বাংলায় দ্বৈত শাসন| Diarchy in Bengal
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় দেওয়ানীর অধিকার লাভ করার ফলে যে ধরনের শাসন ব্যবস্থার সূচনা হয় তাকে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা বলা হয়। বক্সারের যুদ্ধে মুঘল বাদশাহ শাহআলম পরাজিত হন। তাই বাস্তবিক বাধ্যবাধকতা থেকে তিনি ১৭৬৪ সালে এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধির মাধ্যমে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কে বছরে ২৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাংলা, বিহার ,উড়িষ্যায় দেওয়ানীর অধিকার দেন।
ইতিপূর্বে নবাব আলীবর্দী খাঁ পর্যন্ত বাংলার নবাবেরা একই সঙ্গে দেওয়ানী অর্থাৎ রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত অধিকার এবং সুবাদারি অর্থাৎ আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধিকার ভোগ করতেন। কোম্পানির দেওয়ানি লাভ এর ফলে দেওয়ানী অধিকার নবাবের হাতছাড়া হল। অর্থসংক্রান্ত অধিকার নবাবের হাতে না থাকায় নবাব ক্ষমতাহীন দায়িত্বধারীতে পরিণত হলেন। অন্যদিকে কোম্পানি দায়িত্বহীন, কিন্তু চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী হল। কোম্পানি তার কাজের জন্য রেজা খাঁ ও সিতার রায় কে নিযুক্ত করল।
দৈত্য শাসন মুঘল যুগের নতুন নয়। শক্তিশালী মুঘল শাসকের প্রাদেশিক শাসননীতিরই অঙ্গ ছিল দেওয়ান ও সুবাদর হিসেবে আলাদা লোক নিযুক্ত করা। তবে ইতিপূর্বে কোন বণিক কোম্পানির হাতে এইধরনের শাসনতান্ত্রিক ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়নি। দেওয়া হত কোনো দক্ষ কর্মচারীর হাতে।
যাইহোক দ্বৈত শাসনের ফলে ইংরেজরা রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করল। ফলে বাংলার বুকে যা হয় তা বড়ই মর্মান্তিক। ১৭৭০ সালে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কোম্পানি এর দায় ভারতীয়দের ওরাই চাপায় এবং ১৭৭২ সালে দ্বৈতশাসন তুলে নেওয়া হয়।.
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন