশি শের শাহ তার পাঁচ বছরের রাজত্বকালে (১৫৩৯-৪৪) দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। ভারতবর্ষে তিনি শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলি এনেছিলেন সেগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয়েছিল এবং মোঘলরাও তাকে অনুসরণ করেছিল। শের খাঁ তথা ফরিদের পিতার সসারামের জাগির ছিল। কিন্তু সৎমা ও সৎ ভাইয়ের চক্রান্তে তাকে সসারাম ছাড়তে হয়। তারপর সামান্য চাকরিজীবী হিসেবে দক্ষিণ বিহারের শাসক বিহার খাঁ লোহানীর অধীনে তার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল। পরবর্তীকালে তিনি প্রভুর বিরাগভাজন হয়ে মুঘলদের অধীনেও চাকরি করেছিলেন। তিনি বাবরকে চান্দেরি দুর্গ দখলে ...

মৌর্যত্তর ভারতের কৃষি ও কারিগরি অর্থনীতি

  মৌর্যত্তর ভারতের কৃষি অর্থনীতি মৌর্য পরবর্তী ভারতবর্ষের ইতিহাস অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মৌর্যদের পতনের পর উপমহাদেশে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সূচনা হয়। মৌর্যদের মত অত বড় সাম্রাজ্য আর কেউ স্থাপন করতে পারল না। উত্তর ভারতে শুঙ্গ, কান্ব, শক, পহ্লব, কুষান এবং দক্ষিণ ভারতে সাতবাহন, ইক্ষাকু প্রভৃতি রাজবংশ বিভিন্ন সময় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেছিল। এদের মধ্যে কুষান এবং সাতবাহনদের শাসন ছিল অন্যদের তুলনায় আকারে এবং প্রকারে বৃহত্তর। তবে রাজনৈতিক টানাপোড়েন অর্থনৈতিক জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে নি। বরং রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব হ্রাস পাওয়ার ফলে অর্থনৈতিক জীবনে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ শিথিল হতে থাকে, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করে।   উত্তর ভারতে কৃষিই ছিল অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি। আলোচ্য পর্বে কৃষি অর্থনীতির সুদৃঢ় ভিত্তি দক্ষিণ ভারতেও প্রসারিত হল। খাদ্যশস্যের মধ্যে অন্যতম ছিল ধান, গম ও যব। শালিধান রাজকীয় আহারের জন্য উপযুক্ত ছিল। অন্যদিকে অপরান্ত ও কুমুদভন্ডিকা ছিল দাস ও ভৃত্যদের জন্য। প্লিনির রচনা থেকে জানা যায় সে যুগে আখ ও তুলোর চাষ হত। দাক্ষিণাত্যের কালো মাটি তুলা চাষের জন্য...

দক্ষিণাত্যে শক-সাতবাহন দ্বন্দ্ব | Saka-Satabahana Rivalary

দাক্ষিণাত্যে শক-সাতবাহন দ্বন্দ্ব ভারতবর্ষের বাণিজ্য সমৃদ্ধ পশ্চিম উপকূল এবং খনিজ সমৃদ্ধ মালবকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ভারতে একাধিক রাজনৈতিক সংঘর্ষ প্রাচীনকাল থেকে ঘটে এসেছে। এই সংঘর্ষের প্রথম উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হলো শক-সাতবাহন দ্বন্দ্ব। শক শাসকেরা ছিল বিদেশি। গ্রীকদের পর এরা ভারতে এসেছিল। ভারত ও আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজত্বকারী শকদের চারটি শাখা ছিল। একটি শাখা আফগানিস্তানের রাজত্ব করত, দ্বিতীয় শাখা পাঞ্জাবে, তৃতীয় শাখা মথুরায়, চতুর্থ শাখা পশ্চিম ভারতে। পশ্চিম ভারতের শক শাসন দীরঘস্থায়ী হয়েছিল। শক রাজাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন প্রথম রুদ্রদামন (১৩০-১৫০ খ্রীঃ)। দাক্ষিণাত্যে যারা প্রথম পরাক্রান্ত রাজশক্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল তারা হল সাতবাহন। সাতবাহন বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সিমুক। পুরান-এ সাতবাহনদের অন্ধ্রভৃত্য বলা হয়েছে। তাই অনেকেই দাক্ষিণাত্যের পূর্বাংশকে সাতবাহনদের আদি বাসভূমি বলে মনে করেন। কিন্তু আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে সাতবাহনদের উত্থান ঘটেছিল দাক্ষিণাত্যের পশ্চিম দিকে। এখানেই প্রতিষ্ঠান (পৈঠান) এলাকায় তাদের রাজধানী ছিল। গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী ছিলেন সাতবাহন বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ...

মৌর্যত্তর ভারতের কৃষি অর্থনীতি | Agriculture in Post Mauryan Period

মৌর্যত্তর ভারতের কৃষি অর্থনীতি মৌর্য পরবর্তী ভারতবর্ষের ইতিহাস অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মৌর্যদের পতনের পর উপমহাদেশে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সূচনা হয়। মৌর্যদের মত অত বড় সাম্রাজ্য আর কেউ স্থাপন করতে পারল না। উত্তর ভারতে শুঙ্গ, কান্ব, শক, পহ্লব, কুষান এবং দক্ষিণ ভারতে সাতবাহন, ইক্ষাকু প্রভৃতি রাজবংশ বিভিন্ন সময় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেছিল। এদের মধ্যে কুষান এবং সাতবাহনদের শাসন ছিল অন্যদের তুলনায় আকারে এবং প্রকারে বৃহত্তর। তবে রাজনৈতিক টানাপোড়েন অর্থনৈতিক জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে নি। বরং রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব হ্রাস পাওয়ার ফলে অর্থনৈতিক জীবনে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ শিথিল হতে থাকে, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করে। উত্তর ভারতে কৃষিই ছিল অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি। আলোচ্য পর্বে কৃষি অর্থনীতির সুদৃঢ় ভিত্তি দক্ষিণ ভারতেও প্রসারিত হল। খাদ্যশস্যের মধ্যে অন্যতম ছিল ধান, গম ও যব। শালিধান রাজকীয় আহারের জন্য উপযুক্ত ছিল। অন্যদিকে অপরান্ত ও কুমুদভন্ডিকা ছিল দাস ও ভৃত্যদের জন্য। প্লিনির রচনা থেকে জানা যায় সে যুগে আখ ও তুলোর চাষ হত। দাক্ষিণাত্যের কালো মাটি তুলা চাষের জন্য উপযুক্ত ছিল।...