পিটের ভারত শাসন আইন | Pitt's India Act
রেগুলেটিং আইনের নানান ত্রুটি ছিল। এই আইনের দ্বারা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারতে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ওপর যথার্থ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। কাউন্সিলের ওপর গভর্নর জেনারেলের ক্ষমতা কতটা, মাদ্রাজ ও বোম্বে প্রেসিডেন্সির গভর্নরদের ওপর বাংলার গভর্নর জেনারেলের ক্ষমতা কতটা-- সবকিছুই ধোঁয়াশার মধ্যে থেকে গেছিল। তাই একটি নতুন আইন পাশ করার প্রয়োজন অনুভূত হয়। এই উদ্দেশ্যেই ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী উয়িলিয়াম পিট এর নেতৃত্বে একটি নতুন নিয়ন্ত্রনী আইন (১৭৮৪ খ্রীঃ) পাশ হয়, যা পিটের ভারত শাসন আইন নামে পরিচিত।
পিটের ভারত শাসন আইনে বলা হল: ব্রিটিশ সরকারের অর্থসচিব, সেক্রেটারি অফ স্টেট এবং রাজা কর্তৃক মনোনীত চারজন ব্রিটিশ কাউন্সিলের সদস্য কে নিয়ে বোর্ড অফ কন্ট্রোল গড়ে উঠবে। বোর্ড অফ কন্ট্রোল এর হাতে ভারত শাসন তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব থাকবে। কোম্পানির সামরিক ও বেসামরিক শাসন কার্য পরিচালনা, রাজস্ব ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার এবং কোম্পানির কাগজপত্র দেখাশোনা করার অধিকার দেওয়া হয়। ডিরেক্টর সভা বোর্ড অফ কন্ট্রোল এর হাতে সমস্ত কাগজপত্র প্রদান করতে বাধ্য। ভারত শাসনের দায়িত্ব গভর্নর জেনারেল ও তিনজন সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কোম্পানীর করমচারী নিয়োগের দায়িত্ব গভর্নর জেনারেল ও তার কাউন্সিলের উপর দেওয়া হয়।
রেগুলেটিং আইনের ধোয়াশাগুলি পিটের আইনে দূর করারা চেষ্টা করা হয়। মাদ্রাজ ও বোম্বে প্রেসিডেন্সী এখন থেকে যুদ্ধ, শান্তিস্থাপন ও দেশীয় রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে গভর্নর জেনারেলের অধীনে থাকবে বলা হয়। কাজের সুবিধার জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে গভর্নর জেনারেলকে তার কাউন্সিলের মতামত অগ্রাহ্য করার অধিকার দেওয়া হয়। কোম্পানির কর্মচারীদের দুর্নীতি দূর করার জন্য বিদায়ী ইংরেজ কর্মচারীদের সম্পত্তি হিসেব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যায় ধরা পড়লে ইংল্যান্ডের বিশেষ কোর্টে তাদের বিচার হবে বলা হয়।
প্রকৃতপক্ষে পিটের ভারত শাসন আইনে কোম্পানির বানিজ্যিক কাজকর্ম থেকে শাসনকে পৃথক করা হয়, যা মোটামুটি ১৮৫৭ পর্যন্ত অল্প কিছু পরিবর্তন হলেও একই ছিল। কিন্তু কোম্পানীর বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলি এত ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিল যে, তা পৃথক করা যথেষ্ট কঠিন ছিল। তাই নানান সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল। এতদসত্ত্বেও বলা পিটের ভারত শাসন আইন ভারতের শাসন ও রাজস্ব ব্যবস্থার উপর কোম্পানির একচেটিয়া অধিকার খর্ব হল। এবং কোম্পানি ও পার্লামেন্টের মধ্যে একটা বাস্তবমুখী আপোষ স্থাপিত হয়।
धन्यवाद
উত্তরমুছুনThank you sir
উত্তরমুছুন