রেগুলেটিং আইন | Regulating Act
ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সাম্রাজ্যের উপর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রথম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু হয় 1773 খ্রিস্টাব্দে রেগুলেটিং অ্যাক্ট এর মাধ্যমে। রেগুলেটিং আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য ছিল তিনটি। যথা:
1) কোম্পানির অংশীদার ও পরিচালকদের মধ্যে সম্পর্ক নির্দিষ্ট করা।
2) কোম্পানির উপর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করা।
3) বম্বে মাদ্রাজ কুঠির সঙ্গে কলকাতা কুঠির সম্পর্ক নির্ধারণ করা।
রেগুলেটিং আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বলা হয় 'Court of Directors' ব্রিটিশ সরকারের কাছে কোম্পানির শাসন ও অর্থনৈতিক সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পেশ করতে বাধ্য। মাদ্রাজ ও বোম্বে কুঠির উপরে কলকাতা কুঠির প্রাধান্য স্থাপিত হবে। পূর্ববর্তী 'বাংলার গভর্নর' পদ বদলে হবে "বাংলার গভর্নর জেনারেল"। গভর্নর জেনারেলের চারজন কাউন্সিল থাকবে এবং এরা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। কমপক্ষে 1000 পাউন্ড শেয়ারধারীরা একটি করে ভোট দেবে 3000, 6000 ও 10000 পাউন্ড শেয়ারধারীরা যথাক্রমে 2, 3 ও 4 টি করে ভোট দেবে। গভর্নরকে সংখ্যাগরিষ্ঠের মত নিয়ে চলতে হবে। প্রথম গভর্নর জেনারেল হন ওয়ারেন হেস্টিংস এবং তার চারজন কাউন্সিল হন ক্লাভারিং, মনসন, বাবয়েল ও ফিলিপ ফ্রান্সিস। ভারতে বসবাসকারী সকল ইউরোপীয়দের বিচারের জন্য কলকাতায় 1774 খ্রিস্টাব্দে সুপ্রিম কোর্ট তৈরি হয়। সুপ্রিম কোর্টের প্রথম প্রধান বিচারপতি হোন স্যার এলিজা ইম্পে।
রেগুলেটিং অ্যাক্ট তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়। রেগুলেটিং অ্যাক্ট এর ব্যর্থতা প্রসঙ্গে রবার্টস এর মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলছেন, এই আইন রাষ্ট্রকে কোম্পানির উপর নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণের অধিকার দিতে পারেনি। ডিরেক্টরদের কর্মচারীদের উপর নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কাউন্সিল এর উপর গভর্নর জেনারেলের এবং বোম্বাই ও মাদ্রাজের উপর কলকাতার নিয়ন্ত্রণ সুনির্দিষ্ট হয়নি। সুতরাং নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন অতি দ্রুতই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। তাই 1784 খ্রিস্টাব্দে পিটের ভারত শাসন আইন পাস করতে হয়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন